ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ মারা যাওয়ার ঘটনার জের ধরে শুরু হওয়া সংঘর্ষ এবং হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পর তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান হাসপাতালের উপপরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ রেজাউল হক।
তিনি জানান, “হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) একজন চিকিৎসক ও দুজন নার্সকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তদের মধ্যে রয়েছেন আইসিইউ মেডিকেল অফিসার মহিমা আক্তার শিফা এবং সিনিয়র স্টাফ নার্স আসমা নিলা ও সুজন কুমার সাহা। পাশাপাশি, ১১ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করবে।”
গত ১৮ নভেম্বর ডেঙ্গু আক্রান্ত অভিজিৎ প্লেটলেট কমে যাওয়ায় মারা যান। তার পরিবারের অভিযোগ, তারা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে চাইলেও ন্যাশনাল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়নি। এরপর ২০ নভেম্বর অভিজিতের সহপাঠীরা হাসপাতাল ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করে।
অভিযোগ উঠে, চিকিৎসার গাফিলতি এবং লাশ আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ডা. রেজাউল বলেন, “রোগীর পরিবারের আইসিইউ বিল ছিল ৩৬ হাজার ৪০০ টাকা, যা আমরা মওকুফ করেছি। কিন্তু ১০ হাজার টাকার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার কথা বলেছিলাম। লাশ আটকে রাখার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ইফফাত আরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “কিছু মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হাসপাতালের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। রোগীর চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অবহেলার অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসকরা তাদের পেশাকে এবাদতের মতো গুরুত্ব দেন। এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ চিকিৎসা সেবা খাতের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক।”
অভিজিৎ মারা যাওয়ার পর কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামে। ২৪ নভেম্বর মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে প্রায় ১০০০-১৫০০ শিক্ষার্থী হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ভাঙচুর চালায়। এতে হাসপাতালের ক্যাশ কাউন্টার, জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং প্যাথলজি বিভাগ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অধ্যাপক ইফফাত আরা জানান, হামলায় হাসপাতালের অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এমনকি হাসপাতালের ভেতরে থাকা একটি ব্যাংক শাখাতেও ভাঙচুর হয়।
হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনার জেরে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ২৫ নভেম্বর মোল্লা কলেজে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন বলেন, “এ ঘটনায় আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রকাশ করলে সত্য উদঘাটন হবে। কমিটির সদস্যদের মধ্যে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকেও থাকবে।
এই ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থী, হাসপাতাল এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে উত্তেজনা এখনো বিরাজ করছে। সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সব পক্ষই অপেক্ষায় রয়েছে।
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ মারা যাওয়ার ঘটনার জের ধরে শুরু হওয়া সংঘর্ষ এবং হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পর তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান হাসপাতালের উপপরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ রেজাউল হক।
তিনি জানান, “হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) একজন চিকিৎসক ও দুজন নার্সকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তদের মধ্যে রয়েছেন আইসিইউ মেডিকেল অফিসার মহিমা আক্তার শিফা এবং সিনিয়র স্টাফ নার্স আসমা নিলা ও সুজন কুমার সাহা। পাশাপাশি, ১১ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করবে।”
গত ১৮ নভেম্বর ডেঙ্গু আক্রান্ত অভিজিৎ প্লেটলেট কমে যাওয়ায় মারা যান। তার পরিবারের অভিযোগ, তারা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে চাইলেও ন্যাশনাল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়নি। এরপর ২০ নভেম্বর অভিজিতের সহপাঠীরা হাসপাতাল ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করে।
অভিযোগ উঠে, চিকিৎসার গাফিলতি এবং লাশ আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ডা. রেজাউল বলেন, “রোগীর পরিবারের আইসিইউ বিল ছিল ৩৬ হাজার ৪০০ টাকা, যা আমরা মওকুফ করেছি। কিন্তু ১০ হাজার টাকার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার কথা বলেছিলাম। লাশ আটকে রাখার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ইফফাত আরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “কিছু মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হাসপাতালের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। রোগীর চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অবহেলার অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসকরা তাদের পেশাকে এবাদতের মতো গুরুত্ব দেন। এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ চিকিৎসা সেবা খাতের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক।”
অভিজিৎ মারা যাওয়ার পর কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামে। ২৪ নভেম্বর মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে প্রায় ১০০০-১৫০০ শিক্ষার্থী হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ভাঙচুর চালায়। এতে হাসপাতালের ক্যাশ কাউন্টার, জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং প্যাথলজি বিভাগ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অধ্যাপক ইফফাত আরা জানান, হামলায় হাসপাতালের অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এমনকি হাসপাতালের ভেতরে থাকা একটি ব্যাংক শাখাতেও ভাঙচুর হয়।
হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনার জেরে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ২৫ নভেম্বর মোল্লা কলেজে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন বলেন, “এ ঘটনায় আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রকাশ করলে সত্য উদঘাটন হবে। কমিটির সদস্যদের মধ্যে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকেও থাকবে।
এই ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থী, হাসপাতাল এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে উত্তেজনা এখনো বিরাজ করছে। সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সব পক্ষই অপেক্ষায় রয়েছে।