নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠের চাপ বাড়ছে। এ জন্য ডাবল শিফট বিদ্যালয়ের এক শিফট (পালা) বন্ধ হচ্ছে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই সিন্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। এতে ডাবল শিফট বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীও কমবে। আর এক শিফট বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ওইসব প্রতিষ্ঠানে শনিবার ক্লাস অব্যাহত রাখার সিন্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে ডাবল শিফটের বিদ্যালয়ে ‘মর্নিং শিফট’ সকাল ৭টার কিছু আগে বা পরে পাঠদান শুরু হয়। চলে ১২টা পর্যন্ত। এরপর দ্বিতীয় শিফট শুরু হয়; যা বিকেল ৪টা-৫টা পর্যন্ত চলে। সেই হিসেবে এই ধরণের বিদ্যালয়ে প্রতি শিফটে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা পাঠদানের সময় থাকে।
কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে (কারিকুলাম) এক শিফটের ক্লাস পরিচালনার জন্য অন্তত ছয় ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। ‘সঠিকভাবে’ ক্লাস পরিচালনার জন্য সব বিদ্যালয়কে এক শিফটে নিয়ে আসার সুপারিশ করা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের রুপরেখায়।
ঢাকার একটি থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে প্রতিদিন শিক্ষার্থীর মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে। এ জন্য ক্লাসরুম অ্যাক্টিভিটিস এর ওপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে। কিন্তু চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে ডাবল শিফটের স্কুলে দুই শিফট ঠিকমত পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য একটি শিফট বন্ধ করতে হচ্ছে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ডাবল শিফটের এক শিফট বন্ধ হলে শিক্ষা বাণিজ্যও কমবে। স্কুলগুলি ইচ্ছেমত শিক্ষার্থীও ভর্তি নিতে পারবে না।’
সম্প্রতি পিআরএলে যাওয়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে এক শিফটের ক্লাস পরিচালনার জন্য ৬ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। সঠিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে সব বিদ্যালয়কে এক শিফটে নিয়ে আসা দরকার।’
নতুন শিক্ষাক্রমে ‘শিখনকালীন মূল্যায়নকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এজন্য প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতার বিভিন্ন পর্যায়ে পারদর্শিতার নির্দেশক অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা অর্জনের স্তর নির্ধারণ করতে হবে। এজন্য পর্যাপ্ত সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুই শিফটে শিক্ষকরা সেই সময় পান না।’
২০২৫ সাল থেকে ডাবল শিফটের স্কুলে ভর্তি বন্ধ
গত ৩ জুন প্রকাশিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডাবল শিফট থাকবে না। আগামী ২০২৫ সাল থেকে ‘এন্ট্রি’ পর্যায়ে ভর্তি বন্ধ করে ধাপে ধাপে সব প্রতিষ্ঠানে ডাবল শিফট পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। পুরোপুরি এক শিফটে ‘রুপান্তরের’ পূর্ব পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে শনিবার খোলা রেখে শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
প্রতিবেদনে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাইলেও একবারে ডাবল শিফট বন্ধ করতে পারবো না। এটাকে পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে হবে। তবে যে সব প্রতিষ্ঠানে ডাবল শিফট রয়েছে, সে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শনিবার খোলা রেখে নতুন কারিকুলামের চাহিদা কিছুটা পুষিয়ে নেয়া যেতে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘২০২৫ সালে ডাবল শিফটে ভর্তি না করে পর্যায়ক্রমে প্রতিবছর একটি শ্রেণীতে ডাবল শিফট বাতিল করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সব ডাবল শিফট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এক শিফটে পরিণত করতে হবে।’
দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি বন্ধ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষকদের নতুন করে এমপিওভুক্তি করা যাবে না। দ্বিতীয় শিফটের এমপিও প্রাপ্ত শিক্ষকদের সমন্বয় করে কর্মে নিয়োজিত রাখার কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। ডাবল শিফটের প্রতিষ্ঠানসমূহে দ্বিতীয় শিফটে নতুন করে শ্রেণী শাখা খোলার অনুমোদন দেয়া যাবে না।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন আহ্বান করা হলে কিছু সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডাবল শিফট এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত এমপিও আদেশে ডাবল শিফট উল্লেখ করা হয়নি। এ কারণে, ডাবল শিফটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহে দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষক/কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদন বারবার বাতিল হয়ে যাচ্ছে। এ সমস্যার ‘সুরাহা’ প্রয়োজন।
ডাবল শিফট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ‘কন্টাক্ট আওয়ার’ পূরণ হচ্ছে না উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ফলে শিখন ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে সারাদেশে ৪৬৫টি বিদ্যালয়ে ডাবল শিফট চালু রয়েছে। এগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাত লাখ ৫২ হাজারের মতো। এর মধ্যে ১৬৫টি সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখ ৭০ হাজার, ২২২টি এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ে তিন লাখ ৮৫ হাজার এবং নন-এমপিওভুক্ত ৭৮টি বিদ্যালয়ে ৯৬ হাজারের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। সারাদেশে ডাবল শিফট বিদ্যালয়ের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন।
থাকবে না শাখা ক্যাম্পাস
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’ এর ডাবল শিফট ও ব্রাঞ্চ সংক্রান্ত দুটি অনুচ্ছেদ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শাখা ক্যাম্পাস/ব্রাঞ্চ রয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডসমূহ সে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস/ব্রাঞ্চের নাম অনুসারে পাঠদানের অনুমতি প্রদান করে পৃথক ইআইআইএন (এডুকেশন ইনস্টিটিউশন আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) প্রদানের জন্য শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) কাছে প্রেরণ করবে।’
এক্ষেত্রে পরিদর্শন প্রতিবেদনের প্রয়োজন হবে না উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নতুন ইআইআইএন নম্বর প্রাপ্ত ক্যাম্পাস/ব্রাঞ্চকে আলাদা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনা করতে হবে। এ লক্ষে আলাদা ম্যানেজিং কমিটি গঠনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান গত ১৩ জুন সংবাদকে বলেন, ‘যেসব স্কুলের একাধিক শাখা ক্যাম্পাস আছে... যেমন মতিঝিল আইডিয়াল, ভিকারুননেছা, মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়- এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সব ক্যাম্পাসের জন্য আলাদা ইআইআইএন নম্বর দেয়া হবে।’
খুব শীঘ্রই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি। এখন আমরা ব্যানবেইসকে চিঠি দেবো-সব শাখা ক্যাম্পাসের জন্য আলাদা ইআইআইএন দেয়ার জন্য। এ বছরই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে।’ এর ফলে প্রত্যেকটি শাখা ক্যাস্পাসই আলাদা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। আলাদা পরিচালনা পরিষদও গঠন হবে।
বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪
নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠের চাপ বাড়ছে। এ জন্য ডাবল শিফট বিদ্যালয়ের এক শিফট (পালা) বন্ধ হচ্ছে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই সিন্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। এতে ডাবল শিফট বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীও কমবে। আর এক শিফট বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ওইসব প্রতিষ্ঠানে শনিবার ক্লাস অব্যাহত রাখার সিন্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে ডাবল শিফটের বিদ্যালয়ে ‘মর্নিং শিফট’ সকাল ৭টার কিছু আগে বা পরে পাঠদান শুরু হয়। চলে ১২টা পর্যন্ত। এরপর দ্বিতীয় শিফট শুরু হয়; যা বিকেল ৪টা-৫টা পর্যন্ত চলে। সেই হিসেবে এই ধরণের বিদ্যালয়ে প্রতি শিফটে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা পাঠদানের সময় থাকে।
কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে (কারিকুলাম) এক শিফটের ক্লাস পরিচালনার জন্য অন্তত ছয় ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। ‘সঠিকভাবে’ ক্লাস পরিচালনার জন্য সব বিদ্যালয়কে এক শিফটে নিয়ে আসার সুপারিশ করা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের রুপরেখায়।
ঢাকার একটি থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে প্রতিদিন শিক্ষার্থীর মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে। এ জন্য ক্লাসরুম অ্যাক্টিভিটিস এর ওপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে। কিন্তু চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে ডাবল শিফটের স্কুলে দুই শিফট ঠিকমত পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য একটি শিফট বন্ধ করতে হচ্ছে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ডাবল শিফটের এক শিফট বন্ধ হলে শিক্ষা বাণিজ্যও কমবে। স্কুলগুলি ইচ্ছেমত শিক্ষার্থীও ভর্তি নিতে পারবে না।’
সম্প্রতি পিআরএলে যাওয়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে এক শিফটের ক্লাস পরিচালনার জন্য ৬ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। সঠিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে সব বিদ্যালয়কে এক শিফটে নিয়ে আসা দরকার।’
নতুন শিক্ষাক্রমে ‘শিখনকালীন মূল্যায়নকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এজন্য প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতার বিভিন্ন পর্যায়ে পারদর্শিতার নির্দেশক অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা অর্জনের স্তর নির্ধারণ করতে হবে। এজন্য পর্যাপ্ত সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুই শিফটে শিক্ষকরা সেই সময় পান না।’
২০২৫ সাল থেকে ডাবল শিফটের স্কুলে ভর্তি বন্ধ
গত ৩ জুন প্রকাশিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডাবল শিফট থাকবে না। আগামী ২০২৫ সাল থেকে ‘এন্ট্রি’ পর্যায়ে ভর্তি বন্ধ করে ধাপে ধাপে সব প্রতিষ্ঠানে ডাবল শিফট পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। পুরোপুরি এক শিফটে ‘রুপান্তরের’ পূর্ব পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে শনিবার খোলা রেখে শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
প্রতিবেদনে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাইলেও একবারে ডাবল শিফট বন্ধ করতে পারবো না। এটাকে পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে হবে। তবে যে সব প্রতিষ্ঠানে ডাবল শিফট রয়েছে, সে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শনিবার খোলা রেখে নতুন কারিকুলামের চাহিদা কিছুটা পুষিয়ে নেয়া যেতে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘২০২৫ সালে ডাবল শিফটে ভর্তি না করে পর্যায়ক্রমে প্রতিবছর একটি শ্রেণীতে ডাবল শিফট বাতিল করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সব ডাবল শিফট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এক শিফটে পরিণত করতে হবে।’
দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি বন্ধ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষকদের নতুন করে এমপিওভুক্তি করা যাবে না। দ্বিতীয় শিফটের এমপিও প্রাপ্ত শিক্ষকদের সমন্বয় করে কর্মে নিয়োজিত রাখার কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। ডাবল শিফটের প্রতিষ্ঠানসমূহে দ্বিতীয় শিফটে নতুন করে শ্রেণী শাখা খোলার অনুমোদন দেয়া যাবে না।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন আহ্বান করা হলে কিছু সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডাবল শিফট এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত এমপিও আদেশে ডাবল শিফট উল্লেখ করা হয়নি। এ কারণে, ডাবল শিফটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহে দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষক/কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদন বারবার বাতিল হয়ে যাচ্ছে। এ সমস্যার ‘সুরাহা’ প্রয়োজন।
ডাবল শিফট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ‘কন্টাক্ট আওয়ার’ পূরণ হচ্ছে না উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ফলে শিখন ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে সারাদেশে ৪৬৫টি বিদ্যালয়ে ডাবল শিফট চালু রয়েছে। এগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাত লাখ ৫২ হাজারের মতো। এর মধ্যে ১৬৫টি সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখ ৭০ হাজার, ২২২টি এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ে তিন লাখ ৮৫ হাজার এবং নন-এমপিওভুক্ত ৭৮টি বিদ্যালয়ে ৯৬ হাজারের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। সারাদেশে ডাবল শিফট বিদ্যালয়ের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন।
থাকবে না শাখা ক্যাম্পাস
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’ এর ডাবল শিফট ও ব্রাঞ্চ সংক্রান্ত দুটি অনুচ্ছেদ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শাখা ক্যাম্পাস/ব্রাঞ্চ রয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডসমূহ সে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস/ব্রাঞ্চের নাম অনুসারে পাঠদানের অনুমতি প্রদান করে পৃথক ইআইআইএন (এডুকেশন ইনস্টিটিউশন আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) প্রদানের জন্য শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) কাছে প্রেরণ করবে।’
এক্ষেত্রে পরিদর্শন প্রতিবেদনের প্রয়োজন হবে না উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নতুন ইআইআইএন নম্বর প্রাপ্ত ক্যাম্পাস/ব্রাঞ্চকে আলাদা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনা করতে হবে। এ লক্ষে আলাদা ম্যানেজিং কমিটি গঠনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান গত ১৩ জুন সংবাদকে বলেন, ‘যেসব স্কুলের একাধিক শাখা ক্যাম্পাস আছে... যেমন মতিঝিল আইডিয়াল, ভিকারুননেছা, মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়- এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সব ক্যাম্পাসের জন্য আলাদা ইআইআইএন নম্বর দেয়া হবে।’
খুব শীঘ্রই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি। এখন আমরা ব্যানবেইসকে চিঠি দেবো-সব শাখা ক্যাম্পাসের জন্য আলাদা ইআইআইএন দেয়ার জন্য। এ বছরই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে।’ এর ফলে প্রত্যেকটি শাখা ক্যাস্পাসই আলাদা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। আলাদা পরিচালনা পরিষদও গঠন হবে।