রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এই চেষ্টা সফল হোক বা ব্যর্থ, নিজের কৃতিত্বের কথা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে একের পর এক যুদ্ধ থামানো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত বড়াই করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট।
সোমবার হোয়াইট হাউজে ইউরোপীয় নেতাদের চাপের মুখে রাশিয়া-ইউক্রেইনের মধ্যে ‘যুদ্ধবিরতির আহ্বান’ জানাতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি ছয়টি যুদ্ধ বন্ধ করেছি। সবগুলো চুক্তিই করেছি ‘যুদ্ধবিরতি’ শব্দটি উচ্চারণ না করেই।”
পরদিনই তার ‘থামানো’ যুদ্ধের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাতটিতে। ট্রাম্প প্রশাসন এখন বলছে, ‘শান্তির দূত’ হিসেবে নোবেল পুরস্কার অনেক আগেই তার প্রাপ্য। তারা প্রেসিডেন্ট কতগুলো যুদ্ধ থামিয়েছেন, তার তালিকাও প্রকাশ করেছে।
তবে এসব সংঘাতের স্থায়িত্ব এবং যুদ্ধবিরতির বাস্তব ফল নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তা ছিল অস্থায়ী বা কয়েকদিনের জন্য। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প নিজেও বারবার ‘যুদ্ধবিরতি’ শব্দ ব্যবহার করেছেন।
ইসরায়েল-ইরান
১৩ জুন ইসরায়েলের হামলার মাধ্যমে শুরু হয় সংঘাত, যা চলে ১২ দিন। যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়। ২৩ জুন ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তবে ইরান এটিকে ‘চূড়ান্ত বিজয়’ হিসেবে দাবি করে। ইসরায়েলও হুঁশিয়ারি দেয়, ইরান নতুন হুমকি দিলে তারা আবার আঘাত করবে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বলে মনে করছেন।
ভারত-পাকিস্তান
এপ্রিলে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর মে মাসে চার দিনের সংঘাত বাঁধে। চারদিন পর ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। পাকিস্তান ধন্যবাদ জানালেও ভারত জানায়, এটি দুই দেশের সেনাদের মধ্যকার সমঝোতার ফল।
রুয়ান্ডা-কঙ্গো
এম২৩ বিদ্রোহীদের কারণে আবার উত্তেজনা তৈরি হয়। জুনে ওয়াশিংটনে দুই দেশ শান্তিচুক্তি করে। তবে পরবর্তীতে একে অপরকে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস্তবে যুদ্ধবিরতি কখনোই কার্যকর হয়নি।
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া
২৬ জুলাই ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, তিনি যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কাজ করছেন। কয়েকদিনের মধ্যে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। মালয়েশিয়াও আলোচনায় ভূমিকা রাখে। যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনার হুমকি দিলে দুই দেশ শান্তিতে রাজি হয়।
আর্মেনিয়া-আজারবাইজান
৮ অগাস্ট হোয়াইট হাউজে শান্তিচুক্তি হয়। উভয় দেশ ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দেয়। তবে মার্চ মাসেই তারা পুরনো বিরোধ মেটাতে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছিল। বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে এখনো অশান্তি বিরাজ করছে।
মিশর-ইথিওপিয়া
নীলনদের ওপর বাঁধ নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন রয়েছে। ট্রাম্প মন্তব্য করেন, “আমি যদি মিশর হতাম, তবে নীলনদের পানি চাইতাম।” যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সমঝোতা হয়নি।
সার্বিয়া-কসোভো
২৭ জুন ট্রাম্প দাবি করেন, তার কারণে সার্বিয়া ও কসোভো যুদ্ধে জড়ায়নি। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ২০২০ সালে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি হয়েছিল, তবে যুদ্ধ চলছিল না।
এসব উদাহরণকে ঘিরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প অনেক ক্ষেত্রে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব নিলেও বাস্তবতা অনেক জায়গায় ভিন্ন। তার দাবি মূলত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কিংবা কূটনৈতিক সমঝোতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এই চেষ্টা সফল হোক বা ব্যর্থ, নিজের কৃতিত্বের কথা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে একের পর এক যুদ্ধ থামানো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত বড়াই করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট।
সোমবার হোয়াইট হাউজে ইউরোপীয় নেতাদের চাপের মুখে রাশিয়া-ইউক্রেইনের মধ্যে ‘যুদ্ধবিরতির আহ্বান’ জানাতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি ছয়টি যুদ্ধ বন্ধ করেছি। সবগুলো চুক্তিই করেছি ‘যুদ্ধবিরতি’ শব্দটি উচ্চারণ না করেই।”
পরদিনই তার ‘থামানো’ যুদ্ধের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাতটিতে। ট্রাম্প প্রশাসন এখন বলছে, ‘শান্তির দূত’ হিসেবে নোবেল পুরস্কার অনেক আগেই তার প্রাপ্য। তারা প্রেসিডেন্ট কতগুলো যুদ্ধ থামিয়েছেন, তার তালিকাও প্রকাশ করেছে।
তবে এসব সংঘাতের স্থায়িত্ব এবং যুদ্ধবিরতির বাস্তব ফল নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তা ছিল অস্থায়ী বা কয়েকদিনের জন্য। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প নিজেও বারবার ‘যুদ্ধবিরতি’ শব্দ ব্যবহার করেছেন।
ইসরায়েল-ইরান
১৩ জুন ইসরায়েলের হামলার মাধ্যমে শুরু হয় সংঘাত, যা চলে ১২ দিন। যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়। ২৩ জুন ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তবে ইরান এটিকে ‘চূড়ান্ত বিজয়’ হিসেবে দাবি করে। ইসরায়েলও হুঁশিয়ারি দেয়, ইরান নতুন হুমকি দিলে তারা আবার আঘাত করবে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বলে মনে করছেন।
ভারত-পাকিস্তান
এপ্রিলে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর মে মাসে চার দিনের সংঘাত বাঁধে। চারদিন পর ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। পাকিস্তান ধন্যবাদ জানালেও ভারত জানায়, এটি দুই দেশের সেনাদের মধ্যকার সমঝোতার ফল।
রুয়ান্ডা-কঙ্গো
এম২৩ বিদ্রোহীদের কারণে আবার উত্তেজনা তৈরি হয়। জুনে ওয়াশিংটনে দুই দেশ শান্তিচুক্তি করে। তবে পরবর্তীতে একে অপরকে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস্তবে যুদ্ধবিরতি কখনোই কার্যকর হয়নি।
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া
২৬ জুলাই ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, তিনি যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কাজ করছেন। কয়েকদিনের মধ্যে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। মালয়েশিয়াও আলোচনায় ভূমিকা রাখে। যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনার হুমকি দিলে দুই দেশ শান্তিতে রাজি হয়।
আর্মেনিয়া-আজারবাইজান
৮ অগাস্ট হোয়াইট হাউজে শান্তিচুক্তি হয়। উভয় দেশ ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দেয়। তবে মার্চ মাসেই তারা পুরনো বিরোধ মেটাতে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছিল। বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে এখনো অশান্তি বিরাজ করছে।
মিশর-ইথিওপিয়া
নীলনদের ওপর বাঁধ নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন রয়েছে। ট্রাম্প মন্তব্য করেন, “আমি যদি মিশর হতাম, তবে নীলনদের পানি চাইতাম।” যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সমঝোতা হয়নি।
সার্বিয়া-কসোভো
২৭ জুন ট্রাম্প দাবি করেন, তার কারণে সার্বিয়া ও কসোভো যুদ্ধে জড়ায়নি। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ২০২০ সালে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি হয়েছিল, তবে যুদ্ধ চলছিল না।
এসব উদাহরণকে ঘিরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প অনেক ক্ষেত্রে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব নিলেও বাস্তবতা অনেক জায়গায় ভিন্ন। তার দাবি মূলত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কিংবা কূটনৈতিক সমঝোতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।