রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মামলার বাদী ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান।
গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘ঠিক কী কারণে তরুণী আত্মহত্যা করলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ (সোমবার) রাতেই তারা সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস জব্দ করেছেন।‘
সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান-২-এর ১২০ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামের এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি কুমিল্লার উজির দিঘিরপাড়। এক লাখ টাকা ভাড়ায় মাস দুয়েক আগে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মোসারাত।
বাদী মামলার এজাহারে বলেন, মোসারাত জাহান (২১) এইচ এস সি পরীক্ষার্থী। মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। দুই বছর আগে মামলার আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে মোসারাতের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তাঁরা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় দেখা করতেন এবং সব সময় মোবাইলে কথা বলতেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালে মোসারাতকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে আনভীর রাজধানীর বনানীতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। ২০২০ সালে আনভীরের পরিবার এই সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারে। এরপর আসামির মা মোসারাতকে ‘ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখান’ এবং ‘ঢাকা থেকে চলে যেতে’ বলেন। আসামি ‘কৌশলে’ মোসারাতকে কুমিল্লায় পাঠিয়ে দেন এবং ‘পরে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন’।
এজাহারে আরও বলা হয়, সবশেষ গত ১ মার্চ মোসারাতকে প্ররোচিত করেন আসামি। তিনি বাসা ভাড়া নিতে বাদী নুসরাত ও তার স্বামীর পরিচয়পত্র নেন। ফুসলিয়ে তিনি মোসারাতকে ঢাকায় আনেন। তিনি গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কে বাসা (ফ্ল্যাট-বি-৩) ভাড়া নেন। ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে আনভির ও মুনিয়ার স্বামী-স্ত্রীর মতো ছবি তুলে বাঁধিয়ে রাখা হয়।
বাদী এজাহারে বলেন, তার বোনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামি তাকে বিয়ে করে বিদেশে স্থায়ী হবেন। গত ১ মার্চ থেকে আসামি মাঝেমধ্যে ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করতেন।
বাদী নুসরাত এজাহারে বলেন, ২৩ এপ্রিল তার বোন মুনিয়া তাকে ফোন করে বলেছেন, ‘আনভীর তাকে বকা দিয়ে বলেছেন, কেন তিনি (মোসারাত) ফ্ল্যাটের মালিকের বাসায় গিয়ে ইফতার করেছেন, ছবি তুলেছেন। ফ্ল্যাটের মালিকের স্ত্রী ফেইসবুকে ছবি পোস্ট করেছেন। এ ছবি মালিকের স্ত্রীর ফেইসবুক বন্ধু পিয়াসা দেখেছেন। এখন পিয়াসা তার (আনভিরের) মাকে সবকিছু জানিয়ে দেবেন। তিনি (আনভির) দুবাই যাচ্ছেন, মোসারাত যেন কুমিল্লায় চলে যান। আসামির মা জানতে পারলে তাকে (মোসারাত) ‘মেরে ফেলবেন’।
এজাহারে নুসরাত বলেন, দুদিন পর ২৫ এপ্রিল মোসারাত তাকে ফোন করেন। ওই সময় তিনি কান্নাকাটি করে বলেন, আনভীর তাকে বিয়ে করবেন না। আনভির তাকে বলেছেন, তিনি (মোসারাত) তার শত্রুর সঙ্গে দেখা করেছেন। মোসারাতকে তিনি ছাড়বেন না। আর মোসারাত চিৎকার করে বলেন, ‘আনভির তাকে ধোঁকা’ দিয়েছেন। যেকোনো সময় তার বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাদেরকে (নুসরাতের পরিবার) দ্রুত ঢাকায় আসার জন্য বলেন মোসারাত।
বাদী বলেন তারা ২৫ এপ্রিল ঢাকায় রওয়ানা হন। পথ থেকে তারা মোসারাত মুনিয়াকে বহুবার ফোন করেন কিন্তু তিনি ধরেন নাই। মুনিয়ার গুলশানের বাসায় গিয়ে দরজায় কড়া নাড়লেও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরে মিস্ত্রী এনে তালা ভেঙে দেখা যায় শোবার ঘরে সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া মুনিয়ার দেহ ঝুলছে। পরে পুলিশে খবর দেয়া হয়।
মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১
রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মামলার বাদী ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান।
গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘ঠিক কী কারণে তরুণী আত্মহত্যা করলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ (সোমবার) রাতেই তারা সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস জব্দ করেছেন।‘
সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান-২-এর ১২০ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামের এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি কুমিল্লার উজির দিঘিরপাড়। এক লাখ টাকা ভাড়ায় মাস দুয়েক আগে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মোসারাত।
বাদী মামলার এজাহারে বলেন, মোসারাত জাহান (২১) এইচ এস সি পরীক্ষার্থী। মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। দুই বছর আগে মামলার আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে মোসারাতের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তাঁরা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় দেখা করতেন এবং সব সময় মোবাইলে কথা বলতেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালে মোসারাতকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে আনভীর রাজধানীর বনানীতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। ২০২০ সালে আনভীরের পরিবার এই সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারে। এরপর আসামির মা মোসারাতকে ‘ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখান’ এবং ‘ঢাকা থেকে চলে যেতে’ বলেন। আসামি ‘কৌশলে’ মোসারাতকে কুমিল্লায় পাঠিয়ে দেন এবং ‘পরে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন’।
এজাহারে আরও বলা হয়, সবশেষ গত ১ মার্চ মোসারাতকে প্ররোচিত করেন আসামি। তিনি বাসা ভাড়া নিতে বাদী নুসরাত ও তার স্বামীর পরিচয়পত্র নেন। ফুসলিয়ে তিনি মোসারাতকে ঢাকায় আনেন। তিনি গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কে বাসা (ফ্ল্যাট-বি-৩) ভাড়া নেন। ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে আনভির ও মুনিয়ার স্বামী-স্ত্রীর মতো ছবি তুলে বাঁধিয়ে রাখা হয়।
বাদী এজাহারে বলেন, তার বোনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামি তাকে বিয়ে করে বিদেশে স্থায়ী হবেন। গত ১ মার্চ থেকে আসামি মাঝেমধ্যে ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করতেন।
বাদী নুসরাত এজাহারে বলেন, ২৩ এপ্রিল তার বোন মুনিয়া তাকে ফোন করে বলেছেন, ‘আনভীর তাকে বকা দিয়ে বলেছেন, কেন তিনি (মোসারাত) ফ্ল্যাটের মালিকের বাসায় গিয়ে ইফতার করেছেন, ছবি তুলেছেন। ফ্ল্যাটের মালিকের স্ত্রী ফেইসবুকে ছবি পোস্ট করেছেন। এ ছবি মালিকের স্ত্রীর ফেইসবুক বন্ধু পিয়াসা দেখেছেন। এখন পিয়াসা তার (আনভিরের) মাকে সবকিছু জানিয়ে দেবেন। তিনি (আনভির) দুবাই যাচ্ছেন, মোসারাত যেন কুমিল্লায় চলে যান। আসামির মা জানতে পারলে তাকে (মোসারাত) ‘মেরে ফেলবেন’।
এজাহারে নুসরাত বলেন, দুদিন পর ২৫ এপ্রিল মোসারাত তাকে ফোন করেন। ওই সময় তিনি কান্নাকাটি করে বলেন, আনভীর তাকে বিয়ে করবেন না। আনভির তাকে বলেছেন, তিনি (মোসারাত) তার শত্রুর সঙ্গে দেখা করেছেন। মোসারাতকে তিনি ছাড়বেন না। আর মোসারাত চিৎকার করে বলেন, ‘আনভির তাকে ধোঁকা’ দিয়েছেন। যেকোনো সময় তার বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাদেরকে (নুসরাতের পরিবার) দ্রুত ঢাকায় আসার জন্য বলেন মোসারাত।
বাদী বলেন তারা ২৫ এপ্রিল ঢাকায় রওয়ানা হন। পথ থেকে তারা মোসারাত মুনিয়াকে বহুবার ফোন করেন কিন্তু তিনি ধরেন নাই। মুনিয়ার গুলশানের বাসায় গিয়ে দরজায় কড়া নাড়লেও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরে মিস্ত্রী এনে তালা ভেঙে দেখা যায় শোবার ঘরে সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া মুনিয়ার দেহ ঝুলছে। পরে পুলিশে খবর দেয়া হয়।