কম্পিউটারে প্রথম বাংলা বাণিজ্যিক সফটওয়্যার শহীদলিপির নির্মাতা সাইফুদ্দাহার শহীদ (সাইফ শহীদ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের আলবুকার্কে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১টার দিক মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে আলঝেইমারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
সাইফুদ্দাহার শহীদ স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার জানাজা আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১টায় আলবুকার্কের ইসলামিক সেন্টার অব নিউ মেক্সিকোতে (১১০০ ইয়েল বুলেভার্ড, এসই আলবুকার্ক) অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি তথ্যপ্রযুক্তির উন্মেষকালে লন্ডনে বসে নিজে প্রোগ্রামিং করে কম্পিউটারে বাংলা লেখার সফটওয়্যার ‘শহীদলিপি’ তৈরি করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি এটি বাজারজাত করেন। এটি ছিল অ্যাপল ম্যাকিন্টশ কম্পিউটারে বাংলা লেখার সফটওয়্যার।
প্রথমে শহীদলিপির ফন্ট ছিল বিটম্যাপ প্রযুক্তির, যা দিয়ে প্রকাশনার কাজ করা যেত না। পরবর্তী সময়ে শহীদলিপির জন্য ‘লেজার’ প্রযুক্তির ফন্ট তৈরি করেন সাইফুদ্দাহার শহীদ। ফলে শহীদলিপি দিয়ে পাক্ষিক তারকালোক, দৈনিক আজাদসহ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। শহীদলিপির পাশাপাশি সাইফুদ্দাহার শহীদ সেই সময়ের ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের ইউজার ইন্টারফেসও বাংলায় অনুবাদ করেন। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা ম্যাকের মনিটরে বাংলায় নির্দেশনা দেখতে পেতেন।
সাইফুদ্দাহারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।
এক শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন, যতদিন প্রযুক্তিতে বাংলা ব্যবহৃত হবে ততদিন তিনি চিরজাগরূক হয়ে থাকবেন। তিনি আরও বলেন, শহীদলিপি সফটওয়্যারটি প্রথমে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে ব্যবহৃত হয়। এরপর শহীদ লিপি বিভিন্ন সাময়িকী ও সংবাদপত্র প্রকাশনায়ও ব্যবহৃত হয়। যদিও শারীরিক অসুস্থতা ও বিদেশ চলে যাওয়ার কারণে শহীদ লিপির আপডেট আর হয়নি। তবু পথপ্রদর্শক হিসেবে সাইফুদ্দাহার শহীদ বাংলাভাষীদের কাছে অমর হয়ে থাকবেন।
মন্ত্রী শহীদের মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের প্রথম সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সহসভাপতি ছিলেন সাইফুদ্দাহার শহীদ। ১৯৭৯ সালের ২০ মে তাঁর উদ্যোগ গঠিত হয় বাংলাদেশ অ্যামেচার রেডিও লিগ (বিএআরএল)।
মূলত সাইফুদ্দাহার শহীদের উদ্যোগে ১৯৮২ সালে বিএআরএল আন্তর্জাতিক অ্যামেচার রেডিও ইউনিয়নের সদস্যপদ লাভ করে। এরপর ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশে উন্মুক্ত হয় অ্যামেচার রেডিও। সাইফুদ্দাহার শহীদ দেশের প্রথম অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্সধারী (কল সাইন S21A)।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যন্ত্রকৌশলে স্নাতক সাইফুদ্দাহার শহীদ ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেট ছিলেন। বেক্সিমকো কম্পিউটারসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন তিনি। এরপর ন্যাশনাল কম্পিউটারস নামে ঢাকায় নিজের প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই শহীদলিপি বাজারজাত করা হয়। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। এরপর থেমে যায় শহীদলিপির যাত্রা।
সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২
কম্পিউটারে প্রথম বাংলা বাণিজ্যিক সফটওয়্যার শহীদলিপির নির্মাতা সাইফুদ্দাহার শহীদ (সাইফ শহীদ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের আলবুকার্কে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১টার দিক মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে আলঝেইমারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
সাইফুদ্দাহার শহীদ স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার জানাজা আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১টায় আলবুকার্কের ইসলামিক সেন্টার অব নিউ মেক্সিকোতে (১১০০ ইয়েল বুলেভার্ড, এসই আলবুকার্ক) অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি তথ্যপ্রযুক্তির উন্মেষকালে লন্ডনে বসে নিজে প্রোগ্রামিং করে কম্পিউটারে বাংলা লেখার সফটওয়্যার ‘শহীদলিপি’ তৈরি করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি এটি বাজারজাত করেন। এটি ছিল অ্যাপল ম্যাকিন্টশ কম্পিউটারে বাংলা লেখার সফটওয়্যার।
প্রথমে শহীদলিপির ফন্ট ছিল বিটম্যাপ প্রযুক্তির, যা দিয়ে প্রকাশনার কাজ করা যেত না। পরবর্তী সময়ে শহীদলিপির জন্য ‘লেজার’ প্রযুক্তির ফন্ট তৈরি করেন সাইফুদ্দাহার শহীদ। ফলে শহীদলিপি দিয়ে পাক্ষিক তারকালোক, দৈনিক আজাদসহ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। শহীদলিপির পাশাপাশি সাইফুদ্দাহার শহীদ সেই সময়ের ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের ইউজার ইন্টারফেসও বাংলায় অনুবাদ করেন। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা ম্যাকের মনিটরে বাংলায় নির্দেশনা দেখতে পেতেন।
সাইফুদ্দাহারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।
এক শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন, যতদিন প্রযুক্তিতে বাংলা ব্যবহৃত হবে ততদিন তিনি চিরজাগরূক হয়ে থাকবেন। তিনি আরও বলেন, শহীদলিপি সফটওয়্যারটি প্রথমে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে ব্যবহৃত হয়। এরপর শহীদ লিপি বিভিন্ন সাময়িকী ও সংবাদপত্র প্রকাশনায়ও ব্যবহৃত হয়। যদিও শারীরিক অসুস্থতা ও বিদেশ চলে যাওয়ার কারণে শহীদ লিপির আপডেট আর হয়নি। তবু পথপ্রদর্শক হিসেবে সাইফুদ্দাহার শহীদ বাংলাভাষীদের কাছে অমর হয়ে থাকবেন।
মন্ত্রী শহীদের মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের প্রথম সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সহসভাপতি ছিলেন সাইফুদ্দাহার শহীদ। ১৯৭৯ সালের ২০ মে তাঁর উদ্যোগ গঠিত হয় বাংলাদেশ অ্যামেচার রেডিও লিগ (বিএআরএল)।
মূলত সাইফুদ্দাহার শহীদের উদ্যোগে ১৯৮২ সালে বিএআরএল আন্তর্জাতিক অ্যামেচার রেডিও ইউনিয়নের সদস্যপদ লাভ করে। এরপর ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশে উন্মুক্ত হয় অ্যামেচার রেডিও। সাইফুদ্দাহার শহীদ দেশের প্রথম অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্সধারী (কল সাইন S21A)।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যন্ত্রকৌশলে স্নাতক সাইফুদ্দাহার শহীদ ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেট ছিলেন। বেক্সিমকো কম্পিউটারসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন তিনি। এরপর ন্যাশনাল কম্পিউটারস নামে ঢাকায় নিজের প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই শহীদলিপি বাজারজাত করা হয়। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। এরপর থেমে যায় শহীদলিপির যাত্রা।