সুদানের রাজধানী খার্তুমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া কলেরা মহামারিতে মাত্র দুই দিনে ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। শহরের ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও জরুরি সেবার বিপর্যয়ের মধ্যেই এই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। খার্তুম রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বুধবার ৯৪২ জন নতুন সংক্রমণ এবং ২৫ জন মৃত্যুর রেকর্ড পাওয়া গেছে। তার আগের দিন মঙ্গলবার ১ হাজার ১৭৭ জন আক্রান্ত এবং ৪৫ জন মারা যান।

এই সংক্রমণের হঠাৎ বৃদ্ধির পেছনে দায়ী করা হচ্ছে আধাসামরিক বাহিনী র?্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর ড্রোন হামলাকে, যা শহরজুড়ে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয় কয়েক সপ্তাহ আগে।

পাশাপাশি, সরকারি বাহিনী গত সপ্তাহে জানায় যে তারা দুই মাস আগে রাজধানীর কেন্দ্রীয় অংশ পুনর্দখলের পর খার্তুম রাজ্যের শেষ আরএসএফ অবস্থান থেকেও বাহিনী সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। গত দুই বছরে বৃহত্তর খার্তুম এলাকাটি সংঘর্ষের ময়দানে পরিণত হয়েছিল, যার ফলে বাসস্থান এবং অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফেডারেল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, শুধু গত এক সপ্তাহেই ১৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার ৯০ শতাংশই ঘটেছে খার্তুম রাজ্যে। যদিও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি ৮৯ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠছেন, তবুও পরিবেশগত অবনতি ও স্বাস্থ্যসেবার সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত দশ লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছে এবং ১৩ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘ এই পরিস্থিতিকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুতর মানবিক সংকট হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

এ ছাড়া যুদ্ধপীড়িত এলাকাগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে চিকিৎসাসেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কলেরা মহামারি জনজীবনে নতুন করে দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে।