alt

নগর-মহানগর

নারীরা নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন: অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

দেশে নারীরা এখন নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন বলে মনে করেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যে পরিবর্তন এসেছে, সেই পরিবর্তনের মধ্যে কিছু গোষ্ঠী তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা নারীর ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, সংখ্যালঘু মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। যারা সংঘবদ্ধ তৎপরতা, মব ভায়োলেন্স (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা) করছে, তাদের প্রতি সরকার নমনীয় হয়ে যাচ্ছে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন। সারা দেশে অব্যাহত নারী-শিশু ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিচার, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকালে ১২ ছাত্রনেতার নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে অপসারণ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ নারী শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত ও সাইবার সুরক্ষা আইন বাতিলের দাবিতে এ সমাবেশ হয়। এর আয়োজন করা হয় ছাত্র-জনতার ব্যানারে।

সমাবেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন তৈরি করা হয়েছে যে নারীর উপস্থিতি, নারীর সক্রিয়তা কমানোর জন্য কিছু গোষ্ঠী তৎপর হয়ে আছে। তারা নারীর অংশগ্রহণ, নারীর সক্রিয়তা, নারীর সরব উপস্থিতি, নারীর যে রাজনৈতিক, সাংগঠনিক, সাংস্কৃতিক তৎপরতা সেটাকে থামানোর চেষ্টা করছে। তারা নারীর সক্রিয়তা পছন্দ করে না, তারা আদিবাসী পছন্দ করে না, সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বিভাজন তৈরি করে, তারা শাপলা-শাহবাগ বিভাজন তৈরি করে।’

ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিষয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আজকে যেকোনো বয়সের নারী, সেটা শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের নারী, যেকোনো ধর্মের নারী, যেকোনো জাতির, ভাষার নারী নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন। সংখ্যালঘু মানুষ নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন, সংখ্যাগুরু মানুষও নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন।’

শ্রমিক জনগোষ্ঠী জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে বুক আগলে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, কিন্তু বিগত কয়েক মাসে লক্ষাধিক শ্রমিক নতুন করে বেকার হয়েছেন। কারখানা বন্ধ হয়েছে। সরকারও দায়িত্ব নেয়নি।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বসুন্ধরা শিল্পগোষ্ঠীর যে মালিক, তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। মুনিয়ার কথা জানেন। সেই বসুন্ধরা গোষ্ঠীর মালিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আছে। অথচ সেই মালিকেরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে প্রকাশ্যে সভা করছে। সভা করে তাদের ঋণের যে সুবিধা সেই সুবিধা নিচ্ছে। রি-শিডিউল (পুনঃ তফসিল) করার অধিকার পেয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যে।’

সরকারের দুটি ভূমিকা দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, শ্রমিকেরা যখন বকেয়া মজুরির দাবি, শিক্ষকেরা কাজের নিরাপত্তা, মেয়েরা যখন ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন করছে, তখন সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি ভয়ংকর রকম আগ্রাসী হয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করছে। কিন্তু যেসব গোষ্ঠী ধর্মীয়, লিঙ্গীয়, জাতিগত ও শ্রেণগত বৈষম্যের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, কিছু লোক সংঘবদ্ধ তৎপরতা, মব ভায়োলেন্স (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা) করছে, তাদের প্রতি সরকার নমনীয় হয়ে যাচ্ছে।

ছাত্র-জনতার সমাবেশের পাশেই সমাবেশ করছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির নেতা-কর্মীদের দেওয়া ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ স্লোগানটি উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগেই একটা স্লোগান শুনলাম, দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা। এই স্লোগান স্বাগত জানাই, দিল্লির কোনো আধিপত্য বাংলাদেশে চলবে না।...আমি তাদের কাছে আহ্বান জানাই, এই স্লোগানের পাশাপাশি সুনির্দিষ্টভাবে দিল্লি কীভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আছে বাংলাদেশে সেই বিষয়গুলো স্পষ্ট করুন।’

দিল্লি, ইসলামাবাদের, ওয়াশিংটনের, বেইজিং, মস্কোর—কোনো আধিপত্য বাংলাদেশে চলবে না বলেও উল্লেখ করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি আরও বলেন, সরকারের পেছনে যে স্থায়ী সরকার আছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। স্থায়ী সরকার কারা—সামরিক বাহিনী, স্থায়ী সরকার কারা সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, বহুজাতিক কোম্পানি এবং বাংলাদেশের বৃহৎ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, বিশ্বব্যাংক আইএমএফ–এডিবির মতো প্রতিষ্ঠান। যে সরকারই আসুক এদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে এরা যদি একই আধিপত্য বিস্তার করে, তাহলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের যাত্রা কখনোই সম্পন্ন হবে না।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার। এতে সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিসটেমসের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক শামীম ইমাম বক্তব্য দেন। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বামপন্থী বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশের শুরুতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন উদীচী ও বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা।

ছবি

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের নতুন সিইও কামাল আকবর, স্নিগ্ধ পদত্যাগ করে পর্ষদে

ছবি

দুবাইয়ে ফ্ল্যাট জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ: বেনজীরের মেয়ের বিরুদ্ধে আদালতের আদেশ

ছবি

‘‌নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করা হোক’

ছবি

ক্যান্টনমেন্টে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষার্থীকে ফেলে দিল ছিনতাইকারীরা

ছবি

বিআরটিএ’র ৩৫ কার্যালয়ে ঘুষ-দালালচক্র বিরোধী দুদকের অভিযান

ছবি

জাহাজবাড়িতে ‘জঙ্গিবিরোধী’ অভিযানঃ সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও দুইজনকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

ছবি

শ্রমিক নিহতের প্রতিবাদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ, সোয়া দুই ঘণ্টা পর যান চলাচল শুরু

ছবি

বেইলি রোডে বহুতল ভবনে আগুন, ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস

লোকজন নিয়ে রাতে বাসায় ঢুকে ‘ভাঙচুর ও অর্থ আদায়’, কলাবাগান থানার ওসি ও দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত

ছবি

সাবেক বিমান প্রধান আব্দুল হান্নানসহ ছয়জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

ছবি

শাপলা চত্বরের ঘটনায় অর্ধেক মামলা নিষ্পত্তি, বাকিগুলো তদন্তাধীন

ছবি

নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে মামলা পথে দুদক, সন্দেহজনক লেনদেন শত কোটি টাকা

ছবি

গাজীপুরে গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ পাঁচজনের সবাই মারা গেলেন

ছবি

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলায় উদ্বেগ সম্পাদক পরিষদের, সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি মাহ্ফুজ আনামের

ছবি

এনায়েত উল্লাহর পরিবারভুক্ত কোম্পানির ১৯০টি যানবাহন জব্দের আদেশ

ছবি

পল্টনের সাব্বির টাওয়ারে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস

ছবি

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত কয়েকজন

ছবি

খিলক্ষেত রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় যুবক নিহত, কিশোর আহত

ছবি

খিলগাঁওয়ে ভবনের লিফটের ফাঁকা জায়গা থেকে নিরাপত্তাকর্মীর লাশ উদ্ধার

কারওয়ান বাজারে বাইকের ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু, বাইক আরোহী দম্পতি আহত

ছবি

বনানীতে গাড়ি চাপায় নিহত ১

ছবি

নসরুল হামিদের গুলশানের ২০০ কোটি টাকার জমি জব্দের আদেশ

ছবি

শেয়ার ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ: বসুন্ধরা চেয়ারম্যানসহ পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান চলছে

ছবি

অধ্যক্ষকে হেনস্তার প্রতিবাদে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও ইন্টার্নি চিকিৎসকরা

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হিসেবে আনসার উদ্দিন খান পাঠান নিয়োগপ্রাপ্ত

ছবি

চাকরি স্থায়ীকরণ ও বকেয়া বেতনের দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ফটকে তালা

ছবি

ছয় দফা দাবিতে পলিটেকনিকে তালা ঝুলিয়ে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি

ছবি

টঙ্গীতে ছাঁটাইকৃত ও নিয়মিত শ্রমিকদের সংঘর্ষ, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

ছবি

দুদক অনুসন্ধান করছে নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে

ছবি

মানহানির মামলায় বাসসের এমডি মাহবুব মোর্শেদের জামিন

ছবি

ইসির গেজেট: ঢাকা দক্ষিণ সিটির নতুন মেয়র ইশরাক হোসেন

ছবি

এস আলম গ্রুপের স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও তেল কারখানার জমি নিলামে তুলেছে ইসলামী ব্যাংক

সিলেট বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের কমিটি গঠন

ছবি

দক্ষিণ বনশ্রীতে আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ড, ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে

ছবি

সিদ্ধেশ্বরীতে চলন্ত গাড়ি থেকে ছিনতাই, নারী গুরুতর আহত

ছবি

দুদক শুরু করেছে দুই উপদেষ্টার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত

tab

নগর-মহানগর

নারীরা নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন: অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

দেশে নারীরা এখন নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন বলে মনে করেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যে পরিবর্তন এসেছে, সেই পরিবর্তনের মধ্যে কিছু গোষ্ঠী তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা নারীর ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, সংখ্যালঘু মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। যারা সংঘবদ্ধ তৎপরতা, মব ভায়োলেন্স (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা) করছে, তাদের প্রতি সরকার নমনীয় হয়ে যাচ্ছে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন। সারা দেশে অব্যাহত নারী-শিশু ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিচার, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকালে ১২ ছাত্রনেতার নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে অপসারণ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ নারী শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত ও সাইবার সুরক্ষা আইন বাতিলের দাবিতে এ সমাবেশ হয়। এর আয়োজন করা হয় ছাত্র-জনতার ব্যানারে।

সমাবেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন তৈরি করা হয়েছে যে নারীর উপস্থিতি, নারীর সক্রিয়তা কমানোর জন্য কিছু গোষ্ঠী তৎপর হয়ে আছে। তারা নারীর অংশগ্রহণ, নারীর সক্রিয়তা, নারীর সরব উপস্থিতি, নারীর যে রাজনৈতিক, সাংগঠনিক, সাংস্কৃতিক তৎপরতা সেটাকে থামানোর চেষ্টা করছে। তারা নারীর সক্রিয়তা পছন্দ করে না, তারা আদিবাসী পছন্দ করে না, সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বিভাজন তৈরি করে, তারা শাপলা-শাহবাগ বিভাজন তৈরি করে।’

ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিষয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আজকে যেকোনো বয়সের নারী, সেটা শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের নারী, যেকোনো ধর্মের নারী, যেকোনো জাতির, ভাষার নারী নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন। সংখ্যালঘু মানুষ নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন, সংখ্যাগুরু মানুষও নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন।’

শ্রমিক জনগোষ্ঠী জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে বুক আগলে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, কিন্তু বিগত কয়েক মাসে লক্ষাধিক শ্রমিক নতুন করে বেকার হয়েছেন। কারখানা বন্ধ হয়েছে। সরকারও দায়িত্ব নেয়নি।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বসুন্ধরা শিল্পগোষ্ঠীর যে মালিক, তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। মুনিয়ার কথা জানেন। সেই বসুন্ধরা গোষ্ঠীর মালিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আছে। অথচ সেই মালিকেরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে প্রকাশ্যে সভা করছে। সভা করে তাদের ঋণের যে সুবিধা সেই সুবিধা নিচ্ছে। রি-শিডিউল (পুনঃ তফসিল) করার অধিকার পেয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যে।’

সরকারের দুটি ভূমিকা দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, শ্রমিকেরা যখন বকেয়া মজুরির দাবি, শিক্ষকেরা কাজের নিরাপত্তা, মেয়েরা যখন ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন করছে, তখন সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি ভয়ংকর রকম আগ্রাসী হয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করছে। কিন্তু যেসব গোষ্ঠী ধর্মীয়, লিঙ্গীয়, জাতিগত ও শ্রেণগত বৈষম্যের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, কিছু লোক সংঘবদ্ধ তৎপরতা, মব ভায়োলেন্স (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা) করছে, তাদের প্রতি সরকার নমনীয় হয়ে যাচ্ছে।

ছাত্র-জনতার সমাবেশের পাশেই সমাবেশ করছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির নেতা-কর্মীদের দেওয়া ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ স্লোগানটি উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগেই একটা স্লোগান শুনলাম, দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা। এই স্লোগান স্বাগত জানাই, দিল্লির কোনো আধিপত্য বাংলাদেশে চলবে না।...আমি তাদের কাছে আহ্বান জানাই, এই স্লোগানের পাশাপাশি সুনির্দিষ্টভাবে দিল্লি কীভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আছে বাংলাদেশে সেই বিষয়গুলো স্পষ্ট করুন।’

দিল্লি, ইসলামাবাদের, ওয়াশিংটনের, বেইজিং, মস্কোর—কোনো আধিপত্য বাংলাদেশে চলবে না বলেও উল্লেখ করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি আরও বলেন, সরকারের পেছনে যে স্থায়ী সরকার আছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। স্থায়ী সরকার কারা—সামরিক বাহিনী, স্থায়ী সরকার কারা সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, বহুজাতিক কোম্পানি এবং বাংলাদেশের বৃহৎ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, বিশ্বব্যাংক আইএমএফ–এডিবির মতো প্রতিষ্ঠান। যে সরকারই আসুক এদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে এরা যদি একই আধিপত্য বিস্তার করে, তাহলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের যাত্রা কখনোই সম্পন্ন হবে না।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার। এতে সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিসটেমসের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক শামীম ইমাম বক্তব্য দেন। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বামপন্থী বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশের শুরুতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন উদীচী ও বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা।

back to top