ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (বামে), মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প (মাঝখানে) এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন (ডানে) -সংবাদ
রোশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে তিরস্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণাত্মক মন্তব্য ছুড়ে দিয়ে তাকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেছেন। আর এ ঘটনা তাদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বকে আরও গভীর করেছে। এই আক্রমণাত্মক মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে যখন সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত মার্কিন-রাশিয়া আলোচনায় ইউক্রেনকে বাদ দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট মস্কোর দ্বারা পরিচালিত এক বিভ্রান্তিমূলক পরিসরে বাস করছেন। খবর বিবিসি।
ফ্লোরিডায় সৌদি সমর্থিত একটি বিনিয়োগ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় ট্রাম্প বলেন, জেলেনস্কি একমাত্র যে কাজটিতে ভালো ছিলেন, তা হলো জো বাইডেনকে একটি বেহালার মতো বাজানো। তিনি আরো বলেন, জেলেনস্কি নির্বাচন করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। তিনি বাস্তবে ইউক্রেনীয় জনমত জরিপে নিচের দিকে রয়েছেন। প্রতিটি শহর ধ্বংস হয়ে গেলে কেউ কীভাবে জনপ্রিয় হতে পারে? ইউক্রেনে তার জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
এ মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রুথ সোশ্যাল-এ একই শব্দ ব্যবহার করে ট্রাম্প পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, জেলেনস্কি খুবই খারাপভাবে কাজ করেছেন, তার দেশ বিধ্বস্ত, এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ অহেতুক মারা গেছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করার জন্য সফলভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ইউক্রেন থেকে বিরল খনিজ আহরণের চুক্তি করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু জেলেনস্কির সরকার সে চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জেলেনস্কিকে কৌতুকাভিনেতা আখ্যায়িত করে ট্রাম্প বলেন, ভাবুন তো, একজন বিনয়ী সফল কৌতুক অভিনেতা, ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে বলেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রকে জেলেনস্কি এমন যুদ্ধে খরচ করতে বলছেন, যা জেতার নয়। এ যুদ্ধ কখনো শুরু করাই উচিত ছিল না। আবার এটি এমন এক যুদ্ধ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্প ছাড়া তিনি (জেলেনস্কি) মিটমাটও করতে পারবেন না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপের দেশগুলোর চেয়ে ২০০ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ করেছে। এ যুদ্ধ থেকে ইউরোপ তাদের উশুল আদায় করে নিতে পারলেও যুক্তরাষ্ট্র কিছুই ফেরত পাবে না। সর্বোপরি জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ অর্থ ইউক্রেনে পাঠিয়েছে, তার অর্ধেকও সেখানে পৌঁছায়নি।
তবে জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলার প্রতিক্রিয়া এসেছে ইউরোপ থেকে। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেলেনস্কির ‘বিভ্রান্তিমূলক তথ্য’ সংক্রান্ত মন্তব্যের সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবেই ট্রাম্প ওই পোস্ট করেছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বলেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির গণতান্ত্রিক বৈধতাকে অস্বীকার করা সরাসরি ভুল এবং বিপজ্জনক। সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনও ট্রাম্পের ‘স্বৈরশাসক’ মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টার্মার জেলেনস্কির প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র জানান, স্যার কিয়ার ইউক্রেনের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেছেন। মুখপাত্র আরও বলেন, যুদ্ধকালীন সময়ে নির্বাচন স্থগিত রাখা একেবারে স্বাভাবিক, যেমনটি যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় করেছিল।
জেলেনস্কির পাঁচ বছরের কার্যকাল ২০২৪ সালের মে মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর থেকে ইউক্রেনে সামরিক আইন জারি রয়েছে এবং স্থগিত করা হয়েছে নির্বাচন। জলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বললেন ট্রাম্প, তীব্র দ্বন্দ্বে দুই নেতা
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (বামে), মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প (মাঝখানে) এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন (ডানে) -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রোশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে তিরস্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণাত্মক মন্তব্য ছুড়ে দিয়ে তাকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেছেন। আর এ ঘটনা তাদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বকে আরও গভীর করেছে। এই আক্রমণাত্মক মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে যখন সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত মার্কিন-রাশিয়া আলোচনায় ইউক্রেনকে বাদ দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট মস্কোর দ্বারা পরিচালিত এক বিভ্রান্তিমূলক পরিসরে বাস করছেন। খবর বিবিসি।
ফ্লোরিডায় সৌদি সমর্থিত একটি বিনিয়োগ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় ট্রাম্প বলেন, জেলেনস্কি একমাত্র যে কাজটিতে ভালো ছিলেন, তা হলো জো বাইডেনকে একটি বেহালার মতো বাজানো। তিনি আরো বলেন, জেলেনস্কি নির্বাচন করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। তিনি বাস্তবে ইউক্রেনীয় জনমত জরিপে নিচের দিকে রয়েছেন। প্রতিটি শহর ধ্বংস হয়ে গেলে কেউ কীভাবে জনপ্রিয় হতে পারে? ইউক্রেনে তার জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
এ মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রুথ সোশ্যাল-এ একই শব্দ ব্যবহার করে ট্রাম্প পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, জেলেনস্কি খুবই খারাপভাবে কাজ করেছেন, তার দেশ বিধ্বস্ত, এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ অহেতুক মারা গেছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করার জন্য সফলভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ইউক্রেন থেকে বিরল খনিজ আহরণের চুক্তি করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু জেলেনস্কির সরকার সে চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জেলেনস্কিকে কৌতুকাভিনেতা আখ্যায়িত করে ট্রাম্প বলেন, ভাবুন তো, একজন বিনয়ী সফল কৌতুক অভিনেতা, ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে বলেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রকে জেলেনস্কি এমন যুদ্ধে খরচ করতে বলছেন, যা জেতার নয়। এ যুদ্ধ কখনো শুরু করাই উচিত ছিল না। আবার এটি এমন এক যুদ্ধ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্প ছাড়া তিনি (জেলেনস্কি) মিটমাটও করতে পারবেন না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপের দেশগুলোর চেয়ে ২০০ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ করেছে। এ যুদ্ধ থেকে ইউরোপ তাদের উশুল আদায় করে নিতে পারলেও যুক্তরাষ্ট্র কিছুই ফেরত পাবে না। সর্বোপরি জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ অর্থ ইউক্রেনে পাঠিয়েছে, তার অর্ধেকও সেখানে পৌঁছায়নি।
তবে জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলার প্রতিক্রিয়া এসেছে ইউরোপ থেকে। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেলেনস্কির ‘বিভ্রান্তিমূলক তথ্য’ সংক্রান্ত মন্তব্যের সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবেই ট্রাম্প ওই পোস্ট করেছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বলেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির গণতান্ত্রিক বৈধতাকে অস্বীকার করা সরাসরি ভুল এবং বিপজ্জনক। সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনও ট্রাম্পের ‘স্বৈরশাসক’ মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টার্মার জেলেনস্কির প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র জানান, স্যার কিয়ার ইউক্রেনের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেছেন। মুখপাত্র আরও বলেন, যুদ্ধকালীন সময়ে নির্বাচন স্থগিত রাখা একেবারে স্বাভাবিক, যেমনটি যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় করেছিল।
জেলেনস্কির পাঁচ বছরের কার্যকাল ২০২৪ সালের মে মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর থেকে ইউক্রেনে সামরিক আইন জারি রয়েছে এবং স্থগিত করা হয়েছে নির্বাচন। জলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বললেন ট্রাম্প, তীব্র দ্বন্দ্বে দুই নেতা