যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের বড় দু’টি দাবানলের প্রান্তগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে দমকল কর্মীরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ে যাচ্ছেন, ফের ঝড়ো বাতাস শুরু হওয়ার আগেই একটি সংক্ষিপ্ত অবকাশের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।
রোববার পর্যন্ত টানা ছয়দিন ধরে নিয়ন্ত্রণহীন দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের প্রাণকেন্দ্র লস অ্যাঞ্জেলেসের হাজার হাজার একর এলাকা।
এসব দাবানলে অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি, স্থাপনা ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি এই দুর্যোগের কারণে এক লাখ মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিউজম বলেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে উঠতে পারে।
আগুনের লকলকে শিখা একের পর এক এলাকাকে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। ধনী, বিখ্যাত আর সাধারণ মানুষ, কারও বাড়ি বাদ রাখেনি। এলাকাগুলোতে যেন কেয়ামত নেমে এসেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ১২৩০০ ঘরবাড়ি ও স্থাপনা আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি সুপারভাইজার লিন্ডসি হরব্যাথ বলেছেন, “এল.এ. কাউন্টি আরেকটি অকল্পনীয় আতঙ্কের ও মন ভাঙার রাত পার করলো।”
সবচেয়ে বড় দাবানল নগরীর উত্তরপশ্চিম প্রান্তের প্যালিসেইডস আগুন অভিজাত এলাকা ব্রেন্টউডের একটি অংশ ও লস অ্যাঞ্জেলেসের অন্য জনবহুল এলাকাগুলোর সীমানা পেরিয়ে ভেতরে চলে এসেছে। এই দাবানলের প্রান্তটির সম্প্রসারণ ঠেকিয়ে রাখতে দমকল কর্মীরা হোস পাইপ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি নিয়ে লড়াই করছেন। আকাশযানে থাকা দমকল কর্মীরা নিকটবর্তী প্রশান্ত মহাসাগর থেকে পানি এনে সেখানে ফেলছেন আর বিমান থেকে অগ্নিনিরোধক উপাদান ছিটাচ্ছেন।
এই প্যালিসেইডস আগুন ইতোমধ্যে ২৩৭১৩ একর বা ৩৭ বর্গমাইল এলাকা গ্রাস করেছে। দমকল কর্মীরা এ পর্যন্ত এই দাবানলটির মাত্র ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বদিকের পাহাড়গুলোর পাদদেশের ইটন আগুন আরও ১৪১১৭ একর বা ২২ বর্গমাইল এলাকা পুড়িয়ে দিয়েছে। দমকল কর্মীরা একদিন আগে এই দাবানলের ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও পরদিন তা ২৭ শতাংশে উন্নিত করতে সক্ষম হন।
ক্যালিফোর্নিয়ার বন ও দাবানল সুরক্ষা বিভাগ (ক্যাল ফায়ার) জানিয়েছে, নগরীর উত্তরের হার্স্ট আগুন ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে আর কাউন্টির অন্য অংশগুলোতে থাকা তিনটি দাবানল শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসা দাবানলগুলোর কিছু আগুন এখনও অবশিষ্ট থাকতে পারে।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে দেশের ভেতরের দিকের মরুভূমিগুলো থেকে বয়ে আসা শুষ্ক ঝড়ো বাতাস স্যান্টা অ্যানা প্রায় হারিকেনের শক্তি নিয়ে বয়ে যেতে থাকায় দাবানল আরও উন্মত্ত হয়ে ওঠে, জলন্ত অঙ্গারগুলো আগুনের প্রান্ত থেকে উড়ে গিয়ে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত দূরে গিয়ে পড়তে থাকে। এতে এপ্রিল থেকে কোনো বৃষ্টি না হওয়া অঞ্চলটির পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।
কিন্তু শনিবার স্যান্টা অ্যানা শান্ত হয়ে আসার পর দমকল কর্মীরা সংক্ষিপ্ত একটি বিরতি পান। এতে রোববার পর্যন্ত দাবানলগুলোকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পরিষেবা তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, রোববার রাত থেকে স্যান্টা অ্যানা বাতাস আবার ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৭০ মাইল বেগে বইতে শুরু করবে আর বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এই পরিস্থিতিতে দাবানল আবার নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, পুরো লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির প্রায় এক কোটি বাসিন্দার যে কাউকে যে কোনো সময় আগুন ও বিষাক্ত ধোঁয়া থেকে দূরে রাখতে ঘরবাড়ি বা এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের বড় দু’টি দাবানলের প্রান্তগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে দমকল কর্মীরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ে যাচ্ছেন, ফের ঝড়ো বাতাস শুরু হওয়ার আগেই একটি সংক্ষিপ্ত অবকাশের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।
রোববার পর্যন্ত টানা ছয়দিন ধরে নিয়ন্ত্রণহীন দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের প্রাণকেন্দ্র লস অ্যাঞ্জেলেসের হাজার হাজার একর এলাকা।
এসব দাবানলে অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি, স্থাপনা ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি এই দুর্যোগের কারণে এক লাখ মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিউজম বলেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে উঠতে পারে।
আগুনের লকলকে শিখা একের পর এক এলাকাকে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। ধনী, বিখ্যাত আর সাধারণ মানুষ, কারও বাড়ি বাদ রাখেনি। এলাকাগুলোতে যেন কেয়ামত নেমে এসেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ১২৩০০ ঘরবাড়ি ও স্থাপনা আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি সুপারভাইজার লিন্ডসি হরব্যাথ বলেছেন, “এল.এ. কাউন্টি আরেকটি অকল্পনীয় আতঙ্কের ও মন ভাঙার রাত পার করলো।”
সবচেয়ে বড় দাবানল নগরীর উত্তরপশ্চিম প্রান্তের প্যালিসেইডস আগুন অভিজাত এলাকা ব্রেন্টউডের একটি অংশ ও লস অ্যাঞ্জেলেসের অন্য জনবহুল এলাকাগুলোর সীমানা পেরিয়ে ভেতরে চলে এসেছে। এই দাবানলের প্রান্তটির সম্প্রসারণ ঠেকিয়ে রাখতে দমকল কর্মীরা হোস পাইপ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি নিয়ে লড়াই করছেন। আকাশযানে থাকা দমকল কর্মীরা নিকটবর্তী প্রশান্ত মহাসাগর থেকে পানি এনে সেখানে ফেলছেন আর বিমান থেকে অগ্নিনিরোধক উপাদান ছিটাচ্ছেন।
এই প্যালিসেইডস আগুন ইতোমধ্যে ২৩৭১৩ একর বা ৩৭ বর্গমাইল এলাকা গ্রাস করেছে। দমকল কর্মীরা এ পর্যন্ত এই দাবানলটির মাত্র ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বদিকের পাহাড়গুলোর পাদদেশের ইটন আগুন আরও ১৪১১৭ একর বা ২২ বর্গমাইল এলাকা পুড়িয়ে দিয়েছে। দমকল কর্মীরা একদিন আগে এই দাবানলের ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও পরদিন তা ২৭ শতাংশে উন্নিত করতে সক্ষম হন।
ক্যালিফোর্নিয়ার বন ও দাবানল সুরক্ষা বিভাগ (ক্যাল ফায়ার) জানিয়েছে, নগরীর উত্তরের হার্স্ট আগুন ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে আর কাউন্টির অন্য অংশগুলোতে থাকা তিনটি দাবানল শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসা দাবানলগুলোর কিছু আগুন এখনও অবশিষ্ট থাকতে পারে।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে দেশের ভেতরের দিকের মরুভূমিগুলো থেকে বয়ে আসা শুষ্ক ঝড়ো বাতাস স্যান্টা অ্যানা প্রায় হারিকেনের শক্তি নিয়ে বয়ে যেতে থাকায় দাবানল আরও উন্মত্ত হয়ে ওঠে, জলন্ত অঙ্গারগুলো আগুনের প্রান্ত থেকে উড়ে গিয়ে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত দূরে গিয়ে পড়তে থাকে। এতে এপ্রিল থেকে কোনো বৃষ্টি না হওয়া অঞ্চলটির পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।
কিন্তু শনিবার স্যান্টা অ্যানা শান্ত হয়ে আসার পর দমকল কর্মীরা সংক্ষিপ্ত একটি বিরতি পান। এতে রোববার পর্যন্ত দাবানলগুলোকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পরিষেবা তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, রোববার রাত থেকে স্যান্টা অ্যানা বাতাস আবার ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৭০ মাইল বেগে বইতে শুরু করবে আর বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এই পরিস্থিতিতে দাবানল আবার নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, পুরো লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির প্রায় এক কোটি বাসিন্দার যে কাউকে যে কোনো সময় আগুন ও বিষাক্ত ধোঁয়া থেকে দূরে রাখতে ঘরবাড়ি বা এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।