alt

আন্তর্জাতিক

চীনে বিক্ষোভকারীদের হাতে কেন ‘সাদা কাগজ’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২

সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে চীনে বড় ধরনের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ শুরু হয়।

বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবার জিনজিয়াং প্রদেশের উরুমকিতে একটি আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যুর পর চীনের বড় শহরগুলোতে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের স্মরণে রোববার সন্ধ্যায় সাংহাইয়ে জমায়েত হন বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে ছিল সাদা কাগজ, যাতে লেখা ছিল না কিছু। মূলত বিক্ষোভকারীরা খালি কাগজ তুলে ধরে সরকারের বিরুদ্ধে ভিন্ন এক প্রতিবাদ দেখিয়েছেন।

বিবিসি ও সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চীনের তরুণদের হাতে ‘এ ফোর সাইজের’ সাদা কাগজ দেখা যায়। এ জন্য চলমান আন্দোলনকে অনেকে ‘সাদা কাগজের বিক্ষোভ কিংবা সাদা কাগজের বিপ্লব’ বলছেন।

বিবিসি লিখেছে, প্রায়ই কোনো একটি উপকরণ গোটা আন্দোলনকে তুলে ধরে, আর চীনের এ আন্দোলনে সেই প্রতীক হয়ে উঠছে সাদা কাগজ।

সাংহাইয়ের মত একইভাবে বেইজিংয়ের নামকরা সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও কাগজের টুকরা নিয়ে জমায়েত হন বিক্ষোভকারীরা। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চীনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ঝেজিয়াংয়ে উঝেনের রাস্তায় এক নারী কবজিতে শিকল, মুখে টেপ লাগানো এবং হাতে সাদা কাগজ নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

চীনে শি জিনপিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে বা কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এমন বিক্ষোভ বিরল। কারণ সেখানে সরকারের সরাসরি কোনো সমালোচনার ফল হতে পারে কঠোর শাস্তি।

কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারের ‘শূন্য কোভিড নীতি’ নিয়ে অসন্তোষ চলছে। এর মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর শিনজিয়াংয়ে কঠোর লকডাউনে ঘরে বন্দি থাকার অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যুতে বিক্ষোভ জোরালো হয়।

আন্দোলনকারীরা এখন যেমন চীনের কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সাদা কাগজ তুলে ধরে যে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, এর আগে তেমন বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালে হংকংয়ে। সেখানেও জাতীয় নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে সাদা কাগজ তুলে ধরে বিক্ষোভে অংশ নেয় মানুষ।

২০১৯ সালের গণবিক্ষোভে হংকংয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল এবং সরকারি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়ন চালায়। তাদের স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়। ওই সাঁড়াশি অভিযান আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে খালি কাগজ তুলে ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা।

কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন, চীনে বিক্ষোভকারীদের এই প্রতিবাদ কেবল ‘ভিন্নমতের নীরবতা’ বোঝাচ্ছে না। এটি সরকারি কর্তৃপক্ষের জন্যও একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ তারা কার্যত প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে – ‘কোনোকিছু না বলার প্রতীক তুলে ধরার জন্যই আপনি আমাকে গ্রেপ্তার করতে যাচ্ছেন?’

সাংহাইয়ে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া এক নারী বিবিসিকে বলেন, “কাগজে আসলেই কিছু ছিল না, তবে আমরা জানি সেখানে কী আছে।”

বেইজিংয়ে বিক্ষোভকারী ২৬ বছর বয়সী জনি রয়টার্সকে বলেন, “আমরা যা বলতে পারি না, তার সবকিছুই তুলে ধরছে এই কাগজ।”

চীনের মিডিয়া বিশ্লেষক বিবিসির কেরি অ্যালেন তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, চীনের সেন্সরশিপ আরোপকারী কর্মকর্তারা দেশটির সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রবেশ করে নজরদারি করেন। সেখানে এক কোটির মত পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে। ‘ব্ল্যাঙ্ক শিট অব পেপার’ ও ‘হোয়াইট পেপার’ লিখে সার্চ দিলে খুব সামান্য ফলাফল দেখাচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেন্সরের বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। একজন লিখেছেন, “আপনি যদি একটি খালি কাগজে ভয় পান, তার মানে আপনি ভেতরে ভেতরেও দুর্বল।”

বিবিসি লিখেছে, ‘জাতীয় নিরাপত্তার কারণে’ সমস্ত ‘এ-ফোর’ আকারের কাগজ সরিয়ে নেওয়ারও গুজব রটেছে চীনে। তবে তা অস্বীকার করে কাগজ প্রস্তুতকারক সাংহাই এম অ্যান্ড জে স্টেশনারি বলেছে, তাদের উত্পাদন কার্যক্রম সব স্বাভাবিক। অনলাইনে ছড়ানো একটি ভুয়া নথির বিষয়ে তারা পুলিশকে অবহিতও করেছিল। ওই জাল নথিই কাগজ উৎপাদনকারী কোম্পানির ব্যাপারে গুজব ছড়িয়েছিল।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি রাগান্বিত হয়ে একজন বিক্ষোভকারীর হাত থেকে খালি কাগজ ছিনিয়ে নিচ্ছেন। ঘটনাটি চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর নানজিংয়ের ‘কমিউনিকেশন ইউনিভার্সিটি’ এলাকার বলে ধারণা দিয়েছে বিবিসি।

শনিবার রাতের আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েক ডজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে সাদা কাগজের টুকরো তুলে ধরে নীরবে দাঁড়িয়ে আছেন। এ ছাড়া সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্রকে ফ্রাইডম্যানের সমীকরণ আঁকা কাগজের টুকরো ধরে থাকতে দেখা গেছে।

চীনে বিক্ষোভে প্রতীক হিসাবে কাগজের ব্যবহার সাধারণ দৃশ্য। আধুনিক প্রতিবাদের এমন প্রতীক হিসাবে হংকংয়ে ছাতা, থাইল্যান্ডে রবারের হাঁস, বেলারুশে ফুলের মতো উপাদানগুলো ব্যবহৃত হয়।

লেবানন-সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলা

ছবি

ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের হুমকিতে চাপ নয়, বরং স্বস্তিতে রাশিয়া

মে মাসে ইরানের তেল রপ্তানিতে সর্বকালের রেকর্ড

ছবি

জোটে ভাঙন, অস্তিত্ব সংকটে নেতানিয়াহুর সরকার

ইসরায়েলিদের ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে গাজায় বাড়িঘর ধ্বংস করছে সেনারা

ছবি

বেপরোয়া হুতি, ২০ মাসে ৭০ জাহাজে হামলা

ছবি

দালাই লামার উত্তরাধিকারের ওপর বেইজিংয়ের অধিকার দাবি, নয়াদিল্লিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে : ম্যাখোঁ

ছবি

দুই হাজার বছর আগে ডুবে যাওয়া শহরের খোঁজ

কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করল ভারত

ছবি

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে কী কারণে স্বীকৃতি দিল রাশিয়া

সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ, নিহত ৩০

ছবি

গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা চলছেই, নিহত ৫৮ হাজার ছাড়াল

ছবি

সিরিয়ায় বেদুইন সুন্নি-দ্রুজ সংঘর্ষে নিহত অন্তত ৩০

ছবি

ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট, জরুরি পথে পালিয়ে বাঁচেন

ছবি

নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি আর নেই

ছবি

ইসরায়েলের পদক্ষেপে উদ্বেগ, গাজার পরিস্থিতি ঠেকাতে ব্রিটিশ এমপিদের চিঠি

ছবি

গণহত্যা রুখতে ২০টির বেশি দেশের সম্মেলনে বাংলাদেশেরও অংশগ্রহণ

ছবি

শুল্কহার কমিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে যেতে চায় ভারত

ছবি

অভিযানের সময় আহত শ্রমিকের মৃত্যু, আক্রমণাত্মক কৌশল স্থগিতের নির্দেশ আদালতের

যুক্তরাষ্ট্র হামলা না চালানোর নিশ্চয়তা দিলে আলোচনায় বসবে ইরান

ছবি

বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হতে চলেছে ভারত

ইউক্রেনে রাশিয়ার যে কোন কাজের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থনের ঘোষণা কিমের

ছবি

পুতিনকে নিয়ে ‘হতাশ’ ট্রাম্পের পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী হবে

মায়ানমারে সংঘাত, থাই সীমান্ত দিয়ে পালাল শতাধিক সেনা

ছবি

মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলছে ‘নীরব বিপ্লব’

ছবি

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ২৪ জন নিহত, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ

ছবি

এয়ার ইন্ডিয়া উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কারণ: সুইচের অপ্রত্যাশিত বন্ধ হওয়া, তদন্তে জানা গেছে

ছবি

মাত্র ১২ দিনেই যুদ্ধবিরতি’, ইরানের পাল্টা হামলায় তেল আবিবে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি

১২ দিনের যুদ্ধে ৫০০ ইসরায়েলি নিহত: ইরান

ছবি

ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেছে ৮০০ ফিলিস্তিনির

মায়ানমারে বৌদ্ধ মঠে বিমান হামলায় নিহত ২৩

ছবি

হুথিদের সাহায্য করে কারা, কীভাবে তারা অস্ত্র পায়?

কুর্দি বিদ্রোহীদের অস্ত্র সমর্পণে তুরস্কের জয় হয়েছে : এরদোয়ান

ছবি

‘বিধ্বস্ত হওয়ার আগে জ্বালানি সুইচ বন্ধ হয় এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেনের’

ছবি

‘আমি জ্বালানির সুইচ বন্ধ করিনি’: বিধ্বস্তের আগে পাইলট

tab

আন্তর্জাতিক

চীনে বিক্ষোভকারীদের হাতে কেন ‘সাদা কাগজ’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২

সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে চীনে বড় ধরনের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ শুরু হয়।

বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবার জিনজিয়াং প্রদেশের উরুমকিতে একটি আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যুর পর চীনের বড় শহরগুলোতে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের স্মরণে রোববার সন্ধ্যায় সাংহাইয়ে জমায়েত হন বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে ছিল সাদা কাগজ, যাতে লেখা ছিল না কিছু। মূলত বিক্ষোভকারীরা খালি কাগজ তুলে ধরে সরকারের বিরুদ্ধে ভিন্ন এক প্রতিবাদ দেখিয়েছেন।

বিবিসি ও সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চীনের তরুণদের হাতে ‘এ ফোর সাইজের’ সাদা কাগজ দেখা যায়। এ জন্য চলমান আন্দোলনকে অনেকে ‘সাদা কাগজের বিক্ষোভ কিংবা সাদা কাগজের বিপ্লব’ বলছেন।

বিবিসি লিখেছে, প্রায়ই কোনো একটি উপকরণ গোটা আন্দোলনকে তুলে ধরে, আর চীনের এ আন্দোলনে সেই প্রতীক হয়ে উঠছে সাদা কাগজ।

সাংহাইয়ের মত একইভাবে বেইজিংয়ের নামকরা সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও কাগজের টুকরা নিয়ে জমায়েত হন বিক্ষোভকারীরা। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চীনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ঝেজিয়াংয়ে উঝেনের রাস্তায় এক নারী কবজিতে শিকল, মুখে টেপ লাগানো এবং হাতে সাদা কাগজ নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

চীনে শি জিনপিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে বা কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এমন বিক্ষোভ বিরল। কারণ সেখানে সরকারের সরাসরি কোনো সমালোচনার ফল হতে পারে কঠোর শাস্তি।

কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারের ‘শূন্য কোভিড নীতি’ নিয়ে অসন্তোষ চলছে। এর মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর শিনজিয়াংয়ে কঠোর লকডাউনে ঘরে বন্দি থাকার অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যুতে বিক্ষোভ জোরালো হয়।

আন্দোলনকারীরা এখন যেমন চীনের কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সাদা কাগজ তুলে ধরে যে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, এর আগে তেমন বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালে হংকংয়ে। সেখানেও জাতীয় নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে সাদা কাগজ তুলে ধরে বিক্ষোভে অংশ নেয় মানুষ।

২০১৯ সালের গণবিক্ষোভে হংকংয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল এবং সরকারি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়ন চালায়। তাদের স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়। ওই সাঁড়াশি অভিযান আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে খালি কাগজ তুলে ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা।

কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন, চীনে বিক্ষোভকারীদের এই প্রতিবাদ কেবল ‘ভিন্নমতের নীরবতা’ বোঝাচ্ছে না। এটি সরকারি কর্তৃপক্ষের জন্যও একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ তারা কার্যত প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে – ‘কোনোকিছু না বলার প্রতীক তুলে ধরার জন্যই আপনি আমাকে গ্রেপ্তার করতে যাচ্ছেন?’

সাংহাইয়ে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া এক নারী বিবিসিকে বলেন, “কাগজে আসলেই কিছু ছিল না, তবে আমরা জানি সেখানে কী আছে।”

বেইজিংয়ে বিক্ষোভকারী ২৬ বছর বয়সী জনি রয়টার্সকে বলেন, “আমরা যা বলতে পারি না, তার সবকিছুই তুলে ধরছে এই কাগজ।”

চীনের মিডিয়া বিশ্লেষক বিবিসির কেরি অ্যালেন তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, চীনের সেন্সরশিপ আরোপকারী কর্মকর্তারা দেশটির সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রবেশ করে নজরদারি করেন। সেখানে এক কোটির মত পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে। ‘ব্ল্যাঙ্ক শিট অব পেপার’ ও ‘হোয়াইট পেপার’ লিখে সার্চ দিলে খুব সামান্য ফলাফল দেখাচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেন্সরের বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। একজন লিখেছেন, “আপনি যদি একটি খালি কাগজে ভয় পান, তার মানে আপনি ভেতরে ভেতরেও দুর্বল।”

বিবিসি লিখেছে, ‘জাতীয় নিরাপত্তার কারণে’ সমস্ত ‘এ-ফোর’ আকারের কাগজ সরিয়ে নেওয়ারও গুজব রটেছে চীনে। তবে তা অস্বীকার করে কাগজ প্রস্তুতকারক সাংহাই এম অ্যান্ড জে স্টেশনারি বলেছে, তাদের উত্পাদন কার্যক্রম সব স্বাভাবিক। অনলাইনে ছড়ানো একটি ভুয়া নথির বিষয়ে তারা পুলিশকে অবহিতও করেছিল। ওই জাল নথিই কাগজ উৎপাদনকারী কোম্পানির ব্যাপারে গুজব ছড়িয়েছিল।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি রাগান্বিত হয়ে একজন বিক্ষোভকারীর হাত থেকে খালি কাগজ ছিনিয়ে নিচ্ছেন। ঘটনাটি চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর নানজিংয়ের ‘কমিউনিকেশন ইউনিভার্সিটি’ এলাকার বলে ধারণা দিয়েছে বিবিসি।

শনিবার রাতের আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েক ডজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে সাদা কাগজের টুকরো তুলে ধরে নীরবে দাঁড়িয়ে আছেন। এ ছাড়া সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্রকে ফ্রাইডম্যানের সমীকরণ আঁকা কাগজের টুকরো ধরে থাকতে দেখা গেছে।

চীনে বিক্ষোভে প্রতীক হিসাবে কাগজের ব্যবহার সাধারণ দৃশ্য। আধুনিক প্রতিবাদের এমন প্রতীক হিসাবে হংকংয়ে ছাতা, থাইল্যান্ডে রবারের হাঁস, বেলারুশে ফুলের মতো উপাদানগুলো ব্যবহৃত হয়।

back to top