alt

আন্তর্জাতিক

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া কতদূর

হামাসকে ফুসরত দিতে চায় না ইসরায়েল

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা - এএফপি

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবে বিশ্বের নজর এখন গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার দিকে। ইসরায়েল খাদ্য বিতরণের নামে মানুষ হত্যার যে অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া চালু করেছে, তাতে বিশ্বনেতারাসহ মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো অসন্তুষ্ট। একটা কথা এসেছে, গাজার বর্তমান অবস্থার যে দৃশ্যপট, তা কোনো সিনেমায়ও তৈরি করা সম্ভব না। মানুষ হত্যার সবগুলো কৌশল এখানে সক্রিয়। এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতির দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা সম্ভব। তার এই বক্তব্য বিশ্ববাসীকে আরও আশাবাদী করে তুলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, যুদ্ধবিরতি কত দূর। গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যে একটি ‘টেকটোনিক পরিবর্তন’ আনার ঘোষণা দেন। তিনি দাবি করেন, ইরান দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আরও আরব রাষ্ট্রকে স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির (ইসরায়েলকে স্বীকৃতি) আওতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি ঘোষণা দেন, ‘আমরা অক্ষ ভেঙে ফেলেছি। এটি একটি বিশাল পরিবর্তন। শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, গোটা বিশ্বে ইসরায়েলের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। হামাসের পরাজয় হয়েছে। ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির এখনই সুযোগ।’ নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যেও গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার আভাস আছে। তবে ঠিক কবে এবং কী প্রক্রিয়ায় তা হবে এটা কারও কাছে স্পষ্ট নয়।

এদিকে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাপ সৃষ্টি করছে বলে ইসরায়েলি গণমাধ্যম দৈনিক হারেৎজ জানিয়েছে। ফাঁস হওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা শিগগির কায়রোতে হামাস-ইসরায়েল আলোচনা চান। এটি বাস্তবায়নে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ সৃষ্টিও করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, নেতানিয়াহু ও তার কৌশলগত বিষয়কমন্ত্রী রোনাল্ড ডার্মার আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। তাদের কর্থাবার্তায় দুই সপ্তাহের মধ্যে একটা যুদ্ধবিরতির বিষয়টি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে দ্য ইন্ডিডেনডেন্ট।

আমেরিকান জিউস কমিটি (এজেসি) মনে করে, নিঃশর্তভাবে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির পথ সঠিক নয়। পার্ল হারবারে বোমা হামলার পর অথবা নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর যেমন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়নি, তেমনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলার পর ইসরায়েলও শত্রুতা বন্ধে রাজি হবে না।

এজেসির বক্তব্য, হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের দীর্ঘ ইতিহাসও রয়েছে, যার সর্বশেষ উদাহরণ ৭ অক্টোবরের হামলা। তাছাড়া ইসরায়েলের মৃত্যু ও ধ্বংসের জন্য হামাস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুদ্ধবিরতি ব্যবহার করে হামাস নিজ সামরিক ক্ষমতা বাড়িয়ে পুনরায় হামলা করে থাকে। ইসরায়েলি শান্তি কর্মী গেরশন বাসকিনের মতে, চরম পরিস্থিতিতেও হামাস কখনও নিজেদের শর্ত থেকে পিছপা হয়নি। এখন তারা ইসরায়েলের শর্ত মেনে নেবে সেই সম্ভাবনা কম।

যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে স্বার্থ খুঁজছে ইসরায়েল- ফাঁস হওয়া তথ্যে আরও জানা গেছে, গাজায় শান্তি চুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের বড় স্বার্থ রয়েছে। এর বিনিময়ে দখলদার দেশটি সৌদি আরব ও আসাদ পরবর্তী নতুন সিরিয়াকে স্বাভাবিকীকরণ প্রকল্পে যুক্ত করতে চায়। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হলেই কেবল গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা চিন্তা করতে পারে তেল আবিব, অন্যথায় তারা হামলা চালিয়ে যাবে। এর আগে ২০২০ সালে আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। তাদের মধ্যে এখন কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক চলমান রয়েছে।

ইসরায়েলের আরেকটি শর্ত হলো, শান্তিচুক্তি হলে হামাস আর গাজা পরিচালনার দায়িত্বে থাকতে পারবে না। এর পরিবর্তে গাজা শাসন করবে একটি ভিন্ন কর্তৃপক্ষ, যারা ‘আরব জোট’ নাম ধারণ করে কাজ করবে। এর মাধ্যমে ইসরায়েল গাজার জনসংখ্যাকে স্থানান্তরিত করার গোপন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাইছে।

ওই তথ্য বলছে, শান্তিচুক্তির মাধ্যমে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিতে পারে। এর মাধ্যমে মূলত ইসরায়েল ভূখ- বৃদ্ধির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। পশ্চিম তীরে অবৈধ দখল অব্যাহত রেখেছে বসতিস্থাপনকারী ইহুদিরা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই দখলবাজিকে স্বীকৃতি দেয়নি। সার্বভৌত্ব দিয়ে দখল প্রক্রিয়াকে তারা বৈধ করতে চায়। তবে ইসরায়েলকে দুই রাষ্ট্রের ধারণা মেনে নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর সংঘাতে যেতে না হয়। তবে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক শর্ত মানবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যায়।

বেঁকে বসতে পারে হামাস: গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে হামাসও। তারা যুদ্ধরিবতির ব্যাপারে কথা তুললেও আগের দাবি থেকে সরবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। হামাস যদি গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের শর্ত থেকে না সরে, তাহলে এই শান্তিচুক্তি করা সম্ভব হবে না।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের দাবি থেকে সম্পূর্ণ সরে আসাও হামাসের জন্য কঠিন হবে।

আগে থেকেই হামাস দাবি করে আসছে, ইসরায়েলকে গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং চলতি বছরের মার্চ মাসে সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর গাজায় দখল চালিয়ে যাওয়ার বৈধতা আর নেই। সব সেনাকে প্রত্যাহার করতে হবে। আলজাজিরা জানায়, হামাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যারান্টিও চায়, যাতে আলোচনা অব্যাহত থাকতে পারে। তারা এই গ্যারান্টিও চায়, যাতে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে বিশ্বাসঘাতকতা করতে না পারে।

ছবি

তেলেঙ্গানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ: নিহত ৪৪, নিখোঁজ ১২ শ্রমিক

ছবি

আরও উত্তপ্ত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব নিল পাকিস্তান

ফোনালাপ ফাঁসের জেরে বরখাস্ত থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র

ভারতে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ৩৪

ছবি

সীমান্ত বিরোধ নিয়ে অডিও ফাঁস: থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত

ছবি

ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানের হামলা থেকে বাদ গেল না ক্যাফেও, গাজায় এক দিনে নিহত ৯৫

ছবি

ইসরায়েলকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ: বিনিয়োগ প্রত্যাহার করল নরওয়ের বৃহৎ পেনশন কোম্পানি কেএলপি

ছবি

‘শুকিয়ে যাচ্ছে কাস্পিয়ান সাগর, দেখা যায় খালি চোখেও’

ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্ত করার দাবিতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ

ইরান শান্তি চাইলে উঠে যেতে পারে নিষেধাজ্ঞা: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন হামলার চিন্তা বাদ দিতে হবে: ইরান

ছবি

হুমকি ও শান্তির বার্তা, গাজা নিয়ে দ্বৈত নীতি

পাকিস্তানের জন্য ৩৪০ কোটি ডলারের ঋণ নবায়ন করলো চীন

ছবি

আলোচনা চাইলে যুক্তরাষ্ট্রকে হামলার চিন্তা বাদ দিতে হবে: ইরান

ছবি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ৭২

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ফায়ার সার্ভিসের ২ কর্মী নিহত

ছবি

সার্বিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, উত্তাল বেলগ্রেড

‘রাজনৈতিক আত্মহত্যা’ : ফের ট্রাম্পের সমালোচনায় ইলন মাস্ক

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে অভিযোগ ইরানের

ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে পারে

নেতানিয়াহুর দুর্নীতির বিচার বন্ধ করতে চান ট্রাম্প

ছবি

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি চুক্তির উদ্যোগের পরও গাজায় থেমে নেই হত্যাযজ্ঞ

ছবি

পাকিস্তানে ভারি বৃষ্টি ও হঠাৎ বন্যায় দুই দিনে ৩২ জনের মৃত্যু

ছবি

পুরিতে রথযাত্রায় ভিড়ের চাপে পিষ্ট হয়ে নিহত ৩, আহত ১০

ছবি

নর্থ ওয়াজিরিস্তানে সামরিক বহরে আত্মঘাতী হামলা, শিশু আহত ছয়

কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করছেন ট্রাম্প

ছবি

ইউক্রেনের শহর দখল করতে ১ লাখের বেশি সেনা জড়ো করেছে রাশিয়া

ছবি

বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও ইরানের সমর্থন নিয়ে অনিশ্চয়তা, অস্তিত্ব-সংকটে হামাস

ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ ইরানি সাংবাদিক

ছবি

শোক-সমবেদনায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের স্মরণ করলেন ইরানিরা

আল-আকসা চত্বরে নাচ-গানের অনুমতি দিল ইসরায়েল

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী ভারতের সংসদ সদস্যরা

ছবি

নতুন এমআই-সিক্স প্রধানের দাদা ছিলেন হিটলারের ‘গুপ্তচর’

ছবি

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যচুক্তিতে সই, জানালেন ট্রাম্প

tab

আন্তর্জাতিক

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া কতদূর

হামাসকে ফুসরত দিতে চায় না ইসরায়েল

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা - এএফপি

মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবে বিশ্বের নজর এখন গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার দিকে। ইসরায়েল খাদ্য বিতরণের নামে মানুষ হত্যার যে অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া চালু করেছে, তাতে বিশ্বনেতারাসহ মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো অসন্তুষ্ট। একটা কথা এসেছে, গাজার বর্তমান অবস্থার যে দৃশ্যপট, তা কোনো সিনেমায়ও তৈরি করা সম্ভব না। মানুষ হত্যার সবগুলো কৌশল এখানে সক্রিয়। এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতির দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা সম্ভব। তার এই বক্তব্য বিশ্ববাসীকে আরও আশাবাদী করে তুলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, যুদ্ধবিরতি কত দূর। গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যে একটি ‘টেকটোনিক পরিবর্তন’ আনার ঘোষণা দেন। তিনি দাবি করেন, ইরান দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আরও আরব রাষ্ট্রকে স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির (ইসরায়েলকে স্বীকৃতি) আওতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি ঘোষণা দেন, ‘আমরা অক্ষ ভেঙে ফেলেছি। এটি একটি বিশাল পরিবর্তন। শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, গোটা বিশ্বে ইসরায়েলের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। হামাসের পরাজয় হয়েছে। ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির এখনই সুযোগ।’ নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যেও গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার আভাস আছে। তবে ঠিক কবে এবং কী প্রক্রিয়ায় তা হবে এটা কারও কাছে স্পষ্ট নয়।

এদিকে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাপ সৃষ্টি করছে বলে ইসরায়েলি গণমাধ্যম দৈনিক হারেৎজ জানিয়েছে। ফাঁস হওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা শিগগির কায়রোতে হামাস-ইসরায়েল আলোচনা চান। এটি বাস্তবায়নে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ সৃষ্টিও করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, নেতানিয়াহু ও তার কৌশলগত বিষয়কমন্ত্রী রোনাল্ড ডার্মার আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। তাদের কর্থাবার্তায় দুই সপ্তাহের মধ্যে একটা যুদ্ধবিরতির বিষয়টি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে দ্য ইন্ডিডেনডেন্ট।

আমেরিকান জিউস কমিটি (এজেসি) মনে করে, নিঃশর্তভাবে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির পথ সঠিক নয়। পার্ল হারবারে বোমা হামলার পর অথবা নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর যেমন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়নি, তেমনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলার পর ইসরায়েলও শত্রুতা বন্ধে রাজি হবে না।

এজেসির বক্তব্য, হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের দীর্ঘ ইতিহাসও রয়েছে, যার সর্বশেষ উদাহরণ ৭ অক্টোবরের হামলা। তাছাড়া ইসরায়েলের মৃত্যু ও ধ্বংসের জন্য হামাস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুদ্ধবিরতি ব্যবহার করে হামাস নিজ সামরিক ক্ষমতা বাড়িয়ে পুনরায় হামলা করে থাকে। ইসরায়েলি শান্তি কর্মী গেরশন বাসকিনের মতে, চরম পরিস্থিতিতেও হামাস কখনও নিজেদের শর্ত থেকে পিছপা হয়নি। এখন তারা ইসরায়েলের শর্ত মেনে নেবে সেই সম্ভাবনা কম।

যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে স্বার্থ খুঁজছে ইসরায়েল- ফাঁস হওয়া তথ্যে আরও জানা গেছে, গাজায় শান্তি চুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের বড় স্বার্থ রয়েছে। এর বিনিময়ে দখলদার দেশটি সৌদি আরব ও আসাদ পরবর্তী নতুন সিরিয়াকে স্বাভাবিকীকরণ প্রকল্পে যুক্ত করতে চায়। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হলেই কেবল গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা চিন্তা করতে পারে তেল আবিব, অন্যথায় তারা হামলা চালিয়ে যাবে। এর আগে ২০২০ সালে আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। তাদের মধ্যে এখন কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক চলমান রয়েছে।

ইসরায়েলের আরেকটি শর্ত হলো, শান্তিচুক্তি হলে হামাস আর গাজা পরিচালনার দায়িত্বে থাকতে পারবে না। এর পরিবর্তে গাজা শাসন করবে একটি ভিন্ন কর্তৃপক্ষ, যারা ‘আরব জোট’ নাম ধারণ করে কাজ করবে। এর মাধ্যমে ইসরায়েল গাজার জনসংখ্যাকে স্থানান্তরিত করার গোপন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাইছে।

ওই তথ্য বলছে, শান্তিচুক্তির মাধ্যমে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিতে পারে। এর মাধ্যমে মূলত ইসরায়েল ভূখ- বৃদ্ধির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। পশ্চিম তীরে অবৈধ দখল অব্যাহত রেখেছে বসতিস্থাপনকারী ইহুদিরা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই দখলবাজিকে স্বীকৃতি দেয়নি। সার্বভৌত্ব দিয়ে দখল প্রক্রিয়াকে তারা বৈধ করতে চায়। তবে ইসরায়েলকে দুই রাষ্ট্রের ধারণা মেনে নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর সংঘাতে যেতে না হয়। তবে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক শর্ত মানবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যায়।

বেঁকে বসতে পারে হামাস: গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে হামাসও। তারা যুদ্ধরিবতির ব্যাপারে কথা তুললেও আগের দাবি থেকে সরবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। হামাস যদি গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের শর্ত থেকে না সরে, তাহলে এই শান্তিচুক্তি করা সম্ভব হবে না।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের দাবি থেকে সম্পূর্ণ সরে আসাও হামাসের জন্য কঠিন হবে।

আগে থেকেই হামাস দাবি করে আসছে, ইসরায়েলকে গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং চলতি বছরের মার্চ মাসে সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর গাজায় দখল চালিয়ে যাওয়ার বৈধতা আর নেই। সব সেনাকে প্রত্যাহার করতে হবে। আলজাজিরা জানায়, হামাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যারান্টিও চায়, যাতে আলোচনা অব্যাহত থাকতে পারে। তারা এই গ্যারান্টিও চায়, যাতে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে বিশ্বাসঘাতকতা করতে না পারে।

back to top