দেশজুড়ে পাঁচ দিন পুরোপুরি বন্ধ ছিল ইন্টারনেট। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ সহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ রেখে গত ২৩ জুলাই মঙ্গলবার রাত থেকে স্বল্প পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়। অফিস-আদালত, গণমাধ্যম ও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সংযোগ দেওয়া হয়। ২৪ জুলাই বুধবার রাত থেকে পর্যায়ক্রমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাসা-বাড়িতেও পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়। চলতি সপ্তাহে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হতে পারে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতির উদ্ভব হলে গত ১৭ জুলাই বুধবার ফোরজি (মোবাইল ইন্টারনেট) বন্ধ করা হয়। ১৮ জুলাই রাত থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ হয়ে যায়। যদিও সরকার দাবি করছে, সহিংসতায় ইন্টারনেট অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়েছে। তবে খাত সংশ্লিষ্টদের দাবি, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইন্টারনেট সেবা সীমিত হবে, স্পিড কমবে কিন্তু কোনভাবেই পুরো সেবা বন্ধ হবে না। কারণ, দেশের ইন্টারনেট সেবা সচল রাখতে বিকল্প অনেক উপায় রয়েছে।
প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আর্থিকভাবে আপাতত এ কয়েক দিনের ক্ষতির হিসাব করা গেলেও দীর্ঘস্থায়ী যে ক্ষতি হতে যাচ্ছে সেটির প্রভাব মারাত্মক। কারণ বিদেশি ক্লায়েন্টরা চুক্তি অনুযায়ী কাজ না পেলে অর্ডার বাতিল করে দেবে। একইসাথে নেতিবাচক রিভিউ দেবে যার কারণে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা ফ্রিল্যান্সারের পরবর্তীতে নতুন ক্লায়েন্টের কাজ পেতে অসুবিধা হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ফ্রিল্যান্সিং করেন এমন ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা পাঁচদিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও আর্থিক ক্ষতির হিসাব এখনই পুরোপুরি করা যাচ্ছে না। কারণ বিদেশি ক্রেতারা ডেলিভারি না পেয়ে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি এখনও বোঝা যাচ্ছে না।
এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সব ব্যবসার ক্ষতি হলেও এ খাতের ক্ষতির পরিমাণ একটু বেশিই। কারণ যারা প্রযুক্তি ব্যবসায় জড়িত তাদের ব্যবসার লাইফ লাইনই হচ্ছে ইন্টারনেট। কিন্তু অন্য ব্যবসার সাপোর্ট লাইন হিসেবে ইন্টারনেট কাজ করে।
একইসাথে ই-কমার্স খাতও ইন্টারনেট ছাড়া চলে না। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে যে বাজার তৈরি করতে পেরেছে এবং বিদেশি ক্লায়েন্টদের কাছে আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে এবারের পরিস্থিতিতে সেটি অনেকটাই হুমকির মুখে পড়েছে। ইন্টারনেট না থাকার কারণে তাদেও এবং ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করে কিছু জানাতে না পারায় যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে তাতে তারা বিকল্প বাজারের দিকে চলে যাওয়ার শঙ্কা আছে বলে মনে করছেন আইসিটি খাতের ব্যবসায়ীরা।
এ খাতের বিদেশি ক্লায়েন্ট হারালে সেটা দেশের চাকরির বাজারেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। যেসব ক্লায়েন্টরা চলে যাবে তাদের বিপরীতে যতজন এমপ্লয়ী ততজনের জবের উপর ওই প্রভাব পড়বে। চাকরি চলে যাবে অনেকের।
আইসিটি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলছেন, দৈনন্দিন ক্ষতির চেয়ে এখন স্থায়ী ক্ষতি নিয়ে বেশি চিন্তিত তারা। আবার এই ক্ষতির হার করপোরেট কোম্পানির চাইতে ফ্রিল্যান্সারদের বেশি পোহাতে হবে বলে মনে করছেন তারা। তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিষয়টি আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং।
কারণ করপোরেট লেভেলে সার্ভিসের ক্ষেত্রে তাদের ফোন নম্বর থাকে ফলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা যায়। অথবা বিদেশে কোনো বন্ধুদের সাহায্যেও ই-মেইল করে যোগাযোগ করা যায়। কিন্তু ফ্রিল্যান্সাররা ওয়েবসাইট থেকে কাজ পায় আবার সেখানেই ডেলিভারি করে। তারা ক্লায়েন্টদের ফোন নম্বরও দেখে না। ফলে যোগাযোগ করা সহজ ছিল না। তারা কন্ট্রাক্টও হারাবে। খারাপ রিভিউ দিলে ভবিষ্যতে কাজ করা কঠিনও হয়ে যাবে।
রোববার, ২৮ জুলাই ২০২৪
দেশজুড়ে পাঁচ দিন পুরোপুরি বন্ধ ছিল ইন্টারনেট। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ সহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ রেখে গত ২৩ জুলাই মঙ্গলবার রাত থেকে স্বল্প পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়। অফিস-আদালত, গণমাধ্যম ও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সংযোগ দেওয়া হয়। ২৪ জুলাই বুধবার রাত থেকে পর্যায়ক্রমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাসা-বাড়িতেও পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়। চলতি সপ্তাহে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হতে পারে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতির উদ্ভব হলে গত ১৭ জুলাই বুধবার ফোরজি (মোবাইল ইন্টারনেট) বন্ধ করা হয়। ১৮ জুলাই রাত থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ হয়ে যায়। যদিও সরকার দাবি করছে, সহিংসতায় ইন্টারনেট অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়েছে। তবে খাত সংশ্লিষ্টদের দাবি, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইন্টারনেট সেবা সীমিত হবে, স্পিড কমবে কিন্তু কোনভাবেই পুরো সেবা বন্ধ হবে না। কারণ, দেশের ইন্টারনেট সেবা সচল রাখতে বিকল্প অনেক উপায় রয়েছে।
প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আর্থিকভাবে আপাতত এ কয়েক দিনের ক্ষতির হিসাব করা গেলেও দীর্ঘস্থায়ী যে ক্ষতি হতে যাচ্ছে সেটির প্রভাব মারাত্মক। কারণ বিদেশি ক্লায়েন্টরা চুক্তি অনুযায়ী কাজ না পেলে অর্ডার বাতিল করে দেবে। একইসাথে নেতিবাচক রিভিউ দেবে যার কারণে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা ফ্রিল্যান্সারের পরবর্তীতে নতুন ক্লায়েন্টের কাজ পেতে অসুবিধা হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ফ্রিল্যান্সিং করেন এমন ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা পাঁচদিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও আর্থিক ক্ষতির হিসাব এখনই পুরোপুরি করা যাচ্ছে না। কারণ বিদেশি ক্রেতারা ডেলিভারি না পেয়ে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি এখনও বোঝা যাচ্ছে না।
এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সব ব্যবসার ক্ষতি হলেও এ খাতের ক্ষতির পরিমাণ একটু বেশিই। কারণ যারা প্রযুক্তি ব্যবসায় জড়িত তাদের ব্যবসার লাইফ লাইনই হচ্ছে ইন্টারনেট। কিন্তু অন্য ব্যবসার সাপোর্ট লাইন হিসেবে ইন্টারনেট কাজ করে।
একইসাথে ই-কমার্স খাতও ইন্টারনেট ছাড়া চলে না। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে যে বাজার তৈরি করতে পেরেছে এবং বিদেশি ক্লায়েন্টদের কাছে আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে এবারের পরিস্থিতিতে সেটি অনেকটাই হুমকির মুখে পড়েছে। ইন্টারনেট না থাকার কারণে তাদেও এবং ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করে কিছু জানাতে না পারায় যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে তাতে তারা বিকল্প বাজারের দিকে চলে যাওয়ার শঙ্কা আছে বলে মনে করছেন আইসিটি খাতের ব্যবসায়ীরা।
এ খাতের বিদেশি ক্লায়েন্ট হারালে সেটা দেশের চাকরির বাজারেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। যেসব ক্লায়েন্টরা চলে যাবে তাদের বিপরীতে যতজন এমপ্লয়ী ততজনের জবের উপর ওই প্রভাব পড়বে। চাকরি চলে যাবে অনেকের।
আইসিটি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলছেন, দৈনন্দিন ক্ষতির চেয়ে এখন স্থায়ী ক্ষতি নিয়ে বেশি চিন্তিত তারা। আবার এই ক্ষতির হার করপোরেট কোম্পানির চাইতে ফ্রিল্যান্সারদের বেশি পোহাতে হবে বলে মনে করছেন তারা। তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিষয়টি আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং।
কারণ করপোরেট লেভেলে সার্ভিসের ক্ষেত্রে তাদের ফোন নম্বর থাকে ফলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা যায়। অথবা বিদেশে কোনো বন্ধুদের সাহায্যেও ই-মেইল করে যোগাযোগ করা যায়। কিন্তু ফ্রিল্যান্সাররা ওয়েবসাইট থেকে কাজ পায় আবার সেখানেই ডেলিভারি করে। তারা ক্লায়েন্টদের ফোন নম্বরও দেখে না। ফলে যোগাযোগ করা সহজ ছিল না। তারা কন্ট্রাক্টও হারাবে। খারাপ রিভিউ দিলে ভবিষ্যতে কাজ করা কঠিনও হয়ে যাবে।