জনতা ব্যাংকে নিজের মেয়াদকালে ‘সর্বোচ্চ মুনাফা’ হয়েছে বলে আদালতের কাছে দাবি করেছেন ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাত।
বুধবারের শুনানিতে তিনি বলেন, “আমার সময় জনতা ব্যাংকের সর্বোচ্চ প্রফিট (মুনাফা) হয়েছে; সর্বোচ্চ গ্রোথ হয়েছে। আর বলা হচ্ছে আমি নাকি জনতা ব্যাংক ডুবিয়েছি।”
ঋণ জালিয়াতির মামলায় এদিন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে রিমান্ড শুনানি হয় এ অর্থনীতিবিদের।
১০ জুলাই রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
পরদিন তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ।
তবে মামলায় জামিন বা রিমান্ড শুনানির এখতিয়ার সিএমএম আদালতের না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানা।
পরে মামলাটি শুনানির জন্য মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে জামিন ও রিমান্ড শুনানির জন্য হাজির করা হলে জজ জাকির হোসেন গালিব রিমান্ড শুনানি গ্রহণ না করে মামলাটি সিএমএম আদালতে ফেরত পাঠান এবং জামিন আবেদন নাকচ করেন।
বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে তাকে সিএমএম আদালতে তোলা হলে কাঠগড়ায় তোলা হয়। আগে থেকেই আদালতে বসে থাকা দুই মেয়ে বাবার কাছে গিয়ে কথা বলেন। বড় মেয়ের কোলে থাকা নাতিকে কোলে নেন বারকাত। ছোট মেয়েকেও কাছে ডাকেন এবং বুকে টেনে নেন। এসময় বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আদালতের কর্মচারী সবাইকে সতর্ক করেন, মেয়েরা বেঞ্চে গিয়ে বসে পড়েন।
বিকাল ৩টা ৪৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে এসে রিমান্ড শুনানি শুরু করেন।
দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আসামির তিন দিনের রিমান্ডের পক্ষে বলেন, আবুল বারকাত ক্ষমতা ব্যবহার করে ২৯৭ কোটি টাকার অবৈধ ঋণ দিয়েছেন। তিন কোটি টাকার সম্পদের বিপরীতে এত বড় ঋণ মঞ্জুর করা হয়।
আবুল বারকাতের আইনজীবী শাহিনুর রহমান রিমান্ডের বিরোধিতা করেন। পরে আদালত তার বক্তব্য শুনতে চান।
বারকাত বলেন, “জীবনে প্রথম এভাবে আদালতে দাঁড়িয়ে আছি। আমি একজন শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪২ বছর শিক্ষকতা করেছি। ঘটনাচক্রে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হই। চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালনকালে দুই শতাধিক বোর্ড মিটিং করেছি। এই ঋণের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে এনওসির জন্য পাঠাই। যাদের নাম বলা হচ্ছে, তাদের চিনি না। ২০১৩ সালে আমার সময়ে জনতা ব্যাংকের সর্বোচ্চ প্রফিট হয়েছে, সর্বোচ্চ গ্রোথ হয়েছে। আর বলা হচ্ছে আমি জনতা ব্যাংক ডুবিয়েছি। জেনেশুনে কিছু করিনি।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামছুদ্দোহা সুমন বলেন, “দুইটা ব্যাংক ধ্বংস হয়েছে। রিমান্ডে নিলে তথ্য বের হবে। ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে অনেকের নাম আসবে।”
পরে আদালত বলেন, “বিপুল পরিমাণ ঋণ জালিয়াতির ঘটনা। যে প্রপার্টির জন্য ঋণ দেওয়া হয়েছে তা খুব কম। এমন ঘটনা নজীরবিহীন। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে তার অ্যাকশন নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি।”
আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন, যা পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে।
জালিয়াতির মাধ্যমে জনতা ব্যাংক থেকে অ্যাননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি এ মামলা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হুসাইন।
বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
জনতা ব্যাংকে নিজের মেয়াদকালে ‘সর্বোচ্চ মুনাফা’ হয়েছে বলে আদালতের কাছে দাবি করেছেন ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাত।
বুধবারের শুনানিতে তিনি বলেন, “আমার সময় জনতা ব্যাংকের সর্বোচ্চ প্রফিট (মুনাফা) হয়েছে; সর্বোচ্চ গ্রোথ হয়েছে। আর বলা হচ্ছে আমি নাকি জনতা ব্যাংক ডুবিয়েছি।”
ঋণ জালিয়াতির মামলায় এদিন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে রিমান্ড শুনানি হয় এ অর্থনীতিবিদের।
১০ জুলাই রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
পরদিন তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ।
তবে মামলায় জামিন বা রিমান্ড শুনানির এখতিয়ার সিএমএম আদালতের না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানা।
পরে মামলাটি শুনানির জন্য মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে জামিন ও রিমান্ড শুনানির জন্য হাজির করা হলে জজ জাকির হোসেন গালিব রিমান্ড শুনানি গ্রহণ না করে মামলাটি সিএমএম আদালতে ফেরত পাঠান এবং জামিন আবেদন নাকচ করেন।
বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে তাকে সিএমএম আদালতে তোলা হলে কাঠগড়ায় তোলা হয়। আগে থেকেই আদালতে বসে থাকা দুই মেয়ে বাবার কাছে গিয়ে কথা বলেন। বড় মেয়ের কোলে থাকা নাতিকে কোলে নেন বারকাত। ছোট মেয়েকেও কাছে ডাকেন এবং বুকে টেনে নেন। এসময় বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আদালতের কর্মচারী সবাইকে সতর্ক করেন, মেয়েরা বেঞ্চে গিয়ে বসে পড়েন।
বিকাল ৩টা ৪৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে এসে রিমান্ড শুনানি শুরু করেন।
দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আসামির তিন দিনের রিমান্ডের পক্ষে বলেন, আবুল বারকাত ক্ষমতা ব্যবহার করে ২৯৭ কোটি টাকার অবৈধ ঋণ দিয়েছেন। তিন কোটি টাকার সম্পদের বিপরীতে এত বড় ঋণ মঞ্জুর করা হয়।
আবুল বারকাতের আইনজীবী শাহিনুর রহমান রিমান্ডের বিরোধিতা করেন। পরে আদালত তার বক্তব্য শুনতে চান।
বারকাত বলেন, “জীবনে প্রথম এভাবে আদালতে দাঁড়িয়ে আছি। আমি একজন শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪২ বছর শিক্ষকতা করেছি। ঘটনাচক্রে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হই। চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালনকালে দুই শতাধিক বোর্ড মিটিং করেছি। এই ঋণের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে এনওসির জন্য পাঠাই। যাদের নাম বলা হচ্ছে, তাদের চিনি না। ২০১৩ সালে আমার সময়ে জনতা ব্যাংকের সর্বোচ্চ প্রফিট হয়েছে, সর্বোচ্চ গ্রোথ হয়েছে। আর বলা হচ্ছে আমি জনতা ব্যাংক ডুবিয়েছি। জেনেশুনে কিছু করিনি।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামছুদ্দোহা সুমন বলেন, “দুইটা ব্যাংক ধ্বংস হয়েছে। রিমান্ডে নিলে তথ্য বের হবে। ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে অনেকের নাম আসবে।”
পরে আদালত বলেন, “বিপুল পরিমাণ ঋণ জালিয়াতির ঘটনা। যে প্রপার্টির জন্য ঋণ দেওয়া হয়েছে তা খুব কম। এমন ঘটনা নজীরবিহীন। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে তার অ্যাকশন নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি।”
আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন, যা পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে।
জালিয়াতির মাধ্যমে জনতা ব্যাংক থেকে অ্যাননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি এ মামলা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হুসাইন।