রাজধানীর গুলশানের একটি বাড়িতে মধ্যরাতে দরজা ভেঙে ‘তল্লাশির’ নামে ঢুকে পড়ে একদল ব্যক্তি। তাদের দাবি, এটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমামের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের বাড়ি।
হামলাকারীদের ভাষ্য, বাড়িটিতে অবৈধ অস্ত্র ও ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারীরা লুকিয়ে আছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে তারা তল্লাশি চালাতে সেখানে যান। তবে ঘণ্টাখানেক পর সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ বিষয়ে গুলশান থানার ওসিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রথমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে রাত ২টার দিকে গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান বলেন, "এটি তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর বাড়ি, যার সঙ্গে ২০-২৫ বছর আগেই তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। বাড়িতে টাকা ও অস্ত্র আছে এমন অভিযোগ তুলে ছাত্র পরিচয়ে কিছু লোকজন মিছিল দিয়ে ঢুকে পড়ে। ধারণা করছি, তাদের মধ্যে কিছু বহিরাগতও ছিল।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই, তখন হামলাকারীরা নেমে যাচ্ছিল। তারা বাড়িটির আসবাবপত্র তছনছ করে ফেলে। এখন মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।"
গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আল আমিন হোসাইন বলেন, "বাড়িতে আওয়ামী লীগের দোসর লুকিয়ে আছে এবং বিপুল অর্থ ও অস্ত্র মজুদ আছে—এমন অভিযোগ তুলে কিছু লোক বাড়িটির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তারা দ্রুত বের হয়ে যায়।"
তিনি আরও জানান, "তল্লাশির পর বাড়িতে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় কেয়ারটেকারসহ তিনজন বাড়িতে ছিলেন, তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।"
তানভীর ইমামের সঙ্গে বাড়ির সম্পর্ক নেই
বাসার তত্ত্বাবধায়ক ও গাড়িচালক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, "এটি এইচ টি ইমামের বাড়ি নয়, এটি রহমান সাহেবের বাড়ি। রহমান সাহেবের মেয়ের সঙ্গে তানভীর ইমামের বিয়ে হয়েছিল, তবে ২০০১ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বাড়িটি বর্তমানে রহমান সাহেবের মেয়ে ব্যবহার করছেন।"
ফেসবুক লাইভে হামলার দৃশ্য
হামলার দৃশ্য ফেসবুক লাইভে প্রচার করেছে কয়েকটি টেলিভিশন। এতে দেখা যায়, ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ স্লোগান দিয়ে বাড়ির দরজা ভেঙে লোকজন ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা আলমারি, জুতার বাক্স, বিছানাপত্রসহ বিভিন্ন আসবাব তছনছ করে।
সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীদের থামানোর কোনো উদ্যোগ নেননি।
হামলাকারীদের নেতৃত্বে থাকা জাতীয়তাবাদী চালক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খন্দকার দাবি করেন, "ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারী আওয়ামী লীগের লোকজন এখানে লুকিয়ে আছে। পাশাপাশি এখানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও অর্থ মজুদ থাকার তথ্য পেয়েছিলাম। সেনাবাহিনীকে জানালে তারা পুলিশকে যোগাযোগ করতে বলে। পরে আমরা নিজেরাই তল্লাশি করতে ঢুকি।"
তবে তল্লাশি শেষে তারা কিছুই পাননি বলে জানান।
তানভীর ইমামের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের মতো তানভীর ইমাম এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
গত বছরের ৮ অক্টোবর আদালতের আদেশে তানভীর ইমাম ও তাঁর স্ত্রী মাহিন ইমামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি তাঁদের ও তাঁদের মেয়ের ৬৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয় আদালত। এসব হিসাবে ২০ কোটি ২৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা রয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি তাঁদের স্থাবর সম্পদও জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫
রাজধানীর গুলশানের একটি বাড়িতে মধ্যরাতে দরজা ভেঙে ‘তল্লাশির’ নামে ঢুকে পড়ে একদল ব্যক্তি। তাদের দাবি, এটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমামের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের বাড়ি।
হামলাকারীদের ভাষ্য, বাড়িটিতে অবৈধ অস্ত্র ও ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারীরা লুকিয়ে আছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে তারা তল্লাশি চালাতে সেখানে যান। তবে ঘণ্টাখানেক পর সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ বিষয়ে গুলশান থানার ওসিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রথমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে রাত ২টার দিকে গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান বলেন, "এটি তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর বাড়ি, যার সঙ্গে ২০-২৫ বছর আগেই তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। বাড়িতে টাকা ও অস্ত্র আছে এমন অভিযোগ তুলে ছাত্র পরিচয়ে কিছু লোকজন মিছিল দিয়ে ঢুকে পড়ে। ধারণা করছি, তাদের মধ্যে কিছু বহিরাগতও ছিল।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই, তখন হামলাকারীরা নেমে যাচ্ছিল। তারা বাড়িটির আসবাবপত্র তছনছ করে ফেলে। এখন মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।"
গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আল আমিন হোসাইন বলেন, "বাড়িতে আওয়ামী লীগের দোসর লুকিয়ে আছে এবং বিপুল অর্থ ও অস্ত্র মজুদ আছে—এমন অভিযোগ তুলে কিছু লোক বাড়িটির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তারা দ্রুত বের হয়ে যায়।"
তিনি আরও জানান, "তল্লাশির পর বাড়িতে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় কেয়ারটেকারসহ তিনজন বাড়িতে ছিলেন, তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।"
তানভীর ইমামের সঙ্গে বাড়ির সম্পর্ক নেই
বাসার তত্ত্বাবধায়ক ও গাড়িচালক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, "এটি এইচ টি ইমামের বাড়ি নয়, এটি রহমান সাহেবের বাড়ি। রহমান সাহেবের মেয়ের সঙ্গে তানভীর ইমামের বিয়ে হয়েছিল, তবে ২০০১ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বাড়িটি বর্তমানে রহমান সাহেবের মেয়ে ব্যবহার করছেন।"
ফেসবুক লাইভে হামলার দৃশ্য
হামলার দৃশ্য ফেসবুক লাইভে প্রচার করেছে কয়েকটি টেলিভিশন। এতে দেখা যায়, ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ স্লোগান দিয়ে বাড়ির দরজা ভেঙে লোকজন ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা আলমারি, জুতার বাক্স, বিছানাপত্রসহ বিভিন্ন আসবাব তছনছ করে।
সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীদের থামানোর কোনো উদ্যোগ নেননি।
হামলাকারীদের নেতৃত্বে থাকা জাতীয়তাবাদী চালক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খন্দকার দাবি করেন, "ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারী আওয়ামী লীগের লোকজন এখানে লুকিয়ে আছে। পাশাপাশি এখানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও অর্থ মজুদ থাকার তথ্য পেয়েছিলাম। সেনাবাহিনীকে জানালে তারা পুলিশকে যোগাযোগ করতে বলে। পরে আমরা নিজেরাই তল্লাশি করতে ঢুকি।"
তবে তল্লাশি শেষে তারা কিছুই পাননি বলে জানান।
তানভীর ইমামের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের মতো তানভীর ইমাম এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
গত বছরের ৮ অক্টোবর আদালতের আদেশে তানভীর ইমাম ও তাঁর স্ত্রী মাহিন ইমামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি তাঁদের ও তাঁদের মেয়ের ৬৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয় আদালত। এসব হিসাবে ২০ কোটি ২৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা রয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি তাঁদের স্থাবর সম্পদও জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।