রাজধানীতে অটো রিকশাচালকের যোগসাজশে ছিনতাই
রাজধানীতে অটো রিকশা (সিএনজি) চালকের যোগসাজশে যাত্রীদের নির্যাতন করে টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার লুট করা হচ্ছে। এমনকি যাত্রীকে মারপিট ও গলাটিপে হত্যা করে নগদ টাকা, গলার চেইন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকার সার্জিকাল ব্যবসায়ী ইয়াসিন আলী মণ্ডল ওরফে মুন্না হত্যার ঘটনাটি ৩ বছর পাঁচ মাস পর পিবিআই তদন্তে উদ্ঘাটিত হয়েছে।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কবির হোসেন (৫০) নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আদালতে নিজেকে জড়িয়ে ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তার স্বীকারোক্তিতে আরও একাধিক ঘটনা বেরিয়ে আসছে। ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় আগে আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে মোট ৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এই চক্র ছিনতাইয়ের সময় দুইটি অটো রিকশা সিএনজি ব্যবহার করেছে। পিবিআইয়ের টিম তাও শনাক্ত ও উদ্ধার করেছে।
রাজধানীর ধানমন্ডি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়য় থেকে বলা হয়েছে, সার্জিক্যাল ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলী মুন্নার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। তিনি ২০১৯ সালে ২২ সেপ্টম্বর বাড়ি যান। আবার পরের দিন ২৩ সেপ্টম্বর বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। রাতে তিনি গাবতলী বাস টার্মিনালে নেমে একটি সিএনজি যোগে বাসায় ফেরার পথে রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় তাকে বহনকারী সিএনজিটি পৌঁছার পর হঠাৎ করে সিএনজি চালক গাড়িতে সমস্যা হয়েছে বলে গাড়িটি থামিয়ে দেয়। ওই সময় ব্যবসায়ীকে বহনকারী গাড়ির পেছনে আরেকটি সিএনজি অটো রিকশা ছিল। সে অটো রিকশায় যাত্রীবেশে থাকা ছিনতাইকারীরা ব্যবসায়ীকে বহনকারী সিএনজিতে হঠাৎ করে উঠে ব্যবসায়ীর দুই পাশে বসে। এরপর সিএনজি দুইটি ড্রাইভার চালিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরার পথে নিরাপদ স্থানে গিয়ে ব্যবসায়ী মুন্নাকে মরাপিট করে। তিনি চিৎকার ও প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে ছিনতাইকারী চক্র তার মুখ ও গলা টিপে ধরে। এরপর তার পকেট থেকে টাকা ও গলায় থাকা স্বর্ণের মোটা চেইন নিয়ে তাকে শেরেবাংলা নগর থানার রাস্তার পাশে ফেলে ছিনতাইকারীরা চলে যায়। রাতে তার ফোনে পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার বড় বোন তাকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পায়নি। পরে রাত ২টার দিকে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ শেরেবাংলা নগর থানার শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্য্যালয়ের মূল গেটের অনুমান ৩০ গজ দূরে ময়লার স্ত‚প থেকে মুন্নার লাশ উদ্ধার করে। ওই সময় মোবাইল ফোনটি পাওয়া গেছে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারের ঘটনা তার বড় বোনকে জানালে বোন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও স্বজনরা গিয়ে লাশ শনাক্ত করে।
এই ঘটনায় তার এক আত্বীয় (বোনের জামাই) বাদি হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা (নম্বর-৪৬) দায়ের করেছে। তারিখ ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টম্বর। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে ডিবি পুলিশ তদন্ত করে। তারা দীর্ঘ তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি। অবশেষে পুলিশ হেডকোয়াটার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়া হয়েছে।
পিবিআইয়ের তদন্ত টিম অনুসন্ধান তদন্ত চালিয়ে প্রায় ৩ বছর ৫ মাস পর হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত কবির হোসেনকে সম্প্রতি রাজধানীর হাজারিবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। ছিনতাই ও হত্যাকান্ডের সময় ব্যবহৃত ২টি অটো রিকশা উদ্ধার করেছে।
পিবিআইয়ের তদন্তের আগে পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত আসাদ শেখ, দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার দেলু, জলিল সিকদার, মিজানুর রহমান সর্দার ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর ডিবি প্রায় ১০ মাস তদন্ত করেছেন। অবশেষে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর মামলাটি পিবিআইকে করতে পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে দায়িত্ব দেয়।
পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধানে পিবিআই তদন্তে নামেন। তার ঘটনাস্থলের সিসি টিভির ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত কবির হোসেনকে হাজারিবাগ থেকে গ্রেপ্তার করে। সে আদালতে নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী পিবিআই কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, এই চক্র সিএনজি অটো রিকশায় যাত্রী উঠিয়ে পরে সুযোগ মতো তাদের টাকা পয়সা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সিএনজি চালকের যোগসাজশে তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করছে। এই ধরনের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনায় জড়িত আর কেউ আছে কি-না তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
রাজধানীতে অটো রিকশাচালকের যোগসাজশে ছিনতাই
সোমবার, ০৬ মার্চ ২০২৩
রাজধানীতে অটো রিকশা (সিএনজি) চালকের যোগসাজশে যাত্রীদের নির্যাতন করে টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার লুট করা হচ্ছে। এমনকি যাত্রীকে মারপিট ও গলাটিপে হত্যা করে নগদ টাকা, গলার চেইন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকার সার্জিকাল ব্যবসায়ী ইয়াসিন আলী মণ্ডল ওরফে মুন্না হত্যার ঘটনাটি ৩ বছর পাঁচ মাস পর পিবিআই তদন্তে উদ্ঘাটিত হয়েছে।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কবির হোসেন (৫০) নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আদালতে নিজেকে জড়িয়ে ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তার স্বীকারোক্তিতে আরও একাধিক ঘটনা বেরিয়ে আসছে। ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় আগে আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে মোট ৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এই চক্র ছিনতাইয়ের সময় দুইটি অটো রিকশা সিএনজি ব্যবহার করেছে। পিবিআইয়ের টিম তাও শনাক্ত ও উদ্ধার করেছে।
রাজধানীর ধানমন্ডি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়য় থেকে বলা হয়েছে, সার্জিক্যাল ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলী মুন্নার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। তিনি ২০১৯ সালে ২২ সেপ্টম্বর বাড়ি যান। আবার পরের দিন ২৩ সেপ্টম্বর বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। রাতে তিনি গাবতলী বাস টার্মিনালে নেমে একটি সিএনজি যোগে বাসায় ফেরার পথে রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় তাকে বহনকারী সিএনজিটি পৌঁছার পর হঠাৎ করে সিএনজি চালক গাড়িতে সমস্যা হয়েছে বলে গাড়িটি থামিয়ে দেয়। ওই সময় ব্যবসায়ীকে বহনকারী গাড়ির পেছনে আরেকটি সিএনজি অটো রিকশা ছিল। সে অটো রিকশায় যাত্রীবেশে থাকা ছিনতাইকারীরা ব্যবসায়ীকে বহনকারী সিএনজিতে হঠাৎ করে উঠে ব্যবসায়ীর দুই পাশে বসে। এরপর সিএনজি দুইটি ড্রাইভার চালিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরার পথে নিরাপদ স্থানে গিয়ে ব্যবসায়ী মুন্নাকে মরাপিট করে। তিনি চিৎকার ও প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে ছিনতাইকারী চক্র তার মুখ ও গলা টিপে ধরে। এরপর তার পকেট থেকে টাকা ও গলায় থাকা স্বর্ণের মোটা চেইন নিয়ে তাকে শেরেবাংলা নগর থানার রাস্তার পাশে ফেলে ছিনতাইকারীরা চলে যায়। রাতে তার ফোনে পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার বড় বোন তাকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পায়নি। পরে রাত ২টার দিকে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ শেরেবাংলা নগর থানার শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্য্যালয়ের মূল গেটের অনুমান ৩০ গজ দূরে ময়লার স্ত‚প থেকে মুন্নার লাশ উদ্ধার করে। ওই সময় মোবাইল ফোনটি পাওয়া গেছে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারের ঘটনা তার বড় বোনকে জানালে বোন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও স্বজনরা গিয়ে লাশ শনাক্ত করে।
এই ঘটনায় তার এক আত্বীয় (বোনের জামাই) বাদি হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা (নম্বর-৪৬) দায়ের করেছে। তারিখ ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টম্বর। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে ডিবি পুলিশ তদন্ত করে। তারা দীর্ঘ তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি। অবশেষে পুলিশ হেডকোয়াটার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়া হয়েছে।
পিবিআইয়ের তদন্ত টিম অনুসন্ধান তদন্ত চালিয়ে প্রায় ৩ বছর ৫ মাস পর হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত কবির হোসেনকে সম্প্রতি রাজধানীর হাজারিবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। ছিনতাই ও হত্যাকান্ডের সময় ব্যবহৃত ২টি অটো রিকশা উদ্ধার করেছে।
পিবিআইয়ের তদন্তের আগে পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত আসাদ শেখ, দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার দেলু, জলিল সিকদার, মিজানুর রহমান সর্দার ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর ডিবি প্রায় ১০ মাস তদন্ত করেছেন। অবশেষে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর মামলাটি পিবিআইকে করতে পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে দায়িত্ব দেয়।
পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধানে পিবিআই তদন্তে নামেন। তার ঘটনাস্থলের সিসি টিভির ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত কবির হোসেনকে হাজারিবাগ থেকে গ্রেপ্তার করে। সে আদালতে নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী পিবিআই কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, এই চক্র সিএনজি অটো রিকশায় যাত্রী উঠিয়ে পরে সুযোগ মতো তাদের টাকা পয়সা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সিএনজি চালকের যোগসাজশে তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করছে। এই ধরনের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনায় জড়িত আর কেউ আছে কি-না তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।