গত বছর মে মাসে চীনের পার্লামেন্টে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনের পর হংকংয়ে চলছে গণবিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভের খবর প্রকাশের জের ধরেই অ্যাপল ডেইলির প্রধান সম্পাদক রায়ান ল ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চুং কিম-হুমকে গ্রেপ্তার করে হংকং পু্লিশ। আর এ প্রধান সম্পাদক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের পর হংকংয়ের ট্যাবলয়েড পত্রিকা অ্যাপল ডেইলির গ্রাহক সংখ্যা দুই দিনে চার লাখ বেড়েছে।
বিবিসি ও এএফপির খবরে বলা হয়েছে, রায়ান ও চুং কিম-হুমের পাশাপাশি পত্রিকাটির চিফ অপারেটিং অফিসার চাও তাত-কুয়েন, ডেপুটি চিফ এডিটর চান পুই-মান,চিফ এক্সিকিউটিভ এডিটর কাই-ওয়াইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার ৫০০ পুলিশ সদস্য অ্যাপল ডেইলি কার্যালয়ে গ্রেপ্তার অভিযানে আসে। এসময় সংবাদ কর্মীদের ল্যাপটপ, নোটবুক, কম্পিউটার পরীক্ষা করেন পুলিশ সদস্যরা।
অ্যাপল ডেইলির ফেসবুক পেজ থেকে গ্রেপ্তার অভিযান লাইভ করা হয়।পত্রিকার সম্পাদক রায়ান ল হাতকড়া পরা অবস্থায় যেতে যেতে তার সহকর্মীদের বলতে থাকেন, ‘আমরা পত্রিকা ছাপিয়ে যাব।’
কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের পর অ্যাপল ডেইলির ২৩ লাখ ডলারের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দেয় পুলিশ।
তাদের গ্রেপ্তারের পরদিন থেকেই গ্রাহক সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০ হাজার কপি ছাপলেও শনিবারা তারা ৫ লাখ কপি ছেপেছে।
২০২০ সালে চীনের পার্লামেন্টে জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাস করে।নতুন আইনে রাষ্ট্রদ্রোহ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম নিষিদ্ধ করার জন্য কড়া পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হংকংয়ে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠার উল্লেখ রয়েছে।
চীন ও হংকংবাসীর মৌলিক স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে চীন দাবি করছে। উল্টোদিকে আন্দোলনকারীদের ব্ক্তব্য, এই নতুন আইনটি হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতায় শেষ পেরেক পুঁতে দেবে।
সেই আইনের বিরুদ্ধে হংকংয়ে বিক্ষোভ চলছে আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে। পুলিশের অভিযোগ, অ্যাপল ডেইলি ২০১৯ সাল থেকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়ে ৩০টিও বেশি ‘বিতর্কিত’ নিবন্ধ ছাপিয়েছে।
চীনা নেতৃত্বের কঠোর সমালোচনামূলক নিবন্ধ ছাপায় অ্যাপল ডেইলি ইতোমধ্যে হংকংবাসীর মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।২০১৯ সালে চীনবিরোধী এক সমাবেশে সরব উপস্থিতিরি কারণে গ্রেপ্তার করা হয় পত্রিকাটির ধনাঢ্য মালিক জিমি লাইকে।
তাতেও দমে না গিয়ে অ্যাপল ডেইলি সমালোচনামূলক নিবন্ধ ছাপতে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা আইনের গ্রেপ্তার দেখানো হয় পত্রিকাটির ৫ শীর্ষ কর্মকর্তাকে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার ৫০০ পুলিশ সদস্য অ্যাপল ডেইলি কার্যালয়ে গ্রেপ্তার অভিযানে আসে। এসময় সংবাদ কর্মীদের ল্যাপটপ, নোটবুক, কম্পিউটার পরীক্ষা করেন পুলিশ সদস্যরা।
অ্যাপল ডেইলির ফেসবুক পেজ থেকে গ্রেপ্তার অভিযান লাইভ করা হয়।পত্রিকার সম্পাদক রায়ান ল হাতকড়া পরা অবস্থায় যেতে যেতে তার সহকর্মীদের বলতে থাকেন, ‘আমরা পত্রিকা ছাপিয়ে যাব।’ শনিবার ছাপা হওয়ার পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠাতেই তারা সম্পাদকের সেই প্রতিজ্ঞার কথা বড় করে ছেপেছে।
পাঁচ জন কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের পর অ্যাপল ডেইলির ২৩ লাখ ডলারের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দেয় পুলিশ।
ডেপুটি চিফ এডিটর চান পুই-মান জামিনে বের হয়ে আসেন শুক্রবার। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা গ্রেপ্তার হওয়ার পরও সহকর্মীরা পত্রিকা প্রকাশ করেছেন, এটা সত্যি গর্বের।’
সাংবাদিক গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মুখপাত্র রিপের্ট কলভিলে বিবিসিকে বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে এটা একটা শীতল বার্তা’।
জাতিসংঘের নাগরিকত্ব ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক নীতিমালা মেনে গণমাধ্যমকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হংককে অনুরোধও করেছেন তিনি।
এদিকে শুক্রবার রাতে পত্রিকার প্রথম সংস্করণ ছাপা হওয়ার পর হংকয়ের পত্রিকার দোকানগুলোতে পাঠকের ভিড় উপচে পড়েছে। গ্রাহকরা পত্রিকার দোকানও কিনে নিয়েছেন কোথাও।
মংকক জেলার একটি পত্রিকার দোকানের মালিক এএফপিকে বলেছেন, প্রতিদিন ৬০ কপি পত্রিকা বিক্রি করলেও শনিবার তারা ১৮০০ কপি পত্রিকা বিক্রি করেছে।
হকারদের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, পত্রিকাটির নিয়মিত গ্রাহকদের পাশাপাশি অনেক তরুণ অ্যাপল ডেইলির একাধিক কপি কিনে নিচ্ছেন। গ্রাহকদের কেউ কেউ ট্রলি নিয়ে এসে পত্রিকাটির শতাধিক কপিও কিনে নিয়েছেন।
গ্রাহক স্টিভেন শাউ বিবিসিকে বলেন, ‘কোনো গণমাধ্যমকে আমার যথার্থ মনে হয় না। কিন্তু হংকংয়ে অ্যাপল ডেইলির একটি নিজস্ব ভাষা তৈরি করেছে। আপনি তাদের পছন্দ নাই করতে পারেন, কিন্তু তাদের বাঁচতে দিতে হবে, কথা বলতে দিতে হবে।’
শনিবার, ১৯ জুন ২০২১
গত বছর মে মাসে চীনের পার্লামেন্টে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনের পর হংকংয়ে চলছে গণবিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভের খবর প্রকাশের জের ধরেই অ্যাপল ডেইলির প্রধান সম্পাদক রায়ান ল ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চুং কিম-হুমকে গ্রেপ্তার করে হংকং পু্লিশ। আর এ প্রধান সম্পাদক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের পর হংকংয়ের ট্যাবলয়েড পত্রিকা অ্যাপল ডেইলির গ্রাহক সংখ্যা দুই দিনে চার লাখ বেড়েছে।
বিবিসি ও এএফপির খবরে বলা হয়েছে, রায়ান ও চুং কিম-হুমের পাশাপাশি পত্রিকাটির চিফ অপারেটিং অফিসার চাও তাত-কুয়েন, ডেপুটি চিফ এডিটর চান পুই-মান,চিফ এক্সিকিউটিভ এডিটর কাই-ওয়াইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার ৫০০ পুলিশ সদস্য অ্যাপল ডেইলি কার্যালয়ে গ্রেপ্তার অভিযানে আসে। এসময় সংবাদ কর্মীদের ল্যাপটপ, নোটবুক, কম্পিউটার পরীক্ষা করেন পুলিশ সদস্যরা।
অ্যাপল ডেইলির ফেসবুক পেজ থেকে গ্রেপ্তার অভিযান লাইভ করা হয়।পত্রিকার সম্পাদক রায়ান ল হাতকড়া পরা অবস্থায় যেতে যেতে তার সহকর্মীদের বলতে থাকেন, ‘আমরা পত্রিকা ছাপিয়ে যাব।’
কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের পর অ্যাপল ডেইলির ২৩ লাখ ডলারের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দেয় পুলিশ।
তাদের গ্রেপ্তারের পরদিন থেকেই গ্রাহক সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০ হাজার কপি ছাপলেও শনিবারা তারা ৫ লাখ কপি ছেপেছে।
২০২০ সালে চীনের পার্লামেন্টে জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাস করে।নতুন আইনে রাষ্ট্রদ্রোহ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম নিষিদ্ধ করার জন্য কড়া পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হংকংয়ে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠার উল্লেখ রয়েছে।
চীন ও হংকংবাসীর মৌলিক স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে চীন দাবি করছে। উল্টোদিকে আন্দোলনকারীদের ব্ক্তব্য, এই নতুন আইনটি হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতায় শেষ পেরেক পুঁতে দেবে।
সেই আইনের বিরুদ্ধে হংকংয়ে বিক্ষোভ চলছে আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে। পুলিশের অভিযোগ, অ্যাপল ডেইলি ২০১৯ সাল থেকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়ে ৩০টিও বেশি ‘বিতর্কিত’ নিবন্ধ ছাপিয়েছে।
চীনা নেতৃত্বের কঠোর সমালোচনামূলক নিবন্ধ ছাপায় অ্যাপল ডেইলি ইতোমধ্যে হংকংবাসীর মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।২০১৯ সালে চীনবিরোধী এক সমাবেশে সরব উপস্থিতিরি কারণে গ্রেপ্তার করা হয় পত্রিকাটির ধনাঢ্য মালিক জিমি লাইকে।
তাতেও দমে না গিয়ে অ্যাপল ডেইলি সমালোচনামূলক নিবন্ধ ছাপতে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা আইনের গ্রেপ্তার দেখানো হয় পত্রিকাটির ৫ শীর্ষ কর্মকর্তাকে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার ৫০০ পুলিশ সদস্য অ্যাপল ডেইলি কার্যালয়ে গ্রেপ্তার অভিযানে আসে। এসময় সংবাদ কর্মীদের ল্যাপটপ, নোটবুক, কম্পিউটার পরীক্ষা করেন পুলিশ সদস্যরা।
অ্যাপল ডেইলির ফেসবুক পেজ থেকে গ্রেপ্তার অভিযান লাইভ করা হয়।পত্রিকার সম্পাদক রায়ান ল হাতকড়া পরা অবস্থায় যেতে যেতে তার সহকর্মীদের বলতে থাকেন, ‘আমরা পত্রিকা ছাপিয়ে যাব।’ শনিবার ছাপা হওয়ার পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠাতেই তারা সম্পাদকের সেই প্রতিজ্ঞার কথা বড় করে ছেপেছে।
পাঁচ জন কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের পর অ্যাপল ডেইলির ২৩ লাখ ডলারের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দেয় পুলিশ।
ডেপুটি চিফ এডিটর চান পুই-মান জামিনে বের হয়ে আসেন শুক্রবার। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা গ্রেপ্তার হওয়ার পরও সহকর্মীরা পত্রিকা প্রকাশ করেছেন, এটা সত্যি গর্বের।’
সাংবাদিক গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মুখপাত্র রিপের্ট কলভিলে বিবিসিকে বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে এটা একটা শীতল বার্তা’।
জাতিসংঘের নাগরিকত্ব ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক নীতিমালা মেনে গণমাধ্যমকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হংককে অনুরোধও করেছেন তিনি।
এদিকে শুক্রবার রাতে পত্রিকার প্রথম সংস্করণ ছাপা হওয়ার পর হংকয়ের পত্রিকার দোকানগুলোতে পাঠকের ভিড় উপচে পড়েছে। গ্রাহকরা পত্রিকার দোকানও কিনে নিয়েছেন কোথাও।
মংকক জেলার একটি পত্রিকার দোকানের মালিক এএফপিকে বলেছেন, প্রতিদিন ৬০ কপি পত্রিকা বিক্রি করলেও শনিবার তারা ১৮০০ কপি পত্রিকা বিক্রি করেছে।
হকারদের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, পত্রিকাটির নিয়মিত গ্রাহকদের পাশাপাশি অনেক তরুণ অ্যাপল ডেইলির একাধিক কপি কিনে নিচ্ছেন। গ্রাহকদের কেউ কেউ ট্রলি নিয়ে এসে পত্রিকাটির শতাধিক কপিও কিনে নিয়েছেন।
গ্রাহক স্টিভেন শাউ বিবিসিকে বলেন, ‘কোনো গণমাধ্যমকে আমার যথার্থ মনে হয় না। কিন্তু হংকংয়ে অ্যাপল ডেইলির একটি নিজস্ব ভাষা তৈরি করেছে। আপনি তাদের পছন্দ নাই করতে পারেন, কিন্তু তাদের বাঁচতে দিতে হবে, কথা বলতে দিতে হবে।’