সরকারি ঘোষণা না এলে সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের
ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। শনিবার বিকেল ৪টার মধ্যে সরকারিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা না এলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের নেতা নায়েক নূর মোহাম্মদ বলেন, "আজ বিকেল ৪টার মধ্যে যদি সরকার আমাদের দাবির ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেয়, তাহলে আমরা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করব।"
এদিকে, অনশনরত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, "আমরা আজ বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। যদি এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা না আসে, তবে শিক্ষার্থীরা যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটিই চূড়ান্ত হবে।"
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্ব ইজতেমার কারণে রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত থাকবে, তবে তাদের আমরণ অনশন অব্যাহত থাকবে।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রতিষ্ঠানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম তিতুমীর ঐক্য সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
১. রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দিয়ে আনুষ্ঠানিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা।
২. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন: দ্রুত প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
৩. আবাসন সুবিধা নিশ্চিত: শতভাগ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তাদের আবাসিক ব্যয় বহন করা।
৪. নতুন বিভাগ সংযোজন: আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন আইন এবং সাংবাদিকতা বিভাগ চালু করা।
৫. যোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ: বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বজায় রাখতে পিএইচডিধারী ও অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।
৬. গবেষণার মানোন্নয়ন: আসন সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে শিক্ষার মান উন্নত করা এবং গবেষণাগার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা।
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি আন্দোলনকারীরা কলেজের প্রধান ফটকে "তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়" নামে একটি ব্যানার টানিয়ে দেন। এরপর, ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিং এলাকায় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এর পরদিন তারা "ক্লোজডাউন তিতুমীর" কর্মসূচির মাধ্যমে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়, ৩ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই কমিটি যথাযথভাবে কাজ করছে না, যার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
গত সোমবার তিতুমীর ঐক্য সংগঠন থেকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জানানো হয় যে, যদি সরকার দাবির ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেয় এবং মঙ্গলবার থেকে "শাটডাউন তিতুমীর" কর্মসূচি পালন করছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তাদের দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিবেচনায় বিশ্ব ইজতেমার কারণে রোববার পর্যন্ত সড়ক অবরোধ স্থগিত রাখা হয়েছে।
সরকার যদি দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হলে তিতুমীর কলেজ দেশের অন্যতম বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হতে পারে, যা উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। তবে প্রশাসন এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি, ফলে আন্দোলন কবে নাগাদ শেষ হবে, তা অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
সরকারি ঘোষণা না এলে সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের
শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। শনিবার বিকেল ৪টার মধ্যে সরকারিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা না এলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের নেতা নায়েক নূর মোহাম্মদ বলেন, "আজ বিকেল ৪টার মধ্যে যদি সরকার আমাদের দাবির ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেয়, তাহলে আমরা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করব।"
এদিকে, অনশনরত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, "আমরা আজ বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। যদি এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা না আসে, তবে শিক্ষার্থীরা যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটিই চূড়ান্ত হবে।"
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্ব ইজতেমার কারণে রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত থাকবে, তবে তাদের আমরণ অনশন অব্যাহত থাকবে।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রতিষ্ঠানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম তিতুমীর ঐক্য সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
১. রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দিয়ে আনুষ্ঠানিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা।
২. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন: দ্রুত প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
৩. আবাসন সুবিধা নিশ্চিত: শতভাগ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তাদের আবাসিক ব্যয় বহন করা।
৪. নতুন বিভাগ সংযোজন: আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন আইন এবং সাংবাদিকতা বিভাগ চালু করা।
৫. যোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ: বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বজায় রাখতে পিএইচডিধারী ও অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।
৬. গবেষণার মানোন্নয়ন: আসন সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে শিক্ষার মান উন্নত করা এবং গবেষণাগার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা।
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি আন্দোলনকারীরা কলেজের প্রধান ফটকে "তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়" নামে একটি ব্যানার টানিয়ে দেন। এরপর, ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিং এলাকায় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এর পরদিন তারা "ক্লোজডাউন তিতুমীর" কর্মসূচির মাধ্যমে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়, ৩ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই কমিটি যথাযথভাবে কাজ করছে না, যার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
গত সোমবার তিতুমীর ঐক্য সংগঠন থেকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জানানো হয় যে, যদি সরকার দাবির ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেয় এবং মঙ্গলবার থেকে "শাটডাউন তিতুমীর" কর্মসূচি পালন করছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তাদের দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিবেচনায় বিশ্ব ইজতেমার কারণে রোববার পর্যন্ত সড়ক অবরোধ স্থগিত রাখা হয়েছে।
সরকার যদি দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হলে তিতুমীর কলেজ দেশের অন্যতম বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হতে পারে, যা উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। তবে প্রশাসন এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি, ফলে আন্দোলন কবে নাগাদ শেষ হবে, তা অনিশ্চিত রয়ে গেছে।