ঘাতক স্বামী স্ত্রীর স্বীকারোক্তি
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর সেনপাড়া এলাকা থেকে আলী হোসেন নামের এক সাটার মিস্ত্রিকে অপহরণ ও শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ১২ টুকরো করে ডেমরার সারুলিয়া এলাকায় ঝিলের পানিতে ফেলে দেয়ার লোমহর্ষক স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রেফতারকৃত সুমি আক্তার ওরফে পাখি ও তার স্বামী আবুবকর সিদ্দিক। হত্যার শিকার সাটার মিস্ত্রি নিখোঁজ হওয়ার জিডির সূত্র ধরে সোনারগাঁ থানা পুলিশ ঘাতকদ্বয়কে গত সোমবার সকালে গ্রেফতার করলে প্রথমে পুলিশ ও পরদিন মঙ্গলবার বিজ্ঞ আদালতে লোমহর্ষক হত্যার স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
জানা গেছে, গত ৪ মে সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ হন কাঁচপুর খাসপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের ভাড়াটিয়া স্থানীয় সাটার মিস্ত্রির আলী হোসেন মোল্লা। তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে ১৯ তারিখ সোনারগাঁ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী মিনু বেগম। জিডির সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করে নিশ্চিত হয় যে, নিখোঁজ ব্যাক্তিকে হত্যা করা হয়েছে।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ জানান, গ্রেপ্তারকৃত সুমি আক্তার একজন পেশাদার পতিতা। সেই সুবাদে কাঁচপুর খাসপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের ভাড়াটিয়া স্থানীয় সাটার মিস্ত্রি আলী হোসেন মোল্লার সাথে তার নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক হতো। এক পর্যায়ে আলী হোসেন মোল্লা ও সুমি আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরবর্তীতে গত এপ্রিল মাসে সুমি আক্তারের সাথে ভোলার চরফ্যাশনের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাগন আলীর ছেলে আবুবকর সিদ্দিকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুমি তার পেশা ছেড়ে দেয়। কিন্তু সাটার মিস্ত্রি আলী হোসেন সুমি আক্তারকে নিয়মিত মোবাইল ফোনে বিরক্ত করতো। গত ৪ মে সন্ধ্যায় কাঁচপুর সেনপাড়া এলাকায় সুমি আক্তার আলী হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। সুমি আক্তারের স্বামী আবুবকর সিদ্দিক বাসায় নেই বলে আলী হোসেনকে কাঁচপুর থেকে সারুলিয়া এলাকায় নিয়ে যায় সুমি আক্তার। রাতে সুমির স্বামী আবুবকর বাসায় গিয়ে তাদের দুজনকে একসাথে দেখতে পায়। এসময় তাদের মধ্যে বাক বিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে আলী হোসেনকে আবুবকর সিদ্দিক ঘুষি মেরে ফেলে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার সময় সুমি আক্তার আলী হোসেনের পায়ে চেপে ধরে তাকে হত্যায় সহযোগিতা করে। হত্যার পর সুমি আক্তার ও তার স্বামী আবুবকর সিদ্দিক তাদের ঘরে থাকা বটি ও ছুরি দিয়ে পেট কেটে নাড়িভূড়ি বের করে ময়লার ঝুড়িতে নিয়ে ফেলে দেয়। পরে সারা রাত তারা নিহত আলী হোসেনের হাত, পা, মাথা ও শরীর ১২ টুকরো করে রেখে দেয়। পরদিন রাতে লাশের সেই টুকরোগুলো ডেমরা সারুলিয়া ঝিলের বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, গত সোমবার পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িত সুমি আক্তার ও আবুবকর সিদ্দিককে সারুলিয়া থেকে গ্রেফতারের পর হত্যার লোমহর্ষক ঘটনা জানতে পারেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে সোমবার সারাদিন সারুলিয়া ঝিলে ডুবুরি দিয়ে খুঁজে লাশের হাড়গোড়ের কোন সন্ধান পাননি। তবে তাদের বাসা থেকে আলী হোসেনের ব্যবহৃত জুতা উদ্ধার করা হয়। ঘাতক সুমির প্রথম স্বামী মদনপুর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমকেও সুমি ও তার দ্বিতীয় স্বামী আবুবকর সিদ্দিক মিলে হত্যা করে লাশ বাড়ির পাশের একটি ড্রেনে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে ডেমরা থানা পুলিশ সেই লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করে। ওই ঘটনায়ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই হত্যাকান্ড থেকেই মানুষ হত্যায় তাদের ভীতি দূর হয়ে যায়। সুমি ও আবু বকর সিদ্দিককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা প্রথমে পুলিশ ও পরে গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের পৃথক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সুমির অভিযোগ, তার প্রথম স্বামী জাহাঙ্গীর আলম তাকে পতিতাবৃত্তিতে আসতে বাধ্য করেছে। সেই ক্ষোভে তাকে দ্বিতীয় স্বামী আবুবকর সিদ্দিকের সহযোগিতায় হত্যা করে।
ঘাতক স্বামী স্ত্রীর স্বীকারোক্তি
বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর সেনপাড়া এলাকা থেকে আলী হোসেন নামের এক সাটার মিস্ত্রিকে অপহরণ ও শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ১২ টুকরো করে ডেমরার সারুলিয়া এলাকায় ঝিলের পানিতে ফেলে দেয়ার লোমহর্ষক স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রেফতারকৃত সুমি আক্তার ওরফে পাখি ও তার স্বামী আবুবকর সিদ্দিক। হত্যার শিকার সাটার মিস্ত্রি নিখোঁজ হওয়ার জিডির সূত্র ধরে সোনারগাঁ থানা পুলিশ ঘাতকদ্বয়কে গত সোমবার সকালে গ্রেফতার করলে প্রথমে পুলিশ ও পরদিন মঙ্গলবার বিজ্ঞ আদালতে লোমহর্ষক হত্যার স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
জানা গেছে, গত ৪ মে সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ হন কাঁচপুর খাসপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের ভাড়াটিয়া স্থানীয় সাটার মিস্ত্রির আলী হোসেন মোল্লা। তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে ১৯ তারিখ সোনারগাঁ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী মিনু বেগম। জিডির সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করে নিশ্চিত হয় যে, নিখোঁজ ব্যাক্তিকে হত্যা করা হয়েছে।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ জানান, গ্রেপ্তারকৃত সুমি আক্তার একজন পেশাদার পতিতা। সেই সুবাদে কাঁচপুর খাসপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের ভাড়াটিয়া স্থানীয় সাটার মিস্ত্রি আলী হোসেন মোল্লার সাথে তার নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক হতো। এক পর্যায়ে আলী হোসেন মোল্লা ও সুমি আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরবর্তীতে গত এপ্রিল মাসে সুমি আক্তারের সাথে ভোলার চরফ্যাশনের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাগন আলীর ছেলে আবুবকর সিদ্দিকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুমি তার পেশা ছেড়ে দেয়। কিন্তু সাটার মিস্ত্রি আলী হোসেন সুমি আক্তারকে নিয়মিত মোবাইল ফোনে বিরক্ত করতো। গত ৪ মে সন্ধ্যায় কাঁচপুর সেনপাড়া এলাকায় সুমি আক্তার আলী হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। সুমি আক্তারের স্বামী আবুবকর সিদ্দিক বাসায় নেই বলে আলী হোসেনকে কাঁচপুর থেকে সারুলিয়া এলাকায় নিয়ে যায় সুমি আক্তার। রাতে সুমির স্বামী আবুবকর বাসায় গিয়ে তাদের দুজনকে একসাথে দেখতে পায়। এসময় তাদের মধ্যে বাক বিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে আলী হোসেনকে আবুবকর সিদ্দিক ঘুষি মেরে ফেলে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার সময় সুমি আক্তার আলী হোসেনের পায়ে চেপে ধরে তাকে হত্যায় সহযোগিতা করে। হত্যার পর সুমি আক্তার ও তার স্বামী আবুবকর সিদ্দিক তাদের ঘরে থাকা বটি ও ছুরি দিয়ে পেট কেটে নাড়িভূড়ি বের করে ময়লার ঝুড়িতে নিয়ে ফেলে দেয়। পরে সারা রাত তারা নিহত আলী হোসেনের হাত, পা, মাথা ও শরীর ১২ টুকরো করে রেখে দেয়। পরদিন রাতে লাশের সেই টুকরোগুলো ডেমরা সারুলিয়া ঝিলের বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, গত সোমবার পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িত সুমি আক্তার ও আবুবকর সিদ্দিককে সারুলিয়া থেকে গ্রেফতারের পর হত্যার লোমহর্ষক ঘটনা জানতে পারেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে সোমবার সারাদিন সারুলিয়া ঝিলে ডুবুরি দিয়ে খুঁজে লাশের হাড়গোড়ের কোন সন্ধান পাননি। তবে তাদের বাসা থেকে আলী হোসেনের ব্যবহৃত জুতা উদ্ধার করা হয়। ঘাতক সুমির প্রথম স্বামী মদনপুর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমকেও সুমি ও তার দ্বিতীয় স্বামী আবুবকর সিদ্দিক মিলে হত্যা করে লাশ বাড়ির পাশের একটি ড্রেনে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে ডেমরা থানা পুলিশ সেই লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করে। ওই ঘটনায়ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই হত্যাকান্ড থেকেই মানুষ হত্যায় তাদের ভীতি দূর হয়ে যায়। সুমি ও আবু বকর সিদ্দিককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা প্রথমে পুলিশ ও পরে গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের পৃথক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সুমির অভিযোগ, তার প্রথম স্বামী জাহাঙ্গীর আলম তাকে পতিতাবৃত্তিতে আসতে বাধ্য করেছে। সেই ক্ষোভে তাকে দ্বিতীয় স্বামী আবুবকর সিদ্দিকের সহযোগিতায় হত্যা করে।