"গত বছর ঈদে, আমরা একসাথে খেলেছি, আনন্দ করেছি। কিন্তু এই ঈদে আমরা তা মিস করছি...কারণ খেলার মতো কোনো খেলনা বা বন্ধু নেই। তারা সবাই মারা গেছে।" কথাগুলো বলছিল সাত বছরের তালা আবু আমর। মেয়েটি ইসরায়েলি হামলায় বাস্তুচ্যুত প্যালেস্টাইনিদের একজন। বর্তমানে তাকে থাকতে হচ্ছে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের একটি শরণার্থী শিবিরে।
সে আরো বলেছে, মনে হচ্ছে আমরাও আর বেঁচে নেই।
সম্প্রতি ঈদ নিয়ে তালাসহ গাজার আরো বেশ কয়েকটি শিশুর সঙ্গে কথা হয় বিবিসির। এসময় তাদের কথায় এসব দুঃখের কথা উঠে আসে।
সাত মাস হতে চললো চলমান সংঘাতের। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলিদের বিমান হামলা ও স্থল অভিযানে অন্তত ৩৩,৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ লাখ মানুষ ঘরহারা হয়েছে সেখানে। ১১ লাখের বেশি সম্মুখীন হয়েছে বিপর্যয়কর ক্ষুধার।
অসংখ্য গাজাবাসীর ঈদুল ফিতরের প্রথম সকাল কেটেছে কবরস্থানে। প্রিয়জনের কবর জিয়ারত করে।
গাজায় কেউ ভালো নেই। ঈদ সম্ভাষণের পরিবর্তে সেই আর্তিই এখন গাজাজুড়ে। সামাজিক মাধ্যমেও।
হামলার মুখে রাফায় আশ্রয় নেওয়া ছয় সন্তানের বাবা ৪৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ আল-বারবারি বিবিসিকে বলেন, ঈদের আগের রাতে আমরা সারা রাত জেগে থাকতাম, বাচ্চাদের জন্য মিষ্টান্ন এবং নতুন জামাকাপড় কিনতাম এবং বড় মসজিদে নামাজ পড়তাম। এই বছর আমাদের মৌলিক চাহিদাই পূরণেরই বাস্তবতা নেই। তাঁবুতে থাকতে হচ্ছে।"
গাজা শহরের শেজাইয়া এলাকার ১১ বছর বয়সী মেয়ে সারাহ আমের বিবিসিকে বলেন অন্যান্য বছর এসময় সে বিনোদন পার্কে যেতো, আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে যেতো।
সে বলে, "যখন মানুষ মরে যাচ্ছে, তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আহত হচ্ছে, তখন আমরা কীভাবে ঈদের আনন্দ করবো?
সে আরো বলে, "আমার বন্ধুরা... এখন নিখোঁজ এবং আমি জানি না তারা কোথায় আছে।আমি সেই মুহূর্তগুলি মিস করি যখন আমি তাদের সাথে দেখা করতাম এবং খেলতাম, আড্ডা দিতাম এবং একসাথে গান করতাম।"
সারাহ জানায় "আমি আমার মাকে আমাদের খেলার জন্য পুতুল আনতে বলেছিলাম। মা বলেছে তোমার মতো অনেক বাচ্চা তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে, তাদের কিছুই নেই। তাদের কথা চিন্তা করে দেখো।
গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান এলাকার ১৩ বছর বয়সী খলিল আবু হাসানিন। তার আশ্রয় হয়েছে রাফাহ শহরের উত্তরে একটি হাসপাতালে। সে বিবিসিকে বলেছে, "আমরা আমাদের প্রিয়জনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতাম। কিন্তু এখন আমাদের সমস্ত প্রিয়জন মারা গেছে। এবং কেনার জন্য কোন নতুন জামাকাপড় নেই, খাওয়ার জন্য কোন কুকিজ নেই এবং কোন পানীয় নেই।"
সে আরো বলেছে, "মানুষের লাশের কারণে এই ঈদে কোনো স্বাদ নেই... যেটা আমরা দেখছি।"
ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে পারছেন না প্যালেস্টাইনের সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের কর্মী ফেদা মুরজানও।ইসরায়েলি হামলায় আট বছর বয়সী কন্যা হাবিবাকে হারিয়ে এখন শুধু শোক তার জীবনে।
তিনি জানান ১৩ অক্টোবর গাজা শহরে তাদের বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় হাবিবা নিহত হন।
তিনি বলেন, "ঈদের দিন আমরা একত্র হতাম, আমরা আমাদের সেরা পোশাক পরতাম। আমাদের কাছে সবচেয়ে ভালো চকলেট থাকত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এই ঈদটি অনেক আলাদা।
"এই ঈদে আমি অন্য মানুষ। আমি একজন দুঃখী মা যে গত ছয় মাস ধরে কষ্ট পাচ্ছে।"
বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪
"গত বছর ঈদে, আমরা একসাথে খেলেছি, আনন্দ করেছি। কিন্তু এই ঈদে আমরা তা মিস করছি...কারণ খেলার মতো কোনো খেলনা বা বন্ধু নেই। তারা সবাই মারা গেছে।" কথাগুলো বলছিল সাত বছরের তালা আবু আমর। মেয়েটি ইসরায়েলি হামলায় বাস্তুচ্যুত প্যালেস্টাইনিদের একজন। বর্তমানে তাকে থাকতে হচ্ছে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের একটি শরণার্থী শিবিরে।
সে আরো বলেছে, মনে হচ্ছে আমরাও আর বেঁচে নেই।
সম্প্রতি ঈদ নিয়ে তালাসহ গাজার আরো বেশ কয়েকটি শিশুর সঙ্গে কথা হয় বিবিসির। এসময় তাদের কথায় এসব দুঃখের কথা উঠে আসে।
সাত মাস হতে চললো চলমান সংঘাতের। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলিদের বিমান হামলা ও স্থল অভিযানে অন্তত ৩৩,৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ লাখ মানুষ ঘরহারা হয়েছে সেখানে। ১১ লাখের বেশি সম্মুখীন হয়েছে বিপর্যয়কর ক্ষুধার।
অসংখ্য গাজাবাসীর ঈদুল ফিতরের প্রথম সকাল কেটেছে কবরস্থানে। প্রিয়জনের কবর জিয়ারত করে।
গাজায় কেউ ভালো নেই। ঈদ সম্ভাষণের পরিবর্তে সেই আর্তিই এখন গাজাজুড়ে। সামাজিক মাধ্যমেও।
হামলার মুখে রাফায় আশ্রয় নেওয়া ছয় সন্তানের বাবা ৪৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ আল-বারবারি বিবিসিকে বলেন, ঈদের আগের রাতে আমরা সারা রাত জেগে থাকতাম, বাচ্চাদের জন্য মিষ্টান্ন এবং নতুন জামাকাপড় কিনতাম এবং বড় মসজিদে নামাজ পড়তাম। এই বছর আমাদের মৌলিক চাহিদাই পূরণেরই বাস্তবতা নেই। তাঁবুতে থাকতে হচ্ছে।"
গাজা শহরের শেজাইয়া এলাকার ১১ বছর বয়সী মেয়ে সারাহ আমের বিবিসিকে বলেন অন্যান্য বছর এসময় সে বিনোদন পার্কে যেতো, আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে যেতো।
সে বলে, "যখন মানুষ মরে যাচ্ছে, তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আহত হচ্ছে, তখন আমরা কীভাবে ঈদের আনন্দ করবো?
সে আরো বলে, "আমার বন্ধুরা... এখন নিখোঁজ এবং আমি জানি না তারা কোথায় আছে।আমি সেই মুহূর্তগুলি মিস করি যখন আমি তাদের সাথে দেখা করতাম এবং খেলতাম, আড্ডা দিতাম এবং একসাথে গান করতাম।"
সারাহ জানায় "আমি আমার মাকে আমাদের খেলার জন্য পুতুল আনতে বলেছিলাম। মা বলেছে তোমার মতো অনেক বাচ্চা তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে, তাদের কিছুই নেই। তাদের কথা চিন্তা করে দেখো।
গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান এলাকার ১৩ বছর বয়সী খলিল আবু হাসানিন। তার আশ্রয় হয়েছে রাফাহ শহরের উত্তরে একটি হাসপাতালে। সে বিবিসিকে বলেছে, "আমরা আমাদের প্রিয়জনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতাম। কিন্তু এখন আমাদের সমস্ত প্রিয়জন মারা গেছে। এবং কেনার জন্য কোন নতুন জামাকাপড় নেই, খাওয়ার জন্য কোন কুকিজ নেই এবং কোন পানীয় নেই।"
সে আরো বলেছে, "মানুষের লাশের কারণে এই ঈদে কোনো স্বাদ নেই... যেটা আমরা দেখছি।"
ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে পারছেন না প্যালেস্টাইনের সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের কর্মী ফেদা মুরজানও।ইসরায়েলি হামলায় আট বছর বয়সী কন্যা হাবিবাকে হারিয়ে এখন শুধু শোক তার জীবনে।
তিনি জানান ১৩ অক্টোবর গাজা শহরে তাদের বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় হাবিবা নিহত হন।
তিনি বলেন, "ঈদের দিন আমরা একত্র হতাম, আমরা আমাদের সেরা পোশাক পরতাম। আমাদের কাছে সবচেয়ে ভালো চকলেট থাকত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এই ঈদটি অনেক আলাদা।
"এই ঈদে আমি অন্য মানুষ। আমি একজন দুঃখী মা যে গত ছয় মাস ধরে কষ্ট পাচ্ছে।"