ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় গভীর রাতে ঘরের দরজা বাহির থেকে তালা দিয়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ভেতরে ঘুমন্ত শফিকুল ইসলাম(৩০) নামের এক ব্যবসায়ী পুড়ে মারা গেছেন। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার আগেই ঘরের সকল কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোর রাতে উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের কালীবাড়ী-বড়ামা গ্রামে। পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বড় ভাই হাফিজুল ইসলামকে আটক করেছে।
খবর পেয়ে পুলিশ, পিবিআই, র্যাব, ডিবি ও সিআইডির পৃথক টিম ঘটনাস্থল তদন্তে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে কালীবাড়ী-বড়মা গ্রামের হাসান আলী, তার স্ত্রী, তার পুত্র কালীবাড়ী বাজারের শফিক বস্ত্রালয়ের মালিক শফিকুল ইসলাম ও অপর পুত্র এনামুল হক একই ঘরের পৃথক রুমে প্রতিদিনের মত ঘুমিয়ে যান। রাত ৩টার দিকে হঠাৎ হাসান আলী বিকট শব্দ ও প্রচন্ড তাপে জেগে উঠে দেখতে পান ঘরসহ আগুনের লেলিহান শিখা। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ঘর থেকে বের হতে গিয়ে দেখতে পান ঘরের দরজা বাহির থেকে দড়ি দিয়ে বাঁধা। পরে দরজা ভেঙ্গে বের হয়ে আসেন। অপর রুম থেকে ছোট ছেলে এনামুল হকের দরজাও দরিতে বাঁধা ছিল। বাঁধ কেটে দরজা খুলে তাকে বের করে আনেন।
কিন্তু মাঝখানের রুমে থাকা শফিকুল ইসলামের রুমে গিয়ে দেখতে পান তার ঘরের দরজায় বাহির থেকে তালা আটকানো এবং দরজায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এতে শফিকুলকে তারা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। পরে আগুন নিয়ন্ত্রনে আসার পর ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া শফিকুলের লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু রায়হান, মুক্তাগাছা থানার ওসি আব্দুল মজিদ, ওসি(তদন্ত) মোঃ চাঁদ মিয়া ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ নিহত শফিকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত শফিকুল ইসলামের বাবা হাসান আলী জানান, আমরা সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিলাম তখন কে বা কারা বাহির থেকে দরজায় তালা ও দড়ি দিয়ে আটকিয়ে ঘরে আগুন দেয়। আমার সব জিনিসপত্রসহ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমরা জীবন নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারলেও আমার ছেলে শফিকুল ইসলামকে বের করে আনতে পারি নাই। সে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, শত্রুতা করে দুর্বৃত্তরা আমার সব শেষ করে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
নিহত শফিকের স্ত্রী সাথী বেগম বলেন, তার সদ্য সন্তান হওয়ায় তিনি বাবার বাড়িতে ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি এসে দেখেন তার সব শেষ হয়ে গেছে। তিনি জানান দীর্ঘ দিন ধরে শফিকুলের বড় ভাই হাফিজুল ইসলামের সাথে তার জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। আদালতে মামলাও চলমান আছে। হাফিজুলসহ একটি চক্র ইতোপূর্বে শফিকুলের পুকুরে বিষ দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ মেরে ফেলেছিল। এর আগে একাধিকবার হাফিজুলের নেতৃত্বে শফিকুলকে হত্যারও চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন সকল আলামত নষ্ট করার জন্য হাফিজুলের নেতৃত্বেই আগুন দিয়ে শফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে।
মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মজিদ জানান, খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে ওসি তদন্তসহ পুলিশের টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বড়ভাই হাফিজুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। এটি কোন পরিকল্পিত ঘটনা নাকি দুর্ঘটনা জনিত অগ্নিকান্ডের ঘটনা তা তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআই, ডিবি ও র্যাবের পৃথক টিম মাঠে কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবার তদন্ত শেষে সমন্বয় করে ঘটনার আসল রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভম হবে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশসহ অন্যান্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তদন্ত সংস্থার একাধিক টিম মাঠে রয়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার, ১০ মে ২০২৩
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় গভীর রাতে ঘরের দরজা বাহির থেকে তালা দিয়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ভেতরে ঘুমন্ত শফিকুল ইসলাম(৩০) নামের এক ব্যবসায়ী পুড়ে মারা গেছেন। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার আগেই ঘরের সকল কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোর রাতে উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের কালীবাড়ী-বড়ামা গ্রামে। পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বড় ভাই হাফিজুল ইসলামকে আটক করেছে।
খবর পেয়ে পুলিশ, পিবিআই, র্যাব, ডিবি ও সিআইডির পৃথক টিম ঘটনাস্থল তদন্তে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে কালীবাড়ী-বড়মা গ্রামের হাসান আলী, তার স্ত্রী, তার পুত্র কালীবাড়ী বাজারের শফিক বস্ত্রালয়ের মালিক শফিকুল ইসলাম ও অপর পুত্র এনামুল হক একই ঘরের পৃথক রুমে প্রতিদিনের মত ঘুমিয়ে যান। রাত ৩টার দিকে হঠাৎ হাসান আলী বিকট শব্দ ও প্রচন্ড তাপে জেগে উঠে দেখতে পান ঘরসহ আগুনের লেলিহান শিখা। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ঘর থেকে বের হতে গিয়ে দেখতে পান ঘরের দরজা বাহির থেকে দড়ি দিয়ে বাঁধা। পরে দরজা ভেঙ্গে বের হয়ে আসেন। অপর রুম থেকে ছোট ছেলে এনামুল হকের দরজাও দরিতে বাঁধা ছিল। বাঁধ কেটে দরজা খুলে তাকে বের করে আনেন।
কিন্তু মাঝখানের রুমে থাকা শফিকুল ইসলামের রুমে গিয়ে দেখতে পান তার ঘরের দরজায় বাহির থেকে তালা আটকানো এবং দরজায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এতে শফিকুলকে তারা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। পরে আগুন নিয়ন্ত্রনে আসার পর ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া শফিকুলের লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু রায়হান, মুক্তাগাছা থানার ওসি আব্দুল মজিদ, ওসি(তদন্ত) মোঃ চাঁদ মিয়া ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ নিহত শফিকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত শফিকুল ইসলামের বাবা হাসান আলী জানান, আমরা সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিলাম তখন কে বা কারা বাহির থেকে দরজায় তালা ও দড়ি দিয়ে আটকিয়ে ঘরে আগুন দেয়। আমার সব জিনিসপত্রসহ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমরা জীবন নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারলেও আমার ছেলে শফিকুল ইসলামকে বের করে আনতে পারি নাই। সে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, শত্রুতা করে দুর্বৃত্তরা আমার সব শেষ করে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
নিহত শফিকের স্ত্রী সাথী বেগম বলেন, তার সদ্য সন্তান হওয়ায় তিনি বাবার বাড়িতে ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি এসে দেখেন তার সব শেষ হয়ে গেছে। তিনি জানান দীর্ঘ দিন ধরে শফিকুলের বড় ভাই হাফিজুল ইসলামের সাথে তার জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। আদালতে মামলাও চলমান আছে। হাফিজুলসহ একটি চক্র ইতোপূর্বে শফিকুলের পুকুরে বিষ দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ মেরে ফেলেছিল। এর আগে একাধিকবার হাফিজুলের নেতৃত্বে শফিকুলকে হত্যারও চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন সকল আলামত নষ্ট করার জন্য হাফিজুলের নেতৃত্বেই আগুন দিয়ে শফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে।
মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মজিদ জানান, খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে ওসি তদন্তসহ পুলিশের টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বড়ভাই হাফিজুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। এটি কোন পরিকল্পিত ঘটনা নাকি দুর্ঘটনা জনিত অগ্নিকান্ডের ঘটনা তা তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআই, ডিবি ও র্যাবের পৃথক টিম মাঠে কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবার তদন্ত শেষে সমন্বয় করে ঘটনার আসল রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভম হবে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশসহ অন্যান্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তদন্ত সংস্থার একাধিক টিম মাঠে রয়েছে বলে জানা গেছে।