হত্যার পর লাশ ড্রামভর্তি করে পুঁতে রাখা হয়
খুনিরা পরিকল্পিতভাবে রাজিব নামে এক যুবককে হত্যা করেছে। হত্যার পর তার লাশ ড্রামে ভর্তি করে অভিযুক্তের অফিসের বাথরুমের কাছে পুতে রাখা হয়। ২০১৬ সালে মার্চ মাসে যশোরে এ নির্মম ঘটনা ঘটে।
অবশেষে ৬ বছর পর মাটি খোড়ার সময় ড্রামভর্তি কংকাল উদ্ধার করা হয়। ওই কংকাল ঢাকার মালিবাগে সিআইডি অফিসের ফরেনসিক বিভাগের ল্যাবে ডিএনএ টেস্ট করে কংকালের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। রাজীবের বাবা ও মায়ের আলামত নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করার পর এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
অবশেষে হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে হত্যাকা-ের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর যশোর জেলার পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
পিবিআইয়ের এসপি জানান, গত ৩০ মে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানাধীন পুরাতন কসবা নিরিবিল পাড়ার বজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বাউন্ডারি দেয়াল ঘেরা জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় পরিত্যক্ত পুরাতন টয়লেটের রিং সøাবের কুয়ার ভিতর একটি নীল রঙ্গের প্লাস্টিকের ড্রামের ভিতর মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি দেখতে পায়। এরপর পিবিআইয়ের যশোর জেলার টিম ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তকালে পিবিআই জানতে পারে, রাজীব হোসেন কাজি (৩২) তার চাচা হাসমতের যশোরের বাসায় থেকে শেখ সজিবুর রহমানের যশোর অফিসে ও বাসায় কাজ করত।
২০১৬ সালের ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে রাজীব তার পিতাকে ফোন করে তাদের খুলনার বাড়িতে গেছে বলে জানান। কিন্তু রাজীব তাদের খুলনার বাড়িতে যায়নি। এরপর রাজীবের মোবাইল ফোন বন্ধ পায়। তাকে কোথায়ও খুজে না পেয়ে রাজিবের পিতা ফারুক হোসেন তার ভাই হাসমতের সঙ্গে যোগাযোগ করে। চাচা হাসমত জানায়, ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ থেকে রাজীবকে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে ব্যাপক খোঁজ-খবর নিয়ে তার সন্ধান পায়নি।
দীর্ঘদিন পর ২০২২ সালের ৩০ মে রাত ৮টার দিকে রাজীবের চাচা হাসমত রাজীবের পিতা ফারুক হোসেনকে ফোনে জানান। যশোরের পরিত্যক্ত ড্রামে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি পাওয়া গেছে। আরও জানায়, রাজিব যে বাড়িতে কাজ করত সেখানে টয়লেটের রিং সøাবের ভিতর ড্রামটি মাটি চাপা দেয়া ছিল। শেখ সজিবের যেখানে অফিস ছিল সেখানেই মানুষের কংকাল পাওয়া গেছে।
রাজীব নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন পর সজীব তার অফিস ভেঙ্গে ফেলেছিল। এরপর রাজীবের পিতা ফারুক হোসেন ভাইয়ের কথা শুনে যশোরে যান। যশোরে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে ঘটনা জানিয়ে ছেলেকে শনাক্ত করার জন্য অনুরোধ করেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে গত ১২ সেপ্টম্বর একটি জিডি করেন। ওই জিডির সূত্র ধরে রাজীবের পিতা ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মাবিয়া বেগমের ডিএনএন টেস্ট করতে আদালতের অনুমোদন নেয়। আদালতের নির্দেশে মালিবাগে সিআইডি অফিসে ডিএনএন নমুনা টেস্টের জন্য পাঠানো হয়। টেস্ট্রে ড্রামে পাওয়া কংকালের সঙ্গে ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মাবিয়ার ডিএনএন মিল পাওয়া যায়। অর্থাৎ ড্রামের ভিতর পাওয়া কংকাল বাদীর ছেলের তা ডিএনএ টেস্টে নিশ্চিত করে।
বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলার সূত্র ধরে গত সোমবার পিবিআইয়েরে টিম হত্যাকা-ে জড়িত আসামি মো. সালামকে যশোরের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্বীকারোক্তিতে অভিযুক্ত সালাম বলেছে, রাজিবকে হত্যা করে আসামি সালামের সহযোগীতায় মৃতদেহ গোপন করার জন্য ড্রামে ভরে তার ব্যবহৃত রিকশাযোগে লাশ নিরিবিলি পাড়ায় শেখ সজিবুর রহমানের অফিসের টয়লেটের কুয়ার মধ্যে ফেলে দেয়। অভিযুক্ত সালাম গতকাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মৃতদেহ বহনের কাজে ব্যবহৃত রিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যদেরকে গ্রেপ্তারে পিবিআইয়ের অভিযান চলছে। কী কারণে রাজীবকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তার আরও তথ্য বের করতে পিবিআই সজীবকে খুজছে। শেখ সজিব পলাতক। ধারণা করা হচ্ছে, সজিব মূল অভিযুক্ত।
হত্যার পর লাশ ড্রামভর্তি করে পুঁতে রাখা হয়
বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩
খুনিরা পরিকল্পিতভাবে রাজিব নামে এক যুবককে হত্যা করেছে। হত্যার পর তার লাশ ড্রামে ভর্তি করে অভিযুক্তের অফিসের বাথরুমের কাছে পুতে রাখা হয়। ২০১৬ সালে মার্চ মাসে যশোরে এ নির্মম ঘটনা ঘটে।
অবশেষে ৬ বছর পর মাটি খোড়ার সময় ড্রামভর্তি কংকাল উদ্ধার করা হয়। ওই কংকাল ঢাকার মালিবাগে সিআইডি অফিসের ফরেনসিক বিভাগের ল্যাবে ডিএনএ টেস্ট করে কংকালের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। রাজীবের বাবা ও মায়ের আলামত নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করার পর এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
অবশেষে হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে হত্যাকা-ের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর যশোর জেলার পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
পিবিআইয়ের এসপি জানান, গত ৩০ মে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানাধীন পুরাতন কসবা নিরিবিল পাড়ার বজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বাউন্ডারি দেয়াল ঘেরা জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় পরিত্যক্ত পুরাতন টয়লেটের রিং সøাবের কুয়ার ভিতর একটি নীল রঙ্গের প্লাস্টিকের ড্রামের ভিতর মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি দেখতে পায়। এরপর পিবিআইয়ের যশোর জেলার টিম ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তকালে পিবিআই জানতে পারে, রাজীব হোসেন কাজি (৩২) তার চাচা হাসমতের যশোরের বাসায় থেকে শেখ সজিবুর রহমানের যশোর অফিসে ও বাসায় কাজ করত।
২০১৬ সালের ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে রাজীব তার পিতাকে ফোন করে তাদের খুলনার বাড়িতে গেছে বলে জানান। কিন্তু রাজীব তাদের খুলনার বাড়িতে যায়নি। এরপর রাজীবের মোবাইল ফোন বন্ধ পায়। তাকে কোথায়ও খুজে না পেয়ে রাজিবের পিতা ফারুক হোসেন তার ভাই হাসমতের সঙ্গে যোগাযোগ করে। চাচা হাসমত জানায়, ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ থেকে রাজীবকে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে ব্যাপক খোঁজ-খবর নিয়ে তার সন্ধান পায়নি।
দীর্ঘদিন পর ২০২২ সালের ৩০ মে রাত ৮টার দিকে রাজীবের চাচা হাসমত রাজীবের পিতা ফারুক হোসেনকে ফোনে জানান। যশোরের পরিত্যক্ত ড্রামে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি পাওয়া গেছে। আরও জানায়, রাজিব যে বাড়িতে কাজ করত সেখানে টয়লেটের রিং সøাবের ভিতর ড্রামটি মাটি চাপা দেয়া ছিল। শেখ সজিবের যেখানে অফিস ছিল সেখানেই মানুষের কংকাল পাওয়া গেছে।
রাজীব নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন পর সজীব তার অফিস ভেঙ্গে ফেলেছিল। এরপর রাজীবের পিতা ফারুক হোসেন ভাইয়ের কথা শুনে যশোরে যান। যশোরে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে ঘটনা জানিয়ে ছেলেকে শনাক্ত করার জন্য অনুরোধ করেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে গত ১২ সেপ্টম্বর একটি জিডি করেন। ওই জিডির সূত্র ধরে রাজীবের পিতা ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মাবিয়া বেগমের ডিএনএন টেস্ট করতে আদালতের অনুমোদন নেয়। আদালতের নির্দেশে মালিবাগে সিআইডি অফিসে ডিএনএন নমুনা টেস্টের জন্য পাঠানো হয়। টেস্ট্রে ড্রামে পাওয়া কংকালের সঙ্গে ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মাবিয়ার ডিএনএন মিল পাওয়া যায়। অর্থাৎ ড্রামের ভিতর পাওয়া কংকাল বাদীর ছেলের তা ডিএনএ টেস্টে নিশ্চিত করে।
বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলার সূত্র ধরে গত সোমবার পিবিআইয়েরে টিম হত্যাকা-ে জড়িত আসামি মো. সালামকে যশোরের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্বীকারোক্তিতে অভিযুক্ত সালাম বলেছে, রাজিবকে হত্যা করে আসামি সালামের সহযোগীতায় মৃতদেহ গোপন করার জন্য ড্রামে ভরে তার ব্যবহৃত রিকশাযোগে লাশ নিরিবিলি পাড়ায় শেখ সজিবুর রহমানের অফিসের টয়লেটের কুয়ার মধ্যে ফেলে দেয়। অভিযুক্ত সালাম গতকাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মৃতদেহ বহনের কাজে ব্যবহৃত রিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যদেরকে গ্রেপ্তারে পিবিআইয়ের অভিযান চলছে। কী কারণে রাজীবকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তার আরও তথ্য বের করতে পিবিআই সজীবকে খুজছে। শেখ সজিব পলাতক। ধারণা করা হচ্ছে, সজিব মূল অভিযুক্ত।