২০১৪ সালের ৩০শে ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং দুটি অভিযোগে কারাদণ্ড দেন। ছয়টি অভিযোগের মধ্যে একটি থেকে তিনি খালাস পেয়েছিলেন।
২০১৯ সালের ৩১শে অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজহারুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এরপর তা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ওই বছরের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম।
জুলাই অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আপিল বিভাগ চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি রিভিউ শুনে ফের আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেন।
আজ মঙ্গলবার আপিল বিভাগ আগের রায় বাতিল করেছেন, যে রায় আজহারুল ইসলামের সাজা ও মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছিল।
আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিচের অভিযোগগুলো আনা হয়েছিল—
অভিযোগ ১:
১৯৭১ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে ইসলামী ছাত্র সংঘের রংপুর ইউনিটের সভাপতি আজহারুল ইসলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের সহযোগিতায় রংপুর সদর থেকে ১১ জন সাধারণ নাগরিককে অপহরণ করেন। সেনানিবাসে সাতদিন ধরে নির্যাতন করার পর তাদের দখিগঞ্জ শ্মশানে হত্যা করা হয়।
অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায়— মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
আদালত রায়ে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি দোষী সাব্যস্ত নন।
অভিযোগ ২:
১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং জামায়াত সদস্যদের সঙ্গে মিলে মোকসেদপুর গ্রামে আক্রমণ চালান। তারা বাড়িঘরে লুটপাট চালায়, অগ্নিসংযোগ করে এবং অসংখ্য নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করে।
হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার রায়ে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। রায়ে বলা হয় অপরাধ সংঘটনে সক্রিয়ভাবে সহায়তা ও উসকানি দিয়েছেন তিনি।
অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন আজহারুল।
অভিযোগ ৩:
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম রংপুরের ঝাড়ুয়ারবিলের কাছে হিন্দু অধ্যুষিত একাধিক গ্রামে পরিকল্পিত হামলায় অংশ নেন। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং আরও ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়।
গণহত্যা, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের ঘটনায় মানবাতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের (জেসিই) অধীনে দোষী সাব্যস্ত হন আজহারুল। মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
অভিযোগ ৪:
১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে চারজন হিন্দু অধ্যাপক ও একজন অধ্যাপকের স্ত্রীকে অপহরণ করেন। পরে তাদের হত্যা করা হয়।
গণহত্যা, অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় তিনি অপহরণ ও হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে।
অভিযোগ ৫:
১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে রংপুর টাউন হলে বেশ কয়েকজনকে অপহরণ করে আটক রাখা হয়। যেটি ধর্ষণ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
অপহরণ, আটক, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
অভিযোগ ৬:
১৯৭১ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে দুটি ঘটনায় আজহারুল ইসলাম এক যুবককে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার জন্য চড় দেন এবং পরে তার ভাইকে অপহরণ ও নির্যাতনের নির্দেশ দেন। নির্যাতনে ওই ব্যক্তি স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্বের শিকার হন।
অপহরণ, আটক, নির্যাতনের ঘটনায় আংশিকভাবে (শুধুমাত্র দ্বিতীয় ঘটনায়) দোষী সাব্যস্ত হন। এই মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত।
মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
২০১৪ সালের ৩০শে ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং দুটি অভিযোগে কারাদণ্ড দেন। ছয়টি অভিযোগের মধ্যে একটি থেকে তিনি খালাস পেয়েছিলেন।
২০১৯ সালের ৩১শে অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজহারুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এরপর তা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ওই বছরের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম।
জুলাই অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আপিল বিভাগ চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি রিভিউ শুনে ফের আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেন।
আজ মঙ্গলবার আপিল বিভাগ আগের রায় বাতিল করেছেন, যে রায় আজহারুল ইসলামের সাজা ও মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছিল।
আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিচের অভিযোগগুলো আনা হয়েছিল—
অভিযোগ ১:
১৯৭১ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে ইসলামী ছাত্র সংঘের রংপুর ইউনিটের সভাপতি আজহারুল ইসলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের সহযোগিতায় রংপুর সদর থেকে ১১ জন সাধারণ নাগরিককে অপহরণ করেন। সেনানিবাসে সাতদিন ধরে নির্যাতন করার পর তাদের দখিগঞ্জ শ্মশানে হত্যা করা হয়।
অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায়— মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
আদালত রায়ে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি দোষী সাব্যস্ত নন।
অভিযোগ ২:
১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং জামায়াত সদস্যদের সঙ্গে মিলে মোকসেদপুর গ্রামে আক্রমণ চালান। তারা বাড়িঘরে লুটপাট চালায়, অগ্নিসংযোগ করে এবং অসংখ্য নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করে।
হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার রায়ে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। রায়ে বলা হয় অপরাধ সংঘটনে সক্রিয়ভাবে সহায়তা ও উসকানি দিয়েছেন তিনি।
অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন আজহারুল।
অভিযোগ ৩:
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম রংপুরের ঝাড়ুয়ারবিলের কাছে হিন্দু অধ্যুষিত একাধিক গ্রামে পরিকল্পিত হামলায় অংশ নেন। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং আরও ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়।
গণহত্যা, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের ঘটনায় মানবাতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের (জেসিই) অধীনে দোষী সাব্যস্ত হন আজহারুল। মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
অভিযোগ ৪:
১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে চারজন হিন্দু অধ্যাপক ও একজন অধ্যাপকের স্ত্রীকে অপহরণ করেন। পরে তাদের হত্যা করা হয়।
গণহত্যা, অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় তিনি অপহরণ ও হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে।
অভিযোগ ৫:
১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে রংপুর টাউন হলে বেশ কয়েকজনকে অপহরণ করে আটক রাখা হয়। যেটি ধর্ষণ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
অপহরণ, আটক, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
অভিযোগ ৬:
১৯৭১ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে দুটি ঘটনায় আজহারুল ইসলাম এক যুবককে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার জন্য চড় দেন এবং পরে তার ভাইকে অপহরণ ও নির্যাতনের নির্দেশ দেন। নির্যাতনে ওই ব্যক্তি স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্বের শিকার হন।
অপহরণ, আটক, নির্যাতনের ঘটনায় আংশিকভাবে (শুধুমাত্র দ্বিতীয় ঘটনায়) দোষী সাব্যস্ত হন। এই মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত।