যুক্তরাজ্যের বহুল আলোচিত গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট ইনটেলিজেন্স সার্ভিস এমআই-সিক্সের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্লেইজ মেট্রেওয়েলির পারিবারিক ইতিহাস দেশটির রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ডেইলি মেইল ও টেলিগ্রাফের একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মেট্রেওয়েলির দাদা কনস্টান্টিন দোবরোভলস্কি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারপন্থি এক গুপ্তচর ছিলেন এবং তাকে ‘দ্য বুচার’ বা ‘কসাই’ নামে ডাকা হতো।
ডেইলি মেইলের দাবি অনুযায়ী, ইউক্রেইনের চেরনিহিভ অঞ্চলের বাসিন্দা দোবরোভলস্কি শুরুতে সোভিয়েত রেড আর্মির সদস্য হলেও পরে পক্ষত্যাগ করে নাৎসিদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করেন। ‘এজেন্ট নাম্বার ৩০’ নামে পরিচিত এই গুপ্তচর ব্যক্তিগতভাবে ইহুদি হত্যায় অংশ নেওয়ার জন্য গর্ববোধ করতেন বলেও উঠে এসেছে জার্মান আর্কাইভের নথিতে।
এক পর্যায়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ৫০ হাজার রুবল, যা বর্তমান মূল্যে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। সোভিয়েতরা তাকে ‘ইউক্রেইনের লোকজনের সবচেয়ে বড় শত্রু’ হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছিল।
মেট্রেওয়েলি নিজে কখনো তার দাদার সঙ্গে দেখা করেননি। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, “তার পারিবারিক ইতিহাস নানা বিভাজন ও সংঘাতে ঘেরা, পূর্ব ইউরোপীয় শেকড়ের অনেকের ক্ষেত্রেই ব্যাপারটা এরকম।”
এও দাবি করা হয়েছে, এমন অতীত তাকে আধুনিক হুমকির বিরুদ্ধে ব্রিটিশ জনগণের সুরক্ষায় আরও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেছে।
তবে বিষয়টি ঘিরে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু হয়েছে। একজন রুশ প্রচারক বলেন, “ব্রিটেনে যুদ্ধ-পরবর্তী অভিবাসীদের একটি বড় অংশই ছিল নাৎসি সহযোগী এসএস গ্যালিসিয়া ডিভিশনের সদস্য।” এরপর থেকেই মেট্রেওয়েলির বংশ পরিচয় নিয়ে গবেষণা শুরু হয়, যা প্রকাশ করেন জর্জিয়ার ইলিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ইতিহাসবিদ বেকা কোবাখিদজে।
তিনি বলেন, “এই পরিচয় সামনে বহু বছর ধরে রাশিয়ান প্রচারণার হাতিয়ার হবে।” পাশাপাশি প্রশ্ন তোলেন, “যুক্তরাজ্য কেন এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে ইচ্ছাকৃতভাবে রাশিয়ার হাতে তুলে দিচ্ছে?”
মেট্রেওয়েলি বিদেশে বেড়ে ওঠেন। পড়াশোনা করেছেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তিনি ১৯৯৭ সালের ঐতিহাসিক নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলে ছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালে এমআই-সিক্সে যোগ দেন এবং গত দুই দশকে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে তিনি সংস্থার প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন শাখা, অর্থাৎ ‘কিউ’ ইউনিটের প্রধান। এখান থেকে গোপন এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, চীনের বায়োমেট্রিক নজরদারির মতো হুমকির মোকাবিলা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা হয়।
চলতি বছরের শেষে ব্লেইজ মেট্রেওয়েলি এমআই-সিক্স প্রধানের দায়িত্ব নেবেন, তার কোডনাম হবে ‘সি’—যেটি শুধু সংস্থার প্রধানের জন্য বরাদ্দ।
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
যুক্তরাজ্যের বহুল আলোচিত গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট ইনটেলিজেন্স সার্ভিস এমআই-সিক্সের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্লেইজ মেট্রেওয়েলির পারিবারিক ইতিহাস দেশটির রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ডেইলি মেইল ও টেলিগ্রাফের একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মেট্রেওয়েলির দাদা কনস্টান্টিন দোবরোভলস্কি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারপন্থি এক গুপ্তচর ছিলেন এবং তাকে ‘দ্য বুচার’ বা ‘কসাই’ নামে ডাকা হতো।
ডেইলি মেইলের দাবি অনুযায়ী, ইউক্রেইনের চেরনিহিভ অঞ্চলের বাসিন্দা দোবরোভলস্কি শুরুতে সোভিয়েত রেড আর্মির সদস্য হলেও পরে পক্ষত্যাগ করে নাৎসিদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করেন। ‘এজেন্ট নাম্বার ৩০’ নামে পরিচিত এই গুপ্তচর ব্যক্তিগতভাবে ইহুদি হত্যায় অংশ নেওয়ার জন্য গর্ববোধ করতেন বলেও উঠে এসেছে জার্মান আর্কাইভের নথিতে।
এক পর্যায়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ৫০ হাজার রুবল, যা বর্তমান মূল্যে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। সোভিয়েতরা তাকে ‘ইউক্রেইনের লোকজনের সবচেয়ে বড় শত্রু’ হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছিল।
মেট্রেওয়েলি নিজে কখনো তার দাদার সঙ্গে দেখা করেননি। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, “তার পারিবারিক ইতিহাস নানা বিভাজন ও সংঘাতে ঘেরা, পূর্ব ইউরোপীয় শেকড়ের অনেকের ক্ষেত্রেই ব্যাপারটা এরকম।”
এও দাবি করা হয়েছে, এমন অতীত তাকে আধুনিক হুমকির বিরুদ্ধে ব্রিটিশ জনগণের সুরক্ষায় আরও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেছে।
তবে বিষয়টি ঘিরে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু হয়েছে। একজন রুশ প্রচারক বলেন, “ব্রিটেনে যুদ্ধ-পরবর্তী অভিবাসীদের একটি বড় অংশই ছিল নাৎসি সহযোগী এসএস গ্যালিসিয়া ডিভিশনের সদস্য।” এরপর থেকেই মেট্রেওয়েলির বংশ পরিচয় নিয়ে গবেষণা শুরু হয়, যা প্রকাশ করেন জর্জিয়ার ইলিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ইতিহাসবিদ বেকা কোবাখিদজে।
তিনি বলেন, “এই পরিচয় সামনে বহু বছর ধরে রাশিয়ান প্রচারণার হাতিয়ার হবে।” পাশাপাশি প্রশ্ন তোলেন, “যুক্তরাজ্য কেন এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে ইচ্ছাকৃতভাবে রাশিয়ার হাতে তুলে দিচ্ছে?”
মেট্রেওয়েলি বিদেশে বেড়ে ওঠেন। পড়াশোনা করেছেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তিনি ১৯৯৭ সালের ঐতিহাসিক নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলে ছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালে এমআই-সিক্সে যোগ দেন এবং গত দুই দশকে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে তিনি সংস্থার প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন শাখা, অর্থাৎ ‘কিউ’ ইউনিটের প্রধান। এখান থেকে গোপন এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, চীনের বায়োমেট্রিক নজরদারির মতো হুমকির মোকাবিলা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা হয়।
চলতি বছরের শেষে ব্লেইজ মেট্রেওয়েলি এমআই-সিক্স প্রধানের দায়িত্ব নেবেন, তার কোডনাম হবে ‘সি’—যেটি শুধু সংস্থার প্রধানের জন্য বরাদ্দ।