alt

আন্তর্জাতিক

ইউরোপের অস্ত্রে গাজায় শিশু হত্যা

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

তীব্র ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে পাঁচ বছর বয়সী হানিন আল-ওয়াদি -দ্য গার্ডিয়ান

ইউরোপের বৃহত্তম বহুজাতিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানি এমবিডিএ ইসরায়েলের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির হাজার হাজার সংখ্যক মূল উপাদান বিক্রি করছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি বোমার মাধ্যমে ইসরায়েল গাজায় একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে ফিলিস্তিনের শিশু ও বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। এমবিডিএ নামক কোম্পানিটির শাখা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে। এ ছাড়া বোয়িংয়ের মতো ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানির সঙ্গেও তাদের যোগসাজশ রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, গাজার ধ্বংসযজ্ঞ থেকে হয়তো ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো মুনাফা অর্জন করছে। ইউরোপের কোম্পানি হলেও এমবিডিএর একটি কারখানা আছে যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায়। সেখানে বোয়িংয়ের বোমা জিবিইউ-৩৯-এর জন্য ডানা তৈরি করা হয়। এ ডানাই ক্ষেপণাস্ত্রকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে সহায়তা করে।

যুক্তরাষ্ট্রে যে আয় হয়, সেটি ইংল্যান্ডের হার্টফোর্ডশায়ারে অবস্থিত এমবিডিএর আরেকটি শাখায় পৌঁছায়। সেখান থেকে ফ্রান্সে এমবিডিএর মূল প্রতিষ্ঠানে মুনাফা আসে। প্রতিষ্ঠানটির তিন শেয়ারহোল্ডার হলো– ব্রিটেনের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা সংস্থা বিএনই সিস্টেমস, ফ্রান্সের এয়ারবাস ও ইতালির লিওনার্দো। গত বছর এ তিন শেয়ারহোল্ডার এমবিডিএর কাছ থেকে ৪৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার লভ্যাংশ ভাগ করে নিয়েছে।

গাজায় গণহত্যার মধ্যে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে কয়েকটি দেশের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছিল। এ অবস্থায় গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ‘গুরুতর লঙ্ঘনের’ ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলে কিছু অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন স্থগিত করেন। তখন ল্যামি বলেছিলেন, গাজায় এসব অস্ত্র ব্যবহার হতে পারে– এমন ঝুঁকির কথা চিন্তা করে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

বিভিন্ন উন্মুক্ত সূত্র, অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের অনুসন্ধান ও অন্তত ২৪টি ঘটনা যাচাই করে ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি জানতে পেরেছে, জিবিইউ-৩৯ বোমা গাজায় বেসামরিক লোকজন হত্যার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।

প্রতিটি হামলায় হতাহতের মধ্যে শিশুও ছিল। অনেক হামলা হয়েছে রাতে, কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই। স্কুল ভবন ও তাঁবুতে হামলা হয়েছে, যেখানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এসব হামলা যাচাই করে ‘সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ’ বলে বর্ণনা করেছে। অস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির কথা নিশ্চিত করেছে খোদ এমবিডিএ। তাদের দাবি, ‘যেসব দেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়, সেখানে অস্ত্র ব্যবসার জন্য প্রযোজ্য সব প্রাসঙ্গিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন মেনেই তা করা হয়।’

হানিনের করুণ গল্প: গত ২৬ মে রাত ২টার দিকে গাজার ঐতিহাসিক কোয়ার্টার ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলের ছাদে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। তখন সেখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েক ডজন পরিবার ঘুমিয়ে ছিল। স্থানীয় জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, ওই রাতে ভবনটি আগুনে পুড়ে গেলে অন্তত ৩৬ জন নিহত হন, যার অর্ধেকই শিশু। এক প্রত্যক্ষদর্শীর রেকর্ড করা ভিডিওতে দেখা যায়, আগুনের সামনে একটি ছোট্ট মেয়ে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে খুঁজতে সামনের দিকে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। শিশুটি ছিল পাঁচ বছরের হানিন আল-ওয়াদি। কঠিন ওই পরিস্থিতিতে সে তখন বেঁচে গিয়েছিল। তাকে কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে; গভীর মানসিক আঘাতে ভুগছিল সে। তার বাবা-মা ও ভাইবোন হামলায় নিহত হয়েছিল। ওই হামলায় জিবিইউ-৩৯ বোমা ব্যবহার করা হয়েছে।

ছোট্ট হানিন পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে, যা স্মরণ করেন তার চাচা আহমেদ আল-ওয়াদি। তিনি বলেন, ‘ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শব্দ শুনে হানিন চিৎকার করে ওঠে। সে চারপাশে আগুন দেখতে পায়। যখন সে হাঁটা শুরু করে, সে ভয় পাচ্ছিল– ফ্লোরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মরদেহগুলোতে যেন তার পা পড়ে না যায়। কল্পনা করে দেখুন, এত ছোট্ট শিশু এ ধরনের পরিস্থিতিতে আগুনের মধ্যে তার বাবা-মাকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখছে!’

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে স্কুলসহ বেসামরিক স্থাপনায় হামলা না করার বিধান রয়েছে। কিন্তু গাজায় আগ্রাসন চালানোর ক্ষেত্রে ইসরায়েল এসবের কিছুই মানেনি। উপত্যকার স্কুল, হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র– সব স্থানেই ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, এতে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৬০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৭ জন। গত ২৭ মের পর থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেছে ৪৫১ জনের।

আফগানদের তথ্যের সঙ্গে বেহাত হয়েছে ব্রিটিশ গুপ্তচরদের তথ্যও

ছবি

দিল্লির ২০টির বেশি স্কুলে বোমা হামলার হুমকি, আতঙ্কে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

দক্ষিণ সিরিয়ায় সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহত প্রায় ৬০০

ছবি

পরিকল্পিতভাবে গাজার সব ভবন ধ্বংস করে দিচ্ছে ইসরায়েল

তৃণমূলের দুঃশাসনে ভুগছে পশ্চিমবঙ্গ : মোদি

কাশ্মীরে হামলা: লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা টিআরএফকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

অতিরিক্ত হ্যান্ডশেক থেকে ট্রাম্পের হাতে দাগ, জানাল হোয়াইট হাউজ

ছবি

দক্ষিণ সিরিয়ায় সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহত প্রায় ৬০০: এসওএইচআর

ছবি

জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করাই এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার কারণ: তদন্ত

নতুন হামলার জবাব দিতে প্রস্তুত ইরান, খামেনির হুঁশিয়ারি

ছবি

ইউক্রেনে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহে নজর রাখছে রাশিয়া

গাজায় ত্রাণ আনতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে নিহত ২১

ছবি

ইউরোপে রেকর্ডভাঙা তাপপ্রবাহ কেন

২৭ হাজার ক্ষুধার্ত শিশুর পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য ধ্বংস করছে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

দ্রুজ কারা, তাদের রক্ষায় কেন সিরিয়ায় বোমা ফেলছে ইসরায়েল

ছবি

ইরাকে বিপণিবিতানে অগ্নিকাণ্ড, নিহত অন্তত ৬০

সংঘাতে থমথমে সিরিয়া, নিহত বেড়ে ২০৩

ছবি

ভারত-মিয়ানমার বাণিজ্য করিডরের প্রস্তাব রাশিয়ার, লক্ষ্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া

নতুন রাজনৈতিক দল খুললেন ইমরানের প্রাক্তন স্ত্রী

ছবি

ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের পর হাজারো আফগানকে সরিয়ে নেয় যুক্তরাজ্য

হঠাৎ ট্রাম্পের ফোন, ঘুম থেকে তুলে সাংবাদিককে দিলেন সাক্ষাৎকার

ছবি

তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনায় নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানাল জাপান

লেবানন-সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলা

ছবি

ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের হুমকিতে চাপ নয়, বরং স্বস্তিতে রাশিয়া

মে মাসে ইরানের তেল রপ্তানিতে সর্বকালের রেকর্ড

ছবি

জোটে ভাঙন, অস্তিত্ব সংকটে নেতানিয়াহুর সরকার

ইসরায়েলিদের ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে গাজায় বাড়িঘর ধ্বংস করছে সেনারা

ছবি

বেপরোয়া হুতি, ২০ মাসে ৭০ জাহাজে হামলা

ছবি

দালাই লামার উত্তরাধিকারের ওপর বেইজিংয়ের অধিকার দাবি, নয়াদিল্লিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে : ম্যাখোঁ

ছবি

দুই হাজার বছর আগে ডুবে যাওয়া শহরের খোঁজ

কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করল ভারত

ছবি

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে কী কারণে স্বীকৃতি দিল রাশিয়া

সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ, নিহত ৩০

ছবি

গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা চলছেই, নিহত ৫৮ হাজার ছাড়াল

ছবি

সিরিয়ায় বেদুইন সুন্নি-দ্রুজ সংঘর্ষে নিহত অন্তত ৩০

tab

আন্তর্জাতিক

ইউরোপের অস্ত্রে গাজায় শিশু হত্যা

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

তীব্র ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে পাঁচ বছর বয়সী হানিন আল-ওয়াদি -দ্য গার্ডিয়ান

শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

ইউরোপের বৃহত্তম বহুজাতিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানি এমবিডিএ ইসরায়েলের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির হাজার হাজার সংখ্যক মূল উপাদান বিক্রি করছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি বোমার মাধ্যমে ইসরায়েল গাজায় একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে ফিলিস্তিনের শিশু ও বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। এমবিডিএ নামক কোম্পানিটির শাখা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে। এ ছাড়া বোয়িংয়ের মতো ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানির সঙ্গেও তাদের যোগসাজশ রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, গাজার ধ্বংসযজ্ঞ থেকে হয়তো ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো মুনাফা অর্জন করছে। ইউরোপের কোম্পানি হলেও এমবিডিএর একটি কারখানা আছে যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায়। সেখানে বোয়িংয়ের বোমা জিবিইউ-৩৯-এর জন্য ডানা তৈরি করা হয়। এ ডানাই ক্ষেপণাস্ত্রকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে সহায়তা করে।

যুক্তরাষ্ট্রে যে আয় হয়, সেটি ইংল্যান্ডের হার্টফোর্ডশায়ারে অবস্থিত এমবিডিএর আরেকটি শাখায় পৌঁছায়। সেখান থেকে ফ্রান্সে এমবিডিএর মূল প্রতিষ্ঠানে মুনাফা আসে। প্রতিষ্ঠানটির তিন শেয়ারহোল্ডার হলো– ব্রিটেনের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা সংস্থা বিএনই সিস্টেমস, ফ্রান্সের এয়ারবাস ও ইতালির লিওনার্দো। গত বছর এ তিন শেয়ারহোল্ডার এমবিডিএর কাছ থেকে ৪৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার লভ্যাংশ ভাগ করে নিয়েছে।

গাজায় গণহত্যার মধ্যে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে কয়েকটি দেশের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছিল। এ অবস্থায় গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ‘গুরুতর লঙ্ঘনের’ ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলে কিছু অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন স্থগিত করেন। তখন ল্যামি বলেছিলেন, গাজায় এসব অস্ত্র ব্যবহার হতে পারে– এমন ঝুঁকির কথা চিন্তা করে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

বিভিন্ন উন্মুক্ত সূত্র, অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের অনুসন্ধান ও অন্তত ২৪টি ঘটনা যাচাই করে ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি জানতে পেরেছে, জিবিইউ-৩৯ বোমা গাজায় বেসামরিক লোকজন হত্যার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।

প্রতিটি হামলায় হতাহতের মধ্যে শিশুও ছিল। অনেক হামলা হয়েছে রাতে, কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই। স্কুল ভবন ও তাঁবুতে হামলা হয়েছে, যেখানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এসব হামলা যাচাই করে ‘সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ’ বলে বর্ণনা করেছে। অস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির কথা নিশ্চিত করেছে খোদ এমবিডিএ। তাদের দাবি, ‘যেসব দেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়, সেখানে অস্ত্র ব্যবসার জন্য প্রযোজ্য সব প্রাসঙ্গিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন মেনেই তা করা হয়।’

হানিনের করুণ গল্প: গত ২৬ মে রাত ২টার দিকে গাজার ঐতিহাসিক কোয়ার্টার ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলের ছাদে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। তখন সেখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েক ডজন পরিবার ঘুমিয়ে ছিল। স্থানীয় জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, ওই রাতে ভবনটি আগুনে পুড়ে গেলে অন্তত ৩৬ জন নিহত হন, যার অর্ধেকই শিশু। এক প্রত্যক্ষদর্শীর রেকর্ড করা ভিডিওতে দেখা যায়, আগুনের সামনে একটি ছোট্ট মেয়ে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে খুঁজতে সামনের দিকে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। শিশুটি ছিল পাঁচ বছরের হানিন আল-ওয়াদি। কঠিন ওই পরিস্থিতিতে সে তখন বেঁচে গিয়েছিল। তাকে কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে; গভীর মানসিক আঘাতে ভুগছিল সে। তার বাবা-মা ও ভাইবোন হামলায় নিহত হয়েছিল। ওই হামলায় জিবিইউ-৩৯ বোমা ব্যবহার করা হয়েছে।

ছোট্ট হানিন পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে, যা স্মরণ করেন তার চাচা আহমেদ আল-ওয়াদি। তিনি বলেন, ‘ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শব্দ শুনে হানিন চিৎকার করে ওঠে। সে চারপাশে আগুন দেখতে পায়। যখন সে হাঁটা শুরু করে, সে ভয় পাচ্ছিল– ফ্লোরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মরদেহগুলোতে যেন তার পা পড়ে না যায়। কল্পনা করে দেখুন, এত ছোট্ট শিশু এ ধরনের পরিস্থিতিতে আগুনের মধ্যে তার বাবা-মাকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখছে!’

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে স্কুলসহ বেসামরিক স্থাপনায় হামলা না করার বিধান রয়েছে। কিন্তু গাজায় আগ্রাসন চালানোর ক্ষেত্রে ইসরায়েল এসবের কিছুই মানেনি। উপত্যকার স্কুল, হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র– সব স্থানেই ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, এতে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৬০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৭ জন। গত ২৭ মের পর থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেছে ৪৫১ জনের।

back to top