ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের প্রতিবাদে আগামী সপ্তাহে কলম্বিয়ায় একটি জরুরি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে স্পেন, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, তুরস্ক, চীন, কাতারসহ ২০টির বেশি দেশ অংশ নেবে। সময় বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সম্মেলনে বাংলাদেশেরও প্রতিনিধি পাঠানোর কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন, সম্মেলন থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ’ ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় ১৫–১৬ জুলাই এ সম্মেলন হবে। দ্য হেগ গ্রুপের যৌথ সভাপতি হিসেবে কলম্বিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা সম্মিলিতভাবে এটি আয়োজন করছে। ইসরায়েল ও তার মিত্রদের পৃষ্ঠপোষকতায় চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধের দায়মুক্তির সংস্কৃতি রোধে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এ বছরের শুরুতে দ্য হেগ গ্রুপ গঠন করা হয়।
চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে গ্রুপটি গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেশগুলো হলো বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, হন্ডুরাস, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, সেনেগাল ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এ গ্রুপের ঘোষিত লক্ষ্য, ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় জবাবদিহি করতে বাধ্য করা।
দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী রোলান্ড লামোলা বলেন, জানুয়ারিতে দ্য হেগ গ্রুপ গঠিত হওয়া ছিল একটি মোড় ঘোরানো ঘটনা। এটি বিশেষ সুবিধাভোগের সংস্কৃতি ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অবমাননার বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিক্রিয়া। বোগোটার এ সম্মেলনও একই মনোভাব থেকে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এমন কিছু সুনির্দিষ্ট আইনি, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণে কাজ করব, যার মাধ্যমে ইসরায়েলের হাতে ফিলিস্তিনিদের ধ্বংসযজ্ঞ দ্রুত থামানো যাবে।’
গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের তাণ্ডবে এ পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলায় প্রায় পুরো গাজা উপত্যকার জনসংখ্যা, অর্থাৎ প্রায় ২১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সেই সঙ্গে তীব্র খাদ্য, জ্বালানি ও চিকিৎসাসামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে।
কলম্বিয়ার বহুপক্ষীয় সম্পর্ক বিষয়ক উপমন্ত্রী মাওরিসিও জারামিলো জাসির বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সামগ্রিক বহুপক্ষীয় ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বোগোটায় উপস্থিত দেশগুলো গণহত্যার বিরুদ্ধে শুধু প্রতিরোধের অঙ্গীকারই পুনর্ব্যক্ত করবে না, বরং যৌথ কর্মপরিকল্পনার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ নেবে।
সম্মেলনে অংশ নিতে সম্মত দেশগুলোর মধ্যে আছে আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চিলি, চীন, কিউবা, জিবুতি, হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, লেবানন, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, নিকারাগুয়া, ওমান, পর্তুগাল, স্পেন, কাতার, তুরস্ক, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডিনস, উরুগুয়ে ও ফিলিস্তিন।
সম্মেলনে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের একাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। তাঁদের মধ্যে থাকবেন ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রানচেসকা আলবানিজ, ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি, স্বাস্থ্য অধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ত্লালেং মোফোকেং, নারীর প্রতি বৈষম্যবিরোধী ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ার লরা নিয়িরিনকিন্ডি এবং ভাড়াটে সেনা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেস ম্যাসিয়াস তোলোসা।
দ্য হেগ গ্রুপ ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা গাজায় গণহত্যা সনদের লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পরে বলিভিয়া, কলম্বিয়া, নামিবিয়াসহ কয়েকটি দেশ ওই মামলায় যোগ দেয়। নামিবিয়া ও মালয়েশিয়া নিজেদের বন্দরে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্রবাহী জাহাজ ভিড়তে দেয়নি। কলম্বিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
দ্য হেগ গ্রুপের সমন্বয়ক ভার্শা গান্দিকোটা-নেলুটলা বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত মানতে রাষ্ট্রগুলোর ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়ায় এ গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষপাতদুষ্ট আচরণেরও সমালোচনা করেন।
ইসরায়েল এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের নির্দেশ অমান্য করছে। বোগোটায় অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে দেশগুলোর যৌথ কর্মপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনার চেষ্টা আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের প্রতিবাদে আগামী সপ্তাহে কলম্বিয়ায় একটি জরুরি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে স্পেন, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, তুরস্ক, চীন, কাতারসহ ২০টির বেশি দেশ অংশ নেবে। সময় বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সম্মেলনে বাংলাদেশেরও প্রতিনিধি পাঠানোর কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন, সম্মেলন থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ’ ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় ১৫–১৬ জুলাই এ সম্মেলন হবে। দ্য হেগ গ্রুপের যৌথ সভাপতি হিসেবে কলম্বিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা সম্মিলিতভাবে এটি আয়োজন করছে। ইসরায়েল ও তার মিত্রদের পৃষ্ঠপোষকতায় চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধের দায়মুক্তির সংস্কৃতি রোধে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এ বছরের শুরুতে দ্য হেগ গ্রুপ গঠন করা হয়।
চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে গ্রুপটি গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেশগুলো হলো বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, হন্ডুরাস, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, সেনেগাল ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এ গ্রুপের ঘোষিত লক্ষ্য, ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় জবাবদিহি করতে বাধ্য করা।
দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী রোলান্ড লামোলা বলেন, জানুয়ারিতে দ্য হেগ গ্রুপ গঠিত হওয়া ছিল একটি মোড় ঘোরানো ঘটনা। এটি বিশেষ সুবিধাভোগের সংস্কৃতি ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অবমাননার বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিক্রিয়া। বোগোটার এ সম্মেলনও একই মনোভাব থেকে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এমন কিছু সুনির্দিষ্ট আইনি, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণে কাজ করব, যার মাধ্যমে ইসরায়েলের হাতে ফিলিস্তিনিদের ধ্বংসযজ্ঞ দ্রুত থামানো যাবে।’
গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের তাণ্ডবে এ পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলায় প্রায় পুরো গাজা উপত্যকার জনসংখ্যা, অর্থাৎ প্রায় ২১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সেই সঙ্গে তীব্র খাদ্য, জ্বালানি ও চিকিৎসাসামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে।
কলম্বিয়ার বহুপক্ষীয় সম্পর্ক বিষয়ক উপমন্ত্রী মাওরিসিও জারামিলো জাসির বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সামগ্রিক বহুপক্ষীয় ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বোগোটায় উপস্থিত দেশগুলো গণহত্যার বিরুদ্ধে শুধু প্রতিরোধের অঙ্গীকারই পুনর্ব্যক্ত করবে না, বরং যৌথ কর্মপরিকল্পনার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ নেবে।
সম্মেলনে অংশ নিতে সম্মত দেশগুলোর মধ্যে আছে আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চিলি, চীন, কিউবা, জিবুতি, হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, লেবানন, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, নিকারাগুয়া, ওমান, পর্তুগাল, স্পেন, কাতার, তুরস্ক, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডিনস, উরুগুয়ে ও ফিলিস্তিন।
সম্মেলনে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের একাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। তাঁদের মধ্যে থাকবেন ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রানচেসকা আলবানিজ, ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি, স্বাস্থ্য অধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ত্লালেং মোফোকেং, নারীর প্রতি বৈষম্যবিরোধী ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ার লরা নিয়িরিনকিন্ডি এবং ভাড়াটে সেনা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেস ম্যাসিয়াস তোলোসা।
দ্য হেগ গ্রুপ ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা গাজায় গণহত্যা সনদের লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পরে বলিভিয়া, কলম্বিয়া, নামিবিয়াসহ কয়েকটি দেশ ওই মামলায় যোগ দেয়। নামিবিয়া ও মালয়েশিয়া নিজেদের বন্দরে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্রবাহী জাহাজ ভিড়তে দেয়নি। কলম্বিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
দ্য হেগ গ্রুপের সমন্বয়ক ভার্শা গান্দিকোটা-নেলুটলা বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত মানতে রাষ্ট্রগুলোর ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়ায় এ গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষপাতদুষ্ট আচরণেরও সমালোচনা করেন।
ইসরায়েল এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের নির্দেশ অমান্য করছে। বোগোটায় অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে দেশগুলোর যৌথ কর্মপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনার চেষ্টা আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।