গাজার ত্রাণ নিয়ে প্রবেশ করেছে কয়েকটি ট্রাক। প্রতিদিন যে পরিমাণ ত্রাণ যাচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য
গাজায় ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে খাদ্য সংকট। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে চরম মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে গাজার বাসিন্দারা। সংস্থা এবং ব্যক্তিরা সেখানে সরাসরি কাজ করছেন সেরকম কয়েকজন বলছেন, উপত্যকাটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক ত্রাণ সহায়তা দরকার।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য:
গাজায় ১ বছরের কম বয়সী ৪০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে
খাবার সংকটে পাঁচ বছরের কম বয়সী আড়াই লাখ শিশুর জীবন হুমকির মুখে
১৮ বছরের কম বয়সী ১২ লাখ শিশু চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়
২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ত্রাণ নিতে যাওয়া মোট ১ হাজার ৭৬০ প্যালেস্টাইনিকে হত্যা
প্যালেস্টাইনের সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, অন্তত এক হাজার ট্রাক ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। তবে দিনে কমবেশি ১০০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে। এটি প্রয়োজনের মাত্র ১০ শতাংশ।
গাজায় দৈনিক ত্রাণের প্রয়োজনীয়তা ও সরবরাহ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, গাজায় প্রতিদিন প্রবেশ করা এই ১০০ ট্রাক ত্রাণের বেশিরভাগই ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাচ্ছে। ফলে উপত্যকাটির বাসিন্দাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। অনাহারেই কাটছে অনেকের দিন।
২২ মাসের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের মধ্যে ২ মার্চ গাজায় নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। টানা ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর মে মাসের শেষের দিক থেকে উপত্যকাটিতে খুবই সীমিত পরিসরে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে দেশটি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পরিচালিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনও (জিএইচএফ) ত্রাণ দিচ্ছে। তবে সংস্থাটির কার্যক্রম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুরশ বলেন, শিশু ও নারীসহ সবাইকে অনাহারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় ১ বছরের কম বয়সী ৪০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। খাবার সংকটের কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী আড়াই লাখ শিশুর জীবন হুমকির মুখে রয়েছে। পাশাপাশি ১৮ বছরের কম বয়সী ১২ লাখ শিশু চরম খাদ্য নিরাপত্তা হীনতার মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলমান সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে অনাহারে ২৫১ প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েও হত্যার শিকার হচ্ছেন প্যালেস্টাইনিরা।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, ২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া মোট ১ হাজার ৭৬০ প্যালেস্টাইনিকে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬১ হাজার ৮২৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৫ জন।
এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ত্রাণ সরবরাহকারী শতাধিক সংস্থা অভিযোগ করে বলেছে, ইসরায়েল দাবি করেছে যে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তবে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান (এনজিও) ২ মার্চ থেকে জীবনরক্ষাকারী ত্রাণ সামগ্রীর একটি ট্রাকও উপত্যকাটিতে প্রবেশ করাতে পারেনি।
ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) কর্মকর্তা নাতাশা দাভিয়েস বলেন, ‘গাজা সীমান্তে ত্রাণ আটকা পড়ে আছে। তবে সেগুলো প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। আমরা মাত্র কয়েকটি ট্রাক প্রবেশ করাতে পেরেছি। এটি সাগরে এক ফোঁটা পানির মতো।’
গাজার ত্রাণ নিয়ে প্রবেশ করেছে কয়েকটি ট্রাক। প্রতিদিন যে পরিমাণ ত্রাণ যাচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য
রোববার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
গাজায় ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে খাদ্য সংকট। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে চরম মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে গাজার বাসিন্দারা। সংস্থা এবং ব্যক্তিরা সেখানে সরাসরি কাজ করছেন সেরকম কয়েকজন বলছেন, উপত্যকাটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক ত্রাণ সহায়তা দরকার।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য:
গাজায় ১ বছরের কম বয়সী ৪০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে
খাবার সংকটে পাঁচ বছরের কম বয়সী আড়াই লাখ শিশুর জীবন হুমকির মুখে
১৮ বছরের কম বয়সী ১২ লাখ শিশু চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়
২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ত্রাণ নিতে যাওয়া মোট ১ হাজার ৭৬০ প্যালেস্টাইনিকে হত্যা
প্যালেস্টাইনের সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, অন্তত এক হাজার ট্রাক ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। তবে দিনে কমবেশি ১০০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে। এটি প্রয়োজনের মাত্র ১০ শতাংশ।
গাজায় দৈনিক ত্রাণের প্রয়োজনীয়তা ও সরবরাহ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, গাজায় প্রতিদিন প্রবেশ করা এই ১০০ ট্রাক ত্রাণের বেশিরভাগই ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাচ্ছে। ফলে উপত্যকাটির বাসিন্দাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। অনাহারেই কাটছে অনেকের দিন।
২২ মাসের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের মধ্যে ২ মার্চ গাজায় নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। টানা ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর মে মাসের শেষের দিক থেকে উপত্যকাটিতে খুবই সীমিত পরিসরে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে দেশটি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পরিচালিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনও (জিএইচএফ) ত্রাণ দিচ্ছে। তবে সংস্থাটির কার্যক্রম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুরশ বলেন, শিশু ও নারীসহ সবাইকে অনাহারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় ১ বছরের কম বয়সী ৪০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। খাবার সংকটের কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী আড়াই লাখ শিশুর জীবন হুমকির মুখে রয়েছে। পাশাপাশি ১৮ বছরের কম বয়সী ১২ লাখ শিশু চরম খাদ্য নিরাপত্তা হীনতার মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলমান সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে অনাহারে ২৫১ প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েও হত্যার শিকার হচ্ছেন প্যালেস্টাইনিরা।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, ২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া মোট ১ হাজার ৭৬০ প্যালেস্টাইনিকে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬১ হাজার ৮২৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৫ জন।
এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ত্রাণ সরবরাহকারী শতাধিক সংস্থা অভিযোগ করে বলেছে, ইসরায়েল দাবি করেছে যে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তবে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান (এনজিও) ২ মার্চ থেকে জীবনরক্ষাকারী ত্রাণ সামগ্রীর একটি ট্রাকও উপত্যকাটিতে প্রবেশ করাতে পারেনি।
ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) কর্মকর্তা নাতাশা দাভিয়েস বলেন, ‘গাজা সীমান্তে ত্রাণ আটকা পড়ে আছে। তবে সেগুলো প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। আমরা মাত্র কয়েকটি ট্রাক প্রবেশ করাতে পেরেছি। এটি সাগরে এক ফোঁটা পানির মতো।’