alt

আন্তর্জাতিক

গাজার ৭৭ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েল

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

১৯ মাস ধরে গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযানও চালাচ্ছে -এএফপি

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘পুরো গাজা নিয়ন্ত্রণের’ যে পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন, তা বাস্তবায়নের দিকে এগোচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। উপত্যকাটির ৭৭ শতাংশ ভূখ- এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এতে গাজার ক্ষুদ্র একটি অংশের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন ফিলিস্তিনিরা। অবিরাম হামলা ও অনাহার তাঁদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে।

রোববার গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বেসামরিক ও আবাসিক এলাকায় সরাসরি স্থল অভিযান ও দখলদার বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে গাজার ৭৭ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েল। এসব এলাকা থেকে হয় ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে বলা হয়েছে, না হয় গুলি চালানো হচ্ছে। এতে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তাঁরা।

দখলদারি বন্ধে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে গাজার জনসংযোগ কার্যালয়। তারা বলেছে, উপত্যকাটির বেশির ভাগ এলাকায় চলমান জাতিগত নিধন, উপনিবেশবাদ, আগ্রাসন ও দখলদারি এটাই দেখাচ্ছে যে আন্তর্জাতিক সব আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে শক্তি খাটিয়ে একটি ‘চূড়ান্ত সমাধান’ চাপিয়ে দেওয়ার রাজনৈতিক ইচ্ছা রয়েছে ইসরায়েলের।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। মাস দুয়েকের যুদ্ধবিরতির সময় ছাড়া উপত্যকাটিতে নির্বিচার চলছে মানুষ হত্যা। গতকালও গাজায় অন্তত ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ দিন দক্ষিণের খান ইউনিস, উত্তরের জাবালিয়া ও মধ্য গাজার নুসেইরাতে হামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আশরাফ আবু নার মানের এক সাংবাদিক রয়েছেন।

নেতানিয়াহুর কাছে জিম্মিদের স্বজনদের প্রশ্ন, ‘আপনি ঘুমাতে পারছেন কীভাবে’

গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে, এ নিয়ে সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে প্রায় ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। এ সময় আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ।

এদিকে, ১৯ মাস ধরে গাজায় হামলা চালানোর পর ইসরায়েল। তার নিকটতম পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত। কিছু মহল থেকে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যে যুদ্ধ শুরু করেছিল, সেই যুদ্ধের অর্থ, অস্ত্র সরবরাহ, পুনরায় সরবরাহ সবটাই করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্য মিত্ররাও অন্য মিত্ররাও নিজেদের মতো করে কোনো না কোনোভাবে ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ইসরায়েল সেই সমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। অন্তত ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডার কথা মাথায় রাখলে বিষয়টা তাই দাঁড়ায়।

ইসরায়েলি দৈনিক ‘হারেজ’ গত সপ্তাহে তাদের এক শিরোনামে লিখেছে-কূটনৈতিক সুনামি আসছে’। পত্রিকাটি সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় সম্পূর্ণ উন্মত্ততার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে ইউরোপ। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা এক যৌথ বিবৃতিতে গাজায় ইসরায়েলের চরম আচরণের নিন্দা জানায়। তারা হুঁশিয়ারি দেয়, সামরিক আগ্রাসন থামানো না হলে এবং মানবিক সহায়তার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তারা পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণের প্রতিক্রিয়ায় ‘টার্গেটেড স্যাংশনের’ও হুমকি দিয়েছে। ২৪টি অনুদানদাতা দেশ ইসরায়েলসমর্থিত গাজা সহায়তা বিতরণ কাঠামোর নিন্দা জানায়।

যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান। বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে। ২০২৩ সালের যৌথ সহযোগিতা রোড ম্যাপ পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এছাড়া ল-নে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত টিপি হোতোভেলিকে ফরেন অফিসে তলব করা হয়।

এতদিন এ ধরনের পদক্ষেপ সাধারণত রাশিয়া বা ইরানের মতো দেশগুলোর ক্ষেত্রেই নেওয়া হতো। ইসরায়েলের সঙ্গে ২৫ বছর পুরোনো অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি পুনর্বিবেচনার হুমকি দিয়েছে ইইউ। ইসরায়েলের সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতানিয়ার এবং তার সরকারের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব রয়েছে।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের কেউ কেউ গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন। তবুও যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেবে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

তবে ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের সিনিয়র পলিসি ফেলো হিউ লোভাট বলেন, এটি পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করে যাবে। যদিও সম্পর্কের মধ্যে কোনো ভাঙন দেখা যাচ্ছে না। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করেনি। আলেকজান্ডারের মুক্তির জন্য হামাসের সঙ্গে একতরফাভাবে আলোচনা করে। সৌদি আরবের কাছে মার্কিন বিনিয়োগ এবং সম্ভাব্য মার্কিন অস্ত্র চুক্তির শর্ত হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

হুথিদের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনার জবাবে ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি ইসরায়েলি গণমাধ্যমকে বলেছেন যে, তার জাহাজগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে আমেরিকার ইসরায়েলের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। নেতানিয়াহু নিজেকে মার্কিন রাজনীতিতে খেলার একজন কর্তা হিসেবে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পরিচালনা ও বজায় রাখার জন্য এবং যে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রশাসনকে পাশে রাখার জন্য সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন এমন একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ছবি

‘গাজায় ৯৫ শতাংশ কৃষিজমি চাষযোগ্য নেই

সিরিয়া ও ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে, চলছে ধারাবাহিক বৈঠক

ছবি

এশিয়ায় অস্ত্র ও নিরাপত্তা গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ছে

পুতিন আগুন নিয়ে খেলছেন : ট্রাম্প

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিত

অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে নারী মুসলিম সিনেটরকে সহকর্মীর অশোভন প্রস্তাব

ছবি

মহাকাশে গিয়ে ফেরার পথে বিস্ফোরিত হল ‘স্টারশিপ’

ছবি

বাংলাদেশিসহ ৯০ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাল ইতালি

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করল ট্রাম্প প্রশাসন

ছবি

পুতিন আগুন নিয়ে খেলছেন: ট্রাম্প

ছবি

ড্রোন যুদ্ধ, ভারত-পাকিস্তানের নতুন সামরিক প্রতিযোগিতা

যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাস না করলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের হুমকি

পিটিআইকে বড় আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বললেন ইমরান

ছবি

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলিদের হামলা

ছবি

৩১ বার এভারেস্ট জয় করে রেকর্ড গড়লেন নেপালের কামি রিতা

ভয় ছিল ইসরায়েলই হত্যা করে হামাসের ওপর দায় দেবে: মুক্তি পাওয়া জিম্মি

ছবি

স্ত্রীর চড়?—মাখোঁকে ঘিরে ভাইরাল ভিডিও নিয়ে মুখ খুলল এলিসি প্রাসাদ

আশ্রয় নেয়া ৫৪ প্যালেস্টাইনি নিহত

ছবি

’পুতিনকে ‘উন্মাদ’ বললেন ট্রাম্প, নিষেধাজ্ঞার হুমকি

ভারতকে নিজেদের অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে দেখছে পাকিস্তান

যুক্তরাষ্ট্র ট্যাংক তৈরি করতে চায়, টি-শার্ট নয়: ট্রাম্প

ছবি

ভারতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, আক্রান্ত ছাড়াল হাজার

পুতিনের হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন

ছবি

গাজার স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ২৫

ছবি

গাজায় তীব্র অপুষ্টির শিকার ৭১ হাজার শিশু ও ১৭ হাজার মা

ছবি

মহাকালে রোমাঞ্চকর লড়াই

ছবি

বাণিজ্যযুদ্ধ ফের তীব্র হওয়ার শঙ্কা

পানি চুক্তি স্থগিতে জাতিসংঘে ভারতের তীব্র সমালোচনা করল পাকিস্তান

৫ হাজারের বেশি পাকিস্তানি ভিক্ষুককে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি

ভারতে করোনায় আক্রান্ত বৃদ্ধের মৃত্যু, বাড়ছে সংক্রমণ

পাল্টাপাল্টি আকাশসীমা বন্ধের মেয়াদ বাড়াল ভারত-পাকিস্তান

ছবি

একদিনে প্রায় ৮০০ যুদ্ধবন্দীকে মুক্তি দিল রাশিয়া-ইউক্রেন

জার্মানিতে ছুরি চালিয়ে ১৮ জনকে আহত, গ্রেপ্তার নারী

ছবি

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ভারতের হুমকি, পাকিস্তানের ক্ষোভ

অস্ত্র রপ্তানি আরও বাড়াবে রাশিয়া, ঘোষণা পুতিনের

ছবি

গাজায় সীমিত ত্রাণ সহায়তা, খাবারের জন্য হাহাকার ও লুটপাট

tab

আন্তর্জাতিক

গাজার ৭৭ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েল

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

১৯ মাস ধরে গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযানও চালাচ্ছে -এএফপি

সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘পুরো গাজা নিয়ন্ত্রণের’ যে পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন, তা বাস্তবায়নের দিকে এগোচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। উপত্যকাটির ৭৭ শতাংশ ভূখ- এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এতে গাজার ক্ষুদ্র একটি অংশের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন ফিলিস্তিনিরা। অবিরাম হামলা ও অনাহার তাঁদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে।

রোববার গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বেসামরিক ও আবাসিক এলাকায় সরাসরি স্থল অভিযান ও দখলদার বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে গাজার ৭৭ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েল। এসব এলাকা থেকে হয় ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে বলা হয়েছে, না হয় গুলি চালানো হচ্ছে। এতে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তাঁরা।

দখলদারি বন্ধে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে গাজার জনসংযোগ কার্যালয়। তারা বলেছে, উপত্যকাটির বেশির ভাগ এলাকায় চলমান জাতিগত নিধন, উপনিবেশবাদ, আগ্রাসন ও দখলদারি এটাই দেখাচ্ছে যে আন্তর্জাতিক সব আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে শক্তি খাটিয়ে একটি ‘চূড়ান্ত সমাধান’ চাপিয়ে দেওয়ার রাজনৈতিক ইচ্ছা রয়েছে ইসরায়েলের।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। মাস দুয়েকের যুদ্ধবিরতির সময় ছাড়া উপত্যকাটিতে নির্বিচার চলছে মানুষ হত্যা। গতকালও গাজায় অন্তত ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ দিন দক্ষিণের খান ইউনিস, উত্তরের জাবালিয়া ও মধ্য গাজার নুসেইরাতে হামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আশরাফ আবু নার মানের এক সাংবাদিক রয়েছেন।

নেতানিয়াহুর কাছে জিম্মিদের স্বজনদের প্রশ্ন, ‘আপনি ঘুমাতে পারছেন কীভাবে’

গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে, এ নিয়ে সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে প্রায় ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। এ সময় আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ।

এদিকে, ১৯ মাস ধরে গাজায় হামলা চালানোর পর ইসরায়েল। তার নিকটতম পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত। কিছু মহল থেকে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যে যুদ্ধ শুরু করেছিল, সেই যুদ্ধের অর্থ, অস্ত্র সরবরাহ, পুনরায় সরবরাহ সবটাই করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্য মিত্ররাও অন্য মিত্ররাও নিজেদের মতো করে কোনো না কোনোভাবে ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ইসরায়েল সেই সমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। অন্তত ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডার কথা মাথায় রাখলে বিষয়টা তাই দাঁড়ায়।

ইসরায়েলি দৈনিক ‘হারেজ’ গত সপ্তাহে তাদের এক শিরোনামে লিখেছে-কূটনৈতিক সুনামি আসছে’। পত্রিকাটি সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় সম্পূর্ণ উন্মত্ততার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে ইউরোপ। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা এক যৌথ বিবৃতিতে গাজায় ইসরায়েলের চরম আচরণের নিন্দা জানায়। তারা হুঁশিয়ারি দেয়, সামরিক আগ্রাসন থামানো না হলে এবং মানবিক সহায়তার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তারা পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণের প্রতিক্রিয়ায় ‘টার্গেটেড স্যাংশনের’ও হুমকি দিয়েছে। ২৪টি অনুদানদাতা দেশ ইসরায়েলসমর্থিত গাজা সহায়তা বিতরণ কাঠামোর নিন্দা জানায়।

যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান। বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে। ২০২৩ সালের যৌথ সহযোগিতা রোড ম্যাপ পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এছাড়া ল-নে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত টিপি হোতোভেলিকে ফরেন অফিসে তলব করা হয়।

এতদিন এ ধরনের পদক্ষেপ সাধারণত রাশিয়া বা ইরানের মতো দেশগুলোর ক্ষেত্রেই নেওয়া হতো। ইসরায়েলের সঙ্গে ২৫ বছর পুরোনো অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি পুনর্বিবেচনার হুমকি দিয়েছে ইইউ। ইসরায়েলের সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতানিয়ার এবং তার সরকারের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব রয়েছে।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের কেউ কেউ গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন। তবুও যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেবে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

তবে ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের সিনিয়র পলিসি ফেলো হিউ লোভাট বলেন, এটি পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করে যাবে। যদিও সম্পর্কের মধ্যে কোনো ভাঙন দেখা যাচ্ছে না। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করেনি। আলেকজান্ডারের মুক্তির জন্য হামাসের সঙ্গে একতরফাভাবে আলোচনা করে। সৌদি আরবের কাছে মার্কিন বিনিয়োগ এবং সম্ভাব্য মার্কিন অস্ত্র চুক্তির শর্ত হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

হুথিদের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনার জবাবে ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি ইসরায়েলি গণমাধ্যমকে বলেছেন যে, তার জাহাজগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে আমেরিকার ইসরায়েলের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। নেতানিয়াহু নিজেকে মার্কিন রাজনীতিতে খেলার একজন কর্তা হিসেবে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পরিচালনা ও বজায় রাখার জন্য এবং যে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রশাসনকে পাশে রাখার জন্য সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন এমন একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

back to top