সারাদেশে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে রাঘব বোয়াল চক্র জড়িত। ফাঁসকৃত প্রশ্নের মাধ্যমে একজন ছাত্রকে এমবিবিএস ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দেয়ার বিনিময়ে জনপ্রতি পাঁচ থেকে পনেরো লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্র। ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৭ সাল পর্যন্ত চক্রটি এমবিবিএস ভর্তি ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ভর্তি ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রী বা তাদের অভিভাবকদের কাছে বিক্রি করত। প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের কাছ থেকে ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে। জালিয়াত জসিম উদ্দিন ভূইয়া ওরফে মুন্নু গ্রুপে অর্ধশত প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী রয়েছে। সিআইডির সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞদের জিজ্ঞাসাবাদে জসিম এমন তথ্য দিয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতিবাজ জালিয়াত আফজালসহ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক পথ্য বেরিয়ে আসবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
সিআইডির তদন্ত টিম সূত্র জানায়, প্রশ্ন ফাঁসকারী জসিমের বাড়ি মানিকগঞ্জে। সে আগে আগে প্রেসে ছোটখাট কাজ করত। তার এক আত্মীয় সালাম এক সময় স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রেসে কাজ করত। সে সুবাদে প্রশ্ন ফাঁসকারী জসিম সালামের সঙ্গে যোগসাজশে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও বিক্রি করত। শুধু ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে জসিম ও তার সহযোগীরা গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছে।
একজন প্রবীণ অধ্যাপক ও স্বাচিপ নেতা বলেন, প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের শিক্ষা শাখার কারা কারা জড়িত। তাদের খুঁজে বের করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্য বেরিয়ে আসবে। অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতিবাজ আফজালের কথামতো অনেকেই চলত। আফজালের কথামতো শিক্ষা পরিচালক চলতেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্নপত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের কার দায়িত্ব ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক একজন অধ্যাপক বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পূর্বদিকে প্রিন্টিং প্রেসের কাজ হয়। সেখানে প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে প্রিন্ট করা পর্যন্ত আলাদা কমিটি থাকে। কোন ঝামেলা হলে তারা বিষয়টি সমাধান করেন। সেখানে অন্য কারও জড়িত থাকার কোন সুযোগ নেই। প্রশ্নপত্র ছাপাখানার কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। সেখানে সিসি ক্যামরা থাকে। ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন বিকেলে বা সন্ধ্যায় কলেজের অধ্যক্ষ বা তার প্রতিনিধি পুলিশি পাহারায় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বুঝে নেন এবং রাতে জেলা প্রশাসকদের তত্ত্বাবধানে প্রশ্ন নিয়ে রাতে ট্রেজারি শাখায় জমা রাখা হয়। পরের দিন সেখান থেকে কড়া পুলিশি পাহারায় পরীক্ষার হলে প্রশ্ন নেয়া হয়। এরপরও প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদে জসিম যাদের নাম বলেছে, তাদের নিয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্র থেকে প্রশ্ন কিনে অনেকেই ভর্তি হয়েছে। তারমধ্যে ৪ জনকে ২৭ জুলাই সোমবার পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। ভর্তিকৃত ছাত্রদের মধ্যে একজন ছাত্র খুলনা মেডিকেল কলেজ, একজন সিলেট মেডিকেল কলেজ, একজন বরিশাল মেডিকেল কলেজ ও শাহবাগ ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে একজন ভর্তি হয়েছে। আর কোন কোন কলেজে প্রশ্নফাঁস করে ছাত্র ভর্তি হয়েছে তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাদের টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়টি ব্যাংক পর্যন্ত তদন্ত চলবে। কোন ব্যাংকে কোন শাখায় কত টাকা লেনদেন করা হয়েছে তা সিআইডির টিম তদন্ত করে দেখছে। সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত টিমকে সহায়তা করছে। প্রশ্নফাঁসের টাকায় বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনার বিষয় সিআইডির টিম তদন্ত করে দেখছে। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।
সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০
সারাদেশে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে রাঘব বোয়াল চক্র জড়িত। ফাঁসকৃত প্রশ্নের মাধ্যমে একজন ছাত্রকে এমবিবিএস ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দেয়ার বিনিময়ে জনপ্রতি পাঁচ থেকে পনেরো লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্র। ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৭ সাল পর্যন্ত চক্রটি এমবিবিএস ভর্তি ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ভর্তি ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রী বা তাদের অভিভাবকদের কাছে বিক্রি করত। প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের কাছ থেকে ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে। জালিয়াত জসিম উদ্দিন ভূইয়া ওরফে মুন্নু গ্রুপে অর্ধশত প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী রয়েছে। সিআইডির সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞদের জিজ্ঞাসাবাদে জসিম এমন তথ্য দিয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতিবাজ জালিয়াত আফজালসহ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক পথ্য বেরিয়ে আসবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
সিআইডির তদন্ত টিম সূত্র জানায়, প্রশ্ন ফাঁসকারী জসিমের বাড়ি মানিকগঞ্জে। সে আগে আগে প্রেসে ছোটখাট কাজ করত। তার এক আত্মীয় সালাম এক সময় স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রেসে কাজ করত। সে সুবাদে প্রশ্ন ফাঁসকারী জসিম সালামের সঙ্গে যোগসাজশে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও বিক্রি করত। শুধু ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে জসিম ও তার সহযোগীরা গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছে।
একজন প্রবীণ অধ্যাপক ও স্বাচিপ নেতা বলেন, প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের শিক্ষা শাখার কারা কারা জড়িত। তাদের খুঁজে বের করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্য বেরিয়ে আসবে। অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতিবাজ আফজালের কথামতো অনেকেই চলত। আফজালের কথামতো শিক্ষা পরিচালক চলতেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্নপত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের কার দায়িত্ব ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক একজন অধ্যাপক বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পূর্বদিকে প্রিন্টিং প্রেসের কাজ হয়। সেখানে প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে প্রিন্ট করা পর্যন্ত আলাদা কমিটি থাকে। কোন ঝামেলা হলে তারা বিষয়টি সমাধান করেন। সেখানে অন্য কারও জড়িত থাকার কোন সুযোগ নেই। প্রশ্নপত্র ছাপাখানার কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। সেখানে সিসি ক্যামরা থাকে। ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন বিকেলে বা সন্ধ্যায় কলেজের অধ্যক্ষ বা তার প্রতিনিধি পুলিশি পাহারায় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বুঝে নেন এবং রাতে জেলা প্রশাসকদের তত্ত্বাবধানে প্রশ্ন নিয়ে রাতে ট্রেজারি শাখায় জমা রাখা হয়। পরের দিন সেখান থেকে কড়া পুলিশি পাহারায় পরীক্ষার হলে প্রশ্ন নেয়া হয়। এরপরও প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদে জসিম যাদের নাম বলেছে, তাদের নিয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্র থেকে প্রশ্ন কিনে অনেকেই ভর্তি হয়েছে। তারমধ্যে ৪ জনকে ২৭ জুলাই সোমবার পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। ভর্তিকৃত ছাত্রদের মধ্যে একজন ছাত্র খুলনা মেডিকেল কলেজ, একজন সিলেট মেডিকেল কলেজ, একজন বরিশাল মেডিকেল কলেজ ও শাহবাগ ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে একজন ভর্তি হয়েছে। আর কোন কোন কলেজে প্রশ্নফাঁস করে ছাত্র ভর্তি হয়েছে তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাদের টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়টি ব্যাংক পর্যন্ত তদন্ত চলবে। কোন ব্যাংকে কোন শাখায় কত টাকা লেনদেন করা হয়েছে তা সিআইডির টিম তদন্ত করে দেখছে। সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত টিমকে সহায়তা করছে। প্রশ্নফাঁসের টাকায় বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনার বিষয় সিআইডির টিম তদন্ত করে দেখছে। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।