‘নুহাশপল্লীর উন্নয়ন বাবদ অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অঙ্কের একটি ফান্ড এসেছে, যা বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। এই ফান্ড নেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।’ গত মে মাসে এক ব্যক্তি নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া পরিচয় দিয়ে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওনকে কল করেন। তখনও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া জীবিত ছিলেন। তাই ওই ব্যক্তি অজ্ঞাত উপ-সচিবের ফোন নম্বর দিলে সেই নম্বরে যোগাযোগ করেন মেহের আফরোজ শাওন।
তখন অজ্ঞাত ওই উপ-সচিব শাওনকে জানায়, ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা দিতে হবে। শাওন নুহাশপল্লীর জন্য অনুদান পেতে সরল বিশ্বাসে বিকাশের মাধ্যমে এই টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে অনুদানের অর্থের জন্য শাওন যখন ওই উপ-সচিবের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, তখন নম্বরটি তিনি বন্ধ পান। এরপর শাওন প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে নুহাশপল্লীর ম্যানেজার বাদী হয়ে গত ১২ মে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ এই প্রতারণার পেছনে একজনের প্রতারকের সম্পৃক্ততা পায়। এরপর গতকাল দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রবিউল ইসলাম (৪১) নামের ওই প্রতারককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা চারটি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ বলছে, প্রতারক রবিউল ২০১৯ সাল থেকে প্রতারণা করে আসছে। সে বিভিন্ন কৌশলে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নম্বর সংগ্রহ করত। পরে নিজেকে কখনও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, কখনও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও সংসদ সদস্য পরিচয় দিয়ে ওই সব নম্বরে কল করত। বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে কল করে বিদেশি অনুদান এসেছে বলে জানাত। এরপর অনুদান পেতে কিছু প্রসেসিংয়ের কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নিতো।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল হক জানান, প্রতারক রবিউল যখন নিজেকে এমপি, মন্ত্রী পরিচয় দিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে কল করত, তারাও রবিউলের পরিচয় যাচাই না করে অনুদান পেতে দ্রুত বিকাশে টাকা দিয়ে দিতো। এই সুযোগ পেয়ে রবিউল এই পন্থা অবলম্বন করে সহজ-সরল মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে প্রতারণা করে আসছিল। রবিউল বলত, বিদেশি অনুদান পেতে হলে সরকারি ভ্যাট, ট্যাক্স ও প্রসেসিং ফি বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিতে হবে। ফির টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নগদ কিংবা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতো। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত তিনটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না এবং আর কোথায় থেকে কি পরিমাণ অর্থ সে হাতিয়েছে, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে এ ধরণের প্রতারণা ও প্রতারক থেকে রক্ষা পেতে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কোন লোভনীয় প্রস্তাবে সাড়া না দেয়া এবং কোথাও লেনদেনের আগে তার সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করার পরামর্শ দিয়েছেন ডিবির এই কর্মকর্তা।
শুক্রবার, ২৬ আগস্ট ২০২২
‘নুহাশপল্লীর উন্নয়ন বাবদ অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অঙ্কের একটি ফান্ড এসেছে, যা বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। এই ফান্ড নেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।’ গত মে মাসে এক ব্যক্তি নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া পরিচয় দিয়ে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওনকে কল করেন। তখনও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া জীবিত ছিলেন। তাই ওই ব্যক্তি অজ্ঞাত উপ-সচিবের ফোন নম্বর দিলে সেই নম্বরে যোগাযোগ করেন মেহের আফরোজ শাওন।
তখন অজ্ঞাত ওই উপ-সচিব শাওনকে জানায়, ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা দিতে হবে। শাওন নুহাশপল্লীর জন্য অনুদান পেতে সরল বিশ্বাসে বিকাশের মাধ্যমে এই টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে অনুদানের অর্থের জন্য শাওন যখন ওই উপ-সচিবের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, তখন নম্বরটি তিনি বন্ধ পান। এরপর শাওন প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে নুহাশপল্লীর ম্যানেজার বাদী হয়ে গত ১২ মে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ এই প্রতারণার পেছনে একজনের প্রতারকের সম্পৃক্ততা পায়। এরপর গতকাল দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রবিউল ইসলাম (৪১) নামের ওই প্রতারককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা চারটি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ বলছে, প্রতারক রবিউল ২০১৯ সাল থেকে প্রতারণা করে আসছে। সে বিভিন্ন কৌশলে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নম্বর সংগ্রহ করত। পরে নিজেকে কখনও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, কখনও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও সংসদ সদস্য পরিচয় দিয়ে ওই সব নম্বরে কল করত। বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে কল করে বিদেশি অনুদান এসেছে বলে জানাত। এরপর অনুদান পেতে কিছু প্রসেসিংয়ের কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নিতো।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল হক জানান, প্রতারক রবিউল যখন নিজেকে এমপি, মন্ত্রী পরিচয় দিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে কল করত, তারাও রবিউলের পরিচয় যাচাই না করে অনুদান পেতে দ্রুত বিকাশে টাকা দিয়ে দিতো। এই সুযোগ পেয়ে রবিউল এই পন্থা অবলম্বন করে সহজ-সরল মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে প্রতারণা করে আসছিল। রবিউল বলত, বিদেশি অনুদান পেতে হলে সরকারি ভ্যাট, ট্যাক্স ও প্রসেসিং ফি বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিতে হবে। ফির টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নগদ কিংবা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতো। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত তিনটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না এবং আর কোথায় থেকে কি পরিমাণ অর্থ সে হাতিয়েছে, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে এ ধরণের প্রতারণা ও প্রতারক থেকে রক্ষা পেতে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কোন লোভনীয় প্রস্তাবে সাড়া না দেয়া এবং কোথাও লেনদেনের আগে তার সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করার পরামর্শ দিয়েছেন ডিবির এই কর্মকর্তা।