ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা দেড় মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১২ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার স্কুল, মসজিদ এমনকি হাসপাতালের মতো স্থাপনাও।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ইসরায়েলি সরকারের বিচার করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। এমনকি ইসরায়েলি সরকারকে জবাবদিহি করার জন্য ‘প্রচুর প্রমাণ’ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের চলমান কর্মকাণ্ডের আবারও সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। শনিবার তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ইসরায়েল সরকারকে জবাবদিহি করার জন্য ‘প্রচুর প্রমাণ’ রয়েছে।
জার্মানিতে একদিনের সফর শেষ করে তুরস্কে ফিরে এরদোয়ান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইসরায়েলি প্রশাসনের বিচারের জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই অপরাধের নিরপেক্ষ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আমরা আমাদের ক্ষমতায় থাকা সবকিছুই করব।’
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্পর্কে তুরস্কের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নেতানিয়াহু নিজেই একজন সর্বনাশগ্রস্ত ব্যক্তি। আমরা তার থেকে মুক্তি পেতে চলেছি। আশা করি, ইসরায়েলও তাকে বিদায় করবে এবং এতে করে বিশ্বের সমস্ত ইহুদি তার থেকে মুক্তি পাবে। বর্তমানে, তার নিজের দেশের (ইসরায়েলের) ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ নাগরিক নেতানিয়াহুর বিরোধিতা করে।’
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক গাজার নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ‘গাজার বাসিন্দাদের সাহায্য দিতে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের খাদ্য ও পানি না দিয়ে অনাহারে রাখছে ইসরায়েল। কিন্তু আমরা হাল ছাড়ব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতা যাই থাকুক না কেন, আমরা গাজাকে বাঁচিয়ে রাখব। সমগ্র বিশ্ব, বিশেষ করে ইসলামিক দেশগুলোর উচিত সাহায্য প্রদানের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া।’
এর আগে সংক্ষিপ্ত এক সফরে গত শুক্রবার জার্মানিতে গিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তবে তুর্কি প্রেসিডেন্টের এবারের জার্মান সফরটি ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ নিয়ে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে প্রকাশ্যে এরদোয়ানের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে।
গত শুক্রবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলন করতে আসেন এরদোয়ান ও শলৎজ। সেখানে হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রসঙ্গ নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রতি আমাদের সংহতি নিয়ে কোনো ছাড় হবে না।’
ওলাফ শলৎজ এমন কথা বলার পর এরদোয়ান মন্তব্য করেন, জার্মানি ইসরায়েলের কাছে দায়বদ্ধ। কারণ তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের বিরুদ্ধে হলোকাস্ট (গণহত্যা) চালিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রতি তুরস্কের কোনও দায় নেই। এ কারণে আমরা (তুরস্ক) প্রকাশ্যে যা খুশি তাই বলতে পারি।
এছাড়া ইসরায়েলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন এরদোয়ান। গাজায় নির্বিচার বোমা হামলারও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। এরদোয়ান বলেছেন, ইহুদিদের ধর্মীয়গ্রন্থ তোরাহতে শিশু ও হাসপাতালের হামলার নির্দেশনা নেই।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
ফিলিস্তিনি সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১২ হাজারে পৌঁছেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যাই ৫ হাজারের বেশি।
এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে তিন হাজারেরও বেশি নারী রয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
রোববার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা দেড় মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১২ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার স্কুল, মসজিদ এমনকি হাসপাতালের মতো স্থাপনাও।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ইসরায়েলি সরকারের বিচার করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। এমনকি ইসরায়েলি সরকারকে জবাবদিহি করার জন্য ‘প্রচুর প্রমাণ’ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের চলমান কর্মকাণ্ডের আবারও সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। শনিবার তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ইসরায়েল সরকারকে জবাবদিহি করার জন্য ‘প্রচুর প্রমাণ’ রয়েছে।
জার্মানিতে একদিনের সফর শেষ করে তুরস্কে ফিরে এরদোয়ান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইসরায়েলি প্রশাসনের বিচারের জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই অপরাধের নিরপেক্ষ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আমরা আমাদের ক্ষমতায় থাকা সবকিছুই করব।’
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্পর্কে তুরস্কের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নেতানিয়াহু নিজেই একজন সর্বনাশগ্রস্ত ব্যক্তি। আমরা তার থেকে মুক্তি পেতে চলেছি। আশা করি, ইসরায়েলও তাকে বিদায় করবে এবং এতে করে বিশ্বের সমস্ত ইহুদি তার থেকে মুক্তি পাবে। বর্তমানে, তার নিজের দেশের (ইসরায়েলের) ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ নাগরিক নেতানিয়াহুর বিরোধিতা করে।’
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক গাজার নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ‘গাজার বাসিন্দাদের সাহায্য দিতে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের খাদ্য ও পানি না দিয়ে অনাহারে রাখছে ইসরায়েল। কিন্তু আমরা হাল ছাড়ব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতা যাই থাকুক না কেন, আমরা গাজাকে বাঁচিয়ে রাখব। সমগ্র বিশ্ব, বিশেষ করে ইসলামিক দেশগুলোর উচিত সাহায্য প্রদানের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া।’
এর আগে সংক্ষিপ্ত এক সফরে গত শুক্রবার জার্মানিতে গিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তবে তুর্কি প্রেসিডেন্টের এবারের জার্মান সফরটি ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ নিয়ে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে প্রকাশ্যে এরদোয়ানের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে।
গত শুক্রবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলন করতে আসেন এরদোয়ান ও শলৎজ। সেখানে হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রসঙ্গ নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রতি আমাদের সংহতি নিয়ে কোনো ছাড় হবে না।’
ওলাফ শলৎজ এমন কথা বলার পর এরদোয়ান মন্তব্য করেন, জার্মানি ইসরায়েলের কাছে দায়বদ্ধ। কারণ তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের বিরুদ্ধে হলোকাস্ট (গণহত্যা) চালিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রতি তুরস্কের কোনও দায় নেই। এ কারণে আমরা (তুরস্ক) প্রকাশ্যে যা খুশি তাই বলতে পারি।
এছাড়া ইসরায়েলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন এরদোয়ান। গাজায় নির্বিচার বোমা হামলারও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। এরদোয়ান বলেছেন, ইহুদিদের ধর্মীয়গ্রন্থ তোরাহতে শিশু ও হাসপাতালের হামলার নির্দেশনা নেই।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
ফিলিস্তিনি সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১২ হাজারে পৌঁছেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যাই ৫ হাজারের বেশি।
এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে তিন হাজারেরও বেশি নারী রয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।