নাগরিক অধিকার চর্চার পরিসর ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে- এমন বাস্তবতায় গত ২৮ জুন রাজধানীতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গবেষণাভিত্তিক অধিকার সংগঠন, ভয়েস। অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সর্বশেষ ‘মিডিয়া মনিটরিং’ রিপোর্ট উন্মোচন করা হয়, যেখানে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর হামলা, হয়রানি এবং অনলাইনে লিঙ্গভিত্তিক অপতথ্য ছড়ানোর নানা ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, এবং তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত খবর ও পর্যালোচনা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এতে মতপ্রকাশ, বাকস্বাধীনতা, সমাবেশ ও সংগঠনের অধিকার ইত্যাদি মৌলিক অধিকার যে গভীর সংকটে পড়েছে, সে বিষয়টি উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী ও একাডেমিক ব্যক্তিত্বরা। আলোচনার শুরতে বক্তারা সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা, গণগ্রেপ্তার ও মিথ্যামামলার প্রবণতা এবং কবি-লেখকদের মত প্রকাশের কারণে হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলা ট্রিবিউনের নগর সম্পাদক উদিসা ইসলাম, ইউএনডিপির সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির যোগাযোগ বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরামর্শদাতা এস এম মনজুর রশিদ, মানবাধিকারকর্মী ও গবেষক রেজাউর রহমান লেনিন এবংওয়ান ফিউচার নেটওয়ার্কের ফেলো ও গবেষক মাহপারা আলম।
উদিসা ইসলাম বলেন, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, একেকটি মামলায় ৩০০ থেকে ৫০০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হচ্ছে, যার মধ্যে সাংবাদিকরাও রয়েছেন। এ ধরনের মামলা ভয়ভীতি প্রদর্শনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জোরালো সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। রেজাউর রহমান লেনিন বলেন, এই প্রতিবেদনটি বর্তমান সময়ের সংকুচিত গণতান্ত্রিক ও নাগরিক পরিসরের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। তার মতে, এতে যে সুপারিশ ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে, তা শুধু গবেষণার আলমারিতে বন্দি না রেখে অবশ্যই নীতিনির্ধারকদের টেবিলে পৌঁছাতে হবে।
লিঙ্গভিত্তিক অপতথ্য ছড়ানো রোধে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ফেসবুক, টিকটক সহ বড় প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান মাহপারা আলম। তিনি বলেন, যেসব কনটেন্ট লিঙ্গ পরিচয়, শ্রেণি, জাত বা সংস্কৃতিগত কারণে বিশেষ কিছু গোষ্ঠীকে অপমান করে তা দ্রুত শনাক্ত ও নামিয়ে নেওয়ার কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
মনজুর রশিদ বলেন, ডিজিটালাইজেশনের ইতিবাচক দিক যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু গুরুতর চ্যালেঞ্জও। তিনি বলেন, নাগরিক ও ডিজিটাল পরিসরে যে দমন-পীড়ন চলছে, তা মোকাবেলায় সমাজে যে নীরবতা বিরাজ করছে, সেটিকে ভাঙা দরকার।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, নারীদের অনলাইন ও জনপরিসওে অংশগ্রহণের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে লিঙ্গভিত্তিক অপতথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর সহিংসতা। তাই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদন্ড অনুযায়ী আইন তৈরি ও কার্যকর করার পাশাপাশি ডিজিটাল সাক্ষরতা ও নাগরিক শিক্ষাকে তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত করতে হবে, তবেই জনপরিসরে গনতান্ত্রিকভাবে নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
নাগরিক অধিকার চর্চার পরিসর ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে- এমন বাস্তবতায় গত ২৮ জুন রাজধানীতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গবেষণাভিত্তিক অধিকার সংগঠন, ভয়েস। অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সর্বশেষ ‘মিডিয়া মনিটরিং’ রিপোর্ট উন্মোচন করা হয়, যেখানে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর হামলা, হয়রানি এবং অনলাইনে লিঙ্গভিত্তিক অপতথ্য ছড়ানোর নানা ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, এবং তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত খবর ও পর্যালোচনা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এতে মতপ্রকাশ, বাকস্বাধীনতা, সমাবেশ ও সংগঠনের অধিকার ইত্যাদি মৌলিক অধিকার যে গভীর সংকটে পড়েছে, সে বিষয়টি উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী ও একাডেমিক ব্যক্তিত্বরা। আলোচনার শুরতে বক্তারা সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা, গণগ্রেপ্তার ও মিথ্যামামলার প্রবণতা এবং কবি-লেখকদের মত প্রকাশের কারণে হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলা ট্রিবিউনের নগর সম্পাদক উদিসা ইসলাম, ইউএনডিপির সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির যোগাযোগ বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরামর্শদাতা এস এম মনজুর রশিদ, মানবাধিকারকর্মী ও গবেষক রেজাউর রহমান লেনিন এবংওয়ান ফিউচার নেটওয়ার্কের ফেলো ও গবেষক মাহপারা আলম।
উদিসা ইসলাম বলেন, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, একেকটি মামলায় ৩০০ থেকে ৫০০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হচ্ছে, যার মধ্যে সাংবাদিকরাও রয়েছেন। এ ধরনের মামলা ভয়ভীতি প্রদর্শনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জোরালো সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। রেজাউর রহমান লেনিন বলেন, এই প্রতিবেদনটি বর্তমান সময়ের সংকুচিত গণতান্ত্রিক ও নাগরিক পরিসরের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। তার মতে, এতে যে সুপারিশ ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে, তা শুধু গবেষণার আলমারিতে বন্দি না রেখে অবশ্যই নীতিনির্ধারকদের টেবিলে পৌঁছাতে হবে।
লিঙ্গভিত্তিক অপতথ্য ছড়ানো রোধে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ফেসবুক, টিকটক সহ বড় প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান মাহপারা আলম। তিনি বলেন, যেসব কনটেন্ট লিঙ্গ পরিচয়, শ্রেণি, জাত বা সংস্কৃতিগত কারণে বিশেষ কিছু গোষ্ঠীকে অপমান করে তা দ্রুত শনাক্ত ও নামিয়ে নেওয়ার কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
মনজুর রশিদ বলেন, ডিজিটালাইজেশনের ইতিবাচক দিক যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু গুরুতর চ্যালেঞ্জও। তিনি বলেন, নাগরিক ও ডিজিটাল পরিসরে যে দমন-পীড়ন চলছে, তা মোকাবেলায় সমাজে যে নীরবতা বিরাজ করছে, সেটিকে ভাঙা দরকার।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, নারীদের অনলাইন ও জনপরিসওে অংশগ্রহণের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে লিঙ্গভিত্তিক অপতথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর সহিংসতা। তাই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদন্ড অনুযায়ী আইন তৈরি ও কার্যকর করার পাশাপাশি ডিজিটাল সাক্ষরতা ও নাগরিক শিক্ষাকে তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত করতে হবে, তবেই জনপরিসরে গনতান্ত্রিকভাবে নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।