কিয়েভের এক গ্রামে রুশ ট্যাঙ্কের ধ্বংসস্তূপের উপরে এক ইউক্রেনীয় সেনা -এএফপি
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাবাহিনী এখন গাধাকে পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে। মস্কোর সেনা ও যুদ্ধপন্থি ব্লগারদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাশিয়ার সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভিক্টর সোবোলেভ বলেছেন, গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম পরিবহনে গাধার ব্যবহার স্বাভাবিক। তিনি গাজেটা.রু ওয়েবসাইটকে বলেন, গাড়িতে করে দুজন মানুষকে পাঠানোর চেয়ে গাধা পাঠানো ভালো। গাধা মারা গেলেও ক্ষতি কম। গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনের অবস্থানে আক্রমণে মোটরসাইকেল, ডার্ট বাইক, ইলেকট্রিক স্কুটার ও বেসামরিক গাড়ি ব্যবহার শুরু করে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই পশ্চাদপসরণ রাশিয়ার অগ্রযাত্রাকে আরও ধীর করে দিয়েছে। যুদ্ধের মূল রণাঙ্গন দক্ষিণ-পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার অগ্রগতি ইতোমধ্যে মন্থর হয়ে পড়েছে।
সামরিক বিশ্লেষকরা আলজাজিরাকে বলেছেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ইতোমধ্যেই রাশিয়ার বেশির ভাগ ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে। এই সংকট পূরণ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে, যদিও মস্কো সোভিয়েত যুগের পুরনো মজুদ থেকে অব্যবহৃত ও অকার্যকর যানবাহন মেরামত করছে। জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নিকোলাই মিত্রোখিন বলেছেন, সাঁজোয়া যান ভয়াবহ গতিতে অকার্যকর হয়ে পড়ছে। নতুন উৎপাদন ও ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন মেরামতের গতি ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় অনেক পিছিয়ে। রাশিয়ার আক্রমণাত্মক সাঁজোয়া যানের মজুদ মাত্র কয়েক মাস টিকবে।
এদিকে, ইউক্রেনের ড্রোনগুলো সাঁজোয়া ও বেসামরিক গাড়ি ধ্বংস করায় সরবরাহ পাঠানোয় বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। ট্যাংকের হ্যাচে ড্রোন ঢুকতে না দেওয়ার জন্য রাশিয়ার সেনারা ধাতব জাল ও রাবার কভার ব্যবহার করছে, যা ইউক্রেনীয়রা বিদ্রূপ করে ‘রাজকীয় বারবিকিউ’ বলে ডাকে। ওয়াশিংটন ডিসির থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান পলিসি অ্যানালিসিসের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পাভেল লুজিন বলেছেন, রাশিয়া বছরে ৬০টির বেশি ট্যাঙ্ক উৎপাদন করতে পারে না। আমরা শতকের কথা বলছি না। টারেট ও বন্দুক উৎপাদনই সবচেয়ে বড় সমস্যা, আর ইউরোপীয় যন্ত্রাংশে তৈরি ইনফ্রারেড থার্মাল ইমেজিং ও টার্গেটিং সিস্টেমের জায়গায় এখন কম নির্ভরযোগ্য চীনা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে ইউক্রেনের একজন সাবেক জেনারেল মনে করেন, রাশিয়ার হাতে সাঁজোয়া যান ফুরোতে আরও দুই বছর সময় লাগতে পারে। ইউক্রেনের সাবেক সেনাপ্রধানের ডেপুটি লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইহোর রোমানেনকো বলেছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা কারখানাগুলো পুরনো ট্যাংক মেরামত করে চলেছে। বর্তমান ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় তাদের হাতে দুই বছর সময় আছে। তবে আধুনিক সাঁজোয়া যান, ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য অস্ত্রের সংখ্যা কমতে থাকবে।
রাশিয়াকেন্দ্রিক স্বাধীন মিডিয়া আউটলেট দ্য ইনসাইডার বলছে, রাশিয়ার হাতে এখন ৭ হাজারেরও কম ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান আছে, যা ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ১ লাখ ৪০ হাজার ট্যাঙ্কের তুলনায় ২০ গুণ কম। সাঁজোয়া যানের এই সংকট ইতোমধ্যেই ডনবাস দখলের গতি কমিয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনীয় টেলিগ্রাম চ্যানেল ওকো গোরার তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির শুরুতে রাশিয়ার আক্রমণের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ কমেছে এবং দখলকৃত এলাকার পরিমাণ জানুয়ারির তুলনায় চার গুণ কমে মাত্র ২১ বর্গকিলোমিটারে নেমে এসেছে। কয়েক মাস পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনীয় বাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে দক্ষিণ-পূর্বের কৌশলগত শহর পক্রোভস্কের আশপাশের কিছু এলাকা পুনর্দখল করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে আর্টিলারির সংকট সত্ত্বেও রাশিয়া বছরে ৩০ লাখ গোলাবারুদ উৎপাদন করেছে, যা আগের তুলনায় তিন গুণ বেশি। উত্তর কোরিয়া থেকে আরও কয়েক মিলিয়ন গোলাবারুদ সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পিয়ংইয়ং ও তেহরান রাশিয়াকে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে, যা রাশিয়ার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে মিলে ইউক্রেনের শহরগুলোতে আঘাত হানছে। তবে কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ।
রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত প্রায় ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। সম্প্রতি ইউক্রেনের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার গভীরে প্রবেশ করে আর্কটিক থেকে কৃষ্ণ সাগর উপকূল পর্যন্ত সামরিক কারখানা, ঘাঁটি, বিমানবন্দর ও তেল শোধনাগারে আঘাত হানছে। বিশ্লেষক মিত্রোখিন বলেছেন, মস্কো সমান্তরাল আকাশ প্রতিরক্ষা রেখা তৈরি করতে পারেনি এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান সুরক্ষিত করতে পারেনি।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল রোমানেনকো বলেছেন, রাশিয়ার কাছে যুদ্ধবিমান ও উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকলেও তারা তাদের ক্ষমতা দ্রুত ও ব্যাপকভাবে বাড়াতে পারবে না। অন্যদিকে, ইউক্রেনের ক্ষমতা ও সম্ভাবনা বাড়ছে। কারণ কিয়েভ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন ও উৎপাদন বাড়িয়েছে।
গাধার পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে তথাকথিত মানব ‘উট’ ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে। মূলত প্রচুর গোলাবারুদ বহন করে ইউক্রেনীয় অবস্থানের দিকে দৌড়াতে বাধ্য করা হয় এমন সেনাদের মানব উট বলা হচ্ছে। এই সেনাদের বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম। ক্রেমলিনপন্থি যুদ্ধ সংবাদদাতারা অভিযোগ করেছেন যে, নতুন সেনারা অল্প প্রশিক্ষণ নিয়েই যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছাচ্ছে। যার ফলে অভিজ্ঞ সেনাদের মৃত্যু বা অবসর নেয়ার ঘটনা ঘটছে। ক্রেমলিনপন্থি বিশ্লেষক ভিক্টর মুরাখোভস্কি টেলিগ্রামে লিখেছেন, গণমাধ্যমে সেনার কর্তব্য পালনের উদাহরণ প্রায় সবসময়ই যুদ্ধে তার মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়, এই ধারণা তৈরি হয় যে, বীর হতে হলে বীরের মতো মরতে হবে।
ক্রেমলিন দাবি করছে যে, সেনা সংগ্রহে কোনও সমস্যা নেই। প্রায় ৬ লাখ সেনা ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে। তবে ২০২২ সালের তুলনায় প্রতিটি সেনা সংগ্রহের ‘মূল্য’ ১০ গুণেরও বেশি বেড়েছে। এখন নিয়োগের জন্য প্রায় ৩০ হাজার ডলার দেয়া হচ্ছে, মাসিক বেতন শুরু হচ্ছে ২ হাজার ডলার থেকে। আর অঙ্গহানি বা গুরুতর আহত হলে ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার ডলার।
কিয়েভের এক গ্রামে রুশ ট্যাঙ্কের ধ্বংসস্তূপের উপরে এক ইউক্রেনীয় সেনা -এএফপি
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাবাহিনী এখন গাধাকে পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে। মস্কোর সেনা ও যুদ্ধপন্থি ব্লগারদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাশিয়ার সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভিক্টর সোবোলেভ বলেছেন, গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম পরিবহনে গাধার ব্যবহার স্বাভাবিক। তিনি গাজেটা.রু ওয়েবসাইটকে বলেন, গাড়িতে করে দুজন মানুষকে পাঠানোর চেয়ে গাধা পাঠানো ভালো। গাধা মারা গেলেও ক্ষতি কম। গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনের অবস্থানে আক্রমণে মোটরসাইকেল, ডার্ট বাইক, ইলেকট্রিক স্কুটার ও বেসামরিক গাড়ি ব্যবহার শুরু করে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই পশ্চাদপসরণ রাশিয়ার অগ্রযাত্রাকে আরও ধীর করে দিয়েছে। যুদ্ধের মূল রণাঙ্গন দক্ষিণ-পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার অগ্রগতি ইতোমধ্যে মন্থর হয়ে পড়েছে।
সামরিক বিশ্লেষকরা আলজাজিরাকে বলেছেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ইতোমধ্যেই রাশিয়ার বেশির ভাগ ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে। এই সংকট পূরণ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে, যদিও মস্কো সোভিয়েত যুগের পুরনো মজুদ থেকে অব্যবহৃত ও অকার্যকর যানবাহন মেরামত করছে। জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নিকোলাই মিত্রোখিন বলেছেন, সাঁজোয়া যান ভয়াবহ গতিতে অকার্যকর হয়ে পড়ছে। নতুন উৎপাদন ও ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন মেরামতের গতি ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় অনেক পিছিয়ে। রাশিয়ার আক্রমণাত্মক সাঁজোয়া যানের মজুদ মাত্র কয়েক মাস টিকবে।
এদিকে, ইউক্রেনের ড্রোনগুলো সাঁজোয়া ও বেসামরিক গাড়ি ধ্বংস করায় সরবরাহ পাঠানোয় বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। ট্যাংকের হ্যাচে ড্রোন ঢুকতে না দেওয়ার জন্য রাশিয়ার সেনারা ধাতব জাল ও রাবার কভার ব্যবহার করছে, যা ইউক্রেনীয়রা বিদ্রূপ করে ‘রাজকীয় বারবিকিউ’ বলে ডাকে। ওয়াশিংটন ডিসির থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান পলিসি অ্যানালিসিসের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পাভেল লুজিন বলেছেন, রাশিয়া বছরে ৬০টির বেশি ট্যাঙ্ক উৎপাদন করতে পারে না। আমরা শতকের কথা বলছি না। টারেট ও বন্দুক উৎপাদনই সবচেয়ে বড় সমস্যা, আর ইউরোপীয় যন্ত্রাংশে তৈরি ইনফ্রারেড থার্মাল ইমেজিং ও টার্গেটিং সিস্টেমের জায়গায় এখন কম নির্ভরযোগ্য চীনা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে ইউক্রেনের একজন সাবেক জেনারেল মনে করেন, রাশিয়ার হাতে সাঁজোয়া যান ফুরোতে আরও দুই বছর সময় লাগতে পারে। ইউক্রেনের সাবেক সেনাপ্রধানের ডেপুটি লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইহোর রোমানেনকো বলেছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা কারখানাগুলো পুরনো ট্যাংক মেরামত করে চলেছে। বর্তমান ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় তাদের হাতে দুই বছর সময় আছে। তবে আধুনিক সাঁজোয়া যান, ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য অস্ত্রের সংখ্যা কমতে থাকবে।
রাশিয়াকেন্দ্রিক স্বাধীন মিডিয়া আউটলেট দ্য ইনসাইডার বলছে, রাশিয়ার হাতে এখন ৭ হাজারেরও কম ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান আছে, যা ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ১ লাখ ৪০ হাজার ট্যাঙ্কের তুলনায় ২০ গুণ কম। সাঁজোয়া যানের এই সংকট ইতোমধ্যেই ডনবাস দখলের গতি কমিয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনীয় টেলিগ্রাম চ্যানেল ওকো গোরার তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির শুরুতে রাশিয়ার আক্রমণের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ কমেছে এবং দখলকৃত এলাকার পরিমাণ জানুয়ারির তুলনায় চার গুণ কমে মাত্র ২১ বর্গকিলোমিটারে নেমে এসেছে। কয়েক মাস পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনীয় বাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে দক্ষিণ-পূর্বের কৌশলগত শহর পক্রোভস্কের আশপাশের কিছু এলাকা পুনর্দখল করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে আর্টিলারির সংকট সত্ত্বেও রাশিয়া বছরে ৩০ লাখ গোলাবারুদ উৎপাদন করেছে, যা আগের তুলনায় তিন গুণ বেশি। উত্তর কোরিয়া থেকে আরও কয়েক মিলিয়ন গোলাবারুদ সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পিয়ংইয়ং ও তেহরান রাশিয়াকে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে, যা রাশিয়ার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে মিলে ইউক্রেনের শহরগুলোতে আঘাত হানছে। তবে কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ।
রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত প্রায় ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। সম্প্রতি ইউক্রেনের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার গভীরে প্রবেশ করে আর্কটিক থেকে কৃষ্ণ সাগর উপকূল পর্যন্ত সামরিক কারখানা, ঘাঁটি, বিমানবন্দর ও তেল শোধনাগারে আঘাত হানছে। বিশ্লেষক মিত্রোখিন বলেছেন, মস্কো সমান্তরাল আকাশ প্রতিরক্ষা রেখা তৈরি করতে পারেনি এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান সুরক্ষিত করতে পারেনি।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল রোমানেনকো বলেছেন, রাশিয়ার কাছে যুদ্ধবিমান ও উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকলেও তারা তাদের ক্ষমতা দ্রুত ও ব্যাপকভাবে বাড়াতে পারবে না। অন্যদিকে, ইউক্রেনের ক্ষমতা ও সম্ভাবনা বাড়ছে। কারণ কিয়েভ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন ও উৎপাদন বাড়িয়েছে।
গাধার পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে তথাকথিত মানব ‘উট’ ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে। মূলত প্রচুর গোলাবারুদ বহন করে ইউক্রেনীয় অবস্থানের দিকে দৌড়াতে বাধ্য করা হয় এমন সেনাদের মানব উট বলা হচ্ছে। এই সেনাদের বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম। ক্রেমলিনপন্থি যুদ্ধ সংবাদদাতারা অভিযোগ করেছেন যে, নতুন সেনারা অল্প প্রশিক্ষণ নিয়েই যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছাচ্ছে। যার ফলে অভিজ্ঞ সেনাদের মৃত্যু বা অবসর নেয়ার ঘটনা ঘটছে। ক্রেমলিনপন্থি বিশ্লেষক ভিক্টর মুরাখোভস্কি টেলিগ্রামে লিখেছেন, গণমাধ্যমে সেনার কর্তব্য পালনের উদাহরণ প্রায় সবসময়ই যুদ্ধে তার মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়, এই ধারণা তৈরি হয় যে, বীর হতে হলে বীরের মতো মরতে হবে।
ক্রেমলিন দাবি করছে যে, সেনা সংগ্রহে কোনও সমস্যা নেই। প্রায় ৬ লাখ সেনা ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে। তবে ২০২২ সালের তুলনায় প্রতিটি সেনা সংগ্রহের ‘মূল্য’ ১০ গুণেরও বেশি বেড়েছে। এখন নিয়োগের জন্য প্রায় ৩০ হাজার ডলার দেয়া হচ্ছে, মাসিক বেতন শুরু হচ্ছে ২ হাজার ডলার থেকে। আর অঙ্গহানি বা গুরুতর আহত হলে ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার ডলার।