alt

আন্তর্জাতিক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংকট: যুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ও ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, আর তাঁদের নেতারা সংকট মোকাবেলায় যুদ্ধের পথে হাঁটছেন। এই সংকটগুলো একক নয়, বরং বহুমাত্রিক। জীবনযাত্রার সমস্যা, বাসস্থানের সংকট এবং অভিবাসন নিয়ে চলমান চাপ—এগুলো সমাধানের বদলে ক্রমে আরও গভীর হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি স্থবির হয়ে পড়েছে।

সর্বোপরি, রাজনৈতিক অস্থিরতার চিত্রও উদ্বেগজনক। বিভিন্ন দেশে কট্টর ডানপন্থীদের উত্থান ঘটছে, যারা ভোটে জনগণের সমর্থন পাচ্ছে। ফলে ইউনিয়নের ঐক্যের অনুভূতি এবং উদারনৈতিক মূল্যবোধ হুমকির মুখে পড়েছে। সম্প্রতি, অস্ট্রিয়ার নির্বাচনে অতি ডানপন্থী ফ্রিডম পার্টি ৩০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে, যদিও তারা সরকার গঠনের প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়তে পারে। কিন্তু ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ডানপন্থীদের উত্থান অব্যাহত রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের মধ্যে ৯টি দেশে ডানপন্থীরা ক্ষমতায় আছেন বা শীঘ্রই আসবেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্রের প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে, এবং যুদ্ধের পরিস্থিতি শিগগিরই থামার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবও প্রবল হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলো আগের চেয়ে মারাত্মক হয়ে উঠেছে, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া এই সংকটগুলো মোকাবিলায় খুবই অদৃশ্য।

বিষয়টি আশ্চর্যের নয় যে, রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া সংকটের মূল কারণগুলো সমাধান করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাঁরা যেসব ধ্বংসাত্মক নব্য উদারবাদী নীতিগুলো গ্রহণ করেছেন, সেগুলো অসংখ্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যুদ্ধবাজির আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে, যেন যুদ্ধের উত্তেজনায় জনগণ তাদের হতাশা ভুলে যায়।

গত দুই বছরে ইউরোপের নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে রাশিয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর প্রতিকার হিসেবে ইউক্রেনে রাশিয়াকে পরাজিত করার কথা বলা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশগুলো অস্ত্রের যোগান অব্যাহত রাখছে এবং আরও মারাত্মক অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে কাজ করছে। সম্প্রতি, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোকে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব পাস করেছে। রাশিয়া এর বিরুদ্ধে বারবার সতর্ক করেছে এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালাও বদলেছে।

ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে ইউরোপের দেশগুলোকে জনগণকে আরও ব্যয় বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এর ফলে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। ইইউর প্রতিরক্ষা কমিশনার হিসেবে মনোনয়ন প্রার্থী আন্দ্রিয়াস কুবিলিয়াস বলেছেন, ‘রাশিয়ার হুমকি’ মোকাবেলার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একটি ‘যুদ্ধ-অস্ত্রের ভান্ডার’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজন।

এ অবস্থায়, যুদ্ধের অর্থনীতি জোরালোভাবে প্রচার করা হচ্ছে। ইউরোপীয় নেতারা এ ধারণা নিয়ে কাজ করছেন যে, সামরিক খাতের মাধ্যমে ইউরোপীয় অর্থনীতি চাঙা হবে। সেপ্টেম্বরে, ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট মারিও দ্রাঘি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন যেখানে ইউরোপীয় দক্ষতার ভবিষ্যতের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও গভীর অর্থনৈতিক একীকরণের কথা বলা হয়েছে, যা অনেকের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে।

কিন্তু বর্তমান বিশ্বে ‘যদি শান্তি চান, তাহলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন’ প্রবাদটি প্রয়োগ করতে গিয়ে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে—পারমাণবিক অস্ত্র। একবার সেই অস্ত্রের বোতামে হাত পড়লে মানবসভ্যতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হতে পারে।

যুদ্ধ, যুদ্ধের প্রস্তুতি এবং যুদ্ধের জন্য অস্ত্র তৈরির আলোচনা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সংকট থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। মুখে মানবাধিকার, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের কথা বলা হলেও, ইইউ মূলত একটি নিও লিবারেল প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন নিয়ে তাদের আগ্রহ অনেক কম। এর ফলে, ইউরোপজুড়ে কল্যাণরাষ্ট্র পিছু হটছে।

এভাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংকটগুলো যে ক্রমশ বাড়ছে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া যে যথেষ্ট নয়, তা স্পষ্ট। সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একটি সমন্বিত ও গভীর পরিবর্তন প্রয়োজন, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ও অধিকারের দিকে মনোনিবেশ করবে।

ছবি

নেটোর মাধ্যমে ইউক্রেইনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র, ব্যয় বহন করবে জোট: ট্রাম্প

ছবি

অভিবাসী সংকট ও ইউক্রেইন ইস্যুতে একমত ফ্রান্স–যুক্তরাজ্য

ছবি

ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টা: ছয় সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট সাময়িক বরখাস্ত

ছবি

কিম জং উনের বিরুদ্ধে মামলা করছেন পক্ষত্যাগী উত্তর কোরীয় নারী

আরও ১০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হামাস, হামলায় নিহত ৭৪

ছবি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ‘পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্টের জন্য লাইনে দাঁড়ানো ৮ শিশু নিহত’

রিয়াদ ও জেদ্দায় সম্পত্তির মালিক হতে পারবেন বিদেশিরাও

ছবি

চলতি বছরে ভারতীয়দের তৃতীয় জাগুয়ার দুর্ঘটনায় প্রাণহানি

ভদোদরায় ৪৩ বছরের পুরোনো সেতু ভেঙে বিপর্যয়, কয়েকটি যান নদীতে

ছবি

মায়ানমারের বিরল খনিজ ঘিরে চীনের হুমকি

এক রাতে ৭ শতাধিক ড্রোন নিয়ে ইউক্রেনে ভয়াবহ হামলা রাশিয়ার

ছবি

ইরান ও সৌদির মধ্যে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা

তালেবান নেতাদের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ইরানে অস্ত্র সরবরাহ শুরু করল চীন

ছবি

কোন পথে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

ছবি

নারী নিপীড়নের অভিযোগে তালেবান নেতাদের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

চীনের সহায়তায় আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তি পেল ইরান

ছবি

ব্রিকস সম্মেলনে ভারতের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি

ইউক্রেনে আরও অস্ত্র পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

সাইপ্রাসে গড়ে উঠছে ‘মিনি ইসরায়েল’

বিশ্বজুড়ে একের পর এক খনি কিনছে চীন

সিরিয়ার এইচটিএস গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কী আছে, এটা কি গাজায় যুদ্ধ থামাতে পারবে

ছবি

পাকিস্তানে বৃষ্টি ও ভূমিধসে ১৯ জনের মৃত্যু, বন্যা সতর্কতা জারি

ছবি

টেক্সাসে হড়পা বানে শতাধিক মানুষের মৃত্যু, নিখোঁজ বহু

ছবি

নেতানিয়াহুর অনড় অবস্থান, ট্রাম্প চান দ্রুত চুক্তি

গাজায় ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই শুরু হচ্ছে যুদ্ধবিরতি আলোচনা

ছবি

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পর প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে খামেনি

পুতিনের পাশে কিম, জেলেনস্কিকে দূরে ঠেলে দিচ্ছেন ট্রাম্প

ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে : জেলেনস্কি

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিলেন ইলন মাস্ক

ছবি

‘ভারতে এক বছরেই ৯৪৭টি ঘৃণা অপরাধ, টার্গেট মুসলিমসহ সংখ্যালঘুরা’

ছবি

মাস্কের নতুন দল গঠনের উদ্যোগ ‘হাস্যকর’: ট্রাম্প

ছবি

টেক্সাসে বন্যায় ৭৮ জনের মৃত্যু, শিশুই ২৮

ছবি

ইয়েমেনের ৩ বন্দর ও ১ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা

ছবি

হামাসের শর্ত ‘অগ্রহণযোগ্য’ বললেও আলোচনা চালিয়ে যাবে ইসরায়েল

tab

আন্তর্জাতিক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংকট: যুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ও ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, আর তাঁদের নেতারা সংকট মোকাবেলায় যুদ্ধের পথে হাঁটছেন। এই সংকটগুলো একক নয়, বরং বহুমাত্রিক। জীবনযাত্রার সমস্যা, বাসস্থানের সংকট এবং অভিবাসন নিয়ে চলমান চাপ—এগুলো সমাধানের বদলে ক্রমে আরও গভীর হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি স্থবির হয়ে পড়েছে।

সর্বোপরি, রাজনৈতিক অস্থিরতার চিত্রও উদ্বেগজনক। বিভিন্ন দেশে কট্টর ডানপন্থীদের উত্থান ঘটছে, যারা ভোটে জনগণের সমর্থন পাচ্ছে। ফলে ইউনিয়নের ঐক্যের অনুভূতি এবং উদারনৈতিক মূল্যবোধ হুমকির মুখে পড়েছে। সম্প্রতি, অস্ট্রিয়ার নির্বাচনে অতি ডানপন্থী ফ্রিডম পার্টি ৩০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে, যদিও তারা সরকার গঠনের প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়তে পারে। কিন্তু ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ডানপন্থীদের উত্থান অব্যাহত রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের মধ্যে ৯টি দেশে ডানপন্থীরা ক্ষমতায় আছেন বা শীঘ্রই আসবেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্রের প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে, এবং যুদ্ধের পরিস্থিতি শিগগিরই থামার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবও প্রবল হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলো আগের চেয়ে মারাত্মক হয়ে উঠেছে, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া এই সংকটগুলো মোকাবিলায় খুবই অদৃশ্য।

বিষয়টি আশ্চর্যের নয় যে, রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া সংকটের মূল কারণগুলো সমাধান করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাঁরা যেসব ধ্বংসাত্মক নব্য উদারবাদী নীতিগুলো গ্রহণ করেছেন, সেগুলো অসংখ্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যুদ্ধবাজির আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে, যেন যুদ্ধের উত্তেজনায় জনগণ তাদের হতাশা ভুলে যায়।

গত দুই বছরে ইউরোপের নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে রাশিয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর প্রতিকার হিসেবে ইউক্রেনে রাশিয়াকে পরাজিত করার কথা বলা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশগুলো অস্ত্রের যোগান অব্যাহত রাখছে এবং আরও মারাত্মক অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে কাজ করছে। সম্প্রতি, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোকে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব পাস করেছে। রাশিয়া এর বিরুদ্ধে বারবার সতর্ক করেছে এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালাও বদলেছে।

ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে ইউরোপের দেশগুলোকে জনগণকে আরও ব্যয় বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এর ফলে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। ইইউর প্রতিরক্ষা কমিশনার হিসেবে মনোনয়ন প্রার্থী আন্দ্রিয়াস কুবিলিয়াস বলেছেন, ‘রাশিয়ার হুমকি’ মোকাবেলার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একটি ‘যুদ্ধ-অস্ত্রের ভান্ডার’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজন।

এ অবস্থায়, যুদ্ধের অর্থনীতি জোরালোভাবে প্রচার করা হচ্ছে। ইউরোপীয় নেতারা এ ধারণা নিয়ে কাজ করছেন যে, সামরিক খাতের মাধ্যমে ইউরোপীয় অর্থনীতি চাঙা হবে। সেপ্টেম্বরে, ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট মারিও দ্রাঘি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন যেখানে ইউরোপীয় দক্ষতার ভবিষ্যতের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও গভীর অর্থনৈতিক একীকরণের কথা বলা হয়েছে, যা অনেকের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে।

কিন্তু বর্তমান বিশ্বে ‘যদি শান্তি চান, তাহলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন’ প্রবাদটি প্রয়োগ করতে গিয়ে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে—পারমাণবিক অস্ত্র। একবার সেই অস্ত্রের বোতামে হাত পড়লে মানবসভ্যতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হতে পারে।

যুদ্ধ, যুদ্ধের প্রস্তুতি এবং যুদ্ধের জন্য অস্ত্র তৈরির আলোচনা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সংকট থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। মুখে মানবাধিকার, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের কথা বলা হলেও, ইইউ মূলত একটি নিও লিবারেল প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন নিয়ে তাদের আগ্রহ অনেক কম। এর ফলে, ইউরোপজুড়ে কল্যাণরাষ্ট্র পিছু হটছে।

এভাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংকটগুলো যে ক্রমশ বাড়ছে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া যে যথেষ্ট নয়, তা স্পষ্ট। সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একটি সমন্বিত ও গভীর পরিবর্তন প্রয়োজন, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ও অধিকারের দিকে মনোনিবেশ করবে।

back to top