গাজায় যুদ্ধবিরতির আরো একটি চেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়লো। নিরাপত্তা পরিষদে আবারো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলেছিল আলজেরিয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করায় তা বাতিল হয়ে গেছে।
আলজেরিয়ার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে ব্যপক সমালোচনার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এ ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চীন।চীন বলছে, এই ভেটোর ফলে একটি ভুল বার্তা যাবে এবং তা গাজায় হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ সংকেত হিসেবে কাজ করবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলজেরিয়ার তোলা এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনা ভেস্তে যেতো। তাই এই প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে আরেকটি বিকল্প প্রস্তাব আনবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তাদের প্রস্তাবে যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়নযোগ্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হবে। তবে তার সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দী জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি থাকবে। এছাড়া গাজায় ত্রাণ পৌছনোর পথে বাধা তুলে নেওয়ারও আহবান জানানো হবে। তবে তাদের প্রস্তাবে কবে ভোটাভুটি হতে পারে তা এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩টির ভোট পড়েছিল আলজেরিয়ার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে। এই প্রস্তাবের ওপর অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে যুক্তরাজ্য।
গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার জেরে যে সংঘাত শুরু হয়, তাতে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ২৯ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। গাজার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ইসরায়েলের অব্যহত হামলার মুখে রাফা সীমান্তে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। সংখ্যাটি ১০ লাখের ওপরে। সংঘাত শুরুর আগে মিশরের সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে বাসিন্দা ছিল আড়াই লাখ।
প্রস্তাবটিতে ভেটো দেওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র যে যুক্তি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুন বলেছেন, গাজা যে পরিস্থিতি, সেখানে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে পরোক্ষভাবে এড়িয়ে যাওয়ার মানে হচ্ছে সেখানে যে মানুষ হত্যা চলছে, তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া।
তিনি বলেন, এ যুদ্ধ চলতে থাকলে তা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এবং তার ফলে বিশ্ব আরো বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। গাজার যুদ্ধের লেলিহান শিখা নেভানোর মাধ্যমেই গোটা অঞ্চলকে যুদ্ধের নারকীয়তা থেকে বাঁচানো সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে প্রস্তাবটি বাতিল হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত অমার বেনজামা । তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা আবারও ব্যর্থ হলাম। আপনারা আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখুন, ইতিহাস আপনাদের কীভাবে বিচার করবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি মিত্র দেশও যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটো প্রদানের সমালোচনা করেছে। এর মধ্যে জাতিসংঘে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, নিকোলা দ্য খিবিয়েখও গাজায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি ভেটোর কারণে বাতিল হওয়ার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেছেন, যখন ইসরায়েল ও হামাসের আলোচনা চলছে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের জন্য এটি উপযুক্ত সময় নয়। যুক্তরাজ্যের বারবারা উডওয়ার্ডও মোটামুটি একই সুরে কথা বলেন।
এর আগে মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তারা তাদের লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর। কোনো চাপের মুখে তারা তা থেকে পিছপা হবেন না।
জাতিসংঘ বরাবরই গাজায় নির্বিচার হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহবান জানালেও ইসরায়েল বলে আসছে তাদের লক্ষ্য শুধু হামাস।
বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
গাজায় যুদ্ধবিরতির আরো একটি চেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়লো। নিরাপত্তা পরিষদে আবারো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলেছিল আলজেরিয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করায় তা বাতিল হয়ে গেছে।
আলজেরিয়ার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে ব্যপক সমালোচনার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এ ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চীন।চীন বলছে, এই ভেটোর ফলে একটি ভুল বার্তা যাবে এবং তা গাজায় হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ সংকেত হিসেবে কাজ করবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলজেরিয়ার তোলা এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনা ভেস্তে যেতো। তাই এই প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে আরেকটি বিকল্প প্রস্তাব আনবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তাদের প্রস্তাবে যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়নযোগ্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হবে। তবে তার সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দী জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি থাকবে। এছাড়া গাজায় ত্রাণ পৌছনোর পথে বাধা তুলে নেওয়ারও আহবান জানানো হবে। তবে তাদের প্রস্তাবে কবে ভোটাভুটি হতে পারে তা এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩টির ভোট পড়েছিল আলজেরিয়ার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে। এই প্রস্তাবের ওপর অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে যুক্তরাজ্য।
গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার জেরে যে সংঘাত শুরু হয়, তাতে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ২৯ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। গাজার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ইসরায়েলের অব্যহত হামলার মুখে রাফা সীমান্তে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। সংখ্যাটি ১০ লাখের ওপরে। সংঘাত শুরুর আগে মিশরের সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে বাসিন্দা ছিল আড়াই লাখ।
প্রস্তাবটিতে ভেটো দেওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র যে যুক্তি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুন বলেছেন, গাজা যে পরিস্থিতি, সেখানে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে পরোক্ষভাবে এড়িয়ে যাওয়ার মানে হচ্ছে সেখানে যে মানুষ হত্যা চলছে, তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া।
তিনি বলেন, এ যুদ্ধ চলতে থাকলে তা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এবং তার ফলে বিশ্ব আরো বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। গাজার যুদ্ধের লেলিহান শিখা নেভানোর মাধ্যমেই গোটা অঞ্চলকে যুদ্ধের নারকীয়তা থেকে বাঁচানো সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে প্রস্তাবটি বাতিল হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত অমার বেনজামা । তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা আবারও ব্যর্থ হলাম। আপনারা আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখুন, ইতিহাস আপনাদের কীভাবে বিচার করবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি মিত্র দেশও যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটো প্রদানের সমালোচনা করেছে। এর মধ্যে জাতিসংঘে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, নিকোলা দ্য খিবিয়েখও গাজায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি ভেটোর কারণে বাতিল হওয়ার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেছেন, যখন ইসরায়েল ও হামাসের আলোচনা চলছে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের জন্য এটি উপযুক্ত সময় নয়। যুক্তরাজ্যের বারবারা উডওয়ার্ডও মোটামুটি একই সুরে কথা বলেন।
এর আগে মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তারা তাদের লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর। কোনো চাপের মুখে তারা তা থেকে পিছপা হবেন না।
জাতিসংঘ বরাবরই গাজায় নির্বিচার হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহবান জানালেও ইসরায়েল বলে আসছে তাদের লক্ষ্য শুধু হামাস।