বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের দুই ছেলে—গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান (সানভীর) এবং সাফওয়ান সোবহানের যুক্তরাজ্যে সম্পদ পাচারের তথ্য সে দেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
সোমবার রাজধানীতে দুদকের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “আজ আমরা আরও কয়েকটি সম্পত্তির তথ্য যুক্তরাজ্যে পাঠিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে আকবর সোবহান সাহেবের দুই ছেলে, সাফিয়াত ও সাফওয়ানের কিছু সম্পত্তির তথ্য।”
বসুন্ধরা চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি দখল, ঋণের টাকা আত্মসাৎ, অর্থ স্থানান্তর ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ কারণে তাদের তলবও করা হয়েছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামের সম্পদের তথ্যও যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়েছে বলে জানান মোমেন।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, এসব প্রচেষ্টার সুফল অচিরেই পাব।”
দুদকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) সম্প্রতি সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের সম্পদ জব্দের কথা জানায়।
এছাড়া মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান ও তার চাচাতো ভাই আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের যুক্তরাজ্যের সম্পত্তিও জব্দ করেছে এনসিএ।
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে গত সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। সে অভিজ্ঞতার বর্ণনায় মোমেন বলেন, “আমরা আগে থেকেই ঠিক করেছিলাম যে এনসিএ ও আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করব। আমরা পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদের একটি তালিকা ও আদালতের আদেশ দিয়ে জমা দিয়েছি।”
তিনি জানান, এনসিএ ইতোমধ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর জব্দ করা ৩৪৩টি বাড়ির আনুমানিক মূল্য ৭৩.১৫ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,০২৫ কোটি টাকা)। এছাড়া তার প্রায় ২৫ লাখ ডলারের ব্যাংক আমানতও ফ্রিজ করা হয়েছে। অন্য দেশগুলোতেও তার সম্পত্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে ‘মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট’ পাঠানোর কথাও জানান দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “যুক্তরাজ্য প্রথমে সাড়া দিয়েছে।”
লন্ডন সফরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরির কথা জানান মোমেন। এনসিএ বাংলাদেশকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
তবে সম্পদ ফেরত আনতে হলে দেশের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের আদালতেরও সম্মতি প্রয়োজন, বলেন মোমেন। তিনি জানান, “আমরা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান করছি। সব কাজ দুদকের মাধ্যমেই সম্পন্ন হবে। বিএফআইইউ-এর সঙ্গে সমন্বয় করেই আমরা এগোচ্ছি।”
কোনো আপস বা সমঝোতা না করার বিষয়ে তিনি বলেন, “দুদকের মামলা ফৌজদারি প্রকৃতির, তাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুযোগ নেই।”
অর্থ ফেরতের বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সব অর্থ ফেরত আসবে এমন নিশ্চয়তা নেই। তবে প্রমাণ করতে পারলে কিছুটা হলেও ফেরত আনার সম্ভাবনা থাকে।”
আগের সরকারের সময়ও দুদক ব্যবস্থা নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছে, তাদের বিরুদ্ধেও নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তদন্ত হবে। আমরা রাজনৈতিক পক্ষপাত করি না।”
কিছু সম্পদ কেম্যান আইল্যান্ডেও চলে গেছে বলে জানান তিনি। এছাড়া ভারতের সঙ্গে ২০১১ সালের চুক্তি কাজে লাগিয়ে অপরাধী ফেরত আনা সম্ভব হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন মোমেন।
দলীয় নেতাদের বিদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি অনেক সময় মানি লন্ডারিংয়ে সহায়ক হয়।”
সমন্বয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, “দুদকের দৃষ্টিকোণ থেকে সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন সংস্থার কাজ জড়িত হওয়ায় সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে।”
তিনি বলেন, “অনেকেই বিদেশ থেকে বাংলাদেশের সম্পত্তি বিক্রির জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিচ্ছেন—বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ যাচাইয়ে রাজনৈতিক ট্যাগিং থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”
শেষে তিনি বলেন, “দুদককে শক্তিশালী করতে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। তথ্যদাতারা আমাদের অংশীদার। কাগজপত্রসহ অভিযোগ পেলে আমরা বিবেচনা করব। সীমাবদ্ধতা থাকলেও আমরা থেমে থাকব না।”
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের দুই ছেলে—গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান (সানভীর) এবং সাফওয়ান সোবহানের যুক্তরাজ্যে সম্পদ পাচারের তথ্য সে দেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
সোমবার রাজধানীতে দুদকের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “আজ আমরা আরও কয়েকটি সম্পত্তির তথ্য যুক্তরাজ্যে পাঠিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে আকবর সোবহান সাহেবের দুই ছেলে, সাফিয়াত ও সাফওয়ানের কিছু সম্পত্তির তথ্য।”
বসুন্ধরা চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি দখল, ঋণের টাকা আত্মসাৎ, অর্থ স্থানান্তর ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ কারণে তাদের তলবও করা হয়েছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামের সম্পদের তথ্যও যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়েছে বলে জানান মোমেন।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, এসব প্রচেষ্টার সুফল অচিরেই পাব।”
দুদকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) সম্প্রতি সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের সম্পদ জব্দের কথা জানায়।
এছাড়া মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান ও তার চাচাতো ভাই আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের যুক্তরাজ্যের সম্পত্তিও জব্দ করেছে এনসিএ।
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে গত সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। সে অভিজ্ঞতার বর্ণনায় মোমেন বলেন, “আমরা আগে থেকেই ঠিক করেছিলাম যে এনসিএ ও আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করব। আমরা পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদের একটি তালিকা ও আদালতের আদেশ দিয়ে জমা দিয়েছি।”
তিনি জানান, এনসিএ ইতোমধ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর জব্দ করা ৩৪৩টি বাড়ির আনুমানিক মূল্য ৭৩.১৫ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,০২৫ কোটি টাকা)। এছাড়া তার প্রায় ২৫ লাখ ডলারের ব্যাংক আমানতও ফ্রিজ করা হয়েছে। অন্য দেশগুলোতেও তার সম্পত্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে ‘মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট’ পাঠানোর কথাও জানান দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “যুক্তরাজ্য প্রথমে সাড়া দিয়েছে।”
লন্ডন সফরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরির কথা জানান মোমেন। এনসিএ বাংলাদেশকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
তবে সম্পদ ফেরত আনতে হলে দেশের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের আদালতেরও সম্মতি প্রয়োজন, বলেন মোমেন। তিনি জানান, “আমরা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান করছি। সব কাজ দুদকের মাধ্যমেই সম্পন্ন হবে। বিএফআইইউ-এর সঙ্গে সমন্বয় করেই আমরা এগোচ্ছি।”
কোনো আপস বা সমঝোতা না করার বিষয়ে তিনি বলেন, “দুদকের মামলা ফৌজদারি প্রকৃতির, তাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুযোগ নেই।”
অর্থ ফেরতের বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সব অর্থ ফেরত আসবে এমন নিশ্চয়তা নেই। তবে প্রমাণ করতে পারলে কিছুটা হলেও ফেরত আনার সম্ভাবনা থাকে।”
আগের সরকারের সময়ও দুদক ব্যবস্থা নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছে, তাদের বিরুদ্ধেও নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তদন্ত হবে। আমরা রাজনৈতিক পক্ষপাত করি না।”
কিছু সম্পদ কেম্যান আইল্যান্ডেও চলে গেছে বলে জানান তিনি। এছাড়া ভারতের সঙ্গে ২০১১ সালের চুক্তি কাজে লাগিয়ে অপরাধী ফেরত আনা সম্ভব হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন মোমেন।
দলীয় নেতাদের বিদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি অনেক সময় মানি লন্ডারিংয়ে সহায়ক হয়।”
সমন্বয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, “দুদকের দৃষ্টিকোণ থেকে সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন সংস্থার কাজ জড়িত হওয়ায় সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে।”
তিনি বলেন, “অনেকেই বিদেশ থেকে বাংলাদেশের সম্পত্তি বিক্রির জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিচ্ছেন—বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ যাচাইয়ে রাজনৈতিক ট্যাগিং থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”
শেষে তিনি বলেন, “দুদককে শক্তিশালী করতে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। তথ্যদাতারা আমাদের অংশীদার। কাগজপত্রসহ অভিযোগ পেলে আমরা বিবেচনা করব। সীমাবদ্ধতা থাকলেও আমরা থেমে থাকব না।”