alt

আন্তর্জাতিক

শোক-সমবেদনায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের স্মরণ করলেন ইরানিরা

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের স্মরণ করেন ইরানিরা -এএপপি

ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানের সামরিক বাহিনী ও বিজ্ঞানীদের জানাজায় অংশ নিতে তেহরানের ইঙ্গেলাব (ইনকিলাব বা বিপ্লব) স্কয়ারে জমায়েত হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। আজ শনিবার সেই শোকসভায় ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ বাহরাইন, ইরাক ও আরও কয়েকটি আরব দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্য।

লেবাননের সংবাদমাধ্যম আল-মায়েদিনের খবরে বলা হয়েছে, আজ শনিবার ভোর থেকেই হাজারো নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী রাস্তায় নেমে আসেন। স্লোগান ওঠে, ‘আমেরিকার ধ্বংস চাই’, ‘ইসরায়েলের ধ্বংস চাই’, ‘আমরা ভুলব না, ক্ষমাও করব না’, ‘খামেনি, আমরা তোমার সঙ্গে আছি।’ মিছিল থেকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বিরুদ্ধে ক্ষোভও ঝরে পড়ে। সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসির বিচারও দাবি করেন অনেকে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সকালে ঘোষণা করা হয়, শহীদদের স্মরণে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি শুরু হয়েছে। টেলিভিশনে দেখা যায়, শোকাহত মানুষ কালো পোশাকে, জাতীয় পতাকা ও শহীদদের ছবি নিয়ে মিছিল করছেন। ইসরায়েলি হামলায় নিহত কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের বহনকারী কফিনগুলো ইরানের জাতীয় পতাকায় মোড়ানো। সামরিক প্রতীকে সাজানো কফিনগুলো ইঙ্গেলাব স্কয়ারে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। এরপর সেখান থেকে আজাদি (স্বাধীনতা) স্কয়ারের দিকে যাত্রা শুরু হয়।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) তেহরান শাখার কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান হাসানজাদে জানান, শহীদদের এই জানাজা ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ এরই অংশ। তিনি বলেন, ইঙ্গেলাব স্কয়ার থেকে আজাদি স্কয়ারের এই মিছিল ইরানের দৃঢ় অবস্থান এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তিনি আরও জানান, ইরানের সমাজের সব স্তরের মানুষ এই শোকযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। তাদের ত্যাগ শুধু ক্ষতি নয়, বরং গোটা জাতির জন্য প্রেরণার উৎস।

শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরির প্রতিও। তিনি স্ত্রী ও মেয়েসহ ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। এ ছাড়া পরমাণুবিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি ও তাঁর স্ত্রী, যুদ্ধের প্রথম দিন নিহত আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামিকেও স্মরণ করা হয়। শহীদদের তালিকায় ছিলেন ৩০ জন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও চারজন শিশু। তেহরানের ইসলামি উন্নয়ন সমন্বয় পরিষদের প্রধান মোহসেন মাহমুদি বলেন, ‘ইসলামি ইরান ও বিপ্লবের ইতিহাসে আজকের দিনটি এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।’

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬২৭ জন নিহত ও ৪ হাজার ৮৭০ জন আহত হয়েছেন। সব কফিনের ভিড়ে সবচেয়ে ছোট কফিনগুলো যেন মানুষের মন কেড়ে নিচ্ছিল। শিশুদের কফিনগুলো কাঁপা হাতে বহন করছিলেন স্বজনেরা। যুদ্ধ কেড়ে নিয়েছে তাদের নিষ্পাপ জীবন। মায়েদের কান্না ভাসিয়ে দিয়েছিল চারপাশ। পুরো জাতি যেন সেই কফিনগুলো স্পর্শ করে তাদের বেদনা ভাগাভাগি করছিল।

এদিকে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আবারও উত্তেজনা বাড়িয়েছেন। নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে ‘এক ভয়ংকর ও অপমানজনক মৃত্যু’ থেকে বাঁচিয়েছেন। তার অবস্থানও জানতেন, কিন্তু আঘাত করেননি। ট্রাম্প বলেন, তিনি ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু ইরানের ‘ঘৃণা ও ক্ষোভের’ কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। তিনি এক্সে লিখেন, যদি ট্রাম্প সত্যিই সমঝোতা চান, তাহলে তাকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতি অবমাননাকর ভাষা বাদ দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি শাসকেরা কীভাবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের ভয়ে আমেরিকার শরণাপন্ন হয়েছে, তা গোটা বিশ্ব দেখেছে। আমাদের জাতি হুমকি-অপমান বরদাশত করে না।’

তবে, ট্রাম্পের এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। শনিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ট্রাম্পের এ বক্তব্যকে ‘অসম্মানজনক ও অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে নিন্দা জানান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে আরাগচি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি মনেপ্রাণে চুক্তি করতে চান, তাহলে তাকে আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রতি অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে এবং তার কোটি ভক্তের অনুভূতিতে আঘাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।’

গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ হামলা চালায়।

এরপর যুক্তরাষ্ট্র তিনটি ইরানি পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা করে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির মধ্যেও ইরান হার মানেনি। পাল্টা জবাব দিয়েছে, যার ফলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশই শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে বাধ্য হয়েছে। যদিও তারা নিজেদের সাফল্যের দাবি করেছে, কিন্তু ইরান তাদের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, এই আগ্রাসনের মধ্যেও দেশের সার্বভৌমত্ব ও মনোবল অটুট রয়েছে।

ছবি

নর্থ ওয়াজিরিস্তানে সামরিক বহরে আত্মঘাতী হামলা, শিশু আহত ছয়

কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করছেন ট্রাম্প

ছবি

ইউক্রেনের শহর দখল করতে ১ লাখের বেশি সেনা জড়ো করেছে রাশিয়া

ছবি

বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও ইরানের সমর্থন নিয়ে অনিশ্চয়তা, অস্তিত্ব-সংকটে হামাস

ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ ইরানি সাংবাদিক

আল-আকসা চত্বরে নাচ-গানের অনুমতি দিল ইসরায়েল

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী ভারতের সংসদ সদস্যরা

ছবি

নতুন এমআই-সিক্স প্রধানের দাদা ছিলেন হিটলারের ‘গুপ্তচর’

ছবি

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যচুক্তিতে সই, জানালেন ট্রাম্প

ছবি

খামেনিকে একহাত নিলেন ট্রাম্প, পারমাণবিক কর্মসূচি চালালে ইরানে ফের হামলার হুমকি

ছবি

বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

ছবি

ইসরায়েল চেয়েছিল খামেনিকে হত্যা করতে, কিন্তু সুযোগ মেলেনি: প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাৎজ

জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশি আটক

ছবি

‘সন্ত্রাসবাদ’ নিয়ে ঐকমত্যের অভাবে যৌথ বিবৃতিতে ভারতের অস্বীকৃতি

যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক ইরানি সেনাসহ গ্রেপ্তার ১৩০

ছবি

মধ্যপ্রাচ্যে কীভাবে সংঘাত ছড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল

গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ‘বিপর্যয়কর’: ইউরোপীয় কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট

চীন-রাশিয়ার কাছ থেকে আধুনিক অস্ত্র কিনবে ইরান?

ছবি

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ভবিষ্যৎ কী

নেটোর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধিতে তুরস্কের সমর্থন

যুদ্ধবিরতির পর ইরানে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়

ছবি

এবার গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা জোরদার

নিউইয়র্কে ইতিহাস গড়লেন জোহরান মামদানি

ইরানের ওপর তেল নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ইঙ্গিত ট্রাম্পের

ছবি

ইরানে যে কারণে ব্যর্থ ইসরায়েল

ছবি

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ‘গুরুতর ক্ষতি’: সিআইএ পরিচালক

ছবি

ইরানকে সতর্ক করলেন ট্রাম্প, বললেন “আবার করলে অবশ্যই হামলা”

ছবি

চার দশক পর মহাকাশ অভিযানে ভারত

ছবি

পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি ইরানি পরমাণু কর্মসূচি, কয়েক মাস পিছিয়েছে

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে তিনজনের ফাঁসি কার্যকর

ছবি

মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে খরচ কত

গাজায় ইসরায়েলের ৭ সেনা সদস্য নিহত

আইএইএ’র সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিতে সম্মতি ইরানের পার্লামেন্টের

ছবি

মোসাদের সঙ্গে যোগসাজশ: ইরানে আরও তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

ছবি

১২ দিনের সংঘাতে অন্তত ১৪ ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

ছবি

ইরানে পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস হয়নি—এমন খবর ‘ভুয়া’: দাবি ট্রাম্পের

tab

আন্তর্জাতিক

শোক-সমবেদনায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের স্মরণ করলেন ইরানিরা

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের স্মরণ করেন ইরানিরা -এএপপি

শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানের সামরিক বাহিনী ও বিজ্ঞানীদের জানাজায় অংশ নিতে তেহরানের ইঙ্গেলাব (ইনকিলাব বা বিপ্লব) স্কয়ারে জমায়েত হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। আজ শনিবার সেই শোকসভায় ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ বাহরাইন, ইরাক ও আরও কয়েকটি আরব দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্য।

লেবাননের সংবাদমাধ্যম আল-মায়েদিনের খবরে বলা হয়েছে, আজ শনিবার ভোর থেকেই হাজারো নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী রাস্তায় নেমে আসেন। স্লোগান ওঠে, ‘আমেরিকার ধ্বংস চাই’, ‘ইসরায়েলের ধ্বংস চাই’, ‘আমরা ভুলব না, ক্ষমাও করব না’, ‘খামেনি, আমরা তোমার সঙ্গে আছি।’ মিছিল থেকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বিরুদ্ধে ক্ষোভও ঝরে পড়ে। সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসির বিচারও দাবি করেন অনেকে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সকালে ঘোষণা করা হয়, শহীদদের স্মরণে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি শুরু হয়েছে। টেলিভিশনে দেখা যায়, শোকাহত মানুষ কালো পোশাকে, জাতীয় পতাকা ও শহীদদের ছবি নিয়ে মিছিল করছেন। ইসরায়েলি হামলায় নিহত কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের বহনকারী কফিনগুলো ইরানের জাতীয় পতাকায় মোড়ানো। সামরিক প্রতীকে সাজানো কফিনগুলো ইঙ্গেলাব স্কয়ারে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। এরপর সেখান থেকে আজাদি (স্বাধীনতা) স্কয়ারের দিকে যাত্রা শুরু হয়।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) তেহরান শাখার কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান হাসানজাদে জানান, শহীদদের এই জানাজা ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ এরই অংশ। তিনি বলেন, ইঙ্গেলাব স্কয়ার থেকে আজাদি স্কয়ারের এই মিছিল ইরানের দৃঢ় অবস্থান এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তিনি আরও জানান, ইরানের সমাজের সব স্তরের মানুষ এই শোকযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। তাদের ত্যাগ শুধু ক্ষতি নয়, বরং গোটা জাতির জন্য প্রেরণার উৎস।

শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরির প্রতিও। তিনি স্ত্রী ও মেয়েসহ ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। এ ছাড়া পরমাণুবিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি ও তাঁর স্ত্রী, যুদ্ধের প্রথম দিন নিহত আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামিকেও স্মরণ করা হয়। শহীদদের তালিকায় ছিলেন ৩০ জন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও চারজন শিশু। তেহরানের ইসলামি উন্নয়ন সমন্বয় পরিষদের প্রধান মোহসেন মাহমুদি বলেন, ‘ইসলামি ইরান ও বিপ্লবের ইতিহাসে আজকের দিনটি এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।’

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬২৭ জন নিহত ও ৪ হাজার ৮৭০ জন আহত হয়েছেন। সব কফিনের ভিড়ে সবচেয়ে ছোট কফিনগুলো যেন মানুষের মন কেড়ে নিচ্ছিল। শিশুদের কফিনগুলো কাঁপা হাতে বহন করছিলেন স্বজনেরা। যুদ্ধ কেড়ে নিয়েছে তাদের নিষ্পাপ জীবন। মায়েদের কান্না ভাসিয়ে দিয়েছিল চারপাশ। পুরো জাতি যেন সেই কফিনগুলো স্পর্শ করে তাদের বেদনা ভাগাভাগি করছিল।

এদিকে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আবারও উত্তেজনা বাড়িয়েছেন। নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে ‘এক ভয়ংকর ও অপমানজনক মৃত্যু’ থেকে বাঁচিয়েছেন। তার অবস্থানও জানতেন, কিন্তু আঘাত করেননি। ট্রাম্প বলেন, তিনি ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু ইরানের ‘ঘৃণা ও ক্ষোভের’ কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। তিনি এক্সে লিখেন, যদি ট্রাম্প সত্যিই সমঝোতা চান, তাহলে তাকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতি অবমাননাকর ভাষা বাদ দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি শাসকেরা কীভাবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের ভয়ে আমেরিকার শরণাপন্ন হয়েছে, তা গোটা বিশ্ব দেখেছে। আমাদের জাতি হুমকি-অপমান বরদাশত করে না।’

তবে, ট্রাম্পের এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। শনিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ট্রাম্পের এ বক্তব্যকে ‘অসম্মানজনক ও অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে নিন্দা জানান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে আরাগচি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি মনেপ্রাণে চুক্তি করতে চান, তাহলে তাকে আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রতি অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে এবং তার কোটি ভক্তের অনুভূতিতে আঘাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।’

গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ হামলা চালায়।

এরপর যুক্তরাষ্ট্র তিনটি ইরানি পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা করে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির মধ্যেও ইরান হার মানেনি। পাল্টা জবাব দিয়েছে, যার ফলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশই শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে বাধ্য হয়েছে। যদিও তারা নিজেদের সাফল্যের দাবি করেছে, কিন্তু ইরান তাদের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, এই আগ্রাসনের মধ্যেও দেশের সার্বভৌমত্ব ও মনোবল অটুট রয়েছে।

back to top