রাশেদ খান মেননের অভিমত
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বেলেছেন, পরিকল্পনাহীনতাই যেন আমাদের পরিকল্পনা। এত বড় মেট্রোরেলের প্রকল্প হচ্ছে। কিন্তু মেট্রোরেলের নিচের স্টেশন নিয়ে কোনো পরিকল্পনাই নেই। কদিন পরে সেখানেই তো যানজট সৃষ্টি হবে।
মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) ‘বঙ্গবন্ধুর নগর ভাবনা ও বাংলাদেশ ২০৪১: স্বপ্ন, সম্ভাবনা ও বাস্তবায়নের পথনকশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলে রাশেদ খান মেনন। গুলশানে একটি হোটেলে ওই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) কিন্তু এখনো বাস্তবায়নের মুখ দেখায়নি। অথচ এর কাজ কত কত বছর ধরে চলছে। এ ড্যাপ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা ও সভার সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ভূমিদস্যুরা কীভাবে বচসা করেছেন সেটাও দেখা গেছে। জনপ্রতিনিধিরা এতে সম্পৃক্ত না থাকায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা করে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও সবাইকে সমন্বিত হয়ে কাজ করতে হবে। সেটা করতে পারলেই কেবল উন্নয়নের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
ঢাকামুখী অভিবাসনের কথা উল্লেখ করে তাপস বলেন, শুধু ঢাকাতেই ৫টি মৌলিক অধিকার (শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র, বাসসস্থান ও চিকিৎসা) পুরোটা পূরণ হয়। ঢাকার বাইরে যখন কোনো পরিকল্পনা করা হয়, তখন হয়তো, ওই মৌলিক অধিকারের একটি বা দুটি পূরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সামগ্রিকভাবে সবগুলোর পূরণের পরিকল্পনা করা হয় না।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাজের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা এখন পর্যন্ত যে কাজগুলো করেছে, আমি মনে করি এর মধ্যে একটি কাজই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আর সেটি হচ্ছে, ড্যাপ। এ ছাড়া রাজউককে সমাদৃত করার মতো অন্য কোনো কাজ নেই। এ নিয়ে যতই সমালোচনা হোক, ৫০ বছর পরে এটাই হয়তো ঢাকার একমাত্র কাঠামো বা হাতিয়ার থাকবে, যেটার ওপরে ঢাকার ভবিষ্যৎ ভিত্তি রচনা হতে পারে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘আফসোস লাগে এমপিরা (সংসদ সদস্য), মন্ত্রীরা, আমলারা বিশ্ব ঘুরি, উন্নয়ন দেখে আসি। কিন্তু ফিরে এসে সেগুলোর আর বাস্তবায়ন করি না। এর একমাত্র কারণ, আমাদের সদিচ্ছার অভাব। আমরা যদি উন্নত বিশ্বে গিয়ে শপিং করা, বিলাসিতা করা ইত্যাদিতে সময় না কাটিয়ে সেসব দেশের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম অনুসরণও করি, তাহলেও তা বড় ধরনের সুফল বয়ে আনবে।’
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গোলটেবিল বৈঠকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ না করে কুক্ষিগত করে রাখার প্রচেষ্টা এবং প্রশাসনিক পদ্ধতি পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। এ আলোচনায় তিনি বলেন, একটি স্কুল তৈরিতে যদি মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, সুপারিশ লাগে, ঢাকায় আসতে হয়, সচিবালয়ে যেতে হয়, তাহলে আগে যেখানে ৫ হাজার টাকা দুর্নীতি হতো, ঢাকায় আসার কারণে সেখানে ৫০ হাজার টাকা দুর্নীতি হবে। ঢাকাকে বাঁচানোর জন্য তিনি ঢাকার বাইরের শহরগুলোকে, বিশেষভাবে উপজেলা ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে বলেন।
বৈঠকে উপস্থিত অন্যদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান, শরীয়তপুর-৩ এর সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, সিলেট-৩ এর সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান, গাইবান্ধা-১ এর সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি, সংরক্ষিত নারী আসন-১ এর সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল, নগর গবেষণা কেন্দ্রের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম মর্তুজা ও বুয়েটের অধ্যাপক ইসরাত ইসলাম আলোচনা করেন।
বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজার সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালনা করেন।
রাশেদ খান মেননের অভিমত
বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বেলেছেন, পরিকল্পনাহীনতাই যেন আমাদের পরিকল্পনা। এত বড় মেট্রোরেলের প্রকল্প হচ্ছে। কিন্তু মেট্রোরেলের নিচের স্টেশন নিয়ে কোনো পরিকল্পনাই নেই। কদিন পরে সেখানেই তো যানজট সৃষ্টি হবে।
মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) ‘বঙ্গবন্ধুর নগর ভাবনা ও বাংলাদেশ ২০৪১: স্বপ্ন, সম্ভাবনা ও বাস্তবায়নের পথনকশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলে রাশেদ খান মেনন। গুলশানে একটি হোটেলে ওই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) কিন্তু এখনো বাস্তবায়নের মুখ দেখায়নি। অথচ এর কাজ কত কত বছর ধরে চলছে। এ ড্যাপ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা ও সভার সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ভূমিদস্যুরা কীভাবে বচসা করেছেন সেটাও দেখা গেছে। জনপ্রতিনিধিরা এতে সম্পৃক্ত না থাকায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা করে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও সবাইকে সমন্বিত হয়ে কাজ করতে হবে। সেটা করতে পারলেই কেবল উন্নয়নের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
ঢাকামুখী অভিবাসনের কথা উল্লেখ করে তাপস বলেন, শুধু ঢাকাতেই ৫টি মৌলিক অধিকার (শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র, বাসসস্থান ও চিকিৎসা) পুরোটা পূরণ হয়। ঢাকার বাইরে যখন কোনো পরিকল্পনা করা হয়, তখন হয়তো, ওই মৌলিক অধিকারের একটি বা দুটি পূরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সামগ্রিকভাবে সবগুলোর পূরণের পরিকল্পনা করা হয় না।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাজের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা এখন পর্যন্ত যে কাজগুলো করেছে, আমি মনে করি এর মধ্যে একটি কাজই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আর সেটি হচ্ছে, ড্যাপ। এ ছাড়া রাজউককে সমাদৃত করার মতো অন্য কোনো কাজ নেই। এ নিয়ে যতই সমালোচনা হোক, ৫০ বছর পরে এটাই হয়তো ঢাকার একমাত্র কাঠামো বা হাতিয়ার থাকবে, যেটার ওপরে ঢাকার ভবিষ্যৎ ভিত্তি রচনা হতে পারে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘আফসোস লাগে এমপিরা (সংসদ সদস্য), মন্ত্রীরা, আমলারা বিশ্ব ঘুরি, উন্নয়ন দেখে আসি। কিন্তু ফিরে এসে সেগুলোর আর বাস্তবায়ন করি না। এর একমাত্র কারণ, আমাদের সদিচ্ছার অভাব। আমরা যদি উন্নত বিশ্বে গিয়ে শপিং করা, বিলাসিতা করা ইত্যাদিতে সময় না কাটিয়ে সেসব দেশের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম অনুসরণও করি, তাহলেও তা বড় ধরনের সুফল বয়ে আনবে।’
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গোলটেবিল বৈঠকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ না করে কুক্ষিগত করে রাখার প্রচেষ্টা এবং প্রশাসনিক পদ্ধতি পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। এ আলোচনায় তিনি বলেন, একটি স্কুল তৈরিতে যদি মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, সুপারিশ লাগে, ঢাকায় আসতে হয়, সচিবালয়ে যেতে হয়, তাহলে আগে যেখানে ৫ হাজার টাকা দুর্নীতি হতো, ঢাকায় আসার কারণে সেখানে ৫০ হাজার টাকা দুর্নীতি হবে। ঢাকাকে বাঁচানোর জন্য তিনি ঢাকার বাইরের শহরগুলোকে, বিশেষভাবে উপজেলা ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে বলেন।
বৈঠকে উপস্থিত অন্যদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান, শরীয়তপুর-৩ এর সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, সিলেট-৩ এর সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান, গাইবান্ধা-১ এর সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি, সংরক্ষিত নারী আসন-১ এর সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল, নগর গবেষণা কেন্দ্রের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম মর্তুজা ও বুয়েটের অধ্যাপক ইসরাত ইসলাম আলোচনা করেন।
বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজার সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালনা করেন।