পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নতুন আন্দোলনের আহ্বান: তদন্তের প্রতিবাদ ও ষড়যন্ত্রের প্রশ্ন
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর হত্যাকাণ্ড, যেখানে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি জঘন্য ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এ হত্যাকাণ্ডে নিহতদের পরিবার এবং বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা এই ঘটনার পুনরায় তদন্তের জন্য আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের অভিযোগ, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যার দায়ভার ভারতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর চাপানোর চেষ্টা চলছে, যাতে প্রকৃত খুনীরা আড়াল হয়ে যায়।
বুধবার, রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নিহত কর্মকর্তাদের পরিবার এবং বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা বলেন, “বিডিআর জওয়ানরা সেদিন খুন করার পর উল্লাস করেছে, লাশ বিকৃত করেছে, অফিসারদের পরিবারের সদস্যদের বন্দি করে নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের বাসস্থানে ধ্বংসযজ্ঞ-লুটপাট করেছে। কিন্তু এখন সেই ঘটনাগুলোকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।”
এছাড়া, তারা গঠন করা নতুন তদন্ত কমিশনের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “খুনীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যদের জামিনে মুক্তির আবেদন শুরু হয়েছে। একে তাঁরা হত্যাকারীদের পক্ষ থেকে নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করার চেষ্টা বলছেন।”
এ ব্যাপারে সাকিব রহমান, নিহত কর্নেল কুদরত এলাহির ছেলে, বলেন, “এত বড় খুনের ঘটনা ঘটানোর পর ন্যারেটিভ চেঞ্জ করা আমাদের কাছে মানা হবে না। আমরা চাই জনগণ এবং মিডিয়া নিজেদের বিচার করুক।” তিনি আরও বলেন, "এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা সরাসরি জড়িত ছিল, তাদেরকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলে, আমরা কি খুনীদের জন্য নিরপরাধ হিসেবে গণ্য করব?"
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা একই সঙ্গে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, “এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে যাদের ইন্ধন থাকতে পারে, তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হোক, কিন্তু যারা সরাসরি খুন করেছে, তাদের মুক্তি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
এদিকে, নিহত লে. কর্নেল ডা. লুৎফুর রহমান খানের মেয়ে ডা. সাবিহা বুশরা প্রমি বলেন, "আমরা যে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম, তা কথা দিয়ে বোঝানো যাবে না। আমাদের কপালে কখনোই এমন নির্যাতন আর সহ্য করা হয়নি। এর মধ্যে তাদের উল্লাস, তাদের বেহায়াপনা ছিল।" তিনি আরও বলেন, “আমার বাবাকে ৩২ জনের গণকবরে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল দুদিন পর। তার মুখ বিকৃত হয়ে গিয়েছিল।”
অন্যদিকে, নিহত মেজর নুরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, “আমার বাবা একমাত্র যিনি হত্যাকাণ্ডে বাধা দিতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। যারা হত্যা করেছে তারা শুধু খুনই করেনি, তাদের লাশ বিকৃতও করেছে।”
তারা আরও বলেন, “সেদিন যারা আমাদের কাছ থেকে নিরীহভাবে জীবন বাঁচাতে সাহায্য চাইছিল, আজ তাদেরকেই নিরাপরাধ বলে উপস্থাপন করা হচ্ছে।”
এ সংবাদ সম্মেলনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, সেদিন যারা সেনা বাহিনীর সদস্যদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের অধিকাংশ এখনও বিচারের আওতায় আসেনি। এবং এখন নতুনভাবে তারা নিরাপরাধ হিসেবে উপস্থাপিত হচ্ছেন।
নিহত লে. কর্নেল শামসুল আরেফিনের স্ত্রী মুনমুন আখতার বলেন, “আমরা শুধু নিজেদের বাবার হত্যার বিচার চাই না, আমাদের দাবি যে, যাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে। তাদের মুক্তি চেয়ে যারা দাবি জানাচ্ছে, তাদের দাবি আমরা মেনে নেব না।”
এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিহতদের পরিবার এবং বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা দেশবাসীকে জানান, তাদের চাহিদা একটাই – বিচার এবং খুনীদের শাস্তি।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নতুন আন্দোলনের আহ্বান: তদন্তের প্রতিবাদ ও ষড়যন্ত্রের প্রশ্ন
বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর হত্যাকাণ্ড, যেখানে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি জঘন্য ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এ হত্যাকাণ্ডে নিহতদের পরিবার এবং বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা এই ঘটনার পুনরায় তদন্তের জন্য আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের অভিযোগ, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যার দায়ভার ভারতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর চাপানোর চেষ্টা চলছে, যাতে প্রকৃত খুনীরা আড়াল হয়ে যায়।
বুধবার, রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নিহত কর্মকর্তাদের পরিবার এবং বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা বলেন, “বিডিআর জওয়ানরা সেদিন খুন করার পর উল্লাস করেছে, লাশ বিকৃত করেছে, অফিসারদের পরিবারের সদস্যদের বন্দি করে নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের বাসস্থানে ধ্বংসযজ্ঞ-লুটপাট করেছে। কিন্তু এখন সেই ঘটনাগুলোকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।”
এছাড়া, তারা গঠন করা নতুন তদন্ত কমিশনের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “খুনীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যদের জামিনে মুক্তির আবেদন শুরু হয়েছে। একে তাঁরা হত্যাকারীদের পক্ষ থেকে নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করার চেষ্টা বলছেন।”
এ ব্যাপারে সাকিব রহমান, নিহত কর্নেল কুদরত এলাহির ছেলে, বলেন, “এত বড় খুনের ঘটনা ঘটানোর পর ন্যারেটিভ চেঞ্জ করা আমাদের কাছে মানা হবে না। আমরা চাই জনগণ এবং মিডিয়া নিজেদের বিচার করুক।” তিনি আরও বলেন, "এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা সরাসরি জড়িত ছিল, তাদেরকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলে, আমরা কি খুনীদের জন্য নিরপরাধ হিসেবে গণ্য করব?"
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা একই সঙ্গে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, “এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে যাদের ইন্ধন থাকতে পারে, তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হোক, কিন্তু যারা সরাসরি খুন করেছে, তাদের মুক্তি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
এদিকে, নিহত লে. কর্নেল ডা. লুৎফুর রহমান খানের মেয়ে ডা. সাবিহা বুশরা প্রমি বলেন, "আমরা যে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম, তা কথা দিয়ে বোঝানো যাবে না। আমাদের কপালে কখনোই এমন নির্যাতন আর সহ্য করা হয়নি। এর মধ্যে তাদের উল্লাস, তাদের বেহায়াপনা ছিল।" তিনি আরও বলেন, “আমার বাবাকে ৩২ জনের গণকবরে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল দুদিন পর। তার মুখ বিকৃত হয়ে গিয়েছিল।”
অন্যদিকে, নিহত মেজর নুরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, “আমার বাবা একমাত্র যিনি হত্যাকাণ্ডে বাধা দিতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। যারা হত্যা করেছে তারা শুধু খুনই করেনি, তাদের লাশ বিকৃতও করেছে।”
তারা আরও বলেন, “সেদিন যারা আমাদের কাছ থেকে নিরীহভাবে জীবন বাঁচাতে সাহায্য চাইছিল, আজ তাদেরকেই নিরাপরাধ বলে উপস্থাপন করা হচ্ছে।”
এ সংবাদ সম্মেলনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, সেদিন যারা সেনা বাহিনীর সদস্যদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের অধিকাংশ এখনও বিচারের আওতায় আসেনি। এবং এখন নতুনভাবে তারা নিরাপরাধ হিসেবে উপস্থাপিত হচ্ছেন।
নিহত লে. কর্নেল শামসুল আরেফিনের স্ত্রী মুনমুন আখতার বলেন, “আমরা শুধু নিজেদের বাবার হত্যার বিচার চাই না, আমাদের দাবি যে, যাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে। তাদের মুক্তি চেয়ে যারা দাবি জানাচ্ছে, তাদের দাবি আমরা মেনে নেব না।”
এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিহতদের পরিবার এবং বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা দেশবাসীকে জানান, তাদের চাহিদা একটাই – বিচার এবং খুনীদের শাস্তি।