যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত অন্তর্বর্তী বাণিজ্য চুক্তি করতে কাজ করছে। এই চুক্তির আওতায় ভারতের পণ্যে শুল্কের হার ২০ শতাংশের নিচে নামতে পারে। ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাবে ভারত।
আলোচনা এমন পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে ভারত আশা করছে, গত সপ্তাহে ট্রাম্প যেভাবে ২২টি দেশকে চিঠি পাঠিয়ে শুল্কহার জানিয়েছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে তা প্রকাশ করেছেন, ভারতের ক্ষেত্রে তা হবে না। ভারত আশা করছে, বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি জনসমক্ষে আসবে।
আলোচনাগুলো গোপনে চলছে। অন্তর্বর্তী চুক্তি হলে উভয় পক্ষ চলমান আলোচনা অব্যাহত রাখার সুযোগ পাবে এবং বড় চুক্তির আগে ভারত অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির সময় পাবে।
২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রথম যে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেন, তখন ভারতের শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৬ শতাংশ। অন্তর্বর্তী চুক্তিতে তা ২০ শতাংশের নিচে নামলে ভারতের কূটনীতিকদের সফলতা হিসেবেই তা বিবেচিত হবে।
চূড়ান্ত চুক্তির অংশ হিসেবে উভয় পক্ষের মধ্যে শুল্কহার নিয়ে আলোচনার পথ খোলা রাখার শর্তও থাকতে পারে। তবে অন্তর্বর্তী চুক্তি কবে ঘোষণা করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অন্তর্বর্তী চুক্তি হলে ভারত সেই হাতে গোনা কয়েকটি দেশের কাতারে থাকবে, যারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তি করতে পেরেছে। যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়নি, তাদের উদ্দেশে একের পর এক চিঠি দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। কিছু ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এসব শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। কানাডার ওপর শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ শতাংশ।
ভারতের চুক্তির শর্ত ভিয়েতনামের চেয়ে সুবিধাজনক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা কমাতে চেষ্টা করছে দেশটি। এর বাইরে কেবল যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছেন ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, বেশির ভাগ বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ১৫–২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারের সর্বনিম্ন শুল্কহার ১০ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প যেসব দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে লাওস ৪০ শতাংশ, মিয়ানমার ৪০ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৩৬ শতাংশ, থাইল্যান্ড ৩৬ শতাংশ, বাংলাদেশ ৩৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৩২ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও মালয়েশিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ।
চলতি বছরের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা করতে ভারত হোয়াইট হাউসের দ্বারস্থ হচ্ছে। চুক্তি চূড়ান্ত হতে দেরি হচ্ছে। সম্প্রতি সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হলেও ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। তবে তিনি ব্রিকস জোটে অংশ নেওয়ার কারণে ভারতের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকিও দিয়েছেন। আলোচনা এগিয়ে নিতে ভারতীয় প্রতিনিধিদল শিগগিরই ওয়াশিংটন সফর করতে পারে।
উভয় পক্ষই কিছু বিষয়ে অনড় অবস্থান নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ভারত যেন জিনগতভাবে পরিবর্তিত (জিএম) ফসলের বাজার উন্মুক্ত করে। কিন্তু ভারত কৃষকের স্বার্থের কথা বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। কৃষি খাতে অশুল্ক বাধা ও ওষুধশিল্পে নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত বিষয়েও সমাধান হয়নি।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের বাণিজ্য এখনো সীমিত, মাত্র ৮০০ কোটি ডলার। ভারত চাল, চিংড়ি ও মসলা রপ্তানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাদাম, আপেল ও ডাল আসে। ট্রাম্প প্রশাসন চায়, ভারত বিপুল পরিমাণে যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা, সয়াবিন ও তুলা কিনুক, যাতে ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য–ঘাটতি কিছুটা কমানো যায়।
দুই দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৫০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করতে চায়। বর্তমানে এই বাণিজ্য মাত্র ১৯ হাজার ১০০ কোটি ডলার।
রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত অন্তর্বর্তী বাণিজ্য চুক্তি করতে কাজ করছে। এই চুক্তির আওতায় ভারতের পণ্যে শুল্কের হার ২০ শতাংশের নিচে নামতে পারে। ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাবে ভারত।
আলোচনা এমন পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে ভারত আশা করছে, গত সপ্তাহে ট্রাম্প যেভাবে ২২টি দেশকে চিঠি পাঠিয়ে শুল্কহার জানিয়েছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে তা প্রকাশ করেছেন, ভারতের ক্ষেত্রে তা হবে না। ভারত আশা করছে, বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি জনসমক্ষে আসবে।
আলোচনাগুলো গোপনে চলছে। অন্তর্বর্তী চুক্তি হলে উভয় পক্ষ চলমান আলোচনা অব্যাহত রাখার সুযোগ পাবে এবং বড় চুক্তির আগে ভারত অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির সময় পাবে।
২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রথম যে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেন, তখন ভারতের শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৬ শতাংশ। অন্তর্বর্তী চুক্তিতে তা ২০ শতাংশের নিচে নামলে ভারতের কূটনীতিকদের সফলতা হিসেবেই তা বিবেচিত হবে।
চূড়ান্ত চুক্তির অংশ হিসেবে উভয় পক্ষের মধ্যে শুল্কহার নিয়ে আলোচনার পথ খোলা রাখার শর্তও থাকতে পারে। তবে অন্তর্বর্তী চুক্তি কবে ঘোষণা করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অন্তর্বর্তী চুক্তি হলে ভারত সেই হাতে গোনা কয়েকটি দেশের কাতারে থাকবে, যারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তি করতে পেরেছে। যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়নি, তাদের উদ্দেশে একের পর এক চিঠি দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। কিছু ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এসব শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। কানাডার ওপর শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ শতাংশ।
ভারতের চুক্তির শর্ত ভিয়েতনামের চেয়ে সুবিধাজনক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা কমাতে চেষ্টা করছে দেশটি। এর বাইরে কেবল যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছেন ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, বেশির ভাগ বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ১৫–২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারের সর্বনিম্ন শুল্কহার ১০ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প যেসব দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে লাওস ৪০ শতাংশ, মিয়ানমার ৪০ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৩৬ শতাংশ, থাইল্যান্ড ৩৬ শতাংশ, বাংলাদেশ ৩৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৩২ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও মালয়েশিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ।
চলতি বছরের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা করতে ভারত হোয়াইট হাউসের দ্বারস্থ হচ্ছে। চুক্তি চূড়ান্ত হতে দেরি হচ্ছে। সম্প্রতি সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হলেও ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। তবে তিনি ব্রিকস জোটে অংশ নেওয়ার কারণে ভারতের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকিও দিয়েছেন। আলোচনা এগিয়ে নিতে ভারতীয় প্রতিনিধিদল শিগগিরই ওয়াশিংটন সফর করতে পারে।
উভয় পক্ষই কিছু বিষয়ে অনড় অবস্থান নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ভারত যেন জিনগতভাবে পরিবর্তিত (জিএম) ফসলের বাজার উন্মুক্ত করে। কিন্তু ভারত কৃষকের স্বার্থের কথা বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। কৃষি খাতে অশুল্ক বাধা ও ওষুধশিল্পে নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত বিষয়েও সমাধান হয়নি।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের বাণিজ্য এখনো সীমিত, মাত্র ৮০০ কোটি ডলার। ভারত চাল, চিংড়ি ও মসলা রপ্তানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাদাম, আপেল ও ডাল আসে। ট্রাম্প প্রশাসন চায়, ভারত বিপুল পরিমাণে যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা, সয়াবিন ও তুলা কিনুক, যাতে ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য–ঘাটতি কিছুটা কমানো যায়।
দুই দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৫০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করতে চায়। বর্তমানে এই বাণিজ্য মাত্র ১৯ হাজার ১০০ কোটি ডলার।