থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার সীমান্ত সংঘর্ষ হঠাৎ করে নয়, বরং দীর্ঘদিনের উত্তেজনার ফল। সম্প্রতি সংঘর্ষ ও কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির পেছনে রয়েছে একাধিক ঘটনার ধারাবাহিকতা।দুই দেশ ৫০৮ মাইল (৮১৭ কিলোমিটার) দীর্ঘ একটি স্থলসীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে, যা মূলত ১৯ শতকে ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের সময়ে চিহ্নিত করা হয়েছিল। যখন ফ্রান্স কম্বোডিয়াকে উপনিবেশ হিসেবে শাসন করছিল।
এই সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত সামরিক সংঘর্ষ হয়েছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম্বোডিয়া অতীতে সীমান্তসংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) কাছে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে সর্বশেষ সংঘর্ষস্থলও। তবে থাইল্যান্ড এই আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার স্বীকার করে না। তারা দাবি করেছে, সীমান্তের বহু অংশ, বিশেষ করে কয়েকটি প্রাচীন মন্দির সংলগ্ন এলাকা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত হয়নি।
২০১১ সালে এমনই এক বিরোধপূর্ণ এলাকায় ১১ শতকের প্রাচীন প্রেয়া বিহার মন্দির ঘিরে থাই ও কম্বোডিয়ান বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঐতিহাসিক মন্দিরটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় এবং অন্তত ২০ জন প্রাণ হারায়। এই দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ এবং আইনি অস্পষ্টতা দুই দেশের মধ্যে বারবার উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা বর্তমানে নতুন করে সংঘর্ষ ও কূটনৈতিক সংকটে রূপ নিচ্ছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মে মাসে উত্তেজনা চরমে ওঠে, যখন এমেরাল্ড ট্রায়াঙ্গেল সীমান্ত এলাকায় (যেখানে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও লাওসের সীমান্ত মিলেছে) এক সংক্ষিপ্ত সংঘর্ষে একজন কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হয়। উভয় পক্ষই ওই ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করে এবং নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য কাজ করেছে বলে দাবি করে। সংঘর্ষ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও, দুই দেশই এর পর থেকে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পথে হাঁটে এবং সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে।
থাইল্যান্ড এরপর সীমান্ত চেকপয়েন্টগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। সীমান্ত পারাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে এবং হুমকি দেয় যে তারা বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেবে কাম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে। এর জবাবে কাম্বোডিয়া থাই ফলমূল ও শাকসবজি আমদানি বন্ধ করে এবং থাই সিনেমা ও টিভি নাটক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
সম্প্রতি একের পর এক ভূমি মাইন বিস্ফোরণ পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে। এরপর গত ১৬ জুলাই প্রথম বিস্ফোরণে একজন থাই সেনার পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এরপর বুধবার (২৩ জুলাই) দ্বিতীয় বিস্ফোরণে পাঁচজন থাই সেনা আহত হন, যাদের মধ্যে একজনের পা কেটে ফেলতে হয়। এরপর বৃহস্পতিবারের সহিংসতা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে উসকে দেয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উভয় দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনে এবং রাজধানী থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নেয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্ত ইস্যু ঘিরে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এখন ভয়াবহভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে, যার পরিণতি আরো বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার সীমান্ত সংঘর্ষ হঠাৎ করে নয়, বরং দীর্ঘদিনের উত্তেজনার ফল। সম্প্রতি সংঘর্ষ ও কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির পেছনে রয়েছে একাধিক ঘটনার ধারাবাহিকতা।দুই দেশ ৫০৮ মাইল (৮১৭ কিলোমিটার) দীর্ঘ একটি স্থলসীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে, যা মূলত ১৯ শতকে ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের সময়ে চিহ্নিত করা হয়েছিল। যখন ফ্রান্স কম্বোডিয়াকে উপনিবেশ হিসেবে শাসন করছিল।
এই সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত সামরিক সংঘর্ষ হয়েছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম্বোডিয়া অতীতে সীমান্তসংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) কাছে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে সর্বশেষ সংঘর্ষস্থলও। তবে থাইল্যান্ড এই আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার স্বীকার করে না। তারা দাবি করেছে, সীমান্তের বহু অংশ, বিশেষ করে কয়েকটি প্রাচীন মন্দির সংলগ্ন এলাকা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত হয়নি।
২০১১ সালে এমনই এক বিরোধপূর্ণ এলাকায় ১১ শতকের প্রাচীন প্রেয়া বিহার মন্দির ঘিরে থাই ও কম্বোডিয়ান বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঐতিহাসিক মন্দিরটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় এবং অন্তত ২০ জন প্রাণ হারায়। এই দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ এবং আইনি অস্পষ্টতা দুই দেশের মধ্যে বারবার উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা বর্তমানে নতুন করে সংঘর্ষ ও কূটনৈতিক সংকটে রূপ নিচ্ছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মে মাসে উত্তেজনা চরমে ওঠে, যখন এমেরাল্ড ট্রায়াঙ্গেল সীমান্ত এলাকায় (যেখানে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও লাওসের সীমান্ত মিলেছে) এক সংক্ষিপ্ত সংঘর্ষে একজন কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হয়। উভয় পক্ষই ওই ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করে এবং নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য কাজ করেছে বলে দাবি করে। সংঘর্ষ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও, দুই দেশই এর পর থেকে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পথে হাঁটে এবং সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে।
থাইল্যান্ড এরপর সীমান্ত চেকপয়েন্টগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। সীমান্ত পারাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে এবং হুমকি দেয় যে তারা বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেবে কাম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে। এর জবাবে কাম্বোডিয়া থাই ফলমূল ও শাকসবজি আমদানি বন্ধ করে এবং থাই সিনেমা ও টিভি নাটক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
সম্প্রতি একের পর এক ভূমি মাইন বিস্ফোরণ পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে। এরপর গত ১৬ জুলাই প্রথম বিস্ফোরণে একজন থাই সেনার পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এরপর বুধবার (২৩ জুলাই) দ্বিতীয় বিস্ফোরণে পাঁচজন থাই সেনা আহত হন, যাদের মধ্যে একজনের পা কেটে ফেলতে হয়। এরপর বৃহস্পতিবারের সহিংসতা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে উসকে দেয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উভয় দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনে এবং রাজধানী থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নেয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্ত ইস্যু ঘিরে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এখন ভয়াবহভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে, যার পরিণতি আরো বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।