alt

নগর-মহানগর

বায়ুদূষণ কমাতে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে মানববন্ধন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২২ মে ২০২৩

শাহবাগ চত্বরে আজ সোমবার সকালেবায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর উদ্যোগে বায়ুদূষণ কমাতে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ আয়োজনে সহ-আয়োজক হিসেবে ছিলেন বিএনসিএ, বারসিক, সেভ ফিউচার বাংলাদেশ, জিএলটিএস, গ্রীন ভয়েজ, পরিবেশ উদ্যোগ, সিপিআরডি, সিজিইডি নির্বাহী পরিচালক এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক ও ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির, বারসিক এর সমন্বয়কারী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সিজিইডি এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুল ওহাব, বিএনসিএ সহ-সমন্বয় শামস সুমন, গ্রীন ভয়েজ এর সহ-সমন্বয়ক হুমায়ুন কবির সুমন, সিপিইডি এর ইমরান সরকার, পরিবেশ উদ্যোগ এর সমন্বয়ক মাহমুদা ইসলাম এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান।

বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের পরিবেশ দূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিভিন্ন শহর ধীরে ধীরে বসবাসের যোগ্যতা হারাচ্ছে। সারা দেশে প্রবাহমান তীব্র দাবদাহের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি বায়ুদূষণও দায়ী। ধুলিকণা এবং দূষিত গ্যাসের তাপ শোষণ করার ক্ষমতা থাকার কারণে বর্তমানে অত্যধিক দূষিত বায়ুতে অবস্থিত ধুলিকণা এবং গ্যাসীয় পদার্থগুলো সূর্যের তাপমাত্রাকে শোষণ করে তাপ প্রবাহ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি সালাফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, কার্বন মনো অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। সুতরাং তাপমাত্রার বৃদ্ধি কমাতে বায়ু দূষণ কমানো জরুরি। অথচ দেশে বায়ুদূষণ কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সমন্বিত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। বরং প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণের নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। অতি দ্রুত বায়ুদূষণ কমাতে পদক্ষেপ না নিলে জনজীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। তিনি বায়ু দূষণ ও তাপমাত্রা কমানোর জন্য বনায়ন ও জলাভূমি সংরক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, বায়ু দূষণের জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে বেড়ে উঠবে। এই জায়গা থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা দায়বদ্ধ। নিশ্চয়ই আমরা ঘুরে দাঁড়াবো। আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তাআলা আমাদেরকে এমন এক দেশ দিয়েছেন যেখানে বীজ বপন করলেই গাছ হয়, শুধু লালন-পালন করলেই আমরা এই ক্ষতিকর বায়ুদূষণ থেকে মুক্তিলাভ করতে পারি। আজকে আমরা সবাই অঙ্গীকারবদ্ধ হই এই শহরকে আবার সাজাবো এবং এর জন্য সকলকে একসাথে হয়ে কাজ করবো।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক ও ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, বাংলাদেশে বায়ুদূষণ এখন একটি উদ্বেগজনক জায়গায় আছে, অথচ রাষ্ট্র কিন্তু এখানে নির্বিকার। এই বায়ুদূষণ নিয়ে যে গবেষণা হচ্ছে বেশির ভাগই হচ্ছে বেসরকারি উদ্যোগে। সরকারি যে কয়েকটা গবেষণা হচ্ছে সেখানে অল্প জায়গাতে বায়ুমান পরিমাপ করা হচ্ছে কিন্তু তা দিয়ে পুরো শহরের যে ক্রান্তিক অবস্থা সেটা বুঝার উপায় নেই। অথচ রাষ্ট্রর উচিত ছিল সরকারি ভাবে সকলকে নিয়ে আলোচনা করা, গবেষণা করা ও করনীয়গুলি ঠিক করা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, বায়ুদূষণের ফলে ধীরে ধীরে আমরা অসুস্থ জাতিতে পরিণত হচ্ছি। সকলকে নিয়মিত ভাবে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের সাথে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। সরকারকে বিভিন্ন পর্যায়ে দূষণের উৎস গুলো কমিয়ে আনতে আইনের প্রয়োগ করতে হবে।

বারসিক এর সমন্বয়কারী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বায়ুদূষণ আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বায়ুদূষণ আমাদের সমস্ত নগর এলাকার মানুষের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। নগর হলো উন্নত জীবন ধারণের স্থান হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু অপরিকল্পিত উন্নয়ন, ইটভাটা, যানবাহন ও শিল্পকারখানার ধোঁয়ার কারণে নগরের বায়ু প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে এবং পরিবেশ দিন দিন বসবাসের জন্য অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। তাই বায়ুদূষণ কমানোর জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী।

ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এর নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বলেন, প্রাণঘাতী বায়ুদূষণের মোকাবিলায় সরকারী পদক্ষেপ কেবল একটি দায়িত্ব নয়, নৈতিক আবশ্যক। কারণ এটি আমদের শিশু ও তরুণদের নির্মল শ্বাস-প্রশ্বাসের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে। বায়ুদূষণের কারণে আমাদের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। তাই সরকারকে দ্বৈতনীতি পরিহার করে পরিবেশগত সুবিচার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হতে হবে আজকেই, এখনই।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা বলেন, ঢাকা একদিকে যেমন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত অন্যদিকে বায়ুদূষণের পরিমাণও দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি, পরিবেশ অবক্ষয় এবং নানাবিধ সম্পদগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে আমাদের প্রচুর গাছ লাগাতে হবে।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নাগরিক ভোগান্তি। এসব ভোগান্তির মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হল বায়ু দূষণ, যা আমাদের জীবনকে করে তুলছে অসহনীয়।

পরিবেশ উদ্যোগ এর সমন্বয়ক মাহমুদা ইসলাম বলেন, বায়ু দূষণে প্রতিনিয়ত ঢাকা প্রথম দশটি শহরের মধ্যে থাকার পরেও কোন সমন্বিত উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। উপরন্ত যেসব আইন বিধিমালা আছে সেগুলো ঠিকমতো মানা হচ্ছে না বরং গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। ধীরে ধীরে আমরা এক ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

সিজিইডি এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুল ওহাব বলেন, এই নগরের বায়ুদূষণ কমানোর জন্য সরকার ও জনগণকে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করতে হবে। যেসব উৎস থেকে বায়ুদূষণ হচ্ছে তা নিরসনের জন্য প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সচেতন হতে হবে।

উক্ত মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ সহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকামন্ডলী এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর গবেষকগণ এবং বারসিক, বিএনসিএ, সেভ ফিউচার বাংলাদেশ, জিএলটিএস, গ্রীন ভয়েজ, পরিবেশ উদ্যোগ, সিপিআরডি, সিজিইডি এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস সহ অন্যান্য পরিবেশবাদী সংস্থার সদস্যবৃন্দ।

উক্ত মানববন্ধনে নিম্মলিখিত ৪টি দাবি ও ১৫ টি সুপারিশ নীতিনির্ধারনীয় পর্যায়ে পর্যালোচনাপূর্বক গ্রহণ করলে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ হবে বলে বক্তরা মত প্রকাশ করে।

বায়তুল মোকাররমে কঠোর নিরাপত্তা

কারফিউ পুরোপুরি তুলে না নেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

ছবি

জনজীবনে স্বস্তি, রাজধানীতে যানজট

ছবি

স্বাভাবিকতার পথে নগরজীবন

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে রামপুরায় বিটিভি ভবনে অগ্নিকাণ্ড

ছবি

বাড্ডায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ, একজন নিহত

ছবি

মেট্রোরেলের মিরপুর অংশে চলাচল বন্ধ

ছবি

বাড্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে পুলিশের রাবার বুলেট ও ছররা গুলিতে আহত অনেকে

ছবি

উত্তাল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, যান চলাচল বন্ধ

ছবি

মিরপুর-১০ রণক্ষেত্র, আ.লীগের সমাবেশ পণ্ড

ছবি

রামপুরা পুলিশ বক্সে আগুন, সড়কে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

ছবি

সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ী-শনির আখড়া

ছবি

সহিংসতা পরিহার করুনঃ পুলিশ সদর দপ্তর

ছবি

ঢাকার শনির আখড়ায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ, শিশুসহ ৬ জন গুলিবিদ্ধ

ছবি

ঢাকায় কোটা সংঘর্ষে নিহত ২ঃ পুলিশ বলছে দায় আন্দোলনকারীদের

ছবি

আজ গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল কর্মসূচি

ছবি

সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ

ছবি

"তাণ্ডবের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের মোতায়েন"

ছবি

"কোটা আন্দোলন: ঢাকা মেডিকেলের সামনে সংঘর্ষ ও হাত বোমা বিস্ফোরণ"

রাজধানীতে গ্যাস সংকট, চুলা জ্বলে না বাসাবাড়িতে

ছবি

ডিএনসিসির চিঠি, ‘আতঙ্কে’ গরুর খামারিরা

ছবি

চার দফা দাবিতে রাজধানীতে হরিজন সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ সমাবেশ

ছবি

প্রবল বর্ষণে রাজধানীতে বিদ্যুতায়িত হয়ে চার শ্রমজীবীর মৃত্যু

৫ বছর পড়ে আছে ৩৮ কোটির সিজেএম ভবন

ছবি

কোটাবিরোধী আন্দোলন: শিক্ষার্থীদের নামে পুলিশের মামলা

ছবি

সকাল থেকে ঝুম বৃষ্টি, ভাসছে ঢাকা

ছবি

বেবিচক এর মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়সমূহের সাথে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর অনু্ষ্ঠান

ছবি

‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানে উত্তাল শাহবাগ, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দিল শিক্ষার্থীরা

ছবি

আত্মসাত মামলা: ইউনূসের আবেদনের রায় ২১ জুলাই

ছবি

এসি নষ্ট, আকাশে ৩৭ মিনিট উড়ে ঢাকায় ফিরল বিমান

ছবি

কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে হরিজনদের ওপর হামলার অভিযোগ

ছবি

বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিপোর্টার্স ফোরামের নেতৃত্বে সবুজ-কাওসার

ছবি

বিসিএস ও মেডিকেল প্রশ্নফাঁসকারীদের বিচার চায় জবি শিক্ষার্থীরা

ছবি

কোটা : ঢাবির পর এবার জবি শিক্ষার্থীদের জিরো পয়েন্ট অবরোধ

ছবি

বাংলা ব্লকেডে’ অচল সড়ক, মেট্রোতে উপচেপড়া ভিড়

ছবি

কোটা : স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ আপিল বিভাগের

tab

নগর-মহানগর

বায়ুদূষণ কমাতে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে মানববন্ধন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ২২ মে ২০২৩

শাহবাগ চত্বরে আজ সোমবার সকালেবায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর উদ্যোগে বায়ুদূষণ কমাতে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ আয়োজনে সহ-আয়োজক হিসেবে ছিলেন বিএনসিএ, বারসিক, সেভ ফিউচার বাংলাদেশ, জিএলটিএস, গ্রীন ভয়েজ, পরিবেশ উদ্যোগ, সিপিআরডি, সিজিইডি নির্বাহী পরিচালক এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক ও ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির, বারসিক এর সমন্বয়কারী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সিজিইডি এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুল ওহাব, বিএনসিএ সহ-সমন্বয় শামস সুমন, গ্রীন ভয়েজ এর সহ-সমন্বয়ক হুমায়ুন কবির সুমন, সিপিইডি এর ইমরান সরকার, পরিবেশ উদ্যোগ এর সমন্বয়ক মাহমুদা ইসলাম এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান।

বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের পরিবেশ দূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিভিন্ন শহর ধীরে ধীরে বসবাসের যোগ্যতা হারাচ্ছে। সারা দেশে প্রবাহমান তীব্র দাবদাহের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি বায়ুদূষণও দায়ী। ধুলিকণা এবং দূষিত গ্যাসের তাপ শোষণ করার ক্ষমতা থাকার কারণে বর্তমানে অত্যধিক দূষিত বায়ুতে অবস্থিত ধুলিকণা এবং গ্যাসীয় পদার্থগুলো সূর্যের তাপমাত্রাকে শোষণ করে তাপ প্রবাহ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি সালাফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, কার্বন মনো অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। সুতরাং তাপমাত্রার বৃদ্ধি কমাতে বায়ু দূষণ কমানো জরুরি। অথচ দেশে বায়ুদূষণ কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সমন্বিত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। বরং প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণের নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। অতি দ্রুত বায়ুদূষণ কমাতে পদক্ষেপ না নিলে জনজীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। তিনি বায়ু দূষণ ও তাপমাত্রা কমানোর জন্য বনায়ন ও জলাভূমি সংরক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, বায়ু দূষণের জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে বেড়ে উঠবে। এই জায়গা থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা দায়বদ্ধ। নিশ্চয়ই আমরা ঘুরে দাঁড়াবো। আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তাআলা আমাদেরকে এমন এক দেশ দিয়েছেন যেখানে বীজ বপন করলেই গাছ হয়, শুধু লালন-পালন করলেই আমরা এই ক্ষতিকর বায়ুদূষণ থেকে মুক্তিলাভ করতে পারি। আজকে আমরা সবাই অঙ্গীকারবদ্ধ হই এই শহরকে আবার সাজাবো এবং এর জন্য সকলকে একসাথে হয়ে কাজ করবো।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক ও ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, বাংলাদেশে বায়ুদূষণ এখন একটি উদ্বেগজনক জায়গায় আছে, অথচ রাষ্ট্র কিন্তু এখানে নির্বিকার। এই বায়ুদূষণ নিয়ে যে গবেষণা হচ্ছে বেশির ভাগই হচ্ছে বেসরকারি উদ্যোগে। সরকারি যে কয়েকটা গবেষণা হচ্ছে সেখানে অল্প জায়গাতে বায়ুমান পরিমাপ করা হচ্ছে কিন্তু তা দিয়ে পুরো শহরের যে ক্রান্তিক অবস্থা সেটা বুঝার উপায় নেই। অথচ রাষ্ট্রর উচিত ছিল সরকারি ভাবে সকলকে নিয়ে আলোচনা করা, গবেষণা করা ও করনীয়গুলি ঠিক করা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, বায়ুদূষণের ফলে ধীরে ধীরে আমরা অসুস্থ জাতিতে পরিণত হচ্ছি। সকলকে নিয়মিত ভাবে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের সাথে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। সরকারকে বিভিন্ন পর্যায়ে দূষণের উৎস গুলো কমিয়ে আনতে আইনের প্রয়োগ করতে হবে।

বারসিক এর সমন্বয়কারী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বায়ুদূষণ আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বায়ুদূষণ আমাদের সমস্ত নগর এলাকার মানুষের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। নগর হলো উন্নত জীবন ধারণের স্থান হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু অপরিকল্পিত উন্নয়ন, ইটভাটা, যানবাহন ও শিল্পকারখানার ধোঁয়ার কারণে নগরের বায়ু প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে এবং পরিবেশ দিন দিন বসবাসের জন্য অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। তাই বায়ুদূষণ কমানোর জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী।

ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এর নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বলেন, প্রাণঘাতী বায়ুদূষণের মোকাবিলায় সরকারী পদক্ষেপ কেবল একটি দায়িত্ব নয়, নৈতিক আবশ্যক। কারণ এটি আমদের শিশু ও তরুণদের নির্মল শ্বাস-প্রশ্বাসের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে। বায়ুদূষণের কারণে আমাদের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। তাই সরকারকে দ্বৈতনীতি পরিহার করে পরিবেশগত সুবিচার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হতে হবে আজকেই, এখনই।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা বলেন, ঢাকা একদিকে যেমন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত অন্যদিকে বায়ুদূষণের পরিমাণও দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি, পরিবেশ অবক্ষয় এবং নানাবিধ সম্পদগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে আমাদের প্রচুর গাছ লাগাতে হবে।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নাগরিক ভোগান্তি। এসব ভোগান্তির মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হল বায়ু দূষণ, যা আমাদের জীবনকে করে তুলছে অসহনীয়।

পরিবেশ উদ্যোগ এর সমন্বয়ক মাহমুদা ইসলাম বলেন, বায়ু দূষণে প্রতিনিয়ত ঢাকা প্রথম দশটি শহরের মধ্যে থাকার পরেও কোন সমন্বিত উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। উপরন্ত যেসব আইন বিধিমালা আছে সেগুলো ঠিকমতো মানা হচ্ছে না বরং গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। ধীরে ধীরে আমরা এক ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

সিজিইডি এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুল ওহাব বলেন, এই নগরের বায়ুদূষণ কমানোর জন্য সরকার ও জনগণকে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করতে হবে। যেসব উৎস থেকে বায়ুদূষণ হচ্ছে তা নিরসনের জন্য প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সচেতন হতে হবে।

উক্ত মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ সহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকামন্ডলী এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর গবেষকগণ এবং বারসিক, বিএনসিএ, সেভ ফিউচার বাংলাদেশ, জিএলটিএস, গ্রীন ভয়েজ, পরিবেশ উদ্যোগ, সিপিআরডি, সিজিইডি এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস সহ অন্যান্য পরিবেশবাদী সংস্থার সদস্যবৃন্দ।

উক্ত মানববন্ধনে নিম্মলিখিত ৪টি দাবি ও ১৫ টি সুপারিশ নীতিনির্ধারনীয় পর্যায়ে পর্যালোচনাপূর্বক গ্রহণ করলে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ হবে বলে বক্তরা মত প্রকাশ করে।

back to top