ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হাজার হাজার বেসামরিক ভবন পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে স্যাটেলাইট চিত্র, যাচাই করা ভিডিও ফুটেজ ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে। মার্চ মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহারের পর থেকে এই ধ্বংসযজ্ঞ চলছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সম্প্রতি প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, গাজার বহু শহর ও উপশহরের অধিকাংশই এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এসব এলাকায় একসময় হাজার হাজার মানুষের বসবাস ছিল। ইসরায়েল দাবি করছে, এই এলাকাগুলো বর্তমানে তাদের ‘অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে।
বিবিসির যাচাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভবন ধসে পড়ছে, বাতাসে উড়ছে ধুলো ও ধ্বংসাবশেষ। শুধু যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে, তা নয় বরং অক্ষত ভবনগুলোকেও ইচ্ছা করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই তালিকায় রয়েছে গাজার স্কুল, হাসপাতাল, টাওয়ার ব্লক, এমনকি শিশুদের জন্য পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রও।
রাফাহ শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত টেল আল-সুলতান এলাকায় অবস্থিত একমাত্র মাতৃসদন হাসপাতাল ও অনাথ শিশুদের যত্নকেন্দ্রসহ প্রায় সব অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, এই এলাকার অধিকাংশ ভবন আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি নাগাদ পুরো এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কেবল একটি হাসপাতাল এখনো টিকে আছে।
এছাড়া রাফাহ’র সৌদিপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলি বুলডোজার ও ট্যাংকের উপস্থিতি দেখা গেছে। ভিডিওতে ধরা পড়েছে, রাস্তার পাশে খননযন্ত্র দিয়ে ভবন গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। টেল আল-সুলতান এলাকার বাসিন্দা মুয়াতাজ ইউসুফ আহমেদ আল-আবসি বলেন, যুদ্ধ শুরুর মাত্র এক বছর আগে আমি আমার নতুন ঘরে উঠেছিলাম। ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। এখন আমার সেই ঘর নেই, কোনো আশ্রয়ও নেই।
কৃষি শহরও রেহাই পায়নি: গাজা সীমান্ত থেকে মাত্র ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কৃষিনির্ভর শহর খুজা’আতেও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। টমেটো, গম ও জলপাই চাষের জন্য বিখ্যাত এই শহরের ১২০০টিরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ধ্বংস করা ভবনগুলো ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’র অংশ। পাশের শহর আবাসান আল-কবিরা, যেখানে যুদ্ধের আগে প্রায় ২৭ হাজার মানুষের বাস ছিল, সেখানেও মে ও জুলাইয়ের মধ্যে মাত্র ৩৮ দিনে একটি বিশাল এলাকা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।
‘নিরাপত্তা করিডোর’ ও ‘বাফার জোন’ তৈরির অভিযোগ: ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন অংশকে বিভক্ত করে নিরাপত্তা করিডোর তৈরি করছে, আর এসব করিডোর বরাবর ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে আলাদা করতে এক বিশাল করিডোর নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া কিজান আবু রাশওয়ান নামক একটি গ্রামে, যা ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে- ১৭ মে’র পর থেকে প্রায় সব ভবন ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, একত্রে থাকা বেশ কয়েকটি টাওয়ার ব্লক একযোগে বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হাজার হাজার বেসামরিক ভবন পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে স্যাটেলাইট চিত্র, যাচাই করা ভিডিও ফুটেজ ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে। মার্চ মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহারের পর থেকে এই ধ্বংসযজ্ঞ চলছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সম্প্রতি প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, গাজার বহু শহর ও উপশহরের অধিকাংশই এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এসব এলাকায় একসময় হাজার হাজার মানুষের বসবাস ছিল। ইসরায়েল দাবি করছে, এই এলাকাগুলো বর্তমানে তাদের ‘অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে।
বিবিসির যাচাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভবন ধসে পড়ছে, বাতাসে উড়ছে ধুলো ও ধ্বংসাবশেষ। শুধু যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে, তা নয় বরং অক্ষত ভবনগুলোকেও ইচ্ছা করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই তালিকায় রয়েছে গাজার স্কুল, হাসপাতাল, টাওয়ার ব্লক, এমনকি শিশুদের জন্য পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রও।
রাফাহ শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত টেল আল-সুলতান এলাকায় অবস্থিত একমাত্র মাতৃসদন হাসপাতাল ও অনাথ শিশুদের যত্নকেন্দ্রসহ প্রায় সব অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, এই এলাকার অধিকাংশ ভবন আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি নাগাদ পুরো এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কেবল একটি হাসপাতাল এখনো টিকে আছে।
এছাড়া রাফাহ’র সৌদিপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলি বুলডোজার ও ট্যাংকের উপস্থিতি দেখা গেছে। ভিডিওতে ধরা পড়েছে, রাস্তার পাশে খননযন্ত্র দিয়ে ভবন গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। টেল আল-সুলতান এলাকার বাসিন্দা মুয়াতাজ ইউসুফ আহমেদ আল-আবসি বলেন, যুদ্ধ শুরুর মাত্র এক বছর আগে আমি আমার নতুন ঘরে উঠেছিলাম। ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। এখন আমার সেই ঘর নেই, কোনো আশ্রয়ও নেই।
কৃষি শহরও রেহাই পায়নি: গাজা সীমান্ত থেকে মাত্র ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কৃষিনির্ভর শহর খুজা’আতেও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। টমেটো, গম ও জলপাই চাষের জন্য বিখ্যাত এই শহরের ১২০০টিরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ধ্বংস করা ভবনগুলো ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’র অংশ। পাশের শহর আবাসান আল-কবিরা, যেখানে যুদ্ধের আগে প্রায় ২৭ হাজার মানুষের বাস ছিল, সেখানেও মে ও জুলাইয়ের মধ্যে মাত্র ৩৮ দিনে একটি বিশাল এলাকা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।
‘নিরাপত্তা করিডোর’ ও ‘বাফার জোন’ তৈরির অভিযোগ: ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন অংশকে বিভক্ত করে নিরাপত্তা করিডোর তৈরি করছে, আর এসব করিডোর বরাবর ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে আলাদা করতে এক বিশাল করিডোর নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া কিজান আবু রাশওয়ান নামক একটি গ্রামে, যা ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে- ১৭ মে’র পর থেকে প্রায় সব ভবন ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, একত্রে থাকা বেশ কয়েকটি টাওয়ার ব্লক একযোগে বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।