ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস । ফাইল ছবি
কখনো স্বপ্নচারিণীর কবিতা কিংবা পাগলা হাওয়ায় বন্ধু আসার বার্তা দেন গানের সুরে। নগরবাউল, গুরু, রকস্টার কোন নামে চিনেন আপনি তাকে। ব্যান্ড মিউজিকের নক্ষত্র তিনি। এমন বিশেষণের পর নিশ্চয় আপনার বুঝতে বাকি নেই, কে সেই মানুষটি। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন তিনিই সঙ্গীতপাগল জেমস। পুরো নাম ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস।
আজ নগর বাউল খ্যাত জেমস ৫৮ বছরে পা রাখলেন। ২ অক্টোবর এই শিল্পীর জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের এ দিনে নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন জেমস। তবে কৈশোর, তারুণ্য কাটিয়েছেন চট্টগ্রামে। বাবা সরকারি বড় কর্মকর্তা হলেও তিনি ছিলেন অনেকটা বোহেমিয়ান। চট্টগ্রামে আজিজ বোর্ডিংয়ের একটি রুমে থেকে সঙ্গীত চর্চা ও সন্ধ্যার পর নাইট ক্লাবে গান করতেন। এভাবেই জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় কেটেছে তার। পরে ঢাকা চলে আসেন।
জন্মদিনে এই তারকাকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে ভক্তদের উন্মাদনা আর আয়োজনের কমতি না থাকলেও, বরাবরের মতো এবারও নিজের মতো করে কাটাবেন জেমস। এদিনে তিনি রাখেন না কোনও কনসার্ট-রেকর্ডিং। পারতপক্ষে অংশ নেন না কোনও জন্মোৎসবের আয়োজনে। দিনটিতে নিজের মধ্যেই গুটিসুটিমেরে থাকতে পছন্দ করেন তিনি।
তবে ভক্তদের জন্য প্রতি জন্মদিনেই বিশেষ বার্তা পাঠান। এবার জন্মদিনের (২ অক্টোবর ২০২২) প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা) তেমনই বার্তা দিলেন। ভক্তদের উদ্দেশ্যে জেমস বললেন, ‘যতদিন তোরা আছিস, ততদিন আমি আছি।’
‘রকস্টার’ জেমস । ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম থেকে শুরু হওয়া ব্যান্ডদল ‘ফিলিংস’-এর মাধ্যমে তিনি প্রথমে খ্যাতি অর্জন করেন। পরে সেই ব্যান্ড দলের নাম ‘নগরবাউল করেন’। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে দেশের বাইরেও খুব জনপ্রিয় জেমস।
মাঝে নতুন গান থেকে লম্বা ছুটি নিলেও সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছেন নিয়মিত গান প্রকাশের। তারই সূত্র ধরে গত ২ মে টানা ১২ বছর পর হাজির হন নতুন গানচিত্র ‘আই লাভ ইউ’ নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে আবারও আসছেন নতুন গান নিয়ে। এমনটাই নিশ্চিত করেছেন নগর বাউলের অন্যতম মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন।
১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। ১৯৮৭ সালে প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ পায়। ১৯৮৮ সালে ‘অনন্যা’ নামের একক অ্যালবাম প্রকাশ করে সুপার হিট হয়ে যান জেমস। এরপর ১৯৯০ সালে ‘জেল থেকে বলছি’, ১৯৯৬ ‘নগর বাউল’, ১৯৯৮ সালে ‘লেইস ফিতা লেইস’, ১৯৯৯ সালে ‘কালেকশন অব ফিলিংস’ অ্যালবামগুলো প্রকাশ পায়।
এরপর ‘ফিলিংস’ ভেঙে জেমস গড়ে তোলেন নতুন ব্যান্ড ‘নগর বাউল’। এই ব্যান্ড ‘দুষ্টু ছেলের দল’ এবং ‘বিজলি’ অ্যালবাম দুটির মধ্যেই আটকে যায়। এরপর একক অ্যালবাম হিসেবে প্রকাশ করেন ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘ঠিক আছে বন্ধু’, ‘আমি তোমাদেরই লোক’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘তুফান’ এবং সর্বশেষ ‘কাল যমুনা’।
এরপর তিনি বেশ কিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন। ‘দেশা দ্য লিডার’, ‘সত্তা’ ছবির জন্য গান করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।
বাংলা গানের পাশাপাশি হিন্দি গানও সুপার ডুপার হিট। জয় করেছেন লাখো ভক্ত-শ্রোতার হৃদয়। বলিউডে তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো- ‘ভিগি ভিগি’ (গ্যাংস্টার), ‘চল চলে’ (ও লামহে) এবং ‘আলবিদা’, ‘রিস্তে’ (লাইফ ইন অ্যা মেট্টো), ‘বেবাসি’ (ওয়ার্নিং)।
ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস । ফাইল ছবি
এদিকে শেষ অ্যালবাম প্রকাশের টানা এক যুগ পর চলতি বছর প্রকাশ পায় সিঙ্গেল ‘আই লাভ ইউ’। এই রকস্টারকে নিয়ে ভক্তদের উন্মাদনার তরী ছুটে চলেছে বিরামহীন ভালোবাসার পথে। জেমসও ভক্তদের ভালোবাসার মূল্যায়নে গান গেয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
জেমসের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘তারায় তারায়’, ‘লেইস ফিতা লেইস’, ‘সুলতানা বিবিয়ানা’, ‘সুস্মিতার সবুজ ওড়না’, ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা’, ‘কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী’, ‘দুস্টু ছেলের দল’, ‘দিদিমনি’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘তোর সব কিছুতে নয় ছয়’, ‘বাবা কত দিন দেখি না তোমায়’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘এক নদী যমুনা’ ইত্যাদি।
ব্যক্তিজীবনে জেমস দুই বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী ছিলেন রথি। তিনি ছিলেন একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। ১৯৯১ সালে বিয়ের পর ২০০৩ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। রথির সঙ্গে বিচ্ছেদের আগেই ২০০২ সালে জেমস বিয়ে করেন বেনজির সাজ্জাদকে। জেমসের দুইটি কন্যা সন্তান (জান্নাত এবং জাহান) ও একটি পুত্র সন্তান (দানেশ) রয়েছে।
রোববার, ০২ অক্টোবর ২০২২
ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস । ফাইল ছবি
কখনো স্বপ্নচারিণীর কবিতা কিংবা পাগলা হাওয়ায় বন্ধু আসার বার্তা দেন গানের সুরে। নগরবাউল, গুরু, রকস্টার কোন নামে চিনেন আপনি তাকে। ব্যান্ড মিউজিকের নক্ষত্র তিনি। এমন বিশেষণের পর নিশ্চয় আপনার বুঝতে বাকি নেই, কে সেই মানুষটি। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন তিনিই সঙ্গীতপাগল জেমস। পুরো নাম ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস।
আজ নগর বাউল খ্যাত জেমস ৫৮ বছরে পা রাখলেন। ২ অক্টোবর এই শিল্পীর জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের এ দিনে নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন জেমস। তবে কৈশোর, তারুণ্য কাটিয়েছেন চট্টগ্রামে। বাবা সরকারি বড় কর্মকর্তা হলেও তিনি ছিলেন অনেকটা বোহেমিয়ান। চট্টগ্রামে আজিজ বোর্ডিংয়ের একটি রুমে থেকে সঙ্গীত চর্চা ও সন্ধ্যার পর নাইট ক্লাবে গান করতেন। এভাবেই জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় কেটেছে তার। পরে ঢাকা চলে আসেন।
জন্মদিনে এই তারকাকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে ভক্তদের উন্মাদনা আর আয়োজনের কমতি না থাকলেও, বরাবরের মতো এবারও নিজের মতো করে কাটাবেন জেমস। এদিনে তিনি রাখেন না কোনও কনসার্ট-রেকর্ডিং। পারতপক্ষে অংশ নেন না কোনও জন্মোৎসবের আয়োজনে। দিনটিতে নিজের মধ্যেই গুটিসুটিমেরে থাকতে পছন্দ করেন তিনি।
তবে ভক্তদের জন্য প্রতি জন্মদিনেই বিশেষ বার্তা পাঠান। এবার জন্মদিনের (২ অক্টোবর ২০২২) প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা) তেমনই বার্তা দিলেন। ভক্তদের উদ্দেশ্যে জেমস বললেন, ‘যতদিন তোরা আছিস, ততদিন আমি আছি।’
‘রকস্টার’ জেমস । ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম থেকে শুরু হওয়া ব্যান্ডদল ‘ফিলিংস’-এর মাধ্যমে তিনি প্রথমে খ্যাতি অর্জন করেন। পরে সেই ব্যান্ড দলের নাম ‘নগরবাউল করেন’। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে দেশের বাইরেও খুব জনপ্রিয় জেমস।
মাঝে নতুন গান থেকে লম্বা ছুটি নিলেও সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছেন নিয়মিত গান প্রকাশের। তারই সূত্র ধরে গত ২ মে টানা ১২ বছর পর হাজির হন নতুন গানচিত্র ‘আই লাভ ইউ’ নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে আবারও আসছেন নতুন গান নিয়ে। এমনটাই নিশ্চিত করেছেন নগর বাউলের অন্যতম মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন।
১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। ১৯৮৭ সালে প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ পায়। ১৯৮৮ সালে ‘অনন্যা’ নামের একক অ্যালবাম প্রকাশ করে সুপার হিট হয়ে যান জেমস। এরপর ১৯৯০ সালে ‘জেল থেকে বলছি’, ১৯৯৬ ‘নগর বাউল’, ১৯৯৮ সালে ‘লেইস ফিতা লেইস’, ১৯৯৯ সালে ‘কালেকশন অব ফিলিংস’ অ্যালবামগুলো প্রকাশ পায়।
এরপর ‘ফিলিংস’ ভেঙে জেমস গড়ে তোলেন নতুন ব্যান্ড ‘নগর বাউল’। এই ব্যান্ড ‘দুষ্টু ছেলের দল’ এবং ‘বিজলি’ অ্যালবাম দুটির মধ্যেই আটকে যায়। এরপর একক অ্যালবাম হিসেবে প্রকাশ করেন ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘ঠিক আছে বন্ধু’, ‘আমি তোমাদেরই লোক’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘তুফান’ এবং সর্বশেষ ‘কাল যমুনা’।
এরপর তিনি বেশ কিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন। ‘দেশা দ্য লিডার’, ‘সত্তা’ ছবির জন্য গান করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।
বাংলা গানের পাশাপাশি হিন্দি গানও সুপার ডুপার হিট। জয় করেছেন লাখো ভক্ত-শ্রোতার হৃদয়। বলিউডে তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো- ‘ভিগি ভিগি’ (গ্যাংস্টার), ‘চল চলে’ (ও লামহে) এবং ‘আলবিদা’, ‘রিস্তে’ (লাইফ ইন অ্যা মেট্টো), ‘বেবাসি’ (ওয়ার্নিং)।
ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস । ফাইল ছবি
এদিকে শেষ অ্যালবাম প্রকাশের টানা এক যুগ পর চলতি বছর প্রকাশ পায় সিঙ্গেল ‘আই লাভ ইউ’। এই রকস্টারকে নিয়ে ভক্তদের উন্মাদনার তরী ছুটে চলেছে বিরামহীন ভালোবাসার পথে। জেমসও ভক্তদের ভালোবাসার মূল্যায়নে গান গেয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
জেমসের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘তারায় তারায়’, ‘লেইস ফিতা লেইস’, ‘সুলতানা বিবিয়ানা’, ‘সুস্মিতার সবুজ ওড়না’, ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা’, ‘কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী’, ‘দুস্টু ছেলের দল’, ‘দিদিমনি’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘তোর সব কিছুতে নয় ছয়’, ‘বাবা কত দিন দেখি না তোমায়’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘এক নদী যমুনা’ ইত্যাদি।
ব্যক্তিজীবনে জেমস দুই বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী ছিলেন রথি। তিনি ছিলেন একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। ১৯৯১ সালে বিয়ের পর ২০০৩ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। রথির সঙ্গে বিচ্ছেদের আগেই ২০০২ সালে জেমস বিয়ে করেন বেনজির সাজ্জাদকে। জেমসের দুইটি কন্যা সন্তান (জান্নাত এবং জাহান) ও একটি পুত্র সন্তান (দানেশ) রয়েছে।