বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও টেসলা–স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টায় এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে ট্রাম্প প্রশাসনে বিশেষ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে মাস্কের দায়িত্বের মেয়াদও শেষ হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, “আজ তাঁর (মাস্ক) শেষ দিন, তবে যেমনটা বলা হচ্ছে ঠিক তেমনটা নয়, কেননা, তিনি থাকবেন সব সময়, আমাদের সঙ্গে, সব দিক থেকে সহায়তা করে।” মাস্ককে “অসাধারণ মানুষ” বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এর আগে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেন যে, ইলন মাস্ক প্রশাসন ছাড়ছেন এবং বুধবার রাত থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প মাস্ককে ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেন। যদিও এই বিভাগটি ফেডারেল সরকারের প্রত্যক্ষ কোনো অংশ নয়, বরং মূলত সরকারি ব্যয় কমানো এবং কর্মিবহর হ্রাসের লক্ষ্যে কাজ করে আসছে।

১৩০ দিনের ম্যান্ডেট নিয়ে যোগ দেওয়া মাস্কের দায়িত্বকাল শেষ হচ্ছে আজ ৩০ মে। ট্রাম্প প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, ফেডারেল সরকার পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে ডিওজিই-এর কার্যক্রম ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।

মাস্ক এক বিবৃতিতে বলেন, “সময় যত যাবে, ডিওজিইয়ের কার্যক্রম আরও জোরদার হবে। এটি সরকারের মাধ্যমে জীবনের অংশ হয়ে উঠবে।”

মাস্ক ও ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন ডিওজিই ইতিমধ্যে ফেডারেল সরকারের ২৩ লাখ বেসামরিক কর্মীর মধ্যে প্রায় ১২ শতাংশ—অর্থাৎ দুই লাখ ৬০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে বলে রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।

তবে মাস্কের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্কও কম নয়। গত মঙ্গলবার কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের প্রস্তাবিত বাজেট ও কর আইনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বিশাল ব্যয়ের এ বিল দেখে আমি হতাশ হয়েছি। সত্যি বলতে, এটি বাজেট ঘাটতি কমানোর বদলে বরং আরও বাড়াবে এবং ডিওজিইয়ের কাজকে খাটো করবে।”

মাস্কের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে টেসলার বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকে চাইছেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে সরে এসে টেসলার ব্যবস্থাপনায় আরও মনোযোগী হোন।

যদিও আজ ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ দায়িত্ব থেকে মাস্কের বিদায় হচ্ছে, তবে ট্রাম্পের ভাষায়, "তিনি সব সময় থাকবেন, আমাদের পাশে।" এই ইঙ্গিত ভবিষ্যতেও মাস্ক-ট্রাম্প ঘনিষ্ঠতা বহাল থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।