alt

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

এখনো সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুলের আইসিটি কোম্পানি সিএনসের কব্জায় বিআরটিএ

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক : মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) দীর্ঘদিন ধরে এককভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে নিজেদের দরপত্র ব্যবস্থাকে সমর্পণ করে রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটি হলো সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পরিবারের মালিকানাধীন কোম্পানী কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেড (সিএনএস)। এমনকি জুলাই বিপ্লবের পর এখনোও প্রতিষ্ঠানটির কাছে জিম্মি বিআরটিএ’র গ্রাহকরা। সিএনএস বিআরটিএ’র সঙ্গে একচেটিয়া সম্পর্ক তৈরি করে দরপত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে, যা বাজারের প্রতিযোগিতাকে ধ্বংস করছে।

কাগজপত্র পর্যালোচন করে দেখা যায়, সিএনএস নিজেদের সুবিধার জন্য দরপত্রের শর্তাবলী এমনভাবে সাজিয়ে নিয়েছে, যাতে প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো কোনোভাবেই কাজ পেতে না পারে। এসব শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে- বিশেষ অভিজ্ঞতার দাবিঃ দরপত্রে এমন অভিজ্ঞতার শর্ত আরোপ করা হয় যা শুধুমাত্র সিএনএস পূরণ করতে পারে। নির্দিষ্ট সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বঃ দরপত্রে কিছু নির্দিষ্ট সংস্থার সঙ্গে কাজ করার শর্ত দেওয়া হয়, যা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান পূরণ করতে পারে না। অতিরিক্ত আর্থিক লেনদেনের বাধ্যবাধকতাঃ সিএনএস নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে আর্থিক লেনদেনের এমন বিধি আরোপ করেছে, যা ছোট ও নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ফলে, যানবাহনের মালিক, চালক, এবং সাধারণ জনগণকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়, যা পুরো সিস্টেমটিকে একচেটিয়া ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর নির্বাহী কমিটির সাবেক একজন পরিচালক নাম না প্রকাশ করার শর্তে এই দুর্নীতির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন বিআরটিএর প্রকল্প পরিচালনার জন্য দেশের ১৬০০-এর বেশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান যোগ্যতা রাখে। কিন্তু দরপত্রের কৌশলগত পরিবর্তনের ফলে শুধুমাত্র সিএনএস সুবিধা পাচ্ছে, যা অন্য সব প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নষ্ট করছে। বেসিসের সাবেক এই নেতা উল্লেখ করেন, প্রশাসনিক যোগসাজশ ও দুর্নীতির কারণে বিআরটিএর সব দরপত্র সিএনএসের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এর ফলে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং তাদের প্রযুক্তিগত বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর্থিক প্রভাব ও লেনদেনে বিআরটিএর অনিয়মের কারণে সিএনএস শুধু প্রযুক্তিগত সুবিধাই পাচ্ছে না, বরং বিশাল পরিমাণ আর্থিক সুবিধাও হাতিয়ে নিচ্ছে।

সরকারি অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে সিএনএস নির্দিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিচ্ছে। সাধারণত, সরকারি টাকা আদায়ে ব্যাংক কোনো কমিশন নেয় না। তবে সিএনএস কমিশন বাণিজ্য চালু করেছে, যার ফলে অর্থনৈতিকভাবে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিআরটিএ’র মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৬০০ কোটি টাকা কর ও ফি আদায় করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৮০০ কোটি টাকা অগ্রিম আয়কর হিসেবে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই অর্থের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন রয়েছে। সিএনএসের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত থাকার কারণে, সরকারি টাকার যথাযথ ব্যবহার নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এই বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান যদি সরকারি প্রকল্পের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ পায়, তবে সেটি স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহজনক। তিনি বলেন, এটি বাজার প্রতিযোগিতাকে ধ্বংস করে এবং সরকারি সম্পদের অপচয় ঘটায়। দরপত্র ব্যবস্থায় এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া দুর্নীতিরই অংশ। এর মাধ্যমে জনগণের অর্থ অপব্যবহার করা হচ্ছে। সিএনএসের এই একচেটিয়া আধিপত্যের প্রধান কারণ হলো সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হওয়ায়, তারা সরকারি নীতিনির্ধারকদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে আছে। ফলে দরপত্রে একচ্ছত্র সুবিধা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণে বাধা, ব্যাংক লেনদেনে অতিরিক্ত কমিশন ও আর্থিক সুবিধা পেয়ে আসছে সিএনএস।

সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এই অনিয়ম রোধ করতে চায়। তবে দরপত্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে এবং অন্যান্য যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। অতিরিক্ত কমিশন ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। সরকারি প্রকল্পগুলোর জন্য নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশে চালু হলো ক্রাউডশিপিং সেবা ‘ডিমহাম’

ছবি

এআই ইনোভেশন ইন এশিয়া অ্যাওয়ার্ড পেল হুয়াওয়ে ও চায়না মোবাইল

ছবি

আইএসপিএবি ও বিপিসির যৌথ আয়োজনে রাজশাহীতে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত.

ছবি

ডেলিভারি পার্টনারদের জন্য ফুডপ্যান্ডার বিনামূল্যে হেলথ ক্যাম্প

ছবি

স্থানীয়ভাবে হোস্টকৃত টিয়ার-৪ ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম চালু করল এক্সেনটেক

ছবি

চট্টগ্রাম ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ও বিডিওএসএন এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত

ছবি

বাক্কো ও আকিজ টেলিকমের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশে চালু হলো ক্রাউডশিপিং সেবা ‘ডিমহাম’

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে সিটিজেন ব্র্যান্ডের পস, বারকোড ও লেভেল প্রিন্টার

ছবি

২০২৫-২৭ মেয়াদের বিসিএস সভাপতি জহিরুল ইসলাম এবং মহাসচিব মনিরুল ইসলাম

ভুয়া ইমেইল এবং ভয়েস মেসেজ দিয়ে হামলা করছে র‌্যানসমওয়্যার গ্রুপ : সফোস

ছবি

২৪-২৬ জুন ভিভো সার্ভিস ডে

ছবি

গেমিংয়ের জন্য ইনফিনিক্সের নতুন ফিচার

ছবি

নাগরিক সেবা কার্যক্রম অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ছবি

ইউআইটিএস ও বাক্কোর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত

ছবি

শেষ হলো জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্ব

ছবি

বিকাশ অ্যাপে জামানতবিহীন ডিজিটাল লোনের সীমা বাড়ল

ছবি

রেডিংটন ও গুগল ক্লাউড : বাংলাদেশের প্রযুক্তি বিপ্লবের সঙ্গী

ছবি

শেষ হলো দুই দিনের ‘ড্রয়েডকন বাংলাদেশ’ সম্মেলন

ছবি

আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

অ্যান্ড্রয়েড ডেভলপারদের নিয়ে ঢাকায় ‘ড্রয়েডকন বাংলাদেশ ২০২৫’ সম্মেলন

ছবি

জিপিএইচ ইস্পাতের কর্মীদের জন্য ফুডপ্যান্ডার বিশেষ সুবিধা

ছবি

গ্রামীণফোন ও ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের পার্টনারশিপ

ছবি

টাইমস হায়ার এডুকেশন ইমপ্যাক্ট র‌্যাংকিং ২০২৫ : শীর্ষ ২০০’র মধ্যে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি

ছবি

মালয়েশিয়ায় রেইনফরেস্ট ওয়ার্ল্ড মিউজিক ফেস্টিভ্যালে যাচ্ছেন রাইজ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীরা

ছবি

বাজারে লেনোভোর নতুন ল্যাপটপ আইডিয়াপ্যাড স্লিম থ্রিআই

ছবি

ভিসিপিয়াবের বাজেট প্রতিক্রিয়া

ছবি

বাজারে টেকনোর নতুন স্মার্টফোন স্পার্ক গো ২

ছবি

ঢাকায় হতে যাচ্ছে অ্যান্ড্রয়েডবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘ড্রয়েডকন বাংলাদেশ’

ছবি

বাবার জন্য ওষুধ, মেডিকেল টেস্ট, হেলথ চেকআপে বিকাশ পেমেন্টে ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক

ছবি

এসিডি স্টুডেন্ট লিডারশিপ ক্যাম্প ২০২৫ : ড্যাফোডিল বিশ^বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে

ছবি

ইনফিনিক্স নোট ৫০-এর দাম কমলো

ছবি

ওপেন এপিআই ব্যাংকিং সেবা চালু করল ইউসিবি

ছবি

বাবা দিবসে ভিভোর ‘বাবার সাথে মুহূর্ত’ ক্যাম্পেইন

ছবি

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত

ছবি

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে ‘হুবেই-বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনী সহযোগিতা বিনিময় সম্মেলন ২০২৫’ অনুষ্ঠিত

tab

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

এখনো সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুলের আইসিটি কোম্পানি সিএনসের কব্জায় বিআরটিএ

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক

মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) দীর্ঘদিন ধরে এককভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে নিজেদের দরপত্র ব্যবস্থাকে সমর্পণ করে রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটি হলো সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পরিবারের মালিকানাধীন কোম্পানী কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেড (সিএনএস)। এমনকি জুলাই বিপ্লবের পর এখনোও প্রতিষ্ঠানটির কাছে জিম্মি বিআরটিএ’র গ্রাহকরা। সিএনএস বিআরটিএ’র সঙ্গে একচেটিয়া সম্পর্ক তৈরি করে দরপত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে, যা বাজারের প্রতিযোগিতাকে ধ্বংস করছে।

কাগজপত্র পর্যালোচন করে দেখা যায়, সিএনএস নিজেদের সুবিধার জন্য দরপত্রের শর্তাবলী এমনভাবে সাজিয়ে নিয়েছে, যাতে প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো কোনোভাবেই কাজ পেতে না পারে। এসব শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে- বিশেষ অভিজ্ঞতার দাবিঃ দরপত্রে এমন অভিজ্ঞতার শর্ত আরোপ করা হয় যা শুধুমাত্র সিএনএস পূরণ করতে পারে। নির্দিষ্ট সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বঃ দরপত্রে কিছু নির্দিষ্ট সংস্থার সঙ্গে কাজ করার শর্ত দেওয়া হয়, যা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান পূরণ করতে পারে না। অতিরিক্ত আর্থিক লেনদেনের বাধ্যবাধকতাঃ সিএনএস নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে আর্থিক লেনদেনের এমন বিধি আরোপ করেছে, যা ছোট ও নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ফলে, যানবাহনের মালিক, চালক, এবং সাধারণ জনগণকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়, যা পুরো সিস্টেমটিকে একচেটিয়া ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর নির্বাহী কমিটির সাবেক একজন পরিচালক নাম না প্রকাশ করার শর্তে এই দুর্নীতির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন বিআরটিএর প্রকল্প পরিচালনার জন্য দেশের ১৬০০-এর বেশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান যোগ্যতা রাখে। কিন্তু দরপত্রের কৌশলগত পরিবর্তনের ফলে শুধুমাত্র সিএনএস সুবিধা পাচ্ছে, যা অন্য সব প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নষ্ট করছে। বেসিসের সাবেক এই নেতা উল্লেখ করেন, প্রশাসনিক যোগসাজশ ও দুর্নীতির কারণে বিআরটিএর সব দরপত্র সিএনএসের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এর ফলে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং তাদের প্রযুক্তিগত বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর্থিক প্রভাব ও লেনদেনে বিআরটিএর অনিয়মের কারণে সিএনএস শুধু প্রযুক্তিগত সুবিধাই পাচ্ছে না, বরং বিশাল পরিমাণ আর্থিক সুবিধাও হাতিয়ে নিচ্ছে।

সরকারি অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে সিএনএস নির্দিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিচ্ছে। সাধারণত, সরকারি টাকা আদায়ে ব্যাংক কোনো কমিশন নেয় না। তবে সিএনএস কমিশন বাণিজ্য চালু করেছে, যার ফলে অর্থনৈতিকভাবে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিআরটিএ’র মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৬০০ কোটি টাকা কর ও ফি আদায় করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৮০০ কোটি টাকা অগ্রিম আয়কর হিসেবে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই অর্থের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন রয়েছে। সিএনএসের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত থাকার কারণে, সরকারি টাকার যথাযথ ব্যবহার নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এই বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান যদি সরকারি প্রকল্পের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ পায়, তবে সেটি স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহজনক। তিনি বলেন, এটি বাজার প্রতিযোগিতাকে ধ্বংস করে এবং সরকারি সম্পদের অপচয় ঘটায়। দরপত্র ব্যবস্থায় এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া দুর্নীতিরই অংশ। এর মাধ্যমে জনগণের অর্থ অপব্যবহার করা হচ্ছে। সিএনএসের এই একচেটিয়া আধিপত্যের প্রধান কারণ হলো সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হওয়ায়, তারা সরকারি নীতিনির্ধারকদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে আছে। ফলে দরপত্রে একচ্ছত্র সুবিধা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণে বাধা, ব্যাংক লেনদেনে অতিরিক্ত কমিশন ও আর্থিক সুবিধা পেয়ে আসছে সিএনএস।

সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এই অনিয়ম রোধ করতে চায়। তবে দরপত্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে এবং অন্যান্য যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। অতিরিক্ত কমিশন ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। সরকারি প্রকল্পগুলোর জন্য নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

back to top