alt

আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো-যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক সেনা প্রত্যাহার

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক : রোববার, ০২ মে ২০২১

আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এর মাধ্যমে একটি অন্তহীন যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলো। খবর বিবিসির।

প্রায় ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের সেনা মোতায়েন ছিল। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কাজ চলবে।

তবে এমন এক সময়ে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হলো যখন দেশটিতে নতুন করে সংঘর্ষ বাড়তে শুরু করেছে। গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তালেবানদের এক চুক্তি অনুযায়ী, এ বছর মে মাসের ১ তারিখের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।

চুক্তি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সেনাদের ওপর হামলা বন্ধ রাখতে হবে তালেবান বাহিনীকে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে এই সময়সীমা পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মতে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ পর্যন্ত আফগানিস্তানে সেনা উপস্থিতি থাকা প্রয়োজন।

এ বছর নাইন ইলেভেন হামলার ২০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। মূলত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নিরাপত্তা হুমকির কথা মাথায় রেখে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করার তারিখ বর্ধিত করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়ে আফগানিস্তানের অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হামলা থেকে পশ্চিমা সেনাদের সুরক্ষা দিয়ে আসছে তালেবান। যদিও আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর তালেবানদের হামলা বন্ধ হয়নি।

সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের সময় কোন ধরনের আক্রমণের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন জেনারেল স্কট মিলার। তিনি বলেছেন, ‘ভুলে যাবেন না, যে কোন ধরনের আক্রমণের জবাব দেবার, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণে তাদের সহায়তায় সামরিক সক্ষমতা জোটের রয়েছে।’

অন্যদিকে চুক্তি সত্বেও তারিখ পিছিয়ে দেয়া সম্পর্কে তালেবানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘চুক্তির লঙ্ঘন দখলদার বাহিনীর (পশ্চিমা সেনা) উপর তালেবান যোদ্ধাদের যেকোনো ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নেবার নীতিগত সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।’

তবে কোন ধরনের আক্রমণে যাওয়ার আগে তালেবান যোদ্ধারা তাদের নেতাদের নির্দেশের অপেক্ষা করবে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেনা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়সীমা বড় ধরনের হামলা এড়ানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

তবে সেনা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে মার্কিন বাহিনী। কোন সরঞ্জামগুলো দেশে ফেরত পাঠানো হবে আর কোনগুলো আফগানিস্তানে বাতিল হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হবে তার তালিকা তৈরি করছে তারা।

কেন আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী?

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারসহ তালেবানের আরও দুটি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রায় তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এই হামলার জন্য আল কায়দার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করা হয়।

সেসময় আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা তালেবান ওসামা বিন লাদেনকে নিরাপত্তা দিয়েছিল এবং তাকে মার্কিন বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করতে প্রত্যাখ্যান করে। নাইন ইলেভেন হামলার এক মাস পর আফগানিস্তানে বিমান হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন মিত্র দেশগুলো এতে যোগ দেয় এবং দ্রুতই তালেবানদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর জোট ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তানে অবস্থান করছে। কিন্তু তাতে তালেবান শক্তি অদৃশ্য হয়ে যায়নি বা তাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়নি।

ধীরে ধীরে তাদের প্রভাব বাড়তে থাকে। তখন থেকে আফগান সরকারের পতন ঠেকাতে এবং তালেবানদের হামলা প্রতিহত করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে।

তালিবান যুগের কালো অধ্যায়

আফগানিস্তানে দেশটির সরকারি বাহিনী এবং তালেবান যোদ্ধাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের পটভূমিতে মার্কিন ও ন্যাটো জোটের সেনা প্রত্যাহার শুরু হলো।

গাজনি প্রদেশে গতকালও রাতভর সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার পুল-এ-আলম শহরে এক গাড়ি বোমা হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছে এবং ১১০ জন আহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই স্কুল শিক্ষার্থী।

সেনা প্রত্যাহার যুক্তিসঙ্গত উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, পশ্চিমের দেশগুলোতে হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করার জন্য জিহাদি গোষ্ঠীগুলো আফগানিস্তানকে যাতে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে মার্কিন বাহিনী তা নিশ্চিত করেছে।

একই সাথে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি বলেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যেকোনো হামলা প্রতিহত করতে সরকারি বাহিনী সম্পূর্ণ সক্ষম। মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা চলে যাওয়ার অর্থ হবে তালেবানদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আর কোন কারণ থাকবে না।

তালেবান বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কাদের হত্যা করছেন? কি ধ্বংস করছেন? বিদেশিদের ওপর হামলার অজুহাত এখন শেষ হয়ে গেছে।’ কিন্তু সবাই এতে ইতিবাচক মনোভাব রাখতে পারছেন না।

কাবুলে একটি বেসরকারি রেডিওতে কর্মরত মিনা নওরোজি বলছেন, ‘অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে আমরা আবারো তালেবানদের সেই কালো অধ্যায়ে ফিরে যাব।’

তার মতে, তালেবানরা যেমন ছিল তেমনই আছে। তারা বদলে যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ছিল এখানে তাদের উপস্থিতি আরও এক দুই বছর বাড়ানো।’ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী যুক্ত হওয়া সত্ত্বেও যেহেতু আফগান সরকার ও তালেবানের শান্তি আলোচনা স্থগিত হয়ে রয়েছে তাই সংঘাত যে চলতে থাকবে তা অনিবার্য সেই আশংকা থেকেই যাচ্ছে।

ছবি

বিরোধিতা করায় চাকরি গেল ২৮ কর্মীর

ছবি

পানির নিচে দুবাই বিমানবন্দর, ব্যাপক বিশৃঙ্খলা

ছবি

হিজবুল্লাহর হামলায় ১৪ ইসরায়েলি সেনা আহত

ছবি

ইউক্রেনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭

ছবি

ঈদ উদ্যাপনে এক সপ্তাহে সৌদিবাসীর ব্যয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা

ছবি

‘ইউক্রেন হারলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে’

ছবি

নতুন অনলাইন ভিসা পদ্ধতি চালু করেছে শ্রীলঙ্কা, দেওয়া হয়েছে নতুন লিঙ্ক

ছবি

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব ভারতের সোনার বাজারে

ছবি

ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ১৭

ছবি

হিজবুল্লাহ বা ইরান কেউই বর্তমানে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় : ইইউ

ছবি

সময় এখন মাথা ঠান্ডা রাখার, নেতানিয়াহুকে বললেন সুনাক

ছবি

ইউক্রেইন যুদ্ধে রুশ সেনা নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে : বিবিসি

ছবি

ওমানে ভারী বর্ষণে নিহত ১৮, বৃষ্টি-বন্যায় বিপর্যস্ত আরব আমিরাত

ছবি

ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ

ছবি

ইরানের পাশে চীন, প্রতিশোধ পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের ‘না’

ছবি

ডেনমার্কে স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে আগুন

ছবি

ইসরায়েল হামলা চালালে এবার সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান

ছবি

পাকিস্তানে বজ্রপাত ও ভারী বৃষ্টিতে ৩৯ জনের মৃত্যু

ছবি

হামলার সময় ইসরায়েলকে রক্ষায় সহযোগিতা করেছে সৌদি!

ছবি

পশ্চিমবঙ্গের ৭ জায়গায় তাপমাত্রা ছাড়াল ৪০ ডিগ্রি

ছবি

ইরানে ‘শিগগিরই’ প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল

ছবি

ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করল ইসরায়েলি বিমান বাহিনী

ইসরায়েলকে শান্ত থাকার আহ্বান করেছে পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর

ছবি

পর্নো তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় ট্রাম্পের বিচার শুরু

ছবি

অস্ট্রেলিয়ায় শপিংমলে হামলার লক্ষ্যই ছিল নারীরা: পুলিশ

ছবি

হামলার কারণ জাতিসংঘকে জানালেন ইরানি দূত

ছবি

ইরান-ইয়েমেনের ৮৬ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

৬.৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল পাপুয়া নিউগিনি

ছবি

হামলার আগে সতর্ক করেছিল ইরান, অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে ১৫ জনের মৃত্যু

ছবি

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিয়ে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে

ছবি

রাতভর বন্ধ থাকা পর আকাশসীমা খুলে দিয়েছে ইসরায়েল ও জর্ডান

ছবি

ইসরায়েলে ইরানের হামলা, বাইডেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর ফোনালাপ

ছবি

অস্ট্রেলিয়ার শপিং মলে হামলাকারী শনাক্ত

ছবি

ইসরায়েলে হামলা ইরানের

ছবি

উত্তেজনার মধ্যে হরমুজ প্রণালিতে ইসরায়েলি মালবাহী জাহাজ জব্দ করল ইরান

tab

আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো-যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক সেনা প্রত্যাহার

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক

রোববার, ০২ মে ২০২১

আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এর মাধ্যমে একটি অন্তহীন যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলো। খবর বিবিসির।

প্রায় ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের সেনা মোতায়েন ছিল। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কাজ চলবে।

তবে এমন এক সময়ে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হলো যখন দেশটিতে নতুন করে সংঘর্ষ বাড়তে শুরু করেছে। গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তালেবানদের এক চুক্তি অনুযায়ী, এ বছর মে মাসের ১ তারিখের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।

চুক্তি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সেনাদের ওপর হামলা বন্ধ রাখতে হবে তালেবান বাহিনীকে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে এই সময়সীমা পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মতে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ পর্যন্ত আফগানিস্তানে সেনা উপস্থিতি থাকা প্রয়োজন।

এ বছর নাইন ইলেভেন হামলার ২০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। মূলত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নিরাপত্তা হুমকির কথা মাথায় রেখে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করার তারিখ বর্ধিত করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়ে আফগানিস্তানের অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হামলা থেকে পশ্চিমা সেনাদের সুরক্ষা দিয়ে আসছে তালেবান। যদিও আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর তালেবানদের হামলা বন্ধ হয়নি।

সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের সময় কোন ধরনের আক্রমণের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন জেনারেল স্কট মিলার। তিনি বলেছেন, ‘ভুলে যাবেন না, যে কোন ধরনের আক্রমণের জবাব দেবার, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণে তাদের সহায়তায় সামরিক সক্ষমতা জোটের রয়েছে।’

অন্যদিকে চুক্তি সত্বেও তারিখ পিছিয়ে দেয়া সম্পর্কে তালেবানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘চুক্তির লঙ্ঘন দখলদার বাহিনীর (পশ্চিমা সেনা) উপর তালেবান যোদ্ধাদের যেকোনো ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নেবার নীতিগত সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।’

তবে কোন ধরনের আক্রমণে যাওয়ার আগে তালেবান যোদ্ধারা তাদের নেতাদের নির্দেশের অপেক্ষা করবে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেনা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়সীমা বড় ধরনের হামলা এড়ানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

তবে সেনা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে মার্কিন বাহিনী। কোন সরঞ্জামগুলো দেশে ফেরত পাঠানো হবে আর কোনগুলো আফগানিস্তানে বাতিল হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হবে তার তালিকা তৈরি করছে তারা।

কেন আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী?

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারসহ তালেবানের আরও দুটি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রায় তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এই হামলার জন্য আল কায়দার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করা হয়।

সেসময় আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা তালেবান ওসামা বিন লাদেনকে নিরাপত্তা দিয়েছিল এবং তাকে মার্কিন বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করতে প্রত্যাখ্যান করে। নাইন ইলেভেন হামলার এক মাস পর আফগানিস্তানে বিমান হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন মিত্র দেশগুলো এতে যোগ দেয় এবং দ্রুতই তালেবানদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর জোট ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তানে অবস্থান করছে। কিন্তু তাতে তালেবান শক্তি অদৃশ্য হয়ে যায়নি বা তাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়নি।

ধীরে ধীরে তাদের প্রভাব বাড়তে থাকে। তখন থেকে আফগান সরকারের পতন ঠেকাতে এবং তালেবানদের হামলা প্রতিহত করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে।

তালিবান যুগের কালো অধ্যায়

আফগানিস্তানে দেশটির সরকারি বাহিনী এবং তালেবান যোদ্ধাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের পটভূমিতে মার্কিন ও ন্যাটো জোটের সেনা প্রত্যাহার শুরু হলো।

গাজনি প্রদেশে গতকালও রাতভর সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার পুল-এ-আলম শহরে এক গাড়ি বোমা হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছে এবং ১১০ জন আহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই স্কুল শিক্ষার্থী।

সেনা প্রত্যাহার যুক্তিসঙ্গত উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, পশ্চিমের দেশগুলোতে হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করার জন্য জিহাদি গোষ্ঠীগুলো আফগানিস্তানকে যাতে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে মার্কিন বাহিনী তা নিশ্চিত করেছে।

একই সাথে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি বলেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যেকোনো হামলা প্রতিহত করতে সরকারি বাহিনী সম্পূর্ণ সক্ষম। মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা চলে যাওয়ার অর্থ হবে তালেবানদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আর কোন কারণ থাকবে না।

তালেবান বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কাদের হত্যা করছেন? কি ধ্বংস করছেন? বিদেশিদের ওপর হামলার অজুহাত এখন শেষ হয়ে গেছে।’ কিন্তু সবাই এতে ইতিবাচক মনোভাব রাখতে পারছেন না।

কাবুলে একটি বেসরকারি রেডিওতে কর্মরত মিনা নওরোজি বলছেন, ‘অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে আমরা আবারো তালেবানদের সেই কালো অধ্যায়ে ফিরে যাব।’

তার মতে, তালেবানরা যেমন ছিল তেমনই আছে। তারা বদলে যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ছিল এখানে তাদের উপস্থিতি আরও এক দুই বছর বাড়ানো।’ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী যুক্ত হওয়া সত্ত্বেও যেহেতু আফগান সরকার ও তালেবানের শান্তি আলোচনা স্থগিত হয়ে রয়েছে তাই সংঘাত যে চলতে থাকবে তা অনিবার্য সেই আশংকা থেকেই যাচ্ছে।

back to top