প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পণ্যে পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে সে তালিকায় রয়েছে যুদ্ধাস্ত্রও। মোট ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ তালিকায় আছে আর্টিলারি উইপন্স, যেমন বিভিন্ন ধরনের বন্দুক, হাওইটজার (এক ধরনের কামান), মর্টার ইত্যাদি।

রকেট লাঞ্চার, ফ্লেইম থ্রোয়ারস, গ্রেনেড লাঞ্চার, টর্পেডো টিউবসহ অন্যান্য অস্ত্রের আমদানি শুল্কও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বিদায়ী অর্থবছরে এসব যুদ্ধাস্ত্রের আমদানি শুল্ক ছিল ৫ শতাংশ; প্রস্তাবিত বাজেটে তা শূন্য শতাংশ করা হয়েছে।

এই শুল্ক প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের প্রক্রিয়ার আওতায় এসেছে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “আমদানি পণ্যের শুল্ক-কর হার পর্যায়ক্রমে হ্রাস করা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস, ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে, তা রপ্তানির তুলনায় ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ নীতির আওতায় শতাধিক দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের মুখে পড়বে। এর আগে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্কহার থাকলেও বর্তমানে মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫২ শতাংশ।

২০২৫ সালের ২ এপ্রিল ট্রাম্প নতুন শুল্কহার তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। তবে এখনো ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রয়েছে, সঙ্গে আগের ১৫ শতাংশও বহাল রয়েছে।

এই বাড়তি শুল্কের চাপ সামলাতে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ যুদ্ধাস্ত্রের ওপর আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে ৭৩৪ কোটি ডলারেরই তৈরি পোশাক। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার।