alt

আন্তর্জাতিক

ভারতের পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর হুমকি ট্রাম্পের, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় দিল্লি বলছে ‘অহেতুক’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট ২০২৫

রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে ভারতের ওপর শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার এমন বক্তব্যকে ‘অহেতুক ও অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

ট্রাম্প সোমবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে লেখেন, রাশিয়ার ‘ওয়ার মেশিন’ ইউক্রেইনে কতজনকে হত্যা করছে, তা নিয়ে ভারতের কোনো উদ্বেগ নেই বলেই মনে হচ্ছে। এ কারণেই ভারতের পণ্যে ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ’ শুল্ক বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

২০২২ সালে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের পর পশ্চিমা দেশগুলো রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেই শূন্যস্থান পূরণে ভারত রাশিয়ার অন্যতম বড় তেল ক্রেতা হয়ে ওঠে। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ভারতের বাজার রাশিয়ার জন্য এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিগন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছেন। এবার তিনি শুল্ক আরও বাড়ানোর কথা বললেও নির্দিষ্ট হারে কতটা বাড়ানো হবে, তা উল্লেখ করেননি।

এ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সোয়াল বলেন, ইউক্রেইন সংঘাত শুরুর সময় যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে ভারতকে রাশিয়ার তেল আমদানিতে উৎসাহ দিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি শুরু করে কারণ, যুদ্ধের পর তাদের আগের তেলের সরবরাহ ইউরোপের দিকে চলে যায়।

রনধীর জয়সোয়াল যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, যখন আমেরিকা নিজেই এখনও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, তখন ভারতের বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ অনুচিত। তিনি জানান, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আনুমানিক সাড়ে তিনশ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়েছে, যা বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক সত্ত্বেও ঘটেছে।

তার ভাষায়, “ভারত তার জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। ভারতকে লক্ষ্য করাটা অহেতুক ও অযৌক্তিক।”

এর আগে ট্রাম্প একাধিকবার ভারতকে ‘বন্ধু’ আখ্যা দিলেও ভারতীয় পণ্যে শুল্ক বেশি হওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের কারণে ভারতকে ‘সাজা’ দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

সর্বশেষ পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারত শুধু রুশ তেল কিনছেই না, বরং সেই তেল পুনরায় বেশি দামে আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করছে। এরই প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্যে শুল্ক ‘উল্লেখযোগ্য হারে’ বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

তবে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ট্রাম্পের হুমকির পরও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশটির তেল পরিশোধনাগারগুলোকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে বলেননি।

এ বিষয়ে দিল্লিভিত্তিক গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান এবং সাবেক ভারতীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার তেল বাণিজ্য নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ বিভ্রান্তিকর। তিনি জানান, এই বাণিজ্য পুরোপুরি স্বচ্ছ এবং যুক্তরাষ্ট্রও জানে কেন ভারত এই পথে হাঁটছে।

তার মতে, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটালে বিশ্ববাজারকে স্থিতিশীল রাখতে ভারত এগিয়ে আসে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে থেকেছে।

তিনি আরও জানান, ভারতের সরকারি ও বেসরকারি তেল শোধনাগারগুলো কাঁচা তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় মূলত দাম, সরবরাহের নিরাপত্তা এবং রপ্তানি নীতির ভিত্তিতে। এসব শোধনাগার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং তাদের রাশিয়া বা অন্য কোনো দেশ থেকে তেল কিনতে সরকারের অনুমতি লাগে না।

ছবি

কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ বাংলাদেশিশূন্য, এক বছরে ‘হাজার কোটির’ ওপরে ব্যবসায়িক ক্ষতি

১৪ লাখ আফগান শরণার্থীকে জোর করেই ফেরত পাঠাচ্ছে পাকিস্তান

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র চুক্তি থেকে সরে গেল রাশিয়া

ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্কের হুমকি ‘অন্যায্য, অযৌক্তিক’ : ভারত

ছবি

পুরো গাজা দখলে নেবে ইসরায়েল

‘ইমরানকে মুক্ত কর’ আন্দোলনে মাঠে নেমেছে পিটিআই

ছবি

মানুষের রক্ত, মস্তিষ্ক, অস্থিমজ্জায় ঢুকছে প্লাস্টিক

ছবি

ইহুদি ভোটারদের সমর্থনেও গাজা প্রশ্নে অটল মামদানি

ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে পুড়েছে ৭২ হাজার একরের বেশি এলাকা

ছবি

‘একদিনে প্রায় ১ হাজার ২৫০ সেনাকে হারিয়েছে ইউক্রেন’

ছবি

ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের ঘনিষ্ঠতা: ভূরাজনীতিতে নতুন মোড়

ছবি

অস্ট্রেলিয়ায় ফিলিস্তিনের পক্ষে লাখো মানুষের মিছিলে অ্যাসাঞ্জ

ছবি

পাকিস্তানের সঙ্গে ১২টি সহযোগিতা চুক্তি সই করল ইরান

ছবি

রাশিয়াকে যুদ্ধে অর্থায়ন করছে ভারত, অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

বিশ্ব কি পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনা, বিশ্ব কোন ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে

ছবি

আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রথম কোনো ইসরায়েলি মন্ত্রীর প্রকাশ্যে প্রার্থনা

ছবি

‘সুয়েবা ০১’ পিএইচডি করছে

ছবি

সিডনি হারবার ব্রিজে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ, শামিল হলেন অ্যাসাঞ্জও

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র না হওয়া পর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের

ছবি

গাজায় ‘অত্যন্ত অপর্যাপ্ত’ সাহায্য ঢুকছে: জার্মানি

ছবি

পাকিস্তানে শেল বিস্ফোরণ ও ড্রোন হামলায় শিশুসহ নিহত ৬

ছবি

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ছাড়বে না হামাস

ফের হামলা হলে ‘ভুতুড়ে শহরে’ পরিণত হবে তেল আবিব : ইরান

ছবি

শুল্কের অর্থে ঘাটতি সামলাতে পারবে কি যুক্তরাষ্ট্র

‘অস্তিত্ব সংকটের’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : বাইডেন

ছবি

পাকিস্তানে তেলের বিশাল ভাণ্ডার কী আদৌ আছে?

ইসরায়েলি কূটনীতিকদের আরব আমিরাত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি

এক টুকরো খাবারের জন্য প্রাণ গেছে দেড় হাজার ফিলিস্তিনির

ছবি

হামলার হুমকিতে করাচির হোটেলগুলোতে মার্কিন কর্মকর্তাদের যাতায়াত সীমিত

ছবি

মেদভেদেভের হুঁশিয়ারিতে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প, রাশিয়ার কাছে দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ

ছবি

ইসরায়েলি কূটনীতিকদের আমিরাত ছাড়ার নির্দেশ

নির্বাচনকে সামনে রেখে মায়ানমারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন

ছবি

পর্যটকদের জন্য দ্বার খুলে দিচ্ছে তুর্কমিনিস্তান

পশ্চিমাদের সতর্ক করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

ছবি

বন্ধু থেকে প্রতিবেশী, কাউকেই ছাড় দেননি ট্রাম্প

tab

আন্তর্জাতিক

ভারতের পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর হুমকি ট্রাম্পের, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় দিল্লি বলছে ‘অহেতুক’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট ২০২৫

রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে ভারতের ওপর শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার এমন বক্তব্যকে ‘অহেতুক ও অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

ট্রাম্প সোমবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে লেখেন, রাশিয়ার ‘ওয়ার মেশিন’ ইউক্রেইনে কতজনকে হত্যা করছে, তা নিয়ে ভারতের কোনো উদ্বেগ নেই বলেই মনে হচ্ছে। এ কারণেই ভারতের পণ্যে ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ’ শুল্ক বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

২০২২ সালে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের পর পশ্চিমা দেশগুলো রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেই শূন্যস্থান পূরণে ভারত রাশিয়ার অন্যতম বড় তেল ক্রেতা হয়ে ওঠে। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ভারতের বাজার রাশিয়ার জন্য এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিগন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছেন। এবার তিনি শুল্ক আরও বাড়ানোর কথা বললেও নির্দিষ্ট হারে কতটা বাড়ানো হবে, তা উল্লেখ করেননি।

এ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সোয়াল বলেন, ইউক্রেইন সংঘাত শুরুর সময় যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে ভারতকে রাশিয়ার তেল আমদানিতে উৎসাহ দিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি শুরু করে কারণ, যুদ্ধের পর তাদের আগের তেলের সরবরাহ ইউরোপের দিকে চলে যায়।

রনধীর জয়সোয়াল যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, যখন আমেরিকা নিজেই এখনও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, তখন ভারতের বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ অনুচিত। তিনি জানান, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আনুমানিক সাড়ে তিনশ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়েছে, যা বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক সত্ত্বেও ঘটেছে।

তার ভাষায়, “ভারত তার জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। ভারতকে লক্ষ্য করাটা অহেতুক ও অযৌক্তিক।”

এর আগে ট্রাম্প একাধিকবার ভারতকে ‘বন্ধু’ আখ্যা দিলেও ভারতীয় পণ্যে শুল্ক বেশি হওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের কারণে ভারতকে ‘সাজা’ দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

সর্বশেষ পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারত শুধু রুশ তেল কিনছেই না, বরং সেই তেল পুনরায় বেশি দামে আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করছে। এরই প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্যে শুল্ক ‘উল্লেখযোগ্য হারে’ বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

তবে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ট্রাম্পের হুমকির পরও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশটির তেল পরিশোধনাগারগুলোকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে বলেননি।

এ বিষয়ে দিল্লিভিত্তিক গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান এবং সাবেক ভারতীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার তেল বাণিজ্য নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ বিভ্রান্তিকর। তিনি জানান, এই বাণিজ্য পুরোপুরি স্বচ্ছ এবং যুক্তরাষ্ট্রও জানে কেন ভারত এই পথে হাঁটছে।

তার মতে, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটালে বিশ্ববাজারকে স্থিতিশীল রাখতে ভারত এগিয়ে আসে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে থেকেছে।

তিনি আরও জানান, ভারতের সরকারি ও বেসরকারি তেল শোধনাগারগুলো কাঁচা তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় মূলত দাম, সরবরাহের নিরাপত্তা এবং রপ্তানি নীতির ভিত্তিতে। এসব শোধনাগার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং তাদের রাশিয়া বা অন্য কোনো দেশ থেকে তেল কিনতে সরকারের অনুমতি লাগে না।

back to top