বাঙালি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সন্জীদা খাতুন চলে যাওয়ার তিন মাসের মাথায় তার হাতে গড়া ছায়ানটের নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডা. সারওয়ার আলীকে, যিনি এতদিন নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সন্জীদা খাতুনের প্রয়াণের পর শুক্রবার প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভায় কার্যনির্বাহী সংসদ পুনর্বিন্যস্ত করেছে ছায়ানট। পুনর্বিন্যস্ত ছায়ানট কার্যকরী সংসদে সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন খায়রুল আনাম শাকিল ও পার্থ তানভীর নভেদ্। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লাইসা আহমদ লিসাকে পদে বহাল রাখা হয়েছে।
১৯৬১ সালে পাকিস্তানি শাসকদের বাধা উপেক্ষা করে রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষ উদযাপন এবং তার সূত্র ধরে পরে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের জন্ম। সুফিয়া কামাল ছিলেন ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৯৯ সালে সুফিয়া কামালের মৃত্যুর পর সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন সন্জীদা খাতুন। গত ২৫ মার্চ রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সন্জীদা খাতুন। এর আগে কয়েক বছর ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই কীর্তিমান। তখন সারওয়ার আলীকে নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সারওয়ার আলী তৃতীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব; যিনি ছায়ানটের সভাপতির দায়িত্বে এসেছেন। শনিবার দুপুরে সারওয়ার আলী জানান, “ছায়ানটের সভাপতি হিসেবে এতদিন দায়িত্বে ছিলেন সন্জীদা খাতুন। তাঁর মতো এত যোগ্য আমি নই, তবে চেষ্টা করবো ছায়ানটের আদর্শে অবিচল থেকে দায়িত্ব পালন করতে।” সভায় নুরুন্নাহার আবেদীন ও সন্জীদা খাতুনের প্রয়াণের পর ছায়ানটের ট্রাস্টি বোর্ড তাদের শূন্যপদে সাঈদা কামাল এবং রুচিরা তাবাস্সুম নভেদ্কে ট্রাস্টি নির্বাচন করেছে। বাঙালি জাতিসত্তাকে হৃদয়ে ধারণ করে সহিষ্ণু সম্প্রীতির সমাজ গড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করা হয় সভায়। গুরুত্ব আরোপ করা হয় আবহমান বাংলা গানের নিখুঁতরূপ চর্চায় গতিবেগ সঞ্চার ও বিস্তৃতির ওপর।
এছাড়া গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানায় এবং ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। যুগ্ম-সম্পাদক হয়েছেন জয়ন্ত রায় ও তানিয়া মান্নান। কোষাধ্যক্ষ নাসেহুন আমীন। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন মফিদুল হক, শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, নাহাস খলিল, আমিনুল কাওসার দীপু, সাহানা আক্তার রহমান পাপড়ি, মাসুদা নার্গিস আনাম কল্পনা, জুবায়ের ইউসুফ, গৌতম সরকার, জেসমিন বুলি ও সেমন্তী মঞ্জরী। বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিম-লে কিংবদন্তিতুল্য, গবেষকের চোখে বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব ছিলেন সন্জীদা খাতুন, যার জীবন কেটেছে বাঙালির আত্ম পরিচয়ের সুলুক সন্ধানে।
আজন্ম ছিলেন নিবিষ্ট রবীন্দ্র গবেষনায়। বাঙালি সংস্কৃতি আর রবীন্দ্রচর্চাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্ববব্যাপী। জীবনের ৯২ বছর পূর্ণ করার মাত্র দশ দিন আগে মারা যান সন্জীদা খাতুন। পরদিন ছায়ানট ভবন এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের তার মরদেহ নেওয়া হয়। সেখানে শ্রদ্ধা জানান তার সহকর্মী, সহযোদ্ধা, শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানা স্তরের মানুষ। এরপর সন্জীদা খাতুনের নির্দেশনা মেনে গেল ২৭ মার্চে অঙ্গ প্রতিস্থাপন আর গবেষণা কাজের জন্য তার দেহ দান করা হয় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি)। এর পর থেকে সভাপতির পদটি শূন্যই ছিল।
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
বাঙালি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সন্জীদা খাতুন চলে যাওয়ার তিন মাসের মাথায় তার হাতে গড়া ছায়ানটের নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডা. সারওয়ার আলীকে, যিনি এতদিন নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সন্জীদা খাতুনের প্রয়াণের পর শুক্রবার প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভায় কার্যনির্বাহী সংসদ পুনর্বিন্যস্ত করেছে ছায়ানট। পুনর্বিন্যস্ত ছায়ানট কার্যকরী সংসদে সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন খায়রুল আনাম শাকিল ও পার্থ তানভীর নভেদ্। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লাইসা আহমদ লিসাকে পদে বহাল রাখা হয়েছে।
১৯৬১ সালে পাকিস্তানি শাসকদের বাধা উপেক্ষা করে রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষ উদযাপন এবং তার সূত্র ধরে পরে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের জন্ম। সুফিয়া কামাল ছিলেন ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৯৯ সালে সুফিয়া কামালের মৃত্যুর পর সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন সন্জীদা খাতুন। গত ২৫ মার্চ রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সন্জীদা খাতুন। এর আগে কয়েক বছর ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই কীর্তিমান। তখন সারওয়ার আলীকে নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সারওয়ার আলী তৃতীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব; যিনি ছায়ানটের সভাপতির দায়িত্বে এসেছেন। শনিবার দুপুরে সারওয়ার আলী জানান, “ছায়ানটের সভাপতি হিসেবে এতদিন দায়িত্বে ছিলেন সন্জীদা খাতুন। তাঁর মতো এত যোগ্য আমি নই, তবে চেষ্টা করবো ছায়ানটের আদর্শে অবিচল থেকে দায়িত্ব পালন করতে।” সভায় নুরুন্নাহার আবেদীন ও সন্জীদা খাতুনের প্রয়াণের পর ছায়ানটের ট্রাস্টি বোর্ড তাদের শূন্যপদে সাঈদা কামাল এবং রুচিরা তাবাস্সুম নভেদ্কে ট্রাস্টি নির্বাচন করেছে। বাঙালি জাতিসত্তাকে হৃদয়ে ধারণ করে সহিষ্ণু সম্প্রীতির সমাজ গড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করা হয় সভায়। গুরুত্ব আরোপ করা হয় আবহমান বাংলা গানের নিখুঁতরূপ চর্চায় গতিবেগ সঞ্চার ও বিস্তৃতির ওপর।
এছাড়া গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানায় এবং ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। যুগ্ম-সম্পাদক হয়েছেন জয়ন্ত রায় ও তানিয়া মান্নান। কোষাধ্যক্ষ নাসেহুন আমীন। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন মফিদুল হক, শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, নাহাস খলিল, আমিনুল কাওসার দীপু, সাহানা আক্তার রহমান পাপড়ি, মাসুদা নার্গিস আনাম কল্পনা, জুবায়ের ইউসুফ, গৌতম সরকার, জেসমিন বুলি ও সেমন্তী মঞ্জরী। বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিম-লে কিংবদন্তিতুল্য, গবেষকের চোখে বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব ছিলেন সন্জীদা খাতুন, যার জীবন কেটেছে বাঙালির আত্ম পরিচয়ের সুলুক সন্ধানে।
আজন্ম ছিলেন নিবিষ্ট রবীন্দ্র গবেষনায়। বাঙালি সংস্কৃতি আর রবীন্দ্রচর্চাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্ববব্যাপী। জীবনের ৯২ বছর পূর্ণ করার মাত্র দশ দিন আগে মারা যান সন্জীদা খাতুন। পরদিন ছায়ানট ভবন এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের তার মরদেহ নেওয়া হয়। সেখানে শ্রদ্ধা জানান তার সহকর্মী, সহযোদ্ধা, শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানা স্তরের মানুষ। এরপর সন্জীদা খাতুনের নির্দেশনা মেনে গেল ২৭ মার্চে অঙ্গ প্রতিস্থাপন আর গবেষণা কাজের জন্য তার দেহ দান করা হয় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি)। এর পর থেকে সভাপতির পদটি শূন্যই ছিল।