বাংলাদেশী নাগরিকরা বাড়ি ফেরার দাবিতে বুধবারও কলকাতা উপ-হাইকমিশনের সামনে প্রধান চেঞ্চরীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ করেছেন। তাদের দাবি, বাংলাদেশ সিমান্তে ঢোকার পরে কোভিড আইন মেনে তারা ১৪ দিন আইসোলেশন সেন্টারে থাকতে রাজী, তবুও কলকাতা থেকে আমাদের দেশে ফেরার সুযোগ করে দেয়া হোক। এখানে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এত কষ্ট বুঝাতে পারবো না উপ-হাই কমিশনের অফিসারদের।
এমনটিই জানালেন চট্রগ্রামের বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিন সরকার। সে ভারতে ভিকিৎসা করানোর জন্য দেড়মাস আগে আসেন। চিকিৎসা শেষে কলকাতায় এসে জানতে পারি ভারতের সাথে সমস্ত স্থলপথ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। অনুমতিপত্র পাওয়ার আশায় প্রতিদিন বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনে এসে বিফল হয়ে ফিরে যাই। আমার মত এই রকম কয়েকশত বাংলাদেশী নাগরিক আছেন যারা বাংলাদেশ সরকারের বিধি নিষেধের কারণে কলকাতা শহরে যাযাবরের মত দিনাতিপাত করছে। সবচেয়ে বড় সংকট অর্থের, এখানে কে আমাদের চেনে, বা সাহায্য করবে? অংশিক লকডাউনের কারণে কলকাতার সমস্ত খাবার দোকান-পাট বন্ধ থাকে। কারো কাছে সামাণ্য পয়সা থাকলেও কিনে খাবার উপায় নেই।
যশোরের আশরাফুল ইসলাম-ও ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য গত দুমাস আগে ভারতে ভেলোরে চিকিৎসা করাতে আসেন। কিন্তু করোনার সংক্রমণের কারণে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার জন্য আমাকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। গত ৮ মে কলকাতায় এসে জানি সীমান্ত পথ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু হাইকমিশন থেকে বাড়ি ফেরার কোন ছাড়পত্র না দেয়ায় পরিবারের সাথে আমার মত কয়েকশ নাগরিকদের এবার সামিল হতে পারবেনা।
ঢাকার বাসিন্দা সুমি আক্তার বলেন, আমরা এখানে খুবই অসুবিধার মধ্যে আছি। উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তারা আমাদের সাহায্য করতে চাইলেও বাংলাদেশ সরকারের বিধি নিষেধের কারণে। কিন্তু উপ-হাইকমিশন থেকে কয়েকটা দিন যদি আমাদের খাওরার ব্যবস্থা করতে তা হলেও আমরা উপকৃত হতাম।
এ ব্যাপারে উপ-হাইকমিশনের কন্স্যুলার মো: বশিরউ্দ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এই ধরণের তহবিল নেই। তবে তাদেরকে নানা ভাবে আমি সাহায্য করছি। আটকেপড়া আনেকেই সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক। এখানে খাওয়ার বিষয়টি তাদেরকে ছোট করেছে। টাকা থাকলেও করোনার কারণে এখানকার হোটেল, দোকানদারা তাদের কাছে মালামাল বিক্রি করতেও চায়না।
মঙ্গলবার দেশে ফেরার জন্য কয়েকশ বাংলাদেশী নাগরিক উপ-হাইকমিশনের সামনে তারা বিক্ষোভ করতে থাকে, এক সময় তারা দূতাবাস প্রধান বিএম জামাল হোসেনের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ করতে থাকে।
বিক্ষোভকারীরা জানায়, আমাদের সমস্যার সমাধান না করা পর্যন্ত হাইকমিশনের কোন কর্মকর্তাকে অফিসে ঢুকতে দেয়া হবেনা। পরে বেনিয়াপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌছে বিক্ষোভ কারীদের সাথে কথা বলে এবং তাদের দাবীর ব্যাপারে উপ-হাইকমিসনের কর্মকর্তদের সাথে বৈঠক করানোর ব্যবস্থা করে দেন। এইদিনই বিক্ষোভকারী বাংলাদেশী নাগরিকরা দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক হয়। বেঠকে উপস্থিত থাকা এমন একজন বাংলাদেশী নাগরিক জানান, কর্মকর্তাদের সাথে আমাদের সফল বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের বিধিনিষেধের কারণে দূতাবাস কর্মকর্তাদের কিছু করণীয় নেই, তবে ১৭ মে থেকে এনওসি দেয়া শুরুকরবে তারা।
এ ব্যাপারে মো: বশিরুদ্দিন জানান, ১৭ মে-এর পর থেকে ভোমরা, গেদে ও হিলি সিমান্ত দিয়ে যেতে পারবেন বাংলাদেশীরা। এর আগে যে সব সিমান্ত দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল সে গুলোও বলবদ থাকব।
ভারতে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের কারণে শনিবার বাংলাদেশ সরকারের আন্ত-মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে-র সিদ্ধান্ত আনুযায়ী স্থল সীমান্ত পথে য়াতায়াতের নিষেধাজ্ঞা আরও দুই সপ্তাহ বৃদ্ধি করা হয়। এর আগে সরকারী নিষেধাজ্ঞা ছিল ২৬ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত।আর এখন তা বৃদ্ধি করে ২৩ মে পর্যন্ত করা হয়। তবে যাদের ভিসার মেয়াদ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে শেষ হবে বা হয়েছে কেবল এমন অসুস্থ রুগীদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শর্ত সাপেক্ষ শিথিল করা হবে। তাদেরকেও বাংলদেশের সীমান্ত বন্দরে ১৪ দিনের কোয়ারিন্টাইনে থাকতে হবে।
কলকাতা উপ-হাইকমিসনের কন্স্যুলার মো: বশিরউদ্দীন সংবাদকে জানায়, আজও বেনাপোল ও বুড়িমারী সিমান্ত দিয়ে ২০ জন বাংলাদেশী নাগরিক দেশে ফিরেছেন। তবে তাদের এনওসি দেয়া হয়েছিল ৯ এপ্রিলের আগে। বশির জানান, আজকের ফেরার মধ্যে দুটি মৃতদেহ ছিল। ভারতে কিডনি ও ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করাতে এসে তারা মারা যান।
বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১
বাংলাদেশী নাগরিকরা বাড়ি ফেরার দাবিতে বুধবারও কলকাতা উপ-হাইকমিশনের সামনে প্রধান চেঞ্চরীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ করেছেন। তাদের দাবি, বাংলাদেশ সিমান্তে ঢোকার পরে কোভিড আইন মেনে তারা ১৪ দিন আইসোলেশন সেন্টারে থাকতে রাজী, তবুও কলকাতা থেকে আমাদের দেশে ফেরার সুযোগ করে দেয়া হোক। এখানে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এত কষ্ট বুঝাতে পারবো না উপ-হাই কমিশনের অফিসারদের।
এমনটিই জানালেন চট্রগ্রামের বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিন সরকার। সে ভারতে ভিকিৎসা করানোর জন্য দেড়মাস আগে আসেন। চিকিৎসা শেষে কলকাতায় এসে জানতে পারি ভারতের সাথে সমস্ত স্থলপথ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। অনুমতিপত্র পাওয়ার আশায় প্রতিদিন বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনে এসে বিফল হয়ে ফিরে যাই। আমার মত এই রকম কয়েকশত বাংলাদেশী নাগরিক আছেন যারা বাংলাদেশ সরকারের বিধি নিষেধের কারণে কলকাতা শহরে যাযাবরের মত দিনাতিপাত করছে। সবচেয়ে বড় সংকট অর্থের, এখানে কে আমাদের চেনে, বা সাহায্য করবে? অংশিক লকডাউনের কারণে কলকাতার সমস্ত খাবার দোকান-পাট বন্ধ থাকে। কারো কাছে সামাণ্য পয়সা থাকলেও কিনে খাবার উপায় নেই।
যশোরের আশরাফুল ইসলাম-ও ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য গত দুমাস আগে ভারতে ভেলোরে চিকিৎসা করাতে আসেন। কিন্তু করোনার সংক্রমণের কারণে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার জন্য আমাকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। গত ৮ মে কলকাতায় এসে জানি সীমান্ত পথ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু হাইকমিশন থেকে বাড়ি ফেরার কোন ছাড়পত্র না দেয়ায় পরিবারের সাথে আমার মত কয়েকশ নাগরিকদের এবার সামিল হতে পারবেনা।
ঢাকার বাসিন্দা সুমি আক্তার বলেন, আমরা এখানে খুবই অসুবিধার মধ্যে আছি। উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তারা আমাদের সাহায্য করতে চাইলেও বাংলাদেশ সরকারের বিধি নিষেধের কারণে। কিন্তু উপ-হাইকমিশন থেকে কয়েকটা দিন যদি আমাদের খাওরার ব্যবস্থা করতে তা হলেও আমরা উপকৃত হতাম।
এ ব্যাপারে উপ-হাইকমিশনের কন্স্যুলার মো: বশিরউ্দ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এই ধরণের তহবিল নেই। তবে তাদেরকে নানা ভাবে আমি সাহায্য করছি। আটকেপড়া আনেকেই সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক। এখানে খাওয়ার বিষয়টি তাদেরকে ছোট করেছে। টাকা থাকলেও করোনার কারণে এখানকার হোটেল, দোকানদারা তাদের কাছে মালামাল বিক্রি করতেও চায়না।
মঙ্গলবার দেশে ফেরার জন্য কয়েকশ বাংলাদেশী নাগরিক উপ-হাইকমিশনের সামনে তারা বিক্ষোভ করতে থাকে, এক সময় তারা দূতাবাস প্রধান বিএম জামাল হোসেনের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ করতে থাকে।
বিক্ষোভকারীরা জানায়, আমাদের সমস্যার সমাধান না করা পর্যন্ত হাইকমিশনের কোন কর্মকর্তাকে অফিসে ঢুকতে দেয়া হবেনা। পরে বেনিয়াপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌছে বিক্ষোভ কারীদের সাথে কথা বলে এবং তাদের দাবীর ব্যাপারে উপ-হাইকমিসনের কর্মকর্তদের সাথে বৈঠক করানোর ব্যবস্থা করে দেন। এইদিনই বিক্ষোভকারী বাংলাদেশী নাগরিকরা দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক হয়। বেঠকে উপস্থিত থাকা এমন একজন বাংলাদেশী নাগরিক জানান, কর্মকর্তাদের সাথে আমাদের সফল বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের বিধিনিষেধের কারণে দূতাবাস কর্মকর্তাদের কিছু করণীয় নেই, তবে ১৭ মে থেকে এনওসি দেয়া শুরুকরবে তারা।
এ ব্যাপারে মো: বশিরুদ্দিন জানান, ১৭ মে-এর পর থেকে ভোমরা, গেদে ও হিলি সিমান্ত দিয়ে যেতে পারবেন বাংলাদেশীরা। এর আগে যে সব সিমান্ত দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল সে গুলোও বলবদ থাকব।
ভারতে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের কারণে শনিবার বাংলাদেশ সরকারের আন্ত-মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে-র সিদ্ধান্ত আনুযায়ী স্থল সীমান্ত পথে য়াতায়াতের নিষেধাজ্ঞা আরও দুই সপ্তাহ বৃদ্ধি করা হয়। এর আগে সরকারী নিষেধাজ্ঞা ছিল ২৬ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত।আর এখন তা বৃদ্ধি করে ২৩ মে পর্যন্ত করা হয়। তবে যাদের ভিসার মেয়াদ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে শেষ হবে বা হয়েছে কেবল এমন অসুস্থ রুগীদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শর্ত সাপেক্ষ শিথিল করা হবে। তাদেরকেও বাংলদেশের সীমান্ত বন্দরে ১৪ দিনের কোয়ারিন্টাইনে থাকতে হবে।
কলকাতা উপ-হাইকমিসনের কন্স্যুলার মো: বশিরউদ্দীন সংবাদকে জানায়, আজও বেনাপোল ও বুড়িমারী সিমান্ত দিয়ে ২০ জন বাংলাদেশী নাগরিক দেশে ফিরেছেন। তবে তাদের এনওসি দেয়া হয়েছিল ৯ এপ্রিলের আগে। বশির জানান, আজকের ফেরার মধ্যে দুটি মৃতদেহ ছিল। ভারতে কিডনি ও ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করাতে এসে তারা মারা যান।